ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধানের দ্বিগুণ দামে পয়সার মুখ দেখছে কৃষকরা

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ অনেক দিন পর এবার দেশের কৃষকরা ধানের ন্যায্যদাম পাচ্ছেন। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিমণ ধানে তারা দ্বিগুণ দাম পাচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের দ্বিগুণ দামে ধান বিক্রি করতে পরায় তারা খুবই খুশি। চলতি আমন মৗেসুমে বন্যা, অতিবৃষ্টি ও অসিময়ের ঝড়ে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তার পরও ভালো দাম পাওয়ায় তাদের পুষিয়ে যাচ্ছে।

উত্তরাঞ্চলের শস্য ভাণ্ডার বলে খ্যাত বগুড়ার ধুনট উপজেলার চরপাড়া গ্রামের কৃষক বাঙালী কণ্ঠকে জানান, এবারের আমন মৌসুমে তিনি ১০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। এর মধ্যে বন্যায় ৫ বিঘা জমির ধান ডুবে যায়। বাকি ৫ বিঘায় তিনি ৭০ মণ ধান পেয়েছেন। নিজেদের খাওয়ার জন্য ২০ মণ রেখে বাকি ধান ১১০০ টাকা দরে ৫০ মণ ৫৫ হাজার টাকায় করেছেন। গত বছরে একই পরিমাণ টাকা পেতে প্রায় ১০০ মণ ধান বিক্রি করতে হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এবার ৫ বিঘা জমির ফসল বিক্রি করে ১০ বিঘা জমির ফসলের সমান টাকা পেয়েছেন। এবার ধানের ভাল দাম পাওয়ায় বন্যায় যে ৫ বিঘার ধান ডুবে গেছে তাতে আমার কোনো দুঃখ নেই’।

ধুনটের ধান ব্যবসায়ী বাঙালী কণ্ঠকে জানান, বর্তমানে বিআর ৪৯ ধান ১১০০ টাকা, গুটি স্বর্ণা ১ হাজার টাকা, রঞ্জিত ধান ১ হাজার ২০০ টাকা ও পাইজাম ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকা দরে কেনাবেচা হচ্ছে। ধানের ফলন এবার অর্ধেকে নেমেছে পূর্বের বছরের তুলনায়। এর আগে প্রতি বিঘায় ১৫-১৬ মণ ধান হতো, এবার প্রতি বিঘায় ৮ থেকে ১০ মণ ধান হচ্ছে। এর পরও কৃষকরা খুশি। কেননা গত বছরের তুলনায় এবার দ্বিগুণ দামে ধান বিক্রি করতে পারছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২৫ বছর ধরে ধানের ব্যবসা করি। ধানের এত দাম আগে কখনও দেখিনি।

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় একটি পৗেরসভা ও ৬টি ইউনিয়ন মিলে এবার ১২ হাজার ৪শ হেক্টর জমিতে রােপা আমন ধান চাষ করা হয়। এসব জমিতে জিরাশাইল, বিআর-৪৯, বিনা-৭, সুমনা, স্বর্ণা, গুটি স্বর্ণা ও সুগন্ধি জাতের ধান রোপণ করা হয়। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভাল হয়েছে। পাশাপাশি বাজারে নতুন ধানের দাম ভাল থাকায় কৃষকরা বেশ খুশিতে আছেন।

আদমদীঘি উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক বাঙালী কণ্ঠকে জানান, পরপর দু’দফা অতিবর্ষণ জনিত বন্যায় ক্ষতি হলেও যতটুকু ধানের ফলন হয়েছে তাতে ভাল দাম পাওয়ায় আমরা খুবই খুশি। অনেক দিন পর এবার ধানের ভাল দাম পেলাম।
উপজেলা কৃষি অফিসার কামরুজামান জানান, ধানের ভাল ফলন ও দাম ভাল পাওয়ায় এবার কৃষক খুব খুশি। তিনি বলেন, এবার শুধু ধান নয়; খড়ের দামও প্রচুর। যে কৃষকের গরু নেই, তিনি খড় বিক্রি করেও বেশ ভাল টাকা পেয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার ১১৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান রােপণ করা হয়েছিল। এখন চলছে সেসব এলাকায় ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ। ধানের পাশাপাশি খড় বিক্রি করেও বাড়তি লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। এতে করে এসব এলাকায় হাইব্রিড জাতের ধান আবাদে কৃষকরা দারুণ ভাবে লাভবান হয়েছে।

