ঢাকা , সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ২৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপ ‘আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ট্রাম্পকে চিঠি দেবেন ড. ইউনূস’ বাংলাদেশে ব্যবসা করার অনুমোদন পেল স্টারলিংক ইসলামী ব্যাংকের এমডিকে বাধ্যতামূলক ছুটি ভর্তি বাণিজ্য : সাবেক সচিব মোরশেদ ও আইডিয়ালের অধ্যক্ষসহ আসামি ১১ চাকরিচ্যুত বিডিআির সদস্যদের পুনর্বহালের দাবিতে কর্মসূচি পিলখানা হত্যাকান্ডে সম্পৃক্ত জওয়ানরা এখনও বেপরোয়া বিদেশি শীর্ষ বিনিয়োগকারীদের নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক ৯ এপ্রিল জাতীয় স্টেডিয়ামে হামজাদের ম্যাচ আয়োজনে কোনো অসুবিধা নেই নির্বাচনের প্রস্তুতি সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে চলছে: সিইসি ফিলিস্তিনের পশুরাও রেহাই পাচ্ছে না ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনীতিতে আইএমএফ সন্তুষ্ট: অর্থ উপদেষ্টা

ভারত থেকে ফের সংঘাতের বার্তা দিলেন শেখ হাসিনা

দলের নেতাকর্মীদের বিপদে ফেলে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফের সংঘাতের রাজনীতিতে উসকানি দিচ্ছেন। বর্তমানে দিল্লিতে অবস্থান করলেও তিনি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দলের নেতাকর্মীদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় উদ্ধারের নামে রাজপথে নামতে বলছেন।

সম্প্রতি দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, যুবলীগের পলাতক নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের সঙ্গে এক টেলিফোনালাপে শেখ হাসিনা বলেন, “যে কোনো মূল্যে অফিস উদ্ধার করতে হবে। সামনে এক গ্রুপ থাকবে, পেছনে আরেক গ্রুপ। কেউ হামলা করলে পালটা হামলা চালিয়ে শিক্ষা দিতে হবে।”

এদিকে শেখ হাসিনার এমন নির্দেশে আওয়ামী লীগের ভেতরেই ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক নেতা বলেন, দেশজুড়ে যখন নেতাকর্মীরা হামলা-মামলার মুখে দিন কাটাচ্ছেন, তখন দলের শীর্ষ নেত্রী নিরাপদে বিদেশে বসে নির্দেশনা দিচ্ছেন—এটা মেনে নেওয়া কঠিন।

তারা বলেন, “সত্যি কথা বলতে কী, কেউ হয়তো এখন মুখ খুলছেন না। কিন্তু ৫ আগস্টের পর থেকে দলের সাধারণ নেতাকর্মীরা ওনার ওপর অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। দেশের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার পেছনে তিনিই দায়ী।”

টেলিফোনালাপে শাওন শেখ হাসিনাকে বলেন, “আমরা কেন্দ্রীয় কার্যালয় উদ্ধারের পরিকল্পনা করেছিলাম। নানা কারণে স্থগিত করা হয়। তবে আপনার নির্দেশে আবার পদক্ষেপ নেব।” তিনি আরও বলেন, “আপনার এক ডাকে ভোলা থেকে ২০ লাখ মানুষ ঢাকায় আসবে।” শেখ হাসিনা এরপর বলেন, ছোট ছোট মিছিল নয়, বড় আকারে মিছিল করতে হবে, সামনে ও পেছনে আলাদা গ্রুপ থাকবে, যাতে প্রয়োজনে পালটা হামলা চালানো যায়। তিনি আরও বলেন, “কেউ কাউকে খাওয়াবে না, নিজের লড়াই নিজেকেই করতে হবে।”

আলোচনায় শেখ হাসিনা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধেও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলেন, “ইউনূস মিথ্যা কথা বলছে। যারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর পুড়িয়েছে, তাদের তালিকা তৈরি করো। ছবি তুলো, ভিডিও করো। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা করো।” শাওন জবাবে জানান, “কিছু কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছি, তালিকা, ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ চলছে।”

এদিকে শেখ হাসিনার এসব কথাবার্তা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে সমালোচনা। গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা সাইফুল হক বলেন, “একজন দুর্নীতিবাজ পরিবারকে ফের ক্ষমতায় আনার জন্য সাধারণ কর্মীরা কেন জীবন ঝুঁকিতে ফেলবেন? শেখ হাসিনা ও তার আশপাশের মানুষ আরামে বিদেশে আছেন, অথচ কর্মীদের উসকানি দিচ্ছেন।” তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ এখনো সাড়ে ১৫ বছরের অপশাসনের অনুশোচনায় নেই। বরং উল্টো নিজেদের শাসনকেই গ্লোরিফাই করার চেষ্টা করছে।”

