ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধূমপানের পর নামাজ আদায় করা যাবে কি

পৃথিবীতে প্রতিবছর ৫৮ লাখের বেশি মানুষ মারা যায় ধূমপানের কারণে মারা যাচ্ছেন। এতে আর্থিক অপচয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্যগত ক্ষতিও রয়েছে। এসব কিছু জেনে শুনেও মানুষ ধূমপানের মতো ধ্বংসাত্মক বিষয়ে জড়িয়ে থাকে। ধূমপানের অভ্যাসে আর্থিক অপচয় ও সাস্থ্যগত গুরুতর ক্ষতি থাকায় ধূমপানের অভ্যাস করা নাজায়েজ।

আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, তোমরা নিজের হাতে নিজেদের ধ্বংসে নিক্ষেপ করো না। (সুরা বাকারা: ১৯৫)

আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, যারা রাসুলকে অনুসরণ করে, তিনি তাদের জন্য পবিত্র বস্তুসমূহ জায়েজ করেন এবং অপবিত্র ও খারাপ বস্তু তাদের জন্য হারাম করেন।

আল্লাহ বলেন, যারা সেই নিরক্ষর রাসুলের অনুসরণ করে চলে যার কথা তারা তাদের নিকট রক্ষিত তাওরাত ও ইনজিলে লিখিত পায়, যে মানুষকে সৎ কাজের নির্দেশ দেয় ও অন্যায় কাজ করতে নিষেধ করে, আর সে তাদের জন্য পবিত্র বস্তুসমূহ জায়েজ করে এবং অপবিত্র ও খারাপ বস্তু তাদের জন্য হারাম করে। (সুরা আরাফ: ১৫৭)

জনসমক্ষে ধুমপান করলে বা ধুমপানের গন্ধ মুখে নিয়ে জনসমাগমে গেলে তা অন্যদের কষ্ট ও ক্ষতির কারণ হয়। এটাও গুনাহের কাজ। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, যে আল্লাহ তায়ালা ও শেষ দিবসের ওপর ইমান রাখে সে যেন তার আশপাশের মানুষদের কষ্ট না দেয়। (সহিহ বুখারি)

আর ধূমপানের কারণে মুখ দুর্গন্ধযুক্ত হলে, এ অবস্থায় নামাজে দাঁড়ানো মাকরূহে তাহরীমী। বরং এ অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করাও মাকরূহ। হাদীস শরীফে ধূমপানের চেয়ে অনেক কম দুর্গন্ধ বস্ত্ত কাঁচা পেঁয়াজ-রসুন খেয়ে মসজিদে প্রবেশ করতেও নিষেধ করা হয়েছে। তাই কারো যদি ধূমপানের অভ্যাস থাকে, তাহলে তার জন্য তা ছেড়ে দেওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করা আবশ্যক। এরপরও ধূমপানের অভ্যাস থাকলে নামাজ আদায়ের আগে শরীর থেকে সিগারেটের দুর্গন্ধ ভালোভাবে দূর করতে হবে। দুর্গন্ধযুক্ত অবস্থায় নামাযে দাঁড়ানো মাকরুহ বা অপছন্দনীয় হওয়ায় ধূমপানের পর মুখের দুর্গন্ধ দূর না করে নামাজে দাঁড়ানো মাকরুহ হবে।

অতএব বিড়ি-সিগারেটের তীব্র দুর্গন্ধের সাথে মসজিদে প্রবেশ করা যে নিষিদ্ধ হবে তা তো সহজেই অনুমেয়। অবশ্য এ কারণে নামাজ ত্যাগ করা যাবে না এবং মসজিদে গমনাগমনও বন্ধ করা যাবে না। বরং অতি দ্রুত এ বদ অভ্যাস ত্যাগ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে হবে। আর নামায আদায়ের পূর্বে এবং মসজিদে প্রবেশের আগে ভালো করে মেসওয়াক বা ব্রাশ করে দুর্গন্ধ দূর করে নিতে হবে। -(ফাতাওয়াল লাজনাতিদ দাইমা ১৩/৫৬; আলফাতাওয়াশ শারইয়্যাহ ১০/১৪৫; রদ্দুল মুহতার ১/৬৬১)।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

