ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এক ছাতার নিচে খালেদা জিয়ার সব চিকিৎসা

ওয়ান স্টপ সার্ভিসে অর্থাৎ এক ছাতার নিচে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাতে লন্ডেনে গণমাধ্যমের কাছে এ কথা বলেন তিনি।
ডা. জাহিদ বলেন, গত ৮ জানুয়ারি থেকে ম্যাডাম লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি আছেন। উনার সর্বশেষ যে রিপোর্টগুলো তার প্রফেসর জন প্যাট্রিক কেনেডির নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ড পর্যালোচনা করেছেন এবং পরবর্তিতে আরো কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে লন্ডনের আরও দুইজন চিকিৎসক উনাকে দেখবেন। পরবর্তিতে উনার চিকিৎসার ব্যাপারে আমাদের যে পদ্ধতি অর্থাৎ উনাকে তো এখন ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা চলছে লিভারের জন্য, কিডনির জন্য, হার্টের জন্য, ডায়াবেটিস, প্রেসার, রিউমোটো আর্থ্রারাইটিজ প্রত্যেকটির জন্য্। এর বাইরেও আরও যদি কোনো চিকিৎসা করা যায় সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স হসপিটালের মেডিকেল টিমের সদস্যরা এখানে মেডিকেল বোর্ডের সভায় অংশগ্রহন করেছিলেন যাতে আমরা এটাকে এক ছাঁদের নিচে চিকিৎসা যেটা বলে ওয়ান আমব্রেলার নিচে অর্থাৎ ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মতো সেটা করার ব্যাপারে উনারা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাহিদ বলেন, তারপরে উনার সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে উনার বয়স, উনার রোগের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মধ্যে যে ধরনের ক্ষতি গত সাড়ে ৫ বছর যাবত বাংলাদেশে বন্দি থাকা অবস্থায়, সুচিকিতসা কম পাবার জন্য যা হয়েছে, বাইরে নিতে না পারার জন্য যা হয়েছে সেগুলো বিবেচনায় রেখে, উনার বয়সের কথা বিবেচনায় রেখে উনার জন্য যেটা সবচেয়ে মঙ্গলজনক হবে সেই ধরণের চিকিৎসা পদ্ধতি উনার অনুসরণ করবে বলে আমরা আশা করি এবং উনার(লন্ডন ক্লিনিক) সেই ধরনের চিন্তা করছেন। সেটা হয়ত আগামী দুই-তিনদিন পরে যখন আবার মেডিকেল বোর্ডের এক্সটেন্ডেড মেম্বার আছেন উনারও এদেশের(লন্ডন) এবং দেশের বাইরের তারা এই ব্যাপারে মতামত দেবেন পরবর্তিতে সেই অনুযায়ী ইনশাল্লাহ উনার চিকিৎসা চলবে।
‘দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা’
অধ্যাপক জাহিদ বলেন, শুধু লন্ডনসহ প্রবাসীরা নয়, বাংলাদেশের মানুষ উদগ্রীব হয়ে আছেন ম্যাডামের সুস্থতার জন্য। উনার সুচিকিতসার জন্য আমরা দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই উনার সুস্থতার জন্য। আপনাদের মাধ্যমে ম্যাডামের জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া কামনা করছি, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবও দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
তিনি জানান, খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা সার্বক্ষনিকভাবে নিকট আত্বীয়রা বিশেষ করে উনার দুই পুত্রবধু জোবাইদা রহমান, সৈয়দা শামিলা রহমান, তিন নাতনি জাইমা রহমান(তারেক রহমানের মেয়ে), জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমান(আরাফাত রহমান কোকোর মেয়ে) সব সময়ই এবং দেশের(লন্ডন) বাইরে যারা আছেন তারা ওভার টেলিফোন সার্বক্ষনিকভাবে ম্যাডামের খোঁজ-খবর নিতে যোগাযোগ রাখছেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় লন্ডন বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক, সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদসহ নেতৃবৃন্দ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে সবসময় নিরবিচ্ছিন্ন কাজ করছেন বলে জানান জাহিদ।
এদিকে লন্ডন থেকে দুইদিন আগে মেডিকেল বোর্ডের এক চিকিৎসক সময়ের আলোকে বলেন, ম্যাডামের নতুন জটিলতা যেটি তৈরি হয়েছিল তার অনেকটা সমাধান হয়েছে। বলা যায় পরিস্থিতি উন্নতি দিকে। তবে সার্জারি হচ্ছে না। এই শারিরীক অবস্থায় লিভার প্রতিস্থাপন করা যাচ্ছে না। এটা খুবই সেনসেটিভ কাজ। স্থাস্থ্যের অনেক দিক পর্যালোচনা করে সিদ্ধাসন্ত নিতে হয়। ম্যাডামের শারিরীক অবস্থা এখন স্থিতিশীল হলেও উনার অনেক জটিলতা রয়েছে। বয়সও এখানে বড় একটি ফ্যাক্টর। তবে শারিরীক সক্ষমতা যখন ভালো ছিল তখন বিদেশ নিয়ে আসতে পারলে একটা সুযোগ থাকতো।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন।

 