এ উপজেলার কৃষক নেপাল চন্দ্র সরকার বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, এবার বিঘা প্রতি আমন ধানের উৎপাদন হয়েছে ১৩ থেকে ১৪ মণ করে, আর প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে এক হাজার পঞ্চাশ টাকায়। তিনি বলেন, এবার বন্যার কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গোখাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছিল, এবার ধান থেকে যে খড় এসেছে, সে খড়েরর দামও প্রচুর ফলে কৃষকরা দু’দিক থেকে লাভবান হয়েছেন।

একই উপজেলার কৃষক বাঙালী কণ্ঠকে জানান, এবার তিনি ৫০ শতক জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। এ জমিতে তার মোট খরচ হয়েছে ৭ হাজার টাকা। জমিতে যে ধান উৎপাদন হয়েছে সে ধান ২২ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। এ ছাড়া ওই জমি থেকে তিনি ৪ হাজার টাকার খড় বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, ধান উৎপাদন করে কৃষকরা এত লাভবান আর কখনই হয়নি।
নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার আবু রেজা বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, দিনাজপুর শস্য ভাণ্ডার খ্যাত একটি জেলা। এ জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১১৫০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের হাইব্রিড ধান আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যেই ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শেষ হয়ে গেছে। ধানের ফলন ও বেশ ভাল হয়েছে, প্রতি হেক্টরে প্রায় সাড়ে ৩ মেট্রিক টন করে গড়ে এই ধানের ফলন হচ্ছে। কৃষকরা এতে খুবই খুশি হয়েছে।

এই কৃষি কর্মকর্তা বলেন, একদিকে কৃষক যেমন ধানের ভাল দাম পাচ্ছেন, অপরদিকে তারা গবাদিপশুর জন্য খড়ও পাচ্ছেন। ফলে তাদের নিজের চাহিদা মিটিয়ে সেই খড় অন্যত্র বিক্রিও হচ্ছে। আর এ খড় বিক্রি করে কৃষকরা ভাল অর্থ পাচ্ছেন।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৮৬ হাজার ৮৩০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বন্যার পানি থাকায় চাষ হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি। এবার মোট জমিতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩৩ হাজার ২৩০ মেট্রিকটন।

এখানকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর এ সময় বাজারে এক মণ ধানের দাম ছিল ৬শ থেকে ৭শ টাকা। এবার সেই ধান বিক্রি হচ্ছে ১২শ থেকে ১৩শ টাকা দরে। অর্থাৎ ধানের দাম দ্বিগুণ বেড়েছে। স্বাধীনতার পর কৃষকরা ধানের এত দাম পায়নি বলে অনেকেই জানান। এভাবে দাম পেলে কৃষকরা ধানের আবাদ বাড়িয়ে দেবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের চিয়ার গ্রামের কৃষক, বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, এবারের আমন মৌসুমে আমি দুই বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। চাষ বাবদ আমার খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা। দুই বিঘা জমিতে পাইজাম ধান পেয়েছি ৩০ মণ। সে ধান থেকে ২০মণের প্রতিমণ ১১০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। গত বছরের চেয়ে এবার বাজারে ধানের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় খুশি হয়েছেন তিনি।

গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বাঙালী কণ্ঠকে জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার রোপা আমন ধানের ফলন ভাল হয়েছে। বাজারে ধান ও খড় দুটোর দামও ভাল। এ কারণে কৃষকের ওপর বন্যার কোনো প্রভাব পড়বে না; বন্যায় যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে গেছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

