বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ঈদের পর মিলগুলো বন্ধ থাকায় চালের বাজার চড়েছে। আগামী কয়েকদিন দাম বাড়ার এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আড়ৎদার ও ব্যাবসায়ীরা।
এছাড়াও আমদানি করা চাল বাজারে এলে এবং মিলগুলো থেকে নতুন চাল ছাড়া হলে দাম কিছুটা কমতে পারে বলেও তারা জানান।
পুরান ঢাকার বিভিন্ন অফিস ও কল কারখানায় মাসিক চুক্তি ভিত্তিতে খাবার সরবরাহ করেন পেয়ারী বেগম। শনিবার সকালে জুরাইনের আরব রাইস এজেন্সি থেকে চাল কিনছিলেন তিনি। তিনি বলেন, গতকাল (শুক্রবার) মিনিকেট সরুটা কিনছি ৫৭ টাকায়। আজ ৫৯ টাকা। বৃহস্পতিবার ৫৫ টাকায় কিনছি। খুচরা দোকানে দাম আরও বেশি।
শনিবার রাজধানীর জুরাইন বাজারের ১৬টি আড়ৎ ও এই বাজারসহ কয়েকটি এলাকার খুচরা দোকান ঘুরে পেয়ারি বেগমের কথার সত্যতা পাওয়া গেল।
২৩/২ ডি.আইপ প্লট শিল্প এলাকায় অবস্থিত আরব রাইসের ম্যানেজার বলেন, ভাই মিল মালিকরা ফোনই ধরছেন না। তাই যেগুলো মজুদ করা ছিল সেখান থেকেই বিক্রি করছি। সঠিক দামের কোনো হিসেব নেই।
একাতা রাইস এজেন্সির আরাফাত বলেন, আটাশ ২৪৫০ এবং মিনিকেট ২৭০০-২৯৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। ঈদের পর বস্তাপ্রতি অন্তত ১০০ টাকা করে বেড়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, কারওয়ানবাজারে মিনিকেট চাল ২৮০০ থেকে ২৯০০ টাকা, নাজির শাইল ২৮৫০ থেকে ৩৪০০ টাকা, আটাশ ২৪০০ থেকে ২৫০০ টাকা ও মোটা চালের বস্তা ২১৫০ থেকে ২২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জসিম রাইস এজেন্সির মালিক জসিম বলেন, ঈদের আগে ২৩০০ টাকায় মোটা চালের বস্তা কিনেছি। আজ সকালে ২৫০০ টাকা করে কিনলাম। বেশি দামে কিনেছি, বিক্রিও বেশি দামেই করতে হবে।
ফরিদাবাদ এলাকায় একটি দোকান চাঁদপুর জেনারেল স্টোর। খুচরা চাল বিক্রি হয় এই দোকানে। দোকানের মালিক ইলিয়াস বলেন, মিনিকেট চাল সরুটা ৬০ টাকায় বিক্রি করছেন। গতকাল ৫৮ টাকায় বিক্রি করেছিলেন।
২৮নং জুরাইন রেল মার্কেটের মেসার্স শাহজাহান স্টোরের বিক্রেতা বলেন, বুধবার ৫৫, বৃহস্পতিবার ৫৬, শুক্রবার ৫৮ ও আজ শনিবার ৬০ টাকায় মিনিকেট চাল বিক্রি করছেন। আগামীকাল রোববার এই দাম আরও বাড়বে।
দাম কেন বাড়ছে এমন এক প্রশ্নের জবাবে বিক্রেতা বলেন, ঈদের কারণে মিল বন্ধ। আমদানি করা চাল বাজারে আসেনি। তাই দাম বেশি।
রাজধানীর অন্যতম চালের পাইকারি বাজার বাবুবাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ (শনিবার) সকালে আমদানি করা কিছু চাল বাজারে এসেছে। তবে সেগুলো এখনই খুচরা দোকানদাররা পাচ্ছেন না। কারণ আগের মাল (চাল) রয়েছে। চলতি সপ্তাহে চালের বাজার আরও চড়বে বলেই মনে করছেন তারা।
বৃহস্পতিবার খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত দৈনিক খাদ্যশস্য প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার পাইকারি বাজারে নাজিরশাইল চাল কেজি প্রতি ৫৩ থেকে ৫৯ টাকা, বিআর আটাশ ও পারিজা ৪৫ থেকে ৪৭ টাকা এবং গুটি ও স্বর্ণা চাল ৪১ থেকে ৪২ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। অর্থাৎ সরকারি হিসেবেই এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে চালের দাম প্রায় ২ টাকা করেছে বেড়েছে। চালের এই চড়া বাজার আরও চড়বে বলেই সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।