ধূমপানের পর নামাজ আদায় করা যাবে কি

আপডেট টাইম : ০৪:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০২৪

পৃথিবীতে প্রতিবছর ৫৮ লাখের বেশি মানুষ মারা যায় ধূমপানের কারণে মারা যাচ্ছেন। এতে আর্থিক অপচয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্যগত ক্ষতিও রয়েছে। এসব কিছু জেনে শুনেও মানুষ ধূমপানের মতো ধ্বংসাত্মক বিষয়ে জড়িয়ে থাকে। ধূমপানের অভ্যাসে আর্থিক অপচয় ও সাস্থ্যগত গুরুতর ক্ষতি থাকায় ধূমপানের অভ্যাস করা নাজায়েজ।

আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, তোমরা নিজের হাতে নিজেদের ধ্বংসে নিক্ষেপ করো না। (সুরা বাকারা: ১৯৫)

আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, যারা রাসুলকে অনুসরণ করে, তিনি তাদের জন্য পবিত্র বস্তুসমূহ জায়েজ করেন এবং অপবিত্র ও খারাপ বস্তু তাদের জন্য হারাম করেন।

আল্লাহ বলেন, যারা সেই নিরক্ষর রাসুলের অনুসরণ করে চলে যার কথা তারা তাদের নিকট রক্ষিত তাওরাত ও ইনজিলে লিখিত পায়, যে মানুষকে সৎ কাজের নির্দেশ দেয় ও অন্যায় কাজ করতে নিষেধ করে, আর সে তাদের জন্য পবিত্র বস্তুসমূহ জায়েজ করে এবং অপবিত্র ও খারাপ বস্তু তাদের জন্য হারাম করে। (সুরা আরাফ: ১৫৭)

জনসমক্ষে ধুমপান করলে বা ধুমপানের গন্ধ মুখে নিয়ে জনসমাগমে গেলে তা অন্যদের কষ্ট ও ক্ষতির কারণ হয়। এটাও গুনাহের কাজ। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, যে আল্লাহ তায়ালা ও শেষ দিবসের ওপর ইমান রাখে সে যেন তার আশপাশের মানুষদের কষ্ট না দেয়। (সহিহ বুখারি)

আর ধূমপানের কারণে মুখ দুর্গন্ধযুক্ত হলে, এ অবস্থায় নামাজে দাঁড়ানো মাকরূহে তাহরীমী। বরং এ অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করাও মাকরূহ। হাদীস শরীফে ধূমপানের চেয়ে অনেক কম দুর্গন্ধ বস্ত্ত কাঁচা পেঁয়াজ-রসুন খেয়ে মসজিদে প্রবেশ করতেও নিষেধ করা হয়েছে। তাই কারো যদি ধূমপানের অভ্যাস থাকে, তাহলে তার জন্য তা ছেড়ে দেওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করা আবশ্যক। এরপরও ধূমপানের অভ্যাস থাকলে নামাজ আদায়ের আগে শরীর থেকে সিগারেটের দুর্গন্ধ ভালোভাবে দূর করতে হবে। দুর্গন্ধযুক্ত অবস্থায় নামাযে দাঁড়ানো মাকরুহ বা অপছন্দনীয় হওয়ায় ধূমপানের পর মুখের দুর্গন্ধ দূর না করে নামাজে দাঁড়ানো মাকরুহ হবে।

অতএব বিড়ি-সিগারেটের তীব্র দুর্গন্ধের সাথে মসজিদে প্রবেশ করা যে নিষিদ্ধ হবে তা তো সহজেই অনুমেয়। অবশ্য এ কারণে নামাজ ত্যাগ করা যাবে না এবং মসজিদে গমনাগমনও বন্ধ করা যাবে না। বরং অতি দ্রুত এ বদ অভ্যাস ত্যাগ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে হবে। আর নামায আদায়ের পূর্বে এবং মসজিদে প্রবেশের আগে ভালো করে মেসওয়াক বা ব্রাশ করে দুর্গন্ধ দূর করে নিতে হবে। -(ফাতাওয়াল লাজনাতিদ দাইমা ১৩/৫৬; আলফাতাওয়াশ শারইয়্যাহ ১০/১৪৫; রদ্দুল মুহতার ১/৬৬১)।