ঢাকা , শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে রাজনৈতিক চক্রান্ত ব্যক্তি আক্রোশে পরিণত হয়েছে: জয়

বাংলাদেশে রাজনৈতিক চক্রান্ত ব্যক্তি আক্রোশে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে এবং তার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্ট সজীব ওয়াজেদ জয়। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন টাইমস পত্রিকায় লেখা এক নিবন্ধে তিনি এই মন্তব্য করেন। হত্যার ষড়যন্ত্রকে নিছক রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব বলে রেহাই দেওয়া উচিৎ হবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
ওয়াশিংটন টাইমসে লেখাটি যুক্তরাষ্ট্রের সময় বুধবার প্রকাশিত হয়। শুক্রবার সজীব ওয়াজেদ জয়ের ফেসবুক পেজে ইংরেজি লেখাটি অনুবাদ করে শেয়ার করা হয়।
জয় লিখেছেন, ‘দেড় বছর আগে হঠাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ থেকে অপ্রত্যাশিত একটি ফোনকল পেলাম। খবরটি ছিল ভিমড়ি খাওয়ার মত। কিছু লোক আমাকে অপহরণ এবং সম্ভবত মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছে। শেষ পর্যন্ত দেখা গেলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক ব্যক্তি সম্পর্কে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কাছে গোপনীয় তথ্য বিক্রি করার অপরাধে রবার্ট লাস্টিক নামে একজন প্রাক্তন এফবিআই এজেন্টকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আমিই সে রাজনৈতিক ব্যক্তি।’
তিনি লিখেছেন, ‘এফবিআইয়ের তথ্য কিনেছিলো যে লোক তার নাম রিজভি আহমেদ সিজার। সে এবং সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করে আসা ক’জন বাংলাদেশি এফবিআই এর কাছে থাকা আমার সম্পর্কে সব তথ্য পেতে লাস্টিককে টাকা দিয়েছিলো। আমার তথ্যই কেন? আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে। সরকারবিরোধী নেতারা আমাকে মৃত দেখতে চায় বলে। মামলাটি নতুন করে খবরে আসার কারণ, বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা সিজারের পূর্বের গতিবিধির পদচিহ্ন অনুসরণ করে তদন্ত চালিয়ে আসছিলেন, এ ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানাই। অনুসন্ধানের ফলাফলে বাংলাদেশেই সকল ষড়যন্ত্রের উৎস জানা গেলো।’
‘রাজধানী ঢাকার পুলিশ বিভাগ এক পত্রিকার বিশিষ্ট সম্পাদকের বাসায় তল্লাশি চালিয়ে এফবিআইর কাছ থেকে লাস্টিকের চুরি করা কিছু নথি খুঁজে পায়। ভীতিজনক ব্যাপার হল এতে আমার ঘর এবং অফিসের ঠিকানা, আমার দৈনন্দিন জীবনের গতিবিধি এবং এমনকি আমার গাড়ির লাইসেন্স প্লেটের নম্বরও রয়েছে। পত্রিকা সম্পাদক শফিক রেহমান পুলিশের কাছে স্বীকার করেন যে, তিনি লাস্টিকের কাছ থেকে এসব নথি পেয়েছেন। জনাব রেহমান হলেন আমার মায়ের দল এবং সরকার বিরোধী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতা খালেদা জিয়ার মুখ্য উপদেষ্টাদের মাঝে অন্যতম। আমার মায়ের তিনবারের শাসন আমলের মাঝে পড়ে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বেগম জিয়া একবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।’জয়ের ফেসবুক পেজে দেওয়া স্ট্যাটাস