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

এক ছাতার নিচে খালেদা জিয়ার সব চিকিৎসা

আপডেট টাইম : ১৪ মিনিট আগে
ওয়ান স্টপ সার্ভিসে অর্থাৎ এক ছাতার নিচে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাতে লন্ডেনে গণমাধ্যমের কাছে এ কথা বলেন তিনি।
ডা. জাহিদ বলেন, গত ৮ জানুয়ারি থেকে ম্যাডাম লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি আছেন। উনার সর্বশেষ যে রিপোর্টগুলো তার প্রফেসর জন প্যাট্রিক কেনেডির নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ড পর্যালোচনা করেছেন এবং পরবর্তিতে আরো কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে লন্ডনের আরও দুইজন চিকিৎসক উনাকে দেখবেন। পরবর্তিতে উনার চিকিৎসার ব্যাপারে আমাদের যে পদ্ধতি অর্থাৎ উনাকে তো এখন ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা চলছে লিভারের জন্য, কিডনির জন্য, হার্টের জন্য, ডায়াবেটিস, প্রেসার, রিউমোটো আর্থ্রারাইটিজ প্রত্যেকটির জন্য্। এর বাইরেও আরও যদি কোনো চিকিৎসা করা যায় সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স হসপিটালের মেডিকেল টিমের সদস্যরা এখানে মেডিকেল বোর্ডের সভায় অংশগ্রহন করেছিলেন যাতে আমরা এটাকে এক ছাঁদের নিচে চিকিৎসা যেটা বলে ওয়ান আমব্রেলার নিচে অর্থাৎ ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মতো সেটা করার ব্যাপারে উনারা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাহিদ বলেন, তারপরে উনার সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে উনার বয়স, উনার রোগের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মধ্যে যে ধরনের ক্ষতি গত সাড়ে ৫ বছর যাবত বাংলাদেশে বন্দি থাকা অবস্থায়, সুচিকিতসা কম পাবার জন্য যা হয়েছে, বাইরে নিতে না পারার জন্য যা হয়েছে সেগুলো বিবেচনায় রেখে, উনার বয়সের কথা বিবেচনায় রেখে উনার জন্য যেটা সবচেয়ে মঙ্গলজনক হবে সেই ধরণের চিকিৎসা পদ্ধতি উনার অনুসরণ করবে বলে আমরা আশা করি এবং উনার(লন্ডন ক্লিনিক) সেই ধরনের চিন্তা করছেন। সেটা হয়ত আগামী দুই-তিনদিন পরে যখন আবার মেডিকেল বোর্ডের এক্সটেন্ডেড মেম্বার আছেন উনারও এদেশের(লন্ডন) এবং দেশের বাইরের তারা এই ব্যাপারে মতামত দেবেন পরবর্তিতে সেই অনুযায়ী ইনশাল্লাহ উনার চিকিৎসা চলবে।
‘দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা’
অধ্যাপক জাহিদ বলেন, শুধু লন্ডনসহ প্রবাসীরা নয়, বাংলাদেশের মানুষ উদগ্রীব হয়ে আছেন ম্যাডামের সুস্থতার জন্য। উনার সুচিকিতসার জন্য আমরা দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই উনার সুস্থতার জন্য। আপনাদের মাধ্যমে ম্যাডামের জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া কামনা করছি, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবও দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
তিনি জানান, খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা সার্বক্ষনিকভাবে নিকট আত্বীয়রা বিশেষ করে উনার দুই পুত্রবধু জোবাইদা রহমান, সৈয়দা শামিলা রহমান, তিন নাতনি জাইমা রহমান(তারেক রহমানের মেয়ে), জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমান(আরাফাত রহমান কোকোর মেয়ে) সব সময়ই এবং দেশের(লন্ডন) বাইরে যারা আছেন তারা ওভার টেলিফোন সার্বক্ষনিকভাবে ম্যাডামের খোঁজ-খবর নিতে যোগাযোগ রাখছেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় লন্ডন বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক, সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদসহ নেতৃবৃন্দ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে সবসময় নিরবিচ্ছিন্ন কাজ করছেন বলে জানান জাহিদ।
এদিকে লন্ডন থেকে দুইদিন আগে মেডিকেল বোর্ডের এক চিকিৎসক সময়ের আলোকে বলেন, ম্যাডামের নতুন জটিলতা যেটি তৈরি হয়েছিল তার অনেকটা সমাধান হয়েছে। বলা যায় পরিস্থিতি উন্নতি দিকে। তবে সার্জারি হচ্ছে না। এই শারিরীক অবস্থায় লিভার প্রতিস্থাপন করা যাচ্ছে না। এটা খুবই সেনসেটিভ কাজ। স্থাস্থ্যের অনেক দিক পর্যালোচনা করে সিদ্ধাসন্ত নিতে হয়। ম্যাডামের শারিরীক অবস্থা এখন স্থিতিশীল হলেও উনার অনেক জটিলতা রয়েছে। বয়সও এখানে বড় একটি ফ্যাক্টর। তবে শারিরীক সক্ষমতা যখন ভালো ছিল তখন বিদেশ নিয়ে আসতে পারলে একটা সুযোগ থাকতো।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন।