বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ সবজি ও পেঁয়াজের অস্থির বাজারে অবশেষে স্বস্তি ফিরে আসছে। শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় রাজধানীর কাঁচাবাজারে কমেছে সব ধরনের সবজির দাম। পাশাপাশি আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম কেজিতে অন্তত ১০ টাকা কমেছে। তবে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে তেমন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, মালিবাগ, কারওয়ান বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, শীতের সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম ও লাউয়ে এখন ভরপুর। সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে পালংশাক ও শালগম। এ ছাড়া ঝিঙা, পটল, করলা, ঢেঁড়স, ধুন্দল, চিচিংগা, বেগুনসহ সবকিছুর পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। যে কারণে সব ধরনের সবজির দাম গত দু’সপ্তাহের তুলনায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। বিশেষ করে শিম ও বেগুনের দাম কমার হার চোখে পড়ার মতো। তিন সপ্তাহ আগেও যে শিম ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, গতকাল তা বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে। একইভাবে ৮০-৯০ টাকার বেগুন এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়।
এদিকে ৩০ টাকা কেজি দরের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে পটল, মুলা, ধুন্দল, শালগম, পেঁপে। গত সপ্তাহে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া পটলের দাম কমে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় চলে এসেছে। এ ছাড়া ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হওয়া মুলার দাম এখন ২০ থেকে ৩০ টাকা। ধুন্দল পাওয়া যাচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে এ সবজিটির দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি। পেঁপের দাম ৩০ টাকা থেকে কমে ২০ টাকায় নেমে এসেছে। বাজারে নতুন আসা সবজি শালগমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। দাম কমার এ তালিকায় রয়েছে কাঁচামরিচও। গত সপ্তাহে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচের দাম কিছুটা কমে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতের সময় সবজির দাম কমে যাওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। এখন সবজির ভরা মৌসুম চলছে। প্রতি সপ্তাহেই দাম কমে যাচ্ছে। তাছাড়া সবজি না বিক্রি করে রেখে দেয়ার মতো পণ্যও না। এ জন্য সরবরাহ যেমন বাড়ছে, দামও তেমনই কমে আসছে।
সবজির পাশাপাশি পেঁয়াজের দামও কমে এসেছে। শুক্রবার আমদানিকৃত পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে। তবে দেশি পেঁয়াজ আগের মতোই ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে। আদার দামও কিছুটা কমেছে। বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৮০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া কেজিপ্রতি দেশি রসুন ১১০, ভারতীয় রসুন ৯০, আলু কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২০-২২ টাকা দরে।
এদিকে আগের মতোই রয়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া লেয়ার মুরগি ১৭০-১৭৫, পাকিস্তানি লাল মুরগি ২৬০-২৭০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এ ছাড়া গরুর মাংস ৫০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা স্বর্ণা চাল প্রতি কেজি ৪৪ টাকা, পারিজা চাল ৪৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মিনিকেট (ভালো মানের) ৫৮-৬৫ টাকা, মিনিকেট (সাধারণ) ৫৬-৫৮ টাকা, আমদানি করা ভারতীয় বিআর-২৮ চাল ৪৮ টাকা, দেশি বিআর-২৮ চাল ৫২ টাকা, নাজিরশাইল ৬২ থেকে ৬৫ টাকা, পাইজাম চাল ৪৮ টাকা, বাসমতি ৫৩ টাকা এবং পোলাও চাল ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে আকার ভেদে প্রতি কেজি রুই ও কাতলা মাছ ২৫০-৩৫০, সরপুঁটি ৩৫০-৪৫০, কাতলা ৩৫০-৪০০, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০, সিলভার কার্প ২০০-২৫০, চাষের কৈ ২৫০-৩৫০, পাঙ্গাশ ১৫০-২৫০, টেংরা ৬০০, মাগুর ৬০০-৮০০, প্রকার ভেদে চিংড়ি ৪০০-৮০০ কেজি দরে এবং মাঝারি আকারের প্রতিটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৮০০ টাকা দরে।
অন্যান্য মুদি পণ্যের মধ্যে ছোলা ৯০ টাকা, দেশি মুগ ডাল ১৩০ টাকা, ভারতীয় মুগ ডাল ১২০ টাকা, মাষকলাই ১৩৫ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১২৫ টাকা, ভারতীয় মসুর ডাল ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ভোজ্য তেলের দাম আগের মতোই রয়েছে। বাজারে ব্র্যান্ড ভেদে ৫ লিটারের বোতল ৫৩০-৫৪০, প্রতি লিটার বোতল ১-২ টাকা বেড়ে ১০৭ টাকা থেকে ১০৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া খোলা আটা ২৮ থেকে ৩০ টাকা, প্যাকেটজাত আটা ৩২ থেকে ৩৪ টাকা, খোলা ময়দা ৩৪ থেকে ৩৮ টাকা এবং প্যাকেটজাত ময়দা ৪০ থেকে ৪৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।