ঢাকা , সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে নফল নামাজের সময় রয়েছে

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ মানুষের দেহ চলমান। সুস্থতার জন্য নড়াচড়া, হাঁটাচলা ও উঠবস দরকার। ৫ ওয়াক্ত সালাতে মসজিদে যাওয়া-আসা করতে হয়। নামাজে উঠবস করতে হয়। এ সবই উপকারী। ৫ ওয়াক্ত সালাতের জন্য ৫টি সময় রয়েছে। এছাড়াও সুন্নত ও নফল নামাজের সময় রয়েছে। এ সময়গুলোর চিকিৎসাবিজ্ঞানগত উপকারিতা রয়েছে।

ফজরের সময় ও চিকিৎসাবিজ্ঞান : ফজরের সময় নামাজ আদায় করলে সারা রাত ঘুমের পর হালকা অনুশীলন হয়ে যায়। এ সময় পাকস্থলী খালি থাকে, তাই কঠিন অনুশীলন শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এ সময় নামাজ আদায় করলে নামাজি অবসাদগ্রস্ততা ও অচলতা থেকে মুক্তি পায়। মস্তিষ্ক ফ্রি হয়ে ফের চিন্তা করার জন্য প্রস্তুত হয়। এ সময় নামাজি হেঁটে মসজিদে যায় আর আত্মা পরিচ্ছন্ন, প্রশান্ত পরিবেশ থেকে সূক্ষ্ম অনুভূতি লাভ করে। এসবই উপকারী। এ সময়ে দেহও পরিষ্কার হয়। দাঁত পরিষ্কার, অঙ্গ ধোয়া ও প্রস্রাব-পায়খানা থেকে পবিত্রতা অর্জন হয়ে যায়। এতে জীবাণুর আক্রমণ থেকে বাঁচা যায়। ডা. মাহমুদ চুগতাই বলেন, অন্ত্ররোগ ও আলসার থেকেও বাঁচা যায়। রোমের পাদরি হিলার বলেন, ভোরের নামাজের জন্য ওঠা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাশ্চর্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। (প্রার্থনা গ্রন্থ)।

জোহরের সময় ও চিকিৎসাবিজ্ঞান : মানুষ জীবিকার জন্য দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন কাজ করে। এতে ধুলা, ময়লা, বিষাক্ত কেমিক্যাল শরীরে লাগে। দেহে জীবাণু আক্রমণ করে। অজু করলে এসব দূর হয় এবং (ক্লান্তি দূর হয়ে) দেহ পুনরুজ্জীবন লাভ করে। গরমের কারণে সূর্য ঢলে পড়ার সময় বিষাক্ত গ্যাস বের হয়। এ গ্যাস মানবদেহে প্রভাব ফেললে মস্তিষ্কের ক্ষতি ও পাগলামিসহ বিভিন্ন রোগ হতে পারে। এ সময় অজু করে নামাজ আদায় করলে এ গ্যাস প্রভাব ফেলতে পারে না। ফলে দেহ বিভিন্ন রোগ থেকে বেঁচে যায়। এ সময় আল্লাহ নামাজ ফরজ করে আমাদের জন্য অনুগ্রহ করেছেন।

আসরের সময় ও চিকিৎসাবিজ্ঞান : পৃথিবী দু-ধরনের গতিতে চলে। লম্ব ও বৃত্তীয়। যখন সূর্য ঢলতে থাকে তখন পৃথিবীর ঘূর্ণন কমতে থাকে। এমনকি আসরের সময় একেবারেই কমে যায়। এ সময় রাতের অনুভূতি প্রবল হতে  থাকে। প্রকৃতির মধ্যে স্থবিরতা এবং অবসাদগ্রস্ততা প্রদর্শিত হতে থাকে। আসরের নামাজের সময় অবচেতন অনুভূতির শুরু হয়। এ সময় নামাজ আদায় করলে অতিরিক্ত অবসাদগ্রস্ততা, অবচেতন অনুভূতির আক্রমণ থেকে বাঁচা যায়। মানসিক চাপ ও অস্থিরতা কমে। নূরানি রশ্মি নামাজিকে প্রশান্তি দান করে।

মাগরিবের সময় ও চিকিৎসাবিজ্ঞান : সারাদিন মানুষ জীবিকার জন্য শ্রম ও কষ্টের মধ্যে কাটায়। মাগরিবের সময় ওজু করে নামাজ আদায়ের ফলে আত্মিক ও দৈহিক প্রশান্তি লাভ হয়। আল্লাহর গোলাম এটিও প্রমাণ হয়। এ সময় নামাজ আদায়ে পরিবারের বাচ্চারাও অংশগ্রহণ করতে পারে। এতে বাচ্চারা অনুগত, পুণ্যশীল হয়। এ সময় পরিবারের মধ্যে আনন্দের রেশ বয়ে যায়।

এশার সময় ও চিকিৎসাবিজ্ঞান : মানুষ কাজ শেষ করে বাসায় ফিরে রাতে প্রচুর খায়। এ সময় খেয়ে শুয়ে পড়লে বিভিন্ন রোগ হতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, অল্প ব্যায়াম করে বিছানায় গেলে কোনো সমস্যা হবে না। এশার নামাজ ব্যায়ামের চেয়েও বেশি উপযোগী। এ নামাজ আদায়ে শান্তি পাওয়া যায়, খাদ্য হজম হয় ও অস্থিরতা দূর হয়।
তাহাজ্জুদের সময় ও চিকিৎসাবিজ্ঞান : এ সময়ে সালাত আদায় করা অস্বস্তি, নিদ্রাহীনতা, হার্ট, স্নায়ু সংকোচন ও বর্ধন এবং মাথার বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা। ডা. মাহমুদ চুগতাই বলেন, যারা দূরের জিনিস দেখে না, এ সময় নামাজ আদায় করা তাদের চিকিৎসা। এছাড়াও এ সময়ে নামাজ আদায় করলে বুদ্ধি, আনন্দ এবং অসাধারণ শক্তির সৃষ্টি হয়, যা নামাজিকে সারাদিন উৎফুল্ল রাখে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে নফল নামাজের সময় রয়েছে

আপডেট টাইম : ০২:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ মানুষের দেহ চলমান। সুস্থতার জন্য নড়াচড়া, হাঁটাচলা ও উঠবস দরকার। ৫ ওয়াক্ত সালাতে মসজিদে যাওয়া-আসা করতে হয়। নামাজে উঠবস করতে হয়। এ সবই উপকারী। ৫ ওয়াক্ত সালাতের জন্য ৫টি সময় রয়েছে। এছাড়াও সুন্নত ও নফল নামাজের সময় রয়েছে। এ সময়গুলোর চিকিৎসাবিজ্ঞানগত উপকারিতা রয়েছে।

ফজরের সময় ও চিকিৎসাবিজ্ঞান : ফজরের সময় নামাজ আদায় করলে সারা রাত ঘুমের পর হালকা অনুশীলন হয়ে যায়। এ সময় পাকস্থলী খালি থাকে, তাই কঠিন অনুশীলন শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এ সময় নামাজ আদায় করলে নামাজি অবসাদগ্রস্ততা ও অচলতা থেকে মুক্তি পায়। মস্তিষ্ক ফ্রি হয়ে ফের চিন্তা করার জন্য প্রস্তুত হয়। এ সময় নামাজি হেঁটে মসজিদে যায় আর আত্মা পরিচ্ছন্ন, প্রশান্ত পরিবেশ থেকে সূক্ষ্ম অনুভূতি লাভ করে। এসবই উপকারী। এ সময়ে দেহও পরিষ্কার হয়। দাঁত পরিষ্কার, অঙ্গ ধোয়া ও প্রস্রাব-পায়খানা থেকে পবিত্রতা অর্জন হয়ে যায়। এতে জীবাণুর আক্রমণ থেকে বাঁচা যায়। ডা. মাহমুদ চুগতাই বলেন, অন্ত্ররোগ ও আলসার থেকেও বাঁচা যায়। রোমের পাদরি হিলার বলেন, ভোরের নামাজের জন্য ওঠা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাশ্চর্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। (প্রার্থনা গ্রন্থ)।