ধানের দ্বিগুণ দামে পয়সার মুখ দেখছে কৃষকরা

আপডেট টাইম : ০৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ ডিসেম্বর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ অনেক দিন পর এবার দেশের কৃষকরা ধানের ন্যায্যদাম পাচ্ছেন। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিমণ ধানে তারা দ্বিগুণ দাম পাচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের দ্বিগুণ দামে ধান বিক্রি করতে পরায় তারা খুবই খুশি। চলতি আমন মৗেসুমে বন্যা, অতিবৃষ্টি ও অসিময়ের ঝড়ে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তার পরও ভালো দাম পাওয়ায় তাদের পুষিয়ে যাচ্ছে।

উত্তরাঞ্চলের শস্য ভাণ্ডার বলে খ্যাত বগুড়ার ধুনট উপজেলার চরপাড়া গ্রামের কৃষক বাঙালী কণ্ঠকে জানান, এবারের আমন মৌসুমে তিনি ১০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। এর মধ্যে বন্যায় ৫ বিঘা জমির ধান ডুবে যায়। বাকি ৫ বিঘায় তিনি ৭০ মণ ধান পেয়েছেন। নিজেদের খাওয়ার জন্য ২০ মণ রেখে বাকি ধান ১১০০ টাকা দরে ৫০ মণ ৫৫ হাজার টাকায় করেছেন। গত বছরে একই পরিমাণ টাকা পেতে প্রায় ১০০ মণ ধান বিক্রি করতে হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এবার ৫ বিঘা জমির ফসল বিক্রি করে ১০ বিঘা জমির ফসলের সমান টাকা পেয়েছেন। এবার ধানের ভাল দাম পাওয়ায় বন্যায় যে ৫ বিঘার ধান ডুবে গেছে তাতে আমার কোনো দুঃখ নেই’।

ধুনটের ধান ব্যবসায়ী বাঙালী কণ্ঠকে জানান, বর্তমানে বিআর ৪৯ ধান ১১০০ টাকা, গুটি স্বর্ণা ১ হাজার টাকা, রঞ্জিত ধান ১ হাজার ২০০ টাকা ও পাইজাম ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকা দরে কেনাবেচা হচ্ছে। ধানের ফলন এবার অর্ধেকে নেমেছে পূর্বের বছরের তুলনায়। এর আগে প্রতি বিঘায় ১৫-১৬ মণ ধান হতো, এবার প্রতি বিঘায় ৮ থেকে ১০ মণ ধান হচ্ছে। এর পরও কৃষকরা খুশি। কেননা গত বছরের তুলনায় এবার দ্বিগুণ দামে ধান বিক্রি করতে পারছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২৫ বছর ধরে ধানের ব্যবসা করি। ধানের এত দাম আগে কখনও দেখিনি।

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় একটি পৗেরসভা ও ৬টি ইউনিয়ন মিলে এবার ১২ হাজার ৪শ হেক্টর জমিতে রােপা আমন ধান চাষ করা হয়। এসব জমিতে জিরাশাইল, বিআর-৪৯, বিনা-৭, সুমনা, স্বর্ণা, গুটি স্বর্ণা ও সুগন্ধি জাতের ধান রোপণ করা হয়। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভাল হয়েছে। পাশাপাশি বাজারে নতুন ধানের দাম ভাল থাকায় কৃষকরা বেশ খুশিতে আছেন।

আদমদীঘি উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক বাঙালী কণ্ঠকে জানান, পরপর দু’দফা অতিবর্ষণ জনিত বন্যায় ক্ষতি হলেও যতটুকু ধানের ফলন হয়েছে তাতে ভাল দাম পাওয়ায় আমরা খুবই খুশি। অনেক দিন পর এবার ধানের ভাল দাম পেলাম।
উপজেলা কৃষি অফিসার কামরুজামান জানান, ধানের ভাল ফলন ও দাম ভাল পাওয়ায় এবার কৃষক খুব খুশি। তিনি বলেন, এবার শুধু ধান নয়; খড়ের দামও প্রচুর। যে কৃষকের গরু নেই, তিনি খড় বিক্রি করেও বেশ ভাল টাকা পেয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার ১১৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান রােপণ করা হয়েছিল। এখন চলছে সেসব এলাকায় ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ। ধানের পাশাপাশি খড় বিক্রি করেও বাড়তি লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। এতে করে এসব এলাকায় হাইব্রিড জাতের ধান আবাদে কৃষকরা দারুণ ভাবে লাভবান হয়েছে।