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা দিল্লিতে পালিয়ে যান। এরপর থেকেই তিনি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দলীয় নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এসব উসকানি আওয়ামী লীগকে আরও কোণঠাসা করবে এবং নেতাকর্মীদের হতাশা বাড়াবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপ ‘আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ট্রাম্পকে চিঠি দেবেন ড. ইউনূস’

ভারত থেকে ফের সংঘাতের বার্তা দিলেন শেখ হাসিনা

আপডেট টাইম : ০৫:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ এপ্রিল ২০২৫

দলের নেতাকর্মীদের বিপদে ফেলে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফের সংঘাতের রাজনীতিতে উসকানি দিচ্ছেন। বর্তমানে দিল্লিতে অবস্থান করলেও তিনি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দলের নেতাকর্মীদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় উদ্ধারের নামে রাজপথে নামতে বলছেন।

সম্প্রতি দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, যুবলীগের পলাতক নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের সঙ্গে এক টেলিফোনালাপে শেখ হাসিনা বলেন, “যে কোনো মূল্যে অফিস উদ্ধার করতে হবে। সামনে এক গ্রুপ থাকবে, পেছনে আরেক গ্রুপ। কেউ হামলা করলে পালটা হামলা চালিয়ে শিক্ষা দিতে হবে।”

এদিকে শেখ হাসিনার এমন নির্দেশে আওয়ামী লীগের ভেতরেই ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক নেতা বলেন, দেশজুড়ে যখন নেতাকর্মীরা হামলা-মামলার মুখে দিন কাটাচ্ছেন, তখন দলের শীর্ষ নেত্রী নিরাপদে বিদেশে বসে নির্দেশনা দিচ্ছেন—এটা মেনে নেওয়া কঠিন।

তারা বলেন, “সত্যি কথা বলতে কী, কেউ হয়তো এখন মুখ খুলছেন না। কিন্তু ৫ আগস্টের পর থেকে দলের সাধারণ নেতাকর্মীরা ওনার ওপর অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। দেশের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার পেছনে তিনিই দায়ী।”

টেলিফোনালাপে শাওন শেখ হাসিনাকে বলেন, “আমরা কেন্দ্রীয় কার্যালয় উদ্ধারের পরিকল্পনা করেছিলাম। নানা কারণে স্থগিত করা হয়। তবে আপনার নির্দেশে আবার পদক্ষেপ নেব।” তিনি আরও বলেন, “আপনার এক ডাকে ভোলা থেকে ২০ লাখ মানুষ ঢাকায় আসবে।” শেখ হাসিনা এরপর বলেন, ছোট ছোট মিছিল নয়, বড় আকারে মিছিল করতে হবে, সামনে ও পেছনে আলাদা গ্রুপ থাকবে, যাতে প্রয়োজনে পালটা হামলা চালানো যায়। তিনি আরও বলেন, “কেউ কাউকে খাওয়াবে না, নিজের লড়াই নিজেকেই করতে হবে।”

আলোচনায় শেখ হাসিনা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধেও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলেন, “ইউনূস মিথ্যা কথা বলছে। যারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর পুড়িয়েছে, তাদের তালিকা তৈরি করো। ছবি তুলো, ভিডিও করো। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা করো।” শাওন জবাবে জানান, “কিছু কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছি, তালিকা, ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ চলছে।”

এদিকে শেখ হাসিনার এসব কথাবার্তা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে সমালোচনা। গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা সাইফুল হক বলেন, “একজন দুর্নীতিবাজ পরিবারকে ফের ক্ষমতায় আনার জন্য সাধারণ কর্মীরা কেন জীবন ঝুঁকিতে ফেলবেন? শেখ হাসিনা ও তার আশপাশের মানুষ আরামে বিদেশে আছেন, অথচ কর্মীদের উসকানি দিচ্ছেন।” তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ এখনো সাড়ে ১৫ বছরের অপশাসনের অনুশোচনায় নেই। বরং উল্টো নিজেদের শাসনকেই গ্লোরিফাই করার চেষ্টা করছে।”

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা দিল্লিতে পালিয়ে যান। এরপর থেকেই তিনি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দলীয় নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এসব উসকানি আওয়ামী লীগকে আরও কোণঠাসা করবে এবং নেতাকর্মীদের হতাশা বাড়াবে।