বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় রাজধানীর কাঁচাবাজারে কমতে শুরু করেছে শাকসবজির দাম। রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায় এখন ৩০ টাকায় কিংবা এর নিচেও পাওয়া যাচ্ছে সবজি। তবে টমেটো কেজি এখনো ১৩০ টাকা। গত সোমবার কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল এলাকার বিভিন্ন বাজারে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, শীতের সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম ও লাউয়ে এখন বাজার ভরপুর। সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে পালং শাক ও শালগম। এ ছাড়া ঝিঙা, পটল, করলা, ঢেঁড়স, ধুন্দল, চিচিংগা, বেগুনসহ সবকিছুর পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। যে কারণে সব ধরনের সবজির দাম গত মাসের তুলনায় প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
গত সপ্তাহের তুলনায় দাম কমার দিকে থেকে এগিয়ে আছে শিম ও বেগুন। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজি দুটির দাম কেজিতে প্রায় ২০ টাকা কমেছে। বাজার ও মানভেদে এখন প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। আর বেগুনের দাম এখন ৫০ থেকে ৬০ টাকায় নেমে এসেছে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হয়েছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে।
হঠাৎ করে ৯০ টাকা ছুঁয়ে ফেলা দেশি পেঁয়াজের দাম অনেকটাই স্থির রয়েছে। গত সপ্তাহের মতো প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে।
এদিকে ৩০ টাকা কেজি দরের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে পটল, মুলা, ধুন্দল, শালগম, পেঁপে। গত সপ্তাহে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া পটলের দাম কমে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় চলে এসেছে। এ ছাড়া ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হওয়া মুলার দাম এখন ২৫ থেকে ৩০ টাকা। বরবটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। ধুন্দল পাওয়া যাচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে এ সবজিটির দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি। পেঁপের দাম ৩০ টাকা থেকে কমে ২০ টাকায় নেমে এসেছে। বাজারে নতুন আসা সবজি শালগমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, ‘গত সপ্তাহের তুলনায় সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। এক সপ্তাহ আগেও প্রতিকেজি শিম বিক্রি করেছি ৮০ টাকায়। আজ বিক্রি করছি ৬০ টাকায়।’ এ ব্যবসায়ী আরও বলেন, ‘বাজারে এখন সব ধরনের শাক-সবজি পাওয়া যাচ্ছে। যে কারণে দাম কমে আসছে। সামনে বৃষ্টি না হলে সরবরাহ আরও বাড়বে, তখন দাম আরও কমে যাবে।’
দাম কমার তালিকায় রয়েছে- ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ঢেঁড়স, লাউ, ফুলকপি ও বাঁধাকপি। করলার দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া ঝিঙে, চিচিংগা, ঢেঁড়সের দাম কমে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে। ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হওয়া প্রতিটি লাউয়ের দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৪০-৫০ টাকা। আর ৫ টাকার মতো কমে প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা।
সবজির দাম কমায় কিছুটা হলেও ভালো লাগছে। গত সপ্তাহ পর্যন্ত সবজির দাম আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে ছিল। এখন কিছু কিছু সবজি ৩০ টাকা কেজি দরে কিনতে পারছি, যা ১৫ দিন আগেও ৬০ টাকার বেশি ছিল। তবে ইচ্ছা থাকলেও টমেটো এখনো কিনে খাওয়ার পর্যায়ে আসেনি।’
বাজারে শাক-সবজি ভরপুর থাকায় দাম কিছুটা কমেছে। মাত্র পাঁচ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে লাল, সবুজ ও মুলা শাক। এর থেকে দাম আর কতো কমব। সব ধরনের শাক এখন বেশ সস্তা। তবে কিছু কিছু সবজির দাম এখনো ৪০ টাকার ওপরে। আশা করছি এসব সবজির দামও খুব শিগগির কমে যাবে।’
সবজির মতো এক সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে সব ধরনের শাকের দাম। ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হওয়া লাল শাক ও সবুজ শাকের আঁটি কমে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পুঁইশাক বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। ২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি হওয়া মুলা শাকের দাম কমে হয়েছে ৫-১০ টাকা। আর ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া লাউশাক এক লাফে নেমে এসেছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়।
টমেটোর পাশাপাশি এখনো চড়া রয়েছে মরিচের দাম; প্রায় প্রতিটি বাজারেই মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজিতে। মরিচের দাম কমতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে বলে জানান বিক্রেতারা।