জোহরের সময় ও চিকিৎসাবিজ্ঞান : মানুষ জীবিকার জন্য দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন কাজ করে। এতে ধুলা, ময়লা, বিষাক্ত কেমিক্যাল শরীরে লাগে। দেহে জীবাণু আক্রমণ করে। অজু করলে এসব দূর হয় এবং (ক্লান্তি দূর হয়ে) দেহ পুনরুজ্জীবন লাভ করে। গরমের কারণে সূর্য ঢলে পড়ার সময় বিষাক্ত গ্যাস বের হয়। এ গ্যাস মানবদেহে প্রভাব ফেললে মস্তিষ্কের ক্ষতি ও পাগলামিসহ বিভিন্ন রোগ হতে পারে। এ সময় অজু করে নামাজ আদায় করলে এ গ্যাস প্রভাব ফেলতে পারে না। ফলে দেহ বিভিন্ন রোগ থেকে বেঁচে যায়। এ সময় আল্লাহ নামাজ ফরজ করে আমাদের জন্য অনুগ্রহ করেছেন।

আসরের সময় ও চিকিৎসাবিজ্ঞান : পৃথিবী দু-ধরনের গতিতে চলে। লম্ব ও বৃত্তীয়। যখন সূর্য ঢলতে থাকে তখন পৃথিবীর ঘূর্ণন কমতে থাকে। এমনকি আসরের সময় একেবারেই কমে যায়। এ সময় রাতের অনুভূতি প্রবল হতে  থাকে। প্রকৃতির মধ্যে স্থবিরতা এবং অবসাদগ্রস্ততা প্রদর্শিত হতে থাকে। আসরের নামাজের সময় অবচেতন অনুভূতির শুরু হয়। এ সময় নামাজ আদায় করলে অতিরিক্ত অবসাদগ্রস্ততা, অবচেতন অনুভূতির আক্রমণ থেকে বাঁচা যায়। মানসিক চাপ ও অস্থিরতা কমে। নূরানি রশ্মি নামাজিকে প্রশান্তি দান করে।

মাগরিবের সময় ও চিকিৎসাবিজ্ঞান : সারাদিন মানুষ জীবিকার জন্য শ্রম ও কষ্টের মধ্যে কাটায়। মাগরিবের সময় ওজু করে নামাজ আদায়ের ফলে আত্মিক ও দৈহিক প্রশান্তি লাভ হয়। আল্লাহর গোলাম এটিও প্রমাণ হয়। এ সময় নামাজ আদায়ে পরিবারের বাচ্চারাও অংশগ্রহণ করতে পারে। এতে বাচ্চারা অনুগত, পুণ্যশীল হয়। এ সময় পরিবারের মধ্যে আনন্দের রেশ বয়ে যায়।

এশার সময় ও চিকিৎসাবিজ্ঞান : মানুষ কাজ শেষ করে বাসায় ফিরে রাতে প্রচুর খায়। এ সময় খেয়ে শুয়ে পড়লে বিভিন্ন রোগ হতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, অল্প ব্যায়াম করে বিছানায় গেলে কোনো সমস্যা হবে না। এশার নামাজ ব্যায়ামের চেয়েও বেশি উপযোগী। এ নামাজ আদায়ে শান্তি পাওয়া যায়, খাদ্য হজম হয় ও অস্থিরতা দূর হয়।
তাহাজ্জুদের সময় ও চিকিৎসাবিজ্ঞান : এ সময়ে সালাত আদায় করা অস্বস্তি, নিদ্রাহীনতা, হার্ট, স্নায়ু সংকোচন ও বর্ধন এবং মাথার বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা। ডা. মাহমুদ চুগতাই বলেন, যারা দূরের জিনিস দেখে না, এ সময় নামাজ আদায় করা তাদের চিকিৎসা। এছাড়াও এ সময়ে নামাজ আদায় করলে বুদ্ধি, আনন্দ এবং অসাধারণ শক্তির সৃষ্টি হয়, যা নামাজিকে সারাদিন উৎফুল্ল রাখে।