ঢাকা , শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্টিয়ারিং হাতে জাপা ফ্যাক্টর জামায়াতের ভোট

বাঙাল কণ্ঠ নিউজঃ সম্ভাব্য প্রার্থীদের পদচারণায় মুখর বগুড়া-৩ আসন। দুই বড় রাজনৈতিক দলের একাধিক নেতা চষে বেড়াচ্ছেন মাঠ। বিভিন্ন সামাজিক কাজ, দলীয় সভা-সমাবেশ ও হাটবাজারে সাধারণ মানুষের সাথে কুশল বিনিময় করছেন নেতারা। সম্ভাব্য প্রার্থীরা এলাকার পাশাপাশি কেন্দ্রেও নিয়মিত যাতায়াত করছেন। দলের
মনোনয়ন পেতে তারা দলীয় কার্যক্রমেও সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।
বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলা ৭টি সংসদীয় আসনে বিভক্ত। এসব আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জাসদ (ইনু) এর সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা চোখে পড়ছে। বিগত দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি, জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোট ও সমমনা দলগুলো নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় এখানে আওয়ামী লীগ, জাপা ও জাসদ নির্বাচনে অংশ নেয়। ওই নির্বাচনে ৭টি আসনের মধ্যে ৫টিতে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এরমধ্যে আওয়ামী লীগের ২ জন, জাপার ৪ জন  ও জাসদের (ইনু) একজন  মনোনীত প্রার্থী সংসদ সদস্য হন। এ মুহূর্তে নিবন্ধন হারা জামায়াতের কোনো প্রকাশ্য তৎপরতা চোখে পড়ছে না। তবে জামায়াতের বড় ভোটব্যাংক জয়-পরাজয়ে ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করবে এবারের নির্বাচনে। ফলে গোপনে জামায়াত নেতাদের সাথে সখ্য তৈরিতে ব্যস্ত সব দলের প্রার্থী।
বর্তমান বগুড়া-৩ আসনের জাপা থেকে নির্বাচিত এমপি অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম তালুকদার এলাকার তেমন কোনো উন্নয়ন কার্যক্রম না করায় সমালোচনা তার বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ নেতাদের মুখেও তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ শোনা যায়।
আদমদীঘি ও দুপচাঁচিয়া  উপজেলা নিয়ে বগুড়া-৩ সংসদীয় আসন গঠিত। পশ্চিম বগুড়া নামে পরিচিত এ আসনের মধ্যে রয়েছে শান্তাহার রেলওয়ে জংশন। এর পাশেই রয়েছে নওগাঁ জেলা শহর।
এ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকার শীর্ষে থাকা আদমদীঘি উপজেলা সভাপতি আনছার আলী মৃধা ২৫ জুলাই হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। তার  মৃত্যুতে দলটির পক্ষে কে মনোনয়ন পাবেন তার হিসাব নিকাশ নতুন করে শুরু হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগে আনছার আলী মৃধার জনপ্রিয়তা ছিল বেশি। সাধারণ মানুষের মাঝেও ওই নেতার গ্রহণযোগ্যতা ছিল। ফলে নৌকার মনোনয়ন তিনিই পেতেন বলে আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল। ওই নেতার মৃত্যুতে দলটি কাকে মনোনয়ন দেবেন সেই বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে আরো বেশ কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। তবে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে যার বেশি জনপ্রিয়তা এবং সংগঠনপ্রিয়তা আছে তাকেই মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। সেই দৌড়ে এখন পর্যন্ত এগিয়ে আছেন আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম খান রাজু। এছাড়াও নৌকার প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে জেলা  সহসভাপতি সোলায়মান আলী মাস্টার, দুপচাঁচিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান খান সেলিম।
বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক এমপি ও রাজশাহী বিভাগীয় সহসাংগাঠনিক সম্পাদক আবদুল মোমিন তালুকদার খোকা, তার ছোট ভাই ও আদমদীঘি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মুহিত তালুকদার, বগুড়া শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক চৌধুরী হিরু, বগুড়া জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এডভোকেট মোকলেছুর রহমান, জেলা বিএনপির কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান খান মুক্তা, সান্তাহার পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র ফিরোজ মো. কামরুল হাসান, সন্তাহার পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু, জেলা বিএনপি নেতা সুলতান মাহমুদ চৌধুরীর নাম শোনা যাচ্ছে।
