ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফুটপাথের মজুর সম্পদের পাহাড়

রাজধানীর গুলিস্তানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মালিকানাধীন বেশকয়েকটি মার্কেটে দোকান বরাদ্দে ভয়াবহ জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে একটি সিন্ডিকেট। তারা গুলিস্তান হকার্স মার্কেট ও বঙ্গবাজার হকার্স মার্কেট নামে একসময়ের সুপরিচিত মার্কেট দুটি এখন ঢাকা ট্রেড সেন্টার উত্তর এবং ঢাকা ট্রেড সেন্টার দক্ষিণ মার্কেট, নগর প্লাজা, সিটি প্লাজা ও জাকের সুপার মাকের্ট দোকান বরাদ্দের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা। ঢাকা ট্রেড সেন্টার উত্তরে ১৪৪টি ও ঢাকা ট্রেড সেন্টার দক্ষিণে ৪৯টি দোকান বরাদ্দে ছলচাতুরি করে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই সিন্ডিকেট। প্রায় ৩ শতাধিক দোকানের মধ্যে ১৯৩টি দোকান কাগজপত্র জালিয়াতি করে ভুয়া ছবি ও পরিচয়পত্রের মাধ্যমে বরাদ্দ দেয়া হয়। সরকারি মার্কেটে প্রভাব খাটিয়ে নকশা বহির্ভূতভাবে শত শত দোকান বানিয়ে বিক্রি করা হয়। কিশোরগঞ্জের সাবেক এমপি আফজাল হোসেন ও তার সহযোগী ও ঢাকা টেড সেন্টার উত্তরের সভাপতি ও বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স মার্কেটের সভাপতি মোজাম্মেল হক মজু সিন্ডিকেট করে দোকান বাণিজ্য করেন। ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে আফজালসহ অন্যরা আত্মগোপন করলেও অবৈধ পন্থায় তৈরি করা দোকান এবং দখলদাররা বহাল রয়েছে। বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স মার্কেটে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত সদস্য ছিল ২৩৭০ জন। ২০১২-১৩ সালে আফজাল চক্র ৫৯১ জনকে ভুয়া ক্ষতিগ্রস্ত দেখিয়ে সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত করে আফজাল চক্রের অন্যতম সুবিধাভোগী মোজাম্মেল হক মজুসহ কতিপয় যুবলীগ নেতা ভাগাভাগি করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। শেখ হাসিনার ১৭ বছরে আওয়ামী লীগের লেজুড়বৃত্তি করে কোটি কোটি টাকার মালিক কিভাবে বিএনপির নেতা হল এ নিয়েও রয়েছে সাধারণ ব্যবসায়ীদের প্রশ্ন?
জানা যায়, ২০০৮ সালে লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার এক এমপি নাজিম উদ্দিনকে আহ্বায়ক থেকে বাদ দিয়ে কৌশলে ও টাকার জোরে রামগঞ্জ উপজেলা বিএনপির অহ্বায়ক হন মোজাম্মেল হক মজু। ফলে উপজেলা বিএনপি এখন ত্রিধাবিভক্ত। এক পক্ষের নেতৃত্বে মজু, আরেক পক্ষে নাজিম। তিনি গত ১৭ বছর আওয়ামী লীগের এমপি আফজালের সহযোগী ছিলেন। কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। আওয়ামী লীগের শাসন আমলে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে নিজের, আত্মীয়স্বজন ও পরিচিত জনের নামে দোকান নিয়েছেন অনেক। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় কিনেছেন একাধিক বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। গড়ে তোলেছেন বিলাসবহুল বাণিজ্যিক ভবন। আওয়ামী লীগের আমলে গুলিস্তান এলাকায় দাপিয়ে বেড়ানো মোজাম্মেল হক মজু এখন বিএনপির বড় নেতা। ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর ভাগিয়ে নিয়েছেন বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য পদ।
