ঢাকা , বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ কোনো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনা কমিটি ও গভর্নিং বডির সদস্যরা যে ধরনের দায়িত্বই পালন করুন না কেন, সাধারণ মানুষের ধারণা, এ ক্ষেত্রে পর্দার আড়ালে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাই ঘটে থাকে; তা না হলে ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হওয়ার জন্য কেউ কেউ এতটা মরিয়া হয়ে উঠবেন কেন?

আমরা জানি, একটি বিধিমালা অনুযায়ী দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হচ্ছে। প্রশ্ন হল, এরপরও কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে এত অনিয়ম হচ্ছে কী করে? গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলছে অনিয়ম ও দুর্নীতি।

কোথাও পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও অন্য সদস্যরা লুটপাট করছেন, আবার কোথাও দুর্নীতিতে খোদ অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষক নেতৃত্ব দিচ্ছেন। শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রণীত বেসরকারি স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি (এসএমসি) ও গভর্নিং বডি (জিবি) পরিচালনাবিষয়ক বিধিমালায় সভাপতিসহ পর্ষদকে একচ্ছত্র ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সব কর্মকাণ্ডের দায়ভার থেকে তাদের মুক্তি দেয়া হয়েছে। তারা কোনো ধরনের অনিয়মে যুক্ত হলে শাস্তি বলতে কমিটি ভেঙে দেয়া হয়।

বস্তুত এ কারণে দুর্নীতিবাজরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ লুটে নেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে, এমনটি মনে করেন অনেকে। জানা গেছে, অনিয়মের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে অপমান-অপদস্তও হতে হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদ্যমান বিধিমালায় সভাপতিসহ কমিটিকে যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে, তা আরও কমানোর পাশাপাশি কাজের জন্য সভাপতির জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা দরকার।

এসব কমিটিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করার পরিবর্তে প্রকৃত শিক্ষানুরাগী ও গুণিজনকে যুক্ত রাখার বিধান করা প্রয়োজন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনায় নিয়োজিত কোনো ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার উন্নয়নের পরিবর্তে অনিয়মে জড়িয়ে পড়লে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে!

জানা গেছে, এসএমসি ও জিবিতে স্থানীয় গুণিজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেয়া হয় না। কোনো প্রতিষ্ঠানে গুণিজনকে কোণঠাসা করে রাখা হচ্ছে কি না, এ বিষয়ে ঊর্র্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জোরালো নজরদারি প্রয়োজন। সমাজে গুণিজনের যথাযথ সম্মানপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা না হলে যে ক্ষতি হবে, তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়।

অভিযোগ রয়েছে, লুটপাট নির্বিঘ্ন করতে এসএমসি ও জিবির কোনো কোনো সদস্য স্থানীয় প্রভাবশালীদেরও নানাভাবে কাছে রাখার চেষ্টা করেন। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জোরালো পদক্ষেপ নিচ্ছে না কেন? সব ধরনের নিয়োগসহ আয়-ব্যয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ নিতে দেরি করলে সব ধরনের দুর্নীতি রোধ করা কঠিন হতে পারে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি

আপডেট টাইম : ০৯:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২০

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ কোনো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনা কমিটি ও গভর্নিং বডির সদস্যরা যে ধরনের দায়িত্বই পালন করুন না কেন, সাধারণ মানুষের ধারণা, এ ক্ষেত্রে পর্দার আড়ালে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাই ঘটে থাকে; তা না হলে ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হওয়ার জন্য কেউ কেউ এতটা মরিয়া হয়ে উঠবেন কেন?

আমরা জানি, একটি বিধিমালা অনুযায়ী দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হচ্ছে। প্রশ্ন হল, এরপরও কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে এত অনিয়ম হচ্ছে কী করে? গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলছে অনিয়ম ও দুর্নীতি।

কোথাও পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও অন্য সদস্যরা লুটপাট করছেন, আবার কোথাও দুর্নীতিতে খোদ অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষক নেতৃত্ব দিচ্ছেন। শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রণীত বেসরকারি স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি (এসএমসি) ও গভর্নিং বডি (জিবি) পরিচালনাবিষয়ক বিধিমালায় সভাপতিসহ পর্ষদকে একচ্ছত্র ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সব কর্মকাণ্ডের দায়ভার থেকে তাদের মুক্তি দেয়া হয়েছে। তারা কোনো ধরনের অনিয়মে যুক্ত হলে শাস্তি বলতে কমিটি ভেঙে দেয়া হয়।

বস্তুত এ কারণে দুর্নীতিবাজরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ লুটে নেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে, এমনটি মনে করেন অনেকে। জানা গেছে, অনিয়মের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে অপমান-অপদস্তও হতে হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদ্যমান বিধিমালায় সভাপতিসহ কমিটিকে যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে, তা আরও কমানোর পাশাপাশি কাজের জন্য সভাপতির জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা দরকার।

এসব কমিটিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করার পরিবর্তে প্রকৃত শিক্ষানুরাগী ও গুণিজনকে যুক্ত রাখার বিধান করা প্রয়োজন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনায় নিয়োজিত কোনো ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার উন্নয়নের পরিবর্তে অনিয়মে জড়িয়ে পড়লে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে!

জানা গেছে, এসএমসি ও জিবিতে স্থানীয় গুণিজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেয়া হয় না। কোনো প্রতিষ্ঠানে গুণিজনকে কোণঠাসা করে রাখা হচ্ছে কি না, এ বিষয়ে ঊর্র্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জোরালো নজরদারি প্রয়োজন। সমাজে গুণিজনের যথাযথ সম্মানপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা না হলে যে ক্ষতি হবে, তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়।

অভিযোগ রয়েছে, লুটপাট নির্বিঘ্ন করতে এসএমসি ও জিবির কোনো কোনো সদস্য স্থানীয় প্রভাবশালীদেরও নানাভাবে কাছে রাখার চেষ্টা করেন। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জোরালো পদক্ষেপ নিচ্ছে না কেন? সব ধরনের নিয়োগসহ আয়-ব্যয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ নিতে দেরি করলে সব ধরনের দুর্নীতি রোধ করা কঠিন হতে পারে।