এ উপজেলার কৃষক নেপাল চন্দ্র সরকার বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, এবার বিঘা প্রতি আমন ধানের উৎপাদন হয়েছে ১৩ থেকে ১৪ মণ করে, আর প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে এক হাজার পঞ্চাশ টাকায়। তিনি বলেন, এবার বন্যার কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গোখাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছিল, এবার ধান থেকে যে খড় এসেছে, সে খড়েরর দামও প্রচুর ফলে কৃষকরা দু’দিক থেকে লাভবান হয়েছেন।

একই উপজেলার কৃষক বাঙালী কণ্ঠকে জানান, এবার তিনি ৫০ শতক জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। এ জমিতে তার মোট খরচ হয়েছে ৭ হাজার টাকা। জমিতে যে ধান উৎপাদন হয়েছে সে ধান ২২ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। এ ছাড়া ওই জমি থেকে তিনি ৪ হাজার টাকার খড় বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, ধান উৎপাদন করে কৃষকরা এত লাভবান আর কখনই হয়নি।
নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার আবু রেজা বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, দিনাজপুর শস্য ভাণ্ডার খ্যাত একটি জেলা। এ জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১১৫০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের হাইব্রিড ধান আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যেই ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শেষ হয়ে গেছে। ধানের ফলন ও বেশ ভাল হয়েছে, প্রতি হেক্টরে প্রায় সাড়ে ৩ মেট্রিক টন করে গড়ে এই ধানের ফলন হচ্ছে। কৃষকরা এতে খুবই খুশি হয়েছে।

এই কৃষি কর্মকর্তা বলেন, একদিকে কৃষক যেমন ধানের ভাল দাম পাচ্ছেন, অপরদিকে তারা গবাদিপশুর জন্য খড়ও পাচ্ছেন। ফলে তাদের নিজের চাহিদা মিটিয়ে সেই খড় অন্যত্র বিক্রিও হচ্ছে। আর এ খড় বিক্রি করে কৃষকরা ভাল অর্থ পাচ্ছেন।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৮৬ হাজার ৮৩০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বন্যার পানি থাকায় চাষ হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি। এবার মোট জমিতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩৩ হাজার ২৩০ মেট্রিকটন।

এখানকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর এ সময় বাজারে এক মণ ধানের দাম ছিল ৬শ থেকে ৭শ টাকা। এবার সেই ধান বিক্রি হচ্ছে ১২শ থেকে ১৩শ টাকা দরে। অর্থাৎ ধানের দাম দ্বিগুণ বেড়েছে। স্বাধীনতার পর কৃষকরা ধানের এত দাম পায়নি বলে অনেকেই জানান। এভাবে দাম পেলে কৃষকরা ধানের আবাদ বাড়িয়ে দেবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের চিয়ার গ্রামের কৃষক, বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, এবারের আমন মৌসুমে আমি দুই বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। চাষ বাবদ আমার খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা। দুই বিঘা জমিতে পাইজাম ধান পেয়েছি ৩০ মণ। সে ধান থেকে ২০মণের প্রতিমণ ১১০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। গত বছরের চেয়ে এবার বাজারে ধানের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় খুশি হয়েছেন তিনি।

গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বাঙালী কণ্ঠকে জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার রোপা আমন ধানের ফলন ভাল হয়েছে। বাজারে ধান ও খড় দুটোর দামও ভাল। এ কারণে কৃষকের ওপর বন্যার কোনো প্রভাব পড়বে না; বন্যায় যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে গেছে।