জয় আক্ষেপ প্রকাশ করেন, ‘আমি বাংলাদেশের জটিল দলীয় রাজনীতির মূলে যাচ্ছি না। কিন্তু বেদনাদায়ক পরিষ্কার সত্য হলো- একটি সংগঠন আমাকে অপহরণের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে আমার দেশে গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে নাশকতা পর্যন্ত করে যাচ্ছে, এবং সেই সংগঠনটি হচ্ছে বিএনপি। ২০১৪ সালে শেখ হাসিনার পুনঃ নির্বাচন থেকেই বিএনপি সামাজিক বিশৃঙ্খলা এবং হিংস্রতাকে প্ররোচিত করে আসছে। তারা নির্বাচনকে বর্জন করেছিলো এই বলে যে, আমার মায়ের দলের বিরুদ্ধে কারচুপির করছে। অথচ আসল সত্য এই যে, বিএনপি নিশ্চিত জানতো তাদের প্রার্থীরা বড় ব্যবধানে হেরে যাবে এবং এজন্যই লড়াই না করে তারা বর্জনের পথ বেছে নেয়। বাংলাদেশে ভোটের লড়াইয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক হার হজম না করে গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য অর্থহীনভাবে রক্তপাতের পথে এগিয়ে যায় বিএনপি।’
তিনি লিখেছেন, ‘উগ্রবাদী জোটসঙ্গী জামায়াত-ই-ইসলামির সাহায্য নিয়ে বিএনপি হরতাল ডাকে, রেললাইন উপড়ে ফেলে, টায়ার পুড়িয়ে রাস্তা আটকায়, বাসে আগুন দেয়, রাজনৈতিক দলগুলোর অফিস তছনছ করে। প্রকাশ্য দিবালোকে জামায়াতি দুষ্কৃতিকারীরা আমার মায়ের দল আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নেতাদেরকে তাড়া করে রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। সরকার কোনওরকম পক্ষপাতিত্ব বা অনুগ্রহ না করে এইসব অপরাধীদের আটক করে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে এই সহিংসতার মোকাবেলা করে।’
নিবন্ধে তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমেরিকা নিবাসী সিজার বিএনপির উচ্চপদস্থ নেতার ছেলে। লাস্টিকের কাছ থেকে আমার ব্যাপারে তথ্য নেয়ার বিষয়টির অপরাধ সে স্বীকার করেছে। আদালতের নথিতে সুনির্দিষ্ট তার লক্ষ্য ছিলো, “প্রধানমন্ত্রীর ছেলে এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা”। সেটা হলাম আমি। সে বলেছে যে, তার ইচ্ছে ছিলো “ভয় দেখানো” , “অপহরণ করা” এবং আমার “ক্ষতিসাধন” করা। সে এমনকি লাস্টিকের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য “বাংলাদেশের এক সাংবাদিককে” প্রদানের কথা স্বীকার করে । অবশ্যই এগুলো সেই তথ্য যা বাংলাদেশের পুলিশ সম্পাদক শফিক রেহমানের বাড়িতে খুঁজে পায়। লাস্টিকের সাথে দেখা হবার এবং আর্থিক আদানপ্রদানে জড়িত হবার কথাও শফিক রেহমানের স্ত্রী বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেন। অথচ এটি খুবই প্রত্যাশিত যে, রাজনীতি এবং সহিংসতার সাথে জড়িত এই ঘটনাগুলোর বাস্তবতাকে বাংলাদেশের একাংশ অস্বীকার করবে এবং সত্যতাকে বিকৃত করবে।’
‘আমাকে অপহরণ করার বাস্তব পরিকল্পনার উপর সংবাদ পরিবেশনের বদলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের ধারাভাষ্যে বাংলাদেশ সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ব্যবস্থা গ্রহণকে “ভিন্নমত পোষণকারীদের উপরে আগ্রাসন” (নিউইয়র্ক টাইমস) হিসেবে উপস্থাপিত করা হয়েছে এবং “বাক-স্বাধীনতার প্রতি হুমকির সম্ভাবনা” (ভয়েস অব আমেরিকা) হিসেবে বিচার করেছে। দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে যে, বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতার জবাবে সরকারের গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কেও একই রকম আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়। সরকার কুকর্মকারীদের গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা পুনস্থাপিত করছে – এমন বিবৃতির পরিবর্তে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো মতামত দেয় যে, সরকার রাজনৈতিক বিরোধী দলগুলো ও বাক-স্বাধীনতাকে রুদ্ধ করে দিতে চায় (হিউম্যান রাইটস ওয়াচ) এবং বিরোধীদলগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে (অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল)।’

জয় লিখেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের দুই বছরের কুকর্মের জন্যই বেশিরভাগ গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতারযোগ্য অপরাধ করা ছাড়া অন্য কোনও কারণে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। প্রতিপক্ষ দলের সাথে জড়িত বলে দুষ্কৃতিকারীদের কি গ্রেফতার করা যাবে না? – এটি একটি হাস্যকর রকমের অযৌক্তিক ও বিপদজনক চিন্তাভাবনা। যদি অন্য কোন বিশ্বনেতৃত্বের সন্তানকে অপহরণ করার ষড়যন্ত্র উন্মোচিত হতো, তাহলে কি হতো? তখনও কি এভাবে সংবাদ পরিবেশিত ও প্রচারিত হতো? না, এখন যেভাবে হচ্ছে, সেভাবে হতো না।’