রাজধানীর এনেস্কো টাওয়ারে মোজাম্মেল হক মজুর বয়েছে একাধিক পরিচালক শেয়ার। এনেস্কো টাওয়ারে রয়েছে তার নামে ও আত্মীয়স্বজনের নামে শতাধিক দোকান। বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স, সিটি, নগর ও জাকের সুপার মার্কেটে অসংখ্য দোকান রয়েছে তার। ঢাকা ট্রেড সেন্টারে একাধিক দোকান। ঢাকার সেগুনবাগিচায়, ওয়ারি ও রামপুরায় ফ্ল্যাট রয়েছে। সাইনবোর্ড এলাকায় মার্কেট নির্মাণ কাজ চলমান। বিশ্বরোড এলাকায় ভবন রয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন নামে একাউন্ট রয়েছে। তার সম্পদের হিসাবে তার নিজ নামে, আত্মীয়স্বজনের ও পরিচিত জনের নামে যে সম্পদ রয়েছে তার মূল্য ৫শ’ কোটি টাকারও বেশি বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। সূত্রটি আরো জানায়, তার নিজের নামের বাইরে আত্মীয়স্বজনের ও পরিচিত যাদের নামেই সম্পদ করেছেন তার সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে তার হাতেই।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নথি থেকে জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে গুলিস্তান-ফুলবাড়িয়া এলাকার ১০টি মার্কেট বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে ঢাকা সিটি করপোরেশনের কাছে দোকান মালিকদের তালিকাসহ হস্তান্তর হয়। তালিকায় শুধুমাত্র দোকান মালিকদের নাম ও পিতার নাম ছিল। কোনো ছবি বা ঠিকানা ছিল না। এই সুযোগে একটি চক্র জালিয়াতির মাধ্যমে তৎকালীন বঙ্গবাজারের ৬৩৭টি ও গুলিস্তান মার্কেটের ৬০৮টি সঠিক তালিকার এক বছর পরে এর বাইরে বঙ্গবাজার হকার্স মার্কেটের ৪৯টি এবং গুলিস্তান হকার্স মার্কেটের ১৪৬টি (দুটি নাম পরে বাদ দেয়া হয়) নামের তালিকা ডিএসসিসিতে পাঠায়। যা ছিল সম্পূর্ন ভুয়া। তাদের মধ্যে ঢাকা ট্রেড সেন্টার দক্ষিণে ৪৯ ও উত্তরে ১৪৪ জনের নামে সিটি করপোরেশনের তহবিলে প্রথম কিস্তি বাবদ ১৫ হাজার টাকা করে জমা দেয়া হয়। ২০০৭ সালে প্রকৃত মালিকদের লটারির মাধ্যমে দোকান বরাদ্দ দেয়া হলে ১৯৩ জনের নামে কোনো বরাদ্দ হয়নি। তৎকালীন সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের তদারকিতে যোগসাজশে উত্তরের ১৪৪টি দোকানের মধ্যে ১২০-১২৫টির কাগজপত্র জালিয়াতি করে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে ৭০-৮০ লাখ টাকা করে নিয়ে সেগুলো বিক্রি করে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অনিয়মে জড়িত প্রায় সবাই লাপাত্তা হলেও বিএনপির নাম ভাঙিয়ে মোজাম্মেল হক মজু এখনো আছেন বহালে।
এ বিষয়ে রামগঞ্জের একাধিক বিএনপি নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মোজাম্মেল হক মজু রামগঞ্জ বিএনপিকে বিভক্তি সৃষ্টি করেছেন। অধিকাংশ বিএনপি নেতাই তার কর্যকলাপ পছন্দ করেন না। তারা অন্যতম কারণ হচ্ছে মজু আওয়ামী লীগ আমলে আওয়ামী লীগের সাথে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। এমনকি আওয়ামী লীগের কিশোরগঞ্জের এমপি আফজালের সহযোগী হিসেবে কাজ করে টাকা কামিয়েছেন। তাকে বিএনপির কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রমে দেখা যেতো না। আওয়ামী লীগের লোকজনের সাথেই ছিলো তার কর্মকা-। ৫ আগস্ট হাসিনা সরকার পতনের পর সে আবার বিএনপি সেজেছে। তবে নিজের আওয়ামী স্বত্বা প্রকাশ পেয়েছে গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পালনকালে। ওইদিন আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমানের সঙ্গে বিজয় দিবস পালন করতে দেখা যায় মোজাম্মেল হক মজুকে। এখন নতুন করে কৌশল বদলে ও টাকার জোরে ঢাকা মহানগরীর বিএনপির খাতায় নাম লিখিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাদের মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।
এ বিষয়ে ঢাকা টেড সেন্টার উত্তর ও বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স মার্কেটের সভাপতি মোজাম্মেল হক মজুর বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

ফুটপাথের মজুর সম্পদের পাহাড়

আপডেট টাইম : ১৭ ঘন্টা আগে

রাজধানীর গুলিস্তানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মালিকানাধীন বেশকয়েকটি মার্কেটে দোকান বরাদ্দে ভয়াবহ জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে একটি সিন্ডিকেট। তারা গুলিস্তান হকার্স মার্কেট ও বঙ্গবাজার হকার্স মার্কেট নামে একসময়ের সুপরিচিত মার্কেট দুটি এখন ঢাকা ট্রেড সেন্টার উত্তর এবং ঢাকা ট্রেড সেন্টার দক্ষিণ মার্কেট, নগর প্লাজা, সিটি প্লাজা ও জাকের সুপার মাকের্ট দোকান বরাদ্দের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা। ঢাকা ট্রেড সেন্টার উত্তরে ১৪৪টি ও ঢাকা ট্রেড সেন্টার দক্ষিণে ৪৯টি দোকান বরাদ্দে ছলচাতুরি করে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই সিন্ডিকেট। প্রায় ৩ শতাধিক দোকানের মধ্যে ১৯৩টি দোকান কাগজপত্র জালিয়াতি করে ভুয়া ছবি ও পরিচয়পত্রের মাধ্যমে বরাদ্দ দেয়া হয়। সরকারি মার্কেটে প্রভাব খাটিয়ে নকশা বহির্ভূতভাবে শত শত দোকান বানিয়ে বিক্রি করা হয়। কিশোরগঞ্জের সাবেক এমপি আফজাল হোসেন ও তার সহযোগী ও ঢাকা টেড সেন্টার উত্তরের সভাপতি ও বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স মার্কেটের সভাপতি মোজাম্মেল হক মজু সিন্ডিকেট করে দোকান বাণিজ্য করেন। ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে আফজালসহ অন্যরা আত্মগোপন করলেও অবৈধ পন্থায় তৈরি করা দোকান এবং দখলদাররা বহাল রয়েছে। বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স মার্কেটে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত সদস্য ছিল ২৩৭০ জন। ২০১২-১৩ সালে আফজাল চক্র ৫৯১ জনকে ভুয়া ক্ষতিগ্রস্ত দেখিয়ে সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত করে আফজাল চক্রের অন্যতম সুবিধাভোগী মোজাম্মেল হক মজুসহ কতিপয় যুবলীগ নেতা ভাগাভাগি করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। শেখ হাসিনার ১৭ বছরে আওয়ামী লীগের লেজুড়বৃত্তি করে কোটি কোটি টাকার মালিক কিভাবে বিএনপির নেতা হল এ নিয়েও রয়েছে সাধারণ ব্যবসায়ীদের প্রশ্ন?
জানা যায়, ২০০৮ সালে লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার এক এমপি নাজিম উদ্দিনকে আহ্বায়ক থেকে বাদ দিয়ে কৌশলে ও টাকার জোরে রামগঞ্জ উপজেলা বিএনপির অহ্বায়ক হন মোজাম্মেল হক মজু। ফলে উপজেলা বিএনপি এখন ত্রিধাবিভক্ত। এক পক্ষের নেতৃত্বে মজু, আরেক পক্ষে নাজিম। তিনি গত ১৭ বছর আওয়ামী লীগের এমপি আফজালের সহযোগী ছিলেন। কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। আওয়ামী লীগের শাসন আমলে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে নিজের, আত্মীয়স্বজন ও পরিচিত জনের নামে দোকান নিয়েছেন অনেক। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় কিনেছেন একাধিক বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। গড়ে তোলেছেন বিলাসবহুল বাণিজ্যিক ভবন। আওয়ামী লীগের আমলে গুলিস্তান এলাকায় দাপিয়ে বেড়ানো মোজাম্মেল হক মজু এখন বিএনপির বড় নেতা। ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর ভাগিয়ে নিয়েছেন বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য পদ।
