ঢাকা , বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্ত্রী-সন্তানদের জন্য কি রেখে গেলেন এরশাদ

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মৃত্যুর পরও ভক্তদের মনে রেখে গেলেন অসংখ্য কৌতুহল। সেই সঙ্গে রেখে গেলেন কোটি কোটি শুভাকাঙ্খীর জন্য সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ। কিন্তু স্ত্রী-সন্তানদের জন্য কি রেখে গেলেন তিনি? সাবেক রাষ্ট্রপতির ছেলেমেয়ে নিয়ে রয়েছে অনেক মুখরোচক গল্প ও গুজব। তাই এরশাদ তার লেখা জীবনী গ্রন্থ ‘আমার কর্ম আমার জীবন’ বইয়ে তিন ছেলে এক মেয়ে রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।

২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি এরশাদ তার জন্ম, বেড়ে ওঠা, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণসহ জীবন ও কর্ম নিয়ে আত্মজীবনীমূলক বইটি প্রকাশ করেন। ‘আমার কর্ম আমার জীবন’ বইটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সবচেয়ে বড় মেয়ে মাহজাবিন (জেবিন)। দেশে লেখাপড়ার পর লন্ডনে গিয়ে শিক্ষাজীবন শেষ করেন। বিয়ে করে বর্তমানে লন্ডনেই অবস্থান করছেন তিনি। মেয়ে সাবিতা ও ছেলে নিকো জলিকে নিয়ে জেবিনের ছোট্ট সংসার। তবে জেবিনের মায়ের নাম উল্লেখ করেননি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ। আর এরশাদের ছেলেদের মধ্যে সবার বড় রাহগীর আল মাহি সাদ এরশাদ। জন্ম ১৯৮৩ সালে। সাদ প্রথমে আমেরিকান স্কুলে লেখাপড়া করেন। গ্রাজুয়েশন শেষে মালয়েশিয়াতে ব্যবসা করছেন।

বইটিতে আলম নামে আরেক ছেলের নাম উল্লেখ করেছেন এরশাদ। আলম সম্পর্কে বলেছেন, সে আমার ঠিক ঔরসজাত সন্তান নয়, তবে তার চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়।

এরিক এরশাদ হচ্ছেন এরশাদের কনিষ্ঠ সন্তান। বিদিশার গর্ভে ২০০১ সালের ১১ মার্চ তার জন্ম। বিদিশা-এরশাদের বিচ্ছেদ হলে এরিক বিদিশার কাছেই বেড়ে ওঠেন। এরিক সম্পর্কে বইয়ে এরশাদ লিখেছেন, স্কুলে পড়াশুনার পাশাপাশি সংগীতকে বেছে নিয়েছেন জীবনের অন্যতম সঙ্গী হিসেবে। আধুনিক, রবীন্দ্র, নজরুল সবই প্রিয়। মান্নাদের গান গাইতে খুব পছন্দ করে। আরো লিখেছে মা ছাড়া একজন সন্তানকে মানুষ করে তোলা কষ্টের, তা আমি এরিককে দিয়েই উপলব্ধি করেছি।

দিনে-রাতে বেশিরভাগ সময় রাজনৈতিক কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ও আমার সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ধর্ম-কর্মে ও মোটেই অবহেলা করে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়, কোরআন তেলাওয়াত করে থাকে। এই চার সন্তান ও স্ত্রীদের জন্য কি রেখে গেলেন এরশাদ। এ বিষয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্টের পরিচালক খালিদ আখতার জানান, এরশাদ নিজের ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষি জমি অনেক আগেই এতিমদের নামে লিখে দিয়েছেন। অবশিষ্ট সব স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি ট্রাস্টের নামে লিখে দিয়েছেন। যে ট্রাস্ট থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এরিকের ভরণপোষণ করা হবে। এরপর অবশিষ্ট অর্থ সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হবে। এরিকের পরবর্তী প্রজন্মও একইভাবে সুবিধা ভোগ করবেন।

এ ট্রাস্টের নামে রয়েছে ১৫ কোটি টাকার এফডিআর, রংপুরের পদাগঞ্জে অবস্থিত পল্লীবন্ধু কোল্ড স্টোরেজ, বারিধারার ফ্ল্যাট (প্রেসিডেন্ট পার্ক, যেখানে তিনি নিজে বসবাস করতেন), গুলশানের ফ্ল্যাট, বনানী বিদ্যানিকেতনের বিপরীতে অবস্থিত একটি ফ্ল্যাট, বনানী ইউআই শপিং কমপ্লেক্সের দুটি দোকান, রংপুর শহরে ৬৫ শতক জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বাসভবন (পল্লীনিবাস) ও নিজের নামে কেনা পাঁচটি গাড়ি।

এদিকে জীবনীতে তিন ছেলে এক মেয়ে উল্লেখ করলেও তাদের কোনো শর্ত রাখা হয়নি ট্রাস্টে। এ বিষয়ে এরশাদের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, ওই ছেলেমেয়েদের তিনি প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছেন। আর সাদের মা রওশন এরশাদের রয়েছে নিজস্ব চলার সম্পদ। যা তিনি উত্তরাধীকার সূত্রেই পাবেন। একাদশ জাতীয় সংসদের হলফনামায়ও এরশাদের তুলনায় রওশনের সম্পদ বেশি দেখা গেছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