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

বাংলাদেশে রাজনৈতিক চক্রান্ত ব্যক্তি আক্রোশে পরিণত হয়েছে: জয়

আপডেট টাইম : ০৪:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ মে ২০১৬

বাংলাদেশে রাজনৈতিক চক্রান্ত ব্যক্তি আক্রোশে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে এবং তার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্ট সজীব ওয়াজেদ জয়। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন টাইমস পত্রিকায় লেখা এক নিবন্ধে তিনি এই মন্তব্য করেন। হত্যার ষড়যন্ত্রকে নিছক রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব বলে রেহাই দেওয়া উচিৎ হবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
ওয়াশিংটন টাইমসে লেখাটি যুক্তরাষ্ট্রের সময় বুধবার প্রকাশিত হয়। শুক্রবার সজীব ওয়াজেদ জয়ের ফেসবুক পেজে ইংরেজি লেখাটি অনুবাদ করে শেয়ার করা হয়।
জয় লিখেছেন, ‘দেড় বছর আগে হঠাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ থেকে অপ্রত্যাশিত একটি ফোনকল পেলাম। খবরটি ছিল ভিমড়ি খাওয়ার মত। কিছু লোক আমাকে অপহরণ এবং সম্ভবত মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছে। শেষ পর্যন্ত দেখা গেলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক ব্যক্তি সম্পর্কে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কাছে গোপনীয় তথ্য বিক্রি করার অপরাধে রবার্ট লাস্টিক নামে একজন প্রাক্তন এফবিআই এজেন্টকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আমিই সে রাজনৈতিক ব্যক্তি।’
তিনি লিখেছেন, ‘এফবিআইয়ের তথ্য কিনেছিলো যে লোক তার নাম রিজভি আহমেদ সিজার। সে এবং সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করে আসা ক’জন বাংলাদেশি এফবিআই এর কাছে থাকা আমার সম্পর্কে সব তথ্য পেতে লাস্টিককে টাকা দিয়েছিলো। আমার তথ্যই কেন? আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে। সরকারবিরোধী নেতারা আমাকে মৃত দেখতে চায় বলে। মামলাটি নতুন করে খবরে আসার কারণ, বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা সিজারের পূর্বের গতিবিধির পদচিহ্ন অনুসরণ করে তদন্ত চালিয়ে আসছিলেন, এ ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানাই। অনুসন্ধানের ফলাফলে বাংলাদেশেই সকল ষড়যন্ত্রের উৎস জানা গেলো।’
‘রাজধানী ঢাকার পুলিশ বিভাগ এক পত্রিকার বিশিষ্ট সম্পাদকের বাসায় তল্লাশি চালিয়ে এফবিআইর কাছ থেকে লাস্টিকের চুরি করা কিছু নথি খুঁজে পায়। ভীতিজনক ব্যাপার হল এতে আমার ঘর এবং অফিসের ঠিকানা, আমার দৈনন্দিন জীবনের গতিবিধি এবং এমনকি আমার গাড়ির লাইসেন্স প্লেটের নম্বরও রয়েছে। পত্রিকা সম্পাদক শফিক রেহমান পুলিশের কাছে স্বীকার করেন যে, তিনি লাস্টিকের কাছ থেকে এসব নথি পেয়েছেন। জনাব রেহমান হলেন আমার মায়ের দল এবং সরকার বিরোধী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতা খালেদা জিয়ার মুখ্য উপদেষ্টাদের মাঝে অন্যতম। আমার মায়ের তিনবারের শাসন আমলের মাঝে পড়ে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বেগম জিয়া একবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।’জয়ের ফেসবুক পেজে দেওয়া স্ট্যাটাস

