বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ কুড়িগ্রামের চরাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চলের দিগন্ত জুড়ে মাঠ সেজেছে সরিষার হলুদ ফুলে। মৌ-মৌ গন্ধে ভরে উঠেছে চারদিক। মাঠ ভরা এ হলুদ ফুলে স্বপ্ন বুনছে কৃষক। গেল ছয় দফা বন্যায় নষ্ট হয়ে যায় কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চল আর চরাঞ্চলের আবাদী ফসল। বন্যা পরবর্তী এসব এলাকায় চাষ হয়েছে সরিষা।
জেলার ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, সংকোষসহ ১৬টি নদ-নদীর চরাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চলে চাষ হওয়া এসব সরিষা অনুকূল আবহাওয়া আর সঠিক পরিচর্যায় মাঠ ভরে উঠেছে হলুদ ফুলের সমারোহে। দেখে মনে হবে এ যেন হুলুদ সমুদ্র। মৌ মৌ ঘ্রাণে আকৃষ্ট হয়ে আসছে মধু আহরণে মৌমাছি। সরিষার এমন বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।
উন্নত জাতের বারি-১৪ এবং দেশী জাতের বীজে চাষ হয়েছে এবার। ইরি চাষের আগে স্বল্প মেয়াদী এ ফসল ফলিয়ে লাভবান হওয়ার প্রত্যাশা করছেন চাষিরা। বিঘা প্রতি দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ করে ৪/৫ মণ সরিষার ফলন পাওয়ার আশা কৃষকের। মণ প্রতি ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা বিক্রি করতে পারলে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন সরিষা চাষিরা। পানি শুকানোর পরপরই সরিষার আবাদ শুরু করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। সরিষা ফলন তুলে ক্ষেতে ইরি চাষ শুরু করবেন বলে জানান কৃষকরা।
চরাঞ্চলের কৃষক আমিনুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম ও সাইফুল মিয়া জানান, সরিষার তেল ভোজ্য, খৈল গবাদি পশুর খাবার এবং সরিষার পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সবুজ পাতা শাক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সরিষার শাক খেতে বেশ সুস্বাদু। এছাড়া সরিষার ক্ষেতে এসময় বতুয়া শাকও পাওয়া যায়। দুই মিলে পরিবারের শাকের পুষ্টি চাহিদা মিটে যায় প্রান্তিক জনপদের সাধারণ মানুষের। সরিষার শাকে আছে ভিটামিন এ, সি এবং কে। সরিষার শাকে আছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিজেন, যা ভাইরাসজনিত রোগ প্রতিরোধ করে। বতুয়া শাক হজম শক্তি বাড়ায়, কিডনির পাথর গলাতে সাহায্য করে, মুখের ঘা সারায় এবং আগুন কিংবা গরম পানিতে ত্বক পুড়ে গেলে বতুয়ার পাতার প্রলেপ দিলে নিরাময় হয়।
সরিষার আশানুরূপ ফলন হওয়ার আশা ব্যক্ত করে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনজুরুল হক বলেন, কুড়িগ্রামের চরাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চলের ১৩ হাজার ২৪৫ হেক্টর জমিতে উন্নত জাতের বারি-১৪ এবং দেশী জাতের সরিষার চাষ হয়েছে।