ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভালো ফলনে ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখছে ফেনীর কৃষক

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ চলতি আমান ধানের মৌসুমকে টানা কয়েকবারের বৃষ্টিপাত ও প্লাবনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম ছাগলনাইয়াসহ পুরো জেলার অনেক কৃষক। মৌসুম শেষে ঘরে উঠছে সেই ধান, ভালো ফলনে সেই ক্ষতি পুষিয়ে আসছে, বাজারে দামও মিলছে ভালো।

সবমিলিয়ে চলতি মৌসুমে আমানের ফলনে অধিকাংশ কৃষকের মুখেই হাসি। জেলার প্রান্তিক জনপদগুলোতে গিয়ে সেই চিত্রই দেখা যায়।

সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকরা মাঠে ধান কাটা, মাড়াই ও শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। হাট-বাজারগুলোতে ধানের ভালো দাম পাওয়ায় বন্যায় ক্ষয়-ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখার আশা করছেন তারা।

কৃষি অফিসের পরামর্শমতে ৫ একর জমিতে যথাসময়ে ব্রি-৫২ জাতের ