বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ দেশে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে আয় বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১.৭৮ শতাংশ। এ হিসাবে চামড়া খাতে আয় হয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুসারে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে আয় হয়েছে ৩২ কোটি ৪৬ লাখ মার্কিন ডলার বা দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকা; যা এই সময়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১.০৬ শতাংশ কম। তবে আগের অর্থবছরের (২০১৬-১৭) একই সময়ের তুলনায়ও ১.৭৪ শতাংশ বেশি বৈদেশিক মুদ্রা দেশে এসেছে খাতটির পণ্য রফতানি থেকে।
তিন মাসে রফতানি লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩২ কোটি ৮১ লাখ ডলার। এর মধ্যে চামড়া পণ্য ও চামড়ার পাদুকা রফতানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি থাকলেও কাঁচা চামড়ায় প্রায় ধস নেমেছে। তাই এ খাতের প্রবৃদ্ধি খুব আশাব্যঞ্জক নয়।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার চামড়া খাতকে এগিয়ে নিতে এটিকে ‘প্রোডাক্ট অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে খাতটি থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বছরে রফতানি আয় ৫০০ কোটি ডলারে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু খাতটি সেভাবে এগোচ্ছে না। রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে সাভারের চামড়া শিল্পনগরে সরিয়ে নেয়া ট্যানারিগুলো পুরো প্রস্তুত না হওয়াকে এর কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে চামড়া উৎপাদন ও রফতানি বৃদ্ধিতে অভ্যন্তরীণ বাজার চাহিদা নির্ধারণ, পরিবেশসম্মত কারখানা পরিচালনাসহ রফতানির বিকল্প বাজারের সন্ধানের কথা বলছেন তারা। তাহলেই আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশের চামড়া ও পাদুকাসহ চামড়াজাত পণ্য বিশ্বে অন্যতম প্রতিযোগী পণ্যে পরিণত হবে।
এদিকে চামড়া পণ্য রফতানিতে সরকার ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দিচ্ছে। বর্তমানে দেশব্যাপী প্রায় আড়াইশ কারখানায় জুতা, ব্যাগ, বেল্ট ও দর্শনীয় উপকরণ তৈরি ও তা রফতানি হচ্ছে।
ইপিবি সূত্র মতে, গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের পুরো সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে আয় হয়েছিল ১২৩ কোটি ৪০ হাজার মার্কিন ডলার। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এই খাতের রফতানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত রয়েছে ১৩৮ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে বছরের মোট লক্ষ্যমাত্রার সাড়ে ২৩ শতাংশ আয় এসেছে।
চলতি জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে দুই মাসে কাঁচা চামড়া রফতানিতে পাঁচ কোটি ৭০ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে চার কোটি ৬৪ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮.৫৯ শতাংশ কম। একই সঙ্গে গত অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরের চেয়ে ৩০.৭৪ শতাংশ কমেছে। ওই সময়ে কাঁচা চামড়ায় আয় হয়েছিল ছয় কোটি ৭০ লাখ ডলার।
আবার গত তিন মাসে বিভিন্ন চামড়ার তৈরি পণ্য রফতানিতে ১২ কোটি ৮৩ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ১১ কোটি ১৬ লাখ ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ শতাংশ কম হলেও গত অর্থবছরের (২০১৬-১৭) একই সময়ের চেয়ে ১৯.২৭ শতাংশ বেশি। ওই সময় আয় হয়ে ছিল ৯ কোটি ৩৬ লাখ ডলার।
এদিকে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে চামড়ার জুতা রফতানিতে ১৪ কোটি ২৬ লাখ ডলারের আয়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৬১ লাখ ডলার; যা একই সঙ্গে এ সময়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৪.৪৫ শতাংশ এবং গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৪.৮৯ শতাংশ বেশি। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে এ উপখাতে আয় ছিল ১৫ কোটি ৮৩ লাখ ডলার।