ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অগ্রণী ব্যাংকে ৫৩৫৪ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন সরকারি খাতে ৮৭৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা বেসরকারি খাতে ৪ হাজার ৪৭৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা

রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক ৫ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করেছে। খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অবলোপনের পথ বেছে নিয়েছে। এতে বিশাল অংকের এ টাকা আদায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এর প্রভাবে ব্যাংকটির আর্থিক পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়ছে।

আর্থিক খাত বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যাংকের অসাধু এমডির দুর্নীতির কারণে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যর্থতার কারণেই অবলোপনের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুর্নীতি বা ঋণ আদায়ে ব্যর্থতার জন্য সরকার কারও বিরুদ্ধে তেমন ব্যবস্থাও নিচ্ছে না। ফলে খেলাপি এবং অবলোপন সংস্কৃতি কমার বদলে ক্রমশ বাড়ছে। অগ্রণী ব্যাংক ২০০২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১৪ বছরে ৫ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন (যেসব খেলাপি ঋণ ৫ বছরে আদায় করা সম্ভব হয়নি বা এর চেয়েও পুরনো, ওই সব খেলাপি ঋণ ব্যাংকের নিয়মিত খাতায় লেখা বন্ধ করে আলাদা খাতায় লিখে রাখার নামই রাইট অফ বা ঋণ অবলোপন) করেছে। এর মধ্যে সরকারি খাতে ৬১টি ঋণের বিপরীতে অবলোপন করা হয় ৮৭৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা। বেসরকারি খাতে ২ লাখ ৪ হাজার ৮৩৬টি ঋণের বিপরীতে ঋণ অবলোপন করা হয় ৪ হাজার ৪৭৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। অবলোপনের পর আদায় হয়েছে মাত্র ৪৬৫ কোটি টাকা। ঋণ অবলোপনের এ চিত্রকে বিশেষজ্ঞরা ‘ভয়াবহ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে, বিপুল পরিমাণ এ টাকা কোথায় গেল।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, ঋণ অবলোপন নিয়ম মেনেই করা হয়। কিন্তু এটা খারাপ লক্ষণ। যেসব ঋণ ৫ বছর ধরে আদায় করা সম্ভব হয়নি, এজন্য মামলা হয়েছে, ঋণগ্রহীতা কোর্ট থেকে বারবার স্থগিতাদেশ নিয়েছেন। যখন ঋণ আদায়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যায়, তখন ওই সব ঋণ অবলোপন করা হয়। যদিও বলা হয়, যত্ন সহকারে এ ঋণ আদায় করা হবে, কিন্তু বাস্তবতা তা বলে না। এজন্য সরকারই দায়ী। কারণ বিগত বছরগুলোতে একেক এমডি তিনবার করে পুনর্নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যে এমডি একবার দুর্নীতি করেছেন তাকে আবার নিয়োগ দেয়া উচিত হয়নি। এমডিদের দুর্নীতির জন্য সরকার পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছে। এসব কারণে ঋণ অবলোপন বেড়েছে। তিনি বলেন, সরকারি ব্যাংক নিয়ন্ত্রণে অর্থ মন্ত্রণালয় পুরোপরি ব্যর্থ হয়েছে। বিষয়টি ভালোভাবে বিবেচনায় নেয়া দরকার বলে মনে করেন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাবেক এ চেয়ারম্যান। সূত্র জানায়, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে অবলোপনকৃত ঋণ বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আদায়ের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে উল্টো চিত্র বিদ্যমান। এখানে ঋণ অবলোপন মানেই ধরে নেয়া হয় ওই টাকা আর আদায় হবে না। এসব মন্দ ঋণের কথা আর কেউ মনেও রাখে না। অসৎ ব্যবসায়ীরা এ সুযোগ নিজেদের স্বার্থে ভালোভাবে কাজে লাগান। তারা মনেপ্রাণে চান ঋণটি যেন অবলোপন হয়। সে কারণে খারাপ ঋণ খেলাপিরা সময়ক্ষেপণ করেন। বেশিরভাগ সময় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক খেলাপি ঋণ আদায়ে মামলা করে। এ সময় কোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে টাকা পরিশোধে গড়িমসি করেন মন্দ ব্যবসায়ীরা। এভাবেই কেটে যায় ৫ বছর। এরপর অলিখিত ব্যবস্থায় অবলোপনের পথে হাঁটেন উভয়পক্ষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, মন্দ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নির্ধারিত হারে কমিশন খেয়ে ধারাবাহিকভাবে ঋণ অবলোপন করা হয়েছে। সে কারণে ব্যাংকটির ঋণ অবলোপনের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে।

অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত যুগান্তরকে বলেন, ঋণ অবলোপন আরও করতে চাই। এটা বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনেও বলা আছে। আইনের আওতায় ঋণ অবলোপন করা হচ্ছে। তবে অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ে চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।

অগ্রণী ব্যাংকের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, ইতিমধ্যে অ্যাকশন প্ল্যান নেয়া হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর অর্থাৎ ১০০ দিনের মধ্যে অবলোপনকৃত ঋণের ৩০ শতাংশ আদায়ের পরিকল্পনা আছে। প্রথমে শীর্ষ ১০ ঋণ খেলাপি ও অবলোপনের পরে শীর্ষ ২০ ঋণ খেলাপির বিষয়টি মাথায় রাখা হয়েছে। এরপর ধারাবাহিকভাবে অন্যান্য খেলাপি ও অবলোপন আদায়ের চেষ্টা করা হবে। তিনি বলেন, নানা কারণে ব্যাংকটি বর্তমানে ইমেজ সংকটে আছে। ইমেজ সংকট কাটিয়ে তোলার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি ঋণ অবলোপন হয় ২০১৩ সালে। এ বছর ১ হাজার ৩১২ কোটি ৯০ লাখ টাকার ঋণ অবলোপন করা হয়। একইভাবে ২০০২ সালে ৬ কোটি ৮১ লাখ, ২০০৩ সালে ৬২৯ কোটি ৫৪ লাখ, ২০০৪ সালে ১ কোটি ৮৪ লাখ, ২০০৫ সালে ৫০৮ কোটি ২৬ লাখ, ২০০৬ সালে ২৯১ কোটি ৮৬ লাখ, ২০০৭ সালে ২৬৯ কোটি ৯৬ লাখ, ২০০৮ সালে ৮৮৭ কোটি ৫ লাখ, ২০০৯ সালে ১৩৭ কোটি ৩৫ লাখ, ২০১০ সালে ২৭০ কোটি ১ লাখ, ২০১১ সালে ৩২২ কোটি ৩৬ লাখ, ২০১২ সালে ৩৭৩ কোটি ৩৭ লাখ, ২০১৪ সালে ১২৯ কোটি ৪৮ লাখ ও ২০১৫ সালে ঋণ অবলোপন করা হয়েছে ২১৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। পরিসংখ্যানে আরও দেখা যায়, ২০১৫ সালে সারা দেশে ৭৬টি শাখার মাধ্যমে ৭ হাজার ৩০১টি ঋণের বিপরীতে ২১৩ কোটি টাকা ঋণ অবলোপন করেছে অগ্রণী ব্যাংক।

শাখাভিত্তিক শীর্ষ ৫ ঋণ অবলোপনকারী প্রতিষ্ঠান হল- অগ্রণী ব্যাংকের ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কর্পোরেট শাখার সরদার এ্যাপারেলস ইউনিট ১ ও ২ অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ ৯০ কোটি, নারায়ণগঞ্জের কোর্ট রোড শাখার মেসার্স শান ফেব্রিক্স লিমিটেড অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ ৩৮ কোটি, খুলনার যশোর শাখার দি গোল্ডেন ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ ২৪ কোটি, নারায়ণগঞ্জের বঙ্গবন্ধু কর্পোরেট শাখার মেসার্স পাল অ্যান্ড কোং অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ ২১ কোটি ও ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কর্পোরেট শাখার স্টেকহোম নিট ওয়্যারের অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি টাকা।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