রাজধানীর এনেস্কো টাওয়ারে মোজাম্মেল হক মজুর বয়েছে একাধিক পরিচালক শেয়ার। এনেস্কো টাওয়ারে রয়েছে তার নামে ও আত্মীয়স্বজনের নামে শতাধিক দোকান। বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স, সিটি, নগর ও জাকের সুপার মার্কেটে অসংখ্য দোকান রয়েছে তার। ঢাকা ট্রেড সেন্টারে একাধিক দোকান। ঢাকার সেগুনবাগিচায়, ওয়ারি ও রামপুরায় ফ্ল্যাট রয়েছে। সাইনবোর্ড এলাকায় মার্কেট নির্মাণ কাজ চলমান। বিশ্বরোড এলাকায় ভবন রয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন নামে একাউন্ট রয়েছে। তার সম্পদের হিসাবে তার নিজ নামে, আত্মীয়স্বজনের ও পরিচিত জনের নামে যে সম্পদ রয়েছে তার মূল্য ৫শ’ কোটি টাকারও বেশি বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। সূত্রটি আরো জানায়, তার নিজের নামের বাইরে আত্মীয়স্বজনের ও পরিচিত যাদের নামেই সম্পদ করেছেন তার সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে তার হাতেই।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নথি থেকে জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে গুলিস্তান-ফুলবাড়িয়া এলাকার ১০টি মার্কেট বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে ঢাকা সিটি করপোরেশনের কাছে দোকান মালিকদের তালিকাসহ হস্তান্তর হয়। তালিকায় শুধুমাত্র দোকান মালিকদের নাম ও পিতার নাম ছিল। কোনো ছবি বা ঠিকানা ছিল না। এই সুযোগে একটি চক্র জালিয়াতির মাধ্যমে তৎকালীন বঙ্গবাজারের ৬৩৭টি ও গুলিস্তান মার্কেটের ৬০৮টি সঠিক তালিকার এক বছর পরে এর বাইরে বঙ্গবাজার হকার্স মার্কেটের ৪৯টি এবং গুলিস্তান হকার্স মার্কেটের ১৪৬টি (দুটি নাম পরে বাদ দেয়া হয়) নামের তালিকা ডিএসসিসিতে পাঠায়। যা ছিল সম্পূর্ন ভুয়া। তাদের মধ্যে ঢাকা ট্রেড সেন্টার দক্ষিণে ৪৯ ও উত্তরে ১৪৪ জনের নামে সিটি করপোরেশনের তহবিলে প্রথম কিস্তি বাবদ ১৫ হাজার টাকা করে জমা দেয়া হয়। ২০০৭ সালে প্রকৃত মালিকদের লটারির মাধ্যমে দোকান বরাদ্দ দেয়া হলে ১৯৩ জনের নামে কোনো বরাদ্দ হয়নি। তৎকালীন সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের তদারকিতে যোগসাজশে উত্তরের ১৪৪টি দোকানের মধ্যে ১২০-১২৫টির কাগজপত্র জালিয়াতি করে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে ৭০-৮০ লাখ টাকা করে নিয়ে সেগুলো বিক্রি করে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অনিয়মে জড়িত প্রায় সবাই লাপাত্তা হলেও বিএনপির নাম ভাঙিয়ে মোজাম্মেল হক মজু এখনো আছেন বহালে।
এ বিষয়ে রামগঞ্জের একাধিক বিএনপি নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মোজাম্মেল হক মজু রামগঞ্জ বিএনপিকে বিভক্তি সৃষ্টি করেছেন। অধিকাংশ বিএনপি নেতাই তার কর্যকলাপ পছন্দ করেন না। তারা অন্যতম কারণ হচ্ছে মজু আওয়ামী লীগ আমলে আওয়ামী লীগের সাথে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। এমনকি আওয়ামী লীগের কিশোরগঞ্জের এমপি আফজালের সহযোগী হিসেবে কাজ করে টাকা কামিয়েছেন। তাকে বিএনপির কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রমে দেখা যেতো না। আওয়ামী লীগের লোকজনের সাথেই ছিলো তার কর্মকা-। ৫ আগস্ট হাসিনা সরকার পতনের পর সে আবার বিএনপি সেজেছে। তবে নিজের আওয়ামী স্বত্বা প্রকাশ পেয়েছে গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পালনকালে। ওইদিন আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমানের সঙ্গে বিজয় দিবস পালন করতে দেখা যায় মোজাম্মেল হক মজুকে। এখন নতুন করে কৌশল বদলে ও টাকার জোরে ঢাকা মহানগরীর বিএনপির খাতায় নাম লিখিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাদের মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।
এ বিষয়ে ঢাকা টেড সেন্টার উত্তর ও বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স মার্কেটের সভাপতি মোজাম্মেল হক মজুর বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।