স্ত্রী-সন্তানদের জন্য কি রেখে গেলেন এরশাদ

আপডেট টাইম : ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০১৯

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মৃত্যুর পরও ভক্তদের মনে রেখে গেলেন অসংখ্য কৌতুহল। সেই সঙ্গে রেখে গেলেন কোটি কোটি শুভাকাঙ্খীর জন্য সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ। কিন্তু স্ত্রী-সন্তানদের জন্য কি রেখে গেলেন তিনি? সাবেক রাষ্ট্রপতির ছেলেমেয়ে নিয়ে রয়েছে অনেক মুখরোচক গল্প ও গুজব। তাই এরশাদ তার লেখা জীবনী গ্রন্থ ‘আমার কর্ম আমার জীবন’ বইয়ে তিন ছেলে এক মেয়ে রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।

২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি এরশাদ তার জন্ম, বেড়ে ওঠা, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণসহ জীবন ও কর্ম নিয়ে আত্মজীবনীমূলক বইটি প্রকাশ করেন। ‘আমার কর্ম আমার জীবন’ বইটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সবচেয়ে বড় মেয়ে মাহজাবিন (জেবিন)। দেশে লেখাপড়ার পর লন্ডনে গিয়ে শিক্ষাজীবন শেষ করেন। বিয়ে করে বর্তমানে লন্ডনেই অবস্থান করছেন তিনি। মেয়ে সাবিতা ও ছেলে নিকো জলিকে নিয়ে জেবিনের ছোট্ট সংসার। তবে জেবিনের মায়ের নাম উল্লেখ করেননি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ। আর এরশাদের ছেলেদের মধ্যে সবার বড় রাহগীর আল মাহি সাদ এরশাদ। জন্ম ১৯৮৩ সালে। সাদ প্রথমে আমেরিকান স্কুলে লেখাপড়া করেন। গ্রাজুয়েশন শেষে মালয়েশিয়াতে ব্যবসা করছেন।

বইটিতে আলম নামে আরেক ছেলের নাম উল্লেখ করেছেন এরশাদ। আলম সম্পর্কে বলেছেন, সে আমার ঠিক ঔরসজাত সন্তান নয়, তবে তার চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়।

এরিক এরশাদ হচ্ছেন এরশাদের কনিষ্ঠ সন্তান। বিদিশার গর্ভে ২০০১ সালের ১১ মার্চ তার জন্ম। বিদিশা-এরশাদের বিচ্ছেদ হলে এরিক বিদিশার কাছেই বেড়ে ওঠেন। এরিক সম্পর্কে বইয়ে এরশাদ লিখেছেন, স্কুলে পড়াশুনার পাশাপাশি সংগীতকে বেছে নিয়েছেন জীবনের অন্যতম সঙ্গী হিসেবে। আধুনিক, রবীন্দ্র, নজরুল সবই প্রিয়। মান্নাদের গান গাইতে খুব পছন্দ করে। আরো লিখেছে মা ছাড়া একজন সন্তানকে মানুষ করে তোলা কষ্টের, তা আমি এরিককে দিয়েই উপলব্ধি করেছি।

দিনে-রাতে বেশিরভাগ সময় রাজনৈতিক কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ও আমার সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ধর্ম-কর্মে ও মোটেই অবহেলা করে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়, কোরআন তেলাওয়াত করে থাকে। এই চার সন্তান ও স্ত্রীদের জন্য কি রেখে গেলেন এরশাদ। এ বিষয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্টের পরিচালক খালিদ আখতার জানান, এরশাদ নিজের ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষি জমি অনেক আগেই এতিমদের নামে লিখে দিয়েছেন। অবশিষ্ট সব স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি ট্রাস্টের নামে লিখে দিয়েছেন। যে ট্রাস্ট থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এরিকের ভরণপোষণ করা হবে। এরপর অবশিষ্ট অর্থ সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হবে। এরিকের পরবর্তী প্রজন্মও একইভাবে সুবিধা ভোগ করবেন।

এ ট্রাস্টের নামে রয়েছে ১৫ কোটি টাকার এফডিআর, রংপুরের পদাগঞ্জে অবস্থিত পল্লীবন্ধু কোল্ড স্টোরেজ, বারিধারার ফ্ল্যাট (প্রেসিডেন্ট পার্ক, যেখানে তিনি নিজে বসবাস করতেন), গুলশানের ফ্ল্যাট, বনানী বিদ্যানিকেতনের বিপরীতে অবস্থিত একটি ফ্ল্যাট, বনানী ইউআই শপিং কমপ্লেক্সের দুটি দোকান, রংপুর শহরে ৬৫ শতক জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বাসভবন (পল্লীনিবাস) ও নিজের নামে কেনা পাঁচটি গাড়ি।

এদিকে জীবনীতে তিন ছেলে এক মেয়ে উল্লেখ করলেও তাদের কোনো শর্ত রাখা হয়নি ট্রাস্টে। এ বিষয়ে এরশাদের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, ওই ছেলেমেয়েদের তিনি প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছেন। আর সাদের মা রওশন এরশাদের রয়েছে নিজস্ব চলার সম্পদ। যা তিনি উত্তরাধীকার সূত্রেই পাবেন। একাদশ জাতীয় সংসদের হলফনামায়ও এরশাদের তুলনায় রওশনের সম্পদ বেশি দেখা গেছে।