বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ এককভাবে বাংলাদেশের রফতানির সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্রে সদ্য সমাপ্ত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রফতানি কমেছে ৬ শতাংশ। তৃতীয় বৃহত্তম রফতানি গন্তব্য যুক্তরাজ্যেও কমেছে ৬ শতাংশের বেশি। কানাডাসহ এ রকম শীর্ষ ২০ গন্তব্যের ১০ বাজারেই রফতানি আয় কমেছে। এর ফলে ধাক্কা খেয়েছে সার্বিক রফতানি আয়।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো’র (ইপিবি) প্রকাশিত পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম রফতানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে। গত অর্থবছরে রফতানি আয় বেড়েছে মাত্র ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। রফতানি আয় এত অস্বাভাবিক কমে যাওয়ার কারণ খুঁজছে ইপিবিও।
সোমবার রফতানি আয়ের হালনাগাদ জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ইপিবি। সেখানে রফতানি কমে যাওয়ার জন্য কিছু কারণ তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলন শেষে ইত্তেফাকের সঙ্গে আলাপকালে ইপিবি’র ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য বলেন, প্রকৃত অর্থে রফতানি কেন কমেছে – এ জন্য আমরা গভীর অনুসন্ধান করবো। তবে বড় বাজারগুলোতে রফতানি কমার কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারে সার্বিক চাহিদা কাঙ্ক্ষিত হারে না বাড়াকে বড় কারণ হিসেবে মনে করছেন তিনি।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন, যুক্তরাজ্যের মুদ্রা পাউন্ডের দর কমে যাওয়া, গত বছর ঢাকার গুলশানে হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় বিদেশিদের বাংলাদেশ সফরে নিষেধাজ্ঞা ও সতর্কতা, টাকার বিপরীতে ডলার দুর্বল হওয়াসহ কয়েকটি কারণ উঠে আসে ইপিবি’র পর্যবেক্ষণে। গত অর্থবছরে জাপানে রফতানি আয় কমেছে ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ। বেলজিয়ামে প্রায় ১০ শতাংশ, ভারতে আড়াই শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ায় পৌনে ৭ শতাংশ, তুরস্কে সাড়ে চার শতাংশ, সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌনে ১১ শতাংশ ও সুইজারল্যান্ড।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে রফতানি আয় হয়েছিল ৩ হাজার ৪২৫ কোটি ৭২ লাখ মার্কিন ডলার। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ হাজার ৭শ’ কোটি ডলার। কিন্ত বছর শেষে হিসাব করে দেখা গেছে, মাত্র ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেড়ে রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ৪৮৩ কোটি ৫০ ডলার। রপ্তানির ৮০ শতাংশের বেশি আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এ খাতের রপ্তানি আয় বেড়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ! (০.২০%)। এটি সার্বিক রপ্তানি আয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে ৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ। নিটওয়্যার ও ওভেন – কোনটিই রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি। গত অর্থবছরের চাইতে নিটওয়্যার রপ্তানি কিছুটা বাড়লেও ওভেন পোশাক রপ্তানি কমেছে।