১৫ অক্টোবর বিকেলে প্রকাশিত হয়েছে এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল। এবারের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন রংপুরের রাগীব নূর অমিয়। তার টেস্ট স্কোর ৯০.৫০। আর দ্বিতীয় হয়েছেন সাতক্ষীরার তৌফিকা রহমান নেহা। তার টেষ্ট স্কোর ৮৯।
রাগীব নূর অমিয় রংপুর ক্যাডেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাশ করেন। এসএসসিতে দিনাজপুর বোর্ডে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছেন। এর আগে তিনি রংপুর জিলা স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। জাপান টোব্যাকো কোম্পানির ন্যাশনাল ম্যানেজার এসএম মফিজুল ইসলাম মুকুল ও নীলফামারী মশিউর রহমান ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আনজুমান আরা চৌধুরী দম্পতির একমাত্র ছেলে অমিয়। তাদের একমাত্র মেয়ে মাইশা ফাহমিন অহনা রংপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।
অমিয়র দাদা এবং নানা বাড়ি নীলফামারীর পৌর এলাকায়। প্রায় একযুগ ধরে রংপুর নগরীর ধাপ এলাকায় বসবাস করছেন তারা। অনুভূতি জানাতে গিয়ে অমিয় বলেন, ফলাফল পেয়ে ভীষণ খুশি তিনি। তার এমন ফলাফলের পেছনে মা-বাবাসহ শিক্ষকদের অবদান সবচেয়ে বেশি। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হয়ে মানবতার সেবায় নিজেকে সম্পৃক্ত করতে চান অমিয়।
এদিকে এমন কৃতিত্বে আনন্দে আত্মহারা আনজুমান আরা চৌধুরী ছেলের ভবিষ্যৎ জীবনের সফলতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেন।
ভর্তি পরীক্ষায় সারাদেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী তৌফিকা রহমান নেহার বাড়ি সাতক্ষীরা শহরের খুলনা রোড মোড় এলাকায়। সে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা শেখ হাফিজুর রহমানের ছোট মেয়ে। দুই ভাইবোনের মধ্যে ছোট নেহা। বড় ভাই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করেছেন। মা নাজমা সুলতানা গৃহিনী।
সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী হলেও ঠিকমতো কলেজেই আসা হতো না নেহার। ঠিকমতো ক্লাস না করেও এমবিবিএস কোর্সের প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ফলে দ্বিতীয় হয়েছেন তিনি। বিষয়টি অভিনব বলে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক কাজী আসাদ।
নেহার এমন কৃতিত্বের বিষয়ে তিনি স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, তৌফিকা রহমান নেহা মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় দ্বিতীয় হয়ে এ কলেজে গৌরব এনে দিয়েছে। যদিও এমন অর্জনে তারই কৃতিত্ব বেশি। কারণ কলেজে নেহার উপস্থিতি তেমন একটা দেখা যায়নি। সে ক্ষেত্রে বলা যায়, ঠিকমতো ক্লাস না করেও দ্বিতীয় হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে নেহা। খুবই মেধাবী শিক্ষার্থী সে। কলেজে নেহা কেন কম আসত প্রশ্নে ওই শিক্ষক জানান, শুধু নেহা নয়, বিজ্ঞান বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষার্থী কলেজে আসতে চায় না। তবে নেহা কেন আসত না এটি সে ও তার পরিবারই বলতে পারবে।
নেহার এমন ফলে আনন্দের বন্যা বইছে তার পরিবারে। এমন ফলে কেমন লাগছে জানতে চাইলে তৌফিকা রহমান নেহা বলেন, এর চেয়ে বড় খুশির সংবাদ আর কিছুই হতে পারে না। চিকিৎসক হয়ে দেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ পাব এর চেয়ে খুশির সংবাদ আর হতেই পারে না। ভালো ডাক্তার হওয়ার আগে ভালো মানুষ হয়ে দেশসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চান নেহা।
গত ১১ অক্টোবর সারাদেশে একযোগে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ৪৯ হাজার ৪১৩ জন। এদের মধ্যে মেয়ে ২৬ হাজার ৫৩১ জন। ছেলে ২২ হাজার ৮৮২ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোয় ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে ২২ অক্টোবর। শেষ হবে ৩১ অক্টোবর। সরকারি মেডিকেলে ভর্তি শেষ হওয়ার পর বেসরকারি মেডিকেলগুলোতে ভর্তি শুরু হবে।