বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ হাওরে আগাম বন্যায় মাছে মড়ক দেখা দেয়ায় বর্ষায় মাছ পাওয়া যাবে কি-না তা নিয়ে দেখা দিয়েছিল শঙ্কা। তবে ভরা এই বর্ষায় রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে মাছের সরবরাহ ভালো। দামও রয়েছে ক্রেতাদের হাতের নাগালে। এতে মাছের বাজারে স্বস্তি পাচ্ছেন ক্রেতারা।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় দেশি মাছ শিং, মাগুর, কই, রুই, কাতলা, শোল, তেলাপিয়া, বাইম, পাঙ্গাস, টেংরা, পাবদা, বাইলার পাশাপাশি চিংড়ি, ইলিশ, পোয়া মাছের দাম ক্রেতাদের হাতের নাগালেই রয়েছে। এছাড়া বড় আইড়, ছোট আইড়, বোয়াল মাছের দামও রয়েছে সহনীয়।
সোমবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাছের পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে মাছের সরবরাহ ভালো থাকায় দাম কিছুটা কম। ইলিশ মাছ ৩২০ থেকে ৮৭০ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে যা ৪৫০ থেকে ৯৫০ টাকা পর্যন্ত ছিল। কাতলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৫০ টাকা কেজি।
রুই মাছ ছোট সাইজেরটা বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে। আর বড় সাইজেরটা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজিতে। ফার্মের কই বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি। যাত্রাবাড়ীর বাজারে টোনা ফিশ বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা থেকে ১১৫ টাকা কেজি। দেশি পোয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকা থেকে ৫২০ টাকা, কাচকি মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজি। কাউয়া বড়া ৮৫ টাকা থেকে ৯৫ কেজি। দেশি ডিমা চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৫২০ টাকা এবং বরিশালের চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ টাকা কেজিতে।
যাত্রাবাড়ীর মাছ ব্যবসায়ী মো. ফিরোজ বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, ‘বন্যার কারণে গত সপ্তাহে মাছের সরবরাহ কম ছিল। কিন্তু এ সপ্তাহে মাছের সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে। আমাদের এখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই মাছ আসে।’
যাত্রাবাড়ী বাজারে বড় বাইম বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকায়, বাইলা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজিতে। বড় শোল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকায় এবং ছোট শোল মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজিতে। যাত্রাবাড়ীতে কাজলি মাছে বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা, টেংরা ৩০০ টাকা।
বড় বোয়াল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা কেশি, মিডিয়াম বোয়াল বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা কেজি এবং ছোট বোয়াল মাছ বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা কেজিতে। পাবদা বড়টা বিক্রি হচ্ছে ৮০০ কেজি, ছোটটা ৫৫০ টাকা কেজি। আইড় মাছ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকা কেজি এবং ছোট আইড় বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা কেজিতে।
তেলাপিয়া মাছ প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে। মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজি, ছোট মৃগেল বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজিতে, গ্রাস কার্ফ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজিতে।
যাত্রাবাড়ীর মাছ ব্যবসায়ী এবিএস ফিসের প্রোপ্রাইটর মজিবুর রহমানের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, রাজধানীরসহ দেশের মাছের একটি বড় অংশই আসে হাওরাঞ্চলের থেকে। এবারের অতিবর্ষণে হাওরে আগাম বন্যায় মাছের মরক হয়। এ কারণে দেশি মাছের সরবরাহ অনেক দিন কম ছিল, কিন্তু এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই মাছ আসা শুরু করেছে। মাছের সরবরাহ এখন ভালোই আছে, মাছের দামও মোটামুটি কমই আছে অন্য সময়ের তুলনায়।
মজিবুর বলেন, যাত্রাবাড়ীতে রাঙামাটি, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, রাজশাহী, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মাছ আসে।
রাজধানীর পাইকারি বাজারে মাছের দামের প্রভাব খুচরা বাজারগুলোতেও পড়ছে। খুচরা বাজারে মাছের দাম পাইকারি বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কম দেখা গেছে। রায়েরবাগ বাজারে গিয়ে দেখা যায় মাছের বাজার ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই রয়েছে। এই বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মন্টু মিয়া বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, আমরা যারা খুচরা ব্যবসায়ী তারা পাইকারি বাজারের তুলনায় অল্প লাভেই মাছ বিক্রি করি। ইলিশ মাছ পাইকারি বাজারের তুলনায় ৫০ টাকা বেশিতে বিক্রি করছি। এছাড়া অন্যন্য মাছও আমরা পাইকারি বাজারের তুলনায় ৩০ টাকা কেজিতে বেশি বিক্রি করি।