জাপার বর্তমান এমপি ও জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম তালুকদারও  সম্ভাব্য প্রার্থী।
অপরদিকে জামায়াত দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারলেও তাদের ভোট এই আসনেও জয়-পরাজয়ের জন্য মূল ভূমিকা হিসেবে কাজ করবে। ফলে দুই বড় দলের অনেক সম্ভাব্য প্রার্থী গোপনে জামায়াত নেতাদের সঙ্গে যোগযোগ রাখছেন বলে জানাগেছে।
আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম খান রাজু বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই আমি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তিনি শতভাগ আশাবাদী দল তাকে মনোনয়ন দেবেন। এজন্য ইতিমধ্যেই তিনি তৃণমূল কর্মীদের সংঘটিত করছেন।
বগুড়া শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক চৌধুরী হিরু বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী আমি আগামী নির্বাচনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। তার মতে দলীয় কার্যক্রম, জনপ্রিয়তা এবং দীর্ঘদিন রাজনীতির সঙ্গে থাকায় কেন্দ্র ধানের শীষের টিকিট তার হাতেই দেবে। তিনি আশাবাদী মনোনয়ন পেলে নির্বাচনে জয়ী হবেন।
আদমদীঘি উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মুহিত তালুকদার বলেন, দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে আছি। নির্বাচনী প্রস্তুতির আগে দলকে গোছানোর কাজে বর্তমানে তিনি বেশি মনোযোগ দিয়েছেন। সদস্য নবায়ন এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমসহ সাংগঠনিক সব ধরনের কার্যক্রমে তিনি অংশ নিয়ে দলকে শক্তিশালী করার জন্য দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় বিএনপি কাজের মূল্যায়ন করে তাকেই মনোনয়ন দেবেন বলে তিনি আশাবাদী।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

স্টিয়ারিং হাতে জাপা ফ্যাক্টর জামায়াতের ভোট

আপডেট টাইম : ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭

বাঙাল কণ্ঠ নিউজঃ সম্ভাব্য প্রার্থীদের পদচারণায় মুখর বগুড়া-৩ আসন। দুই বড় রাজনৈতিক দলের একাধিক নেতা চষে বেড়াচ্ছেন মাঠ। বিভিন্ন সামাজিক কাজ, দলীয় সভা-সমাবেশ ও হাটবাজারে সাধারণ মানুষের সাথে কুশল বিনিময় করছেন নেতারা। সম্ভাব্য প্রার্থীরা এলাকার পাশাপাশি কেন্দ্রেও নিয়মিত যাতায়াত করছেন। দলের
মনোনয়ন পেতে তারা দলীয় কার্যক্রমেও সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।
বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলা ৭টি সংসদীয় আসনে বিভক্ত। এসব আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জাসদ (ইনু) এর সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা চোখে পড়ছে। বিগত দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি, জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোট ও সমমনা দলগুলো নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় এখানে আওয়ামী লীগ, জাপা ও জাসদ নির্বাচনে অংশ নেয়। ওই নির্বাচনে ৭টি আসনের মধ্যে ৫টিতে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এরমধ্যে আওয়ামী লীগের ২ জন, জাপার ৪ জন  ও জাসদের (ইনু) একজন  মনোনীত প্রার্থী সংসদ সদস্য হন। এ মুহূর্তে নিবন্ধন হারা জামায়াতের কোনো প্রকাশ্য তৎপরতা চোখে পড়ছে না। তবে জামায়াতের বড় ভোটব্যাংক জয়-পরাজয়ে ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করবে এবারের নির্বাচনে। ফলে গোপনে জামায়াত নেতাদের সাথে সখ্য তৈরিতে ব্যস্ত সব দলের প্রার্থী।
বর্তমান বগুড়া-৩ আসনের জাপা থেকে নির্বাচিত এমপি অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম তালুকদার এলাকার তেমন কোনো উন্নয়ন কার্যক্রম না করায় সমালোচনা তার বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ নেতাদের মুখেও তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ শোনা যায়।
আদমদীঘি ও দুপচাঁচিয়া  উপজেলা নিয়ে বগুড়া-৩ সংসদীয় আসন গঠিত। পশ্চিম বগুড়া নামে পরিচিত এ আসনের মধ্যে রয়েছে শান্তাহার রেলওয়ে জংশন। এর পাশেই রয়েছে নওগাঁ জেলা শহর।
এ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকার শীর্ষে থাকা আদমদীঘি উপজেলা সভাপতি আনছার আলী মৃধা ২৫ জুলাই হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। তার  মৃত্যুতে দলটির পক্ষে কে মনোনয়ন পাবেন তার হিসাব নিকাশ নতুন করে শুরু হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগে আনছার আলী মৃধার জনপ্রিয়তা ছিল বেশি। সাধারণ মানুষের মাঝেও ওই নেতার গ্রহণযোগ্যতা ছিল। ফলে নৌকার মনোনয়ন তিনিই পেতেন বলে আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল। ওই নেতার মৃত্যুতে দলটি কাকে মনোনয়ন দেবেন সেই বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে আরো বেশ কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। তবে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে যার বেশি জনপ্রিয়তা এবং সংগঠনপ্রিয়তা আছে তাকেই মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। সেই দৌড়ে এখন পর্যন্ত এগিয়ে আছেন আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম খান রাজু। এছাড়াও নৌকার প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে জেলা  সহসভাপতি সোলায়মান আলী মাস্টার, দুপচাঁচিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান খান সেলিম।
বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক এমপি ও রাজশাহী বিভাগীয় সহসাংগাঠনিক সম্পাদক আবদুল মোমিন তালুকদার খোকা, তার ছোট ভাই ও আদমদীঘি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মুহিত তালুকদার, বগুড়া শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক চৌধুরী হিরু, বগুড়া জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এডভোকেট মোকলেছুর রহমান, জেলা বিএনপির কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান খান মুক্তা, সান্তাহার পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র ফিরোজ মো. কামরুল হাসান, সন্তাহার পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু, জেলা বিএনপি নেতা সুলতান মাহমুদ চৌধুরীর নাম শোনা যাচ্ছে।
জাপার বর্তমান এমপি ও জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম তালুকদারও  সম্ভাব্য প্রার্থী।
অপরদিকে জামায়াত দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারলেও তাদের ভোট এই আসনেও জয়-পরাজয়ের জন্য মূল ভূমিকা হিসেবে কাজ করবে। ফলে দুই বড় দলের অনেক সম্ভাব্য প্রার্থী গোপনে জামায়াত নেতাদের সঙ্গে যোগযোগ রাখছেন বলে জানাগেছে।
আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম খান রাজু বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই আমি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তিনি শতভাগ আশাবাদী দল তাকে মনোনয়ন দেবেন। এজন্য ইতিমধ্যেই তিনি তৃণমূল কর্মীদের সংঘটিত করছেন।
বগুড়া শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক চৌধুরী হিরু বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী আমি আগামী নির্বাচনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। তার মতে দলীয় কার্যক্রম, জনপ্রিয়তা এবং দীর্ঘদিন রাজনীতির সঙ্গে থাকায় কেন্দ্র ধানের শীষের টিকিট তার হাতেই দেবে। তিনি আশাবাদী মনোনয়ন পেলে নির্বাচনে জয়ী হবেন।
আদমদীঘি উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মুহিত তালুকদার বলেন, দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে আছি। নির্বাচনী প্রস্তুতির আগে দলকে গোছানোর কাজে বর্তমানে তিনি বেশি মনোযোগ দিয়েছেন। সদস্য নবায়ন এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমসহ সাংগঠনিক সব ধরনের কার্যক্রমে তিনি অংশ নিয়ে দলকে শক্তিশালী করার জন্য দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় বিএনপি কাজের মূল্যায়ন করে তাকেই মনোনয়ন দেবেন বলে তিনি আশাবাদী।