জয় আক্ষেপ প্রকাশ করেন, ‘আমি বাংলাদেশের জটিল দলীয় রাজনীতির মূলে যাচ্ছি না। কিন্তু বেদনাদায়ক পরিষ্কার সত্য হলো- একটি সংগঠন আমাকে অপহরণের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে আমার দেশে গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে নাশকতা পর্যন্ত করে যাচ্ছে, এবং সেই সংগঠনটি হচ্ছে বিএনপি। ২০১৪ সালে শেখ হাসিনার পুনঃ নির্বাচন থেকেই বিএনপি সামাজিক বিশৃঙ্খলা এবং হিংস্রতাকে প্ররোচিত করে আসছে। তারা নির্বাচনকে বর্জন করেছিলো এই বলে যে, আমার মায়ের দলের বিরুদ্ধে কারচুপির করছে। অথচ আসল সত্য এই যে, বিএনপি নিশ্চিত জানতো তাদের প্রার্থীরা বড় ব্যবধানে হেরে যাবে এবং এজন্যই লড়াই না করে তারা বর্জনের পথ বেছে নেয়। বাংলাদেশে ভোটের লড়াইয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক হার হজম না করে গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য অর্থহীনভাবে রক্তপাতের পথে এগিয়ে যায় বিএনপি।’
তিনি লিখেছেন, ‘উগ্রবাদী জোটসঙ্গী জামায়াত-ই-ইসলামির সাহায্য নিয়ে বিএনপি হরতাল ডাকে, রেললাইন উপড়ে ফেলে, টায়ার পুড়িয়ে রাস্তা আটকায়, বাসে আগুন দেয়, রাজনৈতিক দলগুলোর অফিস তছনছ করে। প্রকাশ্য দিবালোকে জামায়াতি দুষ্কৃতিকারীরা আমার মায়ের দল আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নেতাদেরকে তাড়া করে রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। সরকার কোনওরকম পক্ষপাতিত্ব বা অনুগ্রহ না করে এইসব অপরাধীদের আটক করে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে এই সহিংসতার মোকাবেলা করে।’
নিবন্ধে তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমেরিকা নিবাসী সিজার বিএনপির উচ্চপদস্থ নেতার ছেলে। লাস্টিকের কাছ থেকে আমার ব্যাপারে তথ্য নেয়ার বিষয়টির অপরাধ সে স্বীকার করেছে। আদালতের নথিতে সুনির্দিষ্ট তার লক্ষ্য ছিলো, “প্রধানমন্ত্রীর ছেলে এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা”। সেটা হলাম আমি। সে বলেছে যে, তার ইচ্ছে ছিলো “ভয় দেখানো” , “অপহরণ করা” এবং আমার “ক্ষতিসাধন” করা। সে এমনকি লাস্টিকের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য “বাংলাদেশের এক সাংবাদিককে” প্রদানের কথা স্বীকার করে । অবশ্যই এগুলো সেই তথ্য যা বাংলাদেশের পুলিশ সম্পাদক শফিক রেহমানের বাড়িতে খুঁজে পায়। লাস্টিকের সাথে দেখা হবার এবং আর্থিক আদানপ্রদানে জড়িত হবার কথাও শফিক রেহমানের স্ত্রী বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেন। অথচ এটি খুবই প্রত্যাশিত যে, রাজনীতি এবং সহিংসতার সাথে জড়িত এই ঘটনাগুলোর বাস্তবতাকে বাংলাদেশের একাংশ অস্বীকার করবে এবং সত্যতাকে বিকৃত করবে।’
‘আমাকে অপহরণ করার বাস্তব পরিকল্পনার উপর সংবাদ পরিবেশনের বদলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের ধারাভাষ্যে বাংলাদেশ সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ব্যবস্থা গ্রহণকে “ভিন্নমত পোষণকারীদের উপরে আগ্রাসন” (নিউইয়র্ক টাইমস) হিসেবে উপস্থাপিত করা হয়েছে এবং “বাক-স্বাধীনতার প্রতি হুমকির সম্ভাবনা” (ভয়েস অব আমেরিকা) হিসেবে বিচার করেছে। দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে যে, বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতার জবাবে সরকারের গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কেও একই রকম আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়। সরকার কুকর্মকারীদের গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা পুনস্থাপিত করছে – এমন বিবৃতির পরিবর্তে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো মতামত দেয় যে, সরকার রাজনৈতিক বিরোধী দলগুলো ও বাক-স্বাধীনতাকে রুদ্ধ করে দিতে চায় (হিউম্যান রাইটস ওয়াচ) এবং বিরোধীদলগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে (অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল)।’

জয় লিখেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের দুই বছরের কুকর্মের জন্যই বেশিরভাগ গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতারযোগ্য অপরাধ করা ছাড়া অন্য কোনও কারণে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। প্রতিপক্ষ দলের সাথে জড়িত বলে দুষ্কৃতিকারীদের কি গ্রেফতার করা যাবে না? – এটি একটি হাস্যকর রকমের অযৌক্তিক ও বিপদজনক চিন্তাভাবনা। যদি অন্য কোন বিশ্বনেতৃত্বের সন্তানকে অপহরণ করার ষড়যন্ত্র উন্মোচিত হতো, তাহলে কি হতো? তখনও কি এভাবে সংবাদ পরিবেশিত ও প্রচারিত হতো? না, এখন যেভাবে হচ্ছে, সেভাবে হতো না।’