অগ্রণী ব্যাংকে ৫৩৫৪ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন সরকারি খাতে ৮৭৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা বেসরকারি খাতে ৪ হাজার ৪৭৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা

আপডেট টাইম : ০৭:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক ৫ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করেছে। খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অবলোপনের পথ বেছে নিয়েছে। এতে বিশাল অংকের এ টাকা আদায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এর প্রভাবে ব্যাংকটির আর্থিক পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়ছে।

আর্থিক খাত বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যাংকের অসাধু এমডির দুর্নীতির কারণে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যর্থতার কারণেই অবলোপনের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুর্নীতি বা ঋণ আদায়ে ব্যর্থতার জন্য সরকার কারও বিরুদ্ধে তেমন ব্যবস্থাও নিচ্ছে না। ফলে খেলাপি এবং অবলোপন সংস্কৃতি কমার বদলে ক্রমশ বাড়ছে। অগ্রণী ব্যাংক ২০০২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১৪ বছরে ৫ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন (যেসব খেলাপি ঋণ ৫ বছরে আদায় করা সম্ভব হয়নি বা এর চেয়েও পুরনো, ওই সব খেলাপি ঋণ ব্যাংকের নিয়মিত খাতায় লেখা বন্ধ করে আলাদা খাতায় লিখে রাখার নামই রাইট অফ বা ঋণ অবলোপন) করেছে। এর মধ্যে সরকারি খাতে ৬১টি ঋণের বিপরীতে অবলোপন করা হয় ৮৭৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা। বেসরকারি খাতে ২ লাখ ৪ হাজার ৮৩৬টি ঋণের বিপরীতে ঋণ অবলোপন করা হয় ৪ হাজার ৪৭৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। অবলোপনের পর আদায় হয়েছে মাত্র ৪৬৫ কোটি টাকা। ঋণ অবলোপনের এ চিত্রকে বিশেষজ্ঞরা ‘ভয়াবহ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে, বিপুল পরিমাণ এ টাকা কোথায় গেল।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, ঋণ অবলোপন নিয়ম মেনেই করা হয়। কিন্তু এটা খারাপ লক্ষণ। যেসব ঋণ ৫ বছর ধরে আদায় করা সম্ভব হয়নি, এজন্য মামলা হয়েছে, ঋণগ্রহীতা কোর্ট থেকে বারবার স্থগিতাদেশ নিয়েছেন। যখন ঋণ আদায়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যায়, তখন ওই সব ঋণ অবলোপন করা হয়। যদিও বলা হয়, যত্ন সহকারে এ ঋণ আদায় করা হবে, কিন্তু বাস্তবতা তা বলে না। এজন্য সরকারই দায়ী। কারণ বিগত বছরগুলোতে একেক এমডি তিনবার করে পুনর্নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যে এমডি একবার দুর্নীতি করেছেন তাকে আবার নিয়োগ দেয়া উচিত হয়নি। এমডিদের দুর্নীতির জন্য সরকার পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছে। এসব কারণে ঋণ অবলোপন বেড়েছে। তিনি বলেন, সরকারি ব্যাংক নিয়ন্ত্রণে অর্থ মন্ত্রণালয় পুরোপরি ব্যর্থ হয়েছে। বিষয়টি ভালোভাবে বিবেচনায় নেয়া দরকার বলে মনে করেন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাবেক এ চেয়ারম্যান। সূত্র জানায়, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে অবলোপনকৃত ঋণ বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আদায়ের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে উল্টো চিত্র বিদ্যমান। এখানে ঋণ অবলোপন মানেই ধরে নেয়া হয় ওই টাকা আর আদায় হবে না। এসব মন্দ ঋণের কথা আর কেউ মনেও রাখে না। অসৎ ব্যবসায়ীরা এ সুযোগ নিজেদের স্বার্থে ভালোভাবে কাজে লাগান। তারা মনেপ্রাণে চান ঋণটি যেন অবলোপন হয়। সে কারণে খারাপ ঋণ খেলাপিরা সময়ক্ষেপণ করেন। বেশিরভাগ সময় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক খেলাপি ঋণ আদায়ে মামলা করে। এ সময় কোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে টাকা পরিশোধে গড়িমসি করেন মন্দ ব্যবসায়ীরা। এভাবেই কেটে যায় ৫ বছর। এরপর অলিখিত ব্যবস্থায় অবলোপনের পথে হাঁটেন উভয়পক্ষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, মন্দ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নির্ধারিত হারে কমিশন খেয়ে ধারাবাহিকভাবে ঋণ অবলোপন করা হয়েছে। সে কারণে ব্যাংকটির ঋণ অবলোপনের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে।

অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত যুগান্তরকে বলেন, ঋণ অবলোপন আরও করতে চাই। এটা বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনেও বলা আছে। আইনের আওতায় ঋণ অবলোপন করা হচ্ছে। তবে অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ে চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।

অগ্রণী ব্যাংকের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, ইতিমধ্যে অ্যাকশন প্ল্যান নেয়া হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর অর্থাৎ ১০০ দিনের মধ্যে অবলোপনকৃত ঋণের ৩০ শতাংশ আদায়ের পরিকল্পনা আছে। প্রথমে শীর্ষ ১০ ঋণ খেলাপি ও অবলোপনের পরে শীর্ষ ২০ ঋণ খেলাপির বিষয়টি মাথায় রাখা হয়েছে। এরপর ধারাবাহিকভাবে অন্যান্য খেলাপি ও অবলোপন আদায়ের চেষ্টা করা হবে। তিনি বলেন, নানা কারণে ব্যাংকটি বর্তমানে ইমেজ সংকটে আছে। ইমেজ সংকট কাটিয়ে তোলার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি ঋণ অবলোপন হয় ২০১৩ সালে। এ বছর ১ হাজার ৩১২ কোটি ৯০ লাখ টাকার ঋণ অবলোপন করা হয়। একইভাবে ২০০২ সালে ৬ কোটি ৮১ লাখ, ২০০৩ সালে ৬২৯ কোটি ৫৪ লাখ, ২০০৪ সালে ১ কোটি ৮৪ লাখ, ২০০৫ সালে ৫০৮ কোটি ২৬ লাখ, ২০০৬ সালে ২৯১ কোটি ৮৬ লাখ, ২০০৭ সালে ২৬৯ কোটি ৯৬ লাখ, ২০০৮ সালে ৮৮৭ কোটি ৫ লাখ, ২০০৯ সালে ১৩৭ কোটি ৩৫ লাখ, ২০১০ সালে ২৭০ কোটি ১ লাখ, ২০১১ সালে ৩২২ কোটি ৩৬ লাখ, ২০১২ সালে ৩৭৩ কোটি ৩৭ লাখ, ২০১৪ সালে ১২৯ কোটি ৪৮ লাখ ও ২০১৫ সালে ঋণ অবলোপন করা হয়েছে ২১৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। পরিসংখ্যানে আরও দেখা যায়, ২০১৫ সালে সারা দেশে ৭৬টি শাখার মাধ্যমে ৭ হাজার ৩০১টি ঋণের বিপরীতে ২১৩ কোটি টাকা ঋণ অবলোপন করেছে অগ্রণী ব্যাংক।

শাখাভিত্তিক শীর্ষ ৫ ঋণ অবলোপনকারী প্রতিষ্ঠান হল- অগ্রণী ব্যাংকের ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কর্পোরেট শাখার সরদার এ্যাপারেলস ইউনিট ১ ও ২ অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ ৯০ কোটি, নারায়ণগঞ্জের কোর্ট রোড শাখার মেসার্স শান ফেব্রিক্স লিমিটেড অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ ৩৮ কোটি, খুলনার যশোর শাখার দি গোল্ডেন ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ ২৪ কোটি, নারায়ণগঞ্জের বঙ্গবন্ধু কর্পোরেট শাখার মেসার্স পাল অ্যান্ড কোং অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ ২১ কোটি ও ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কর্পোরেট শাখার স্টেকহোম নিট ওয়্যারের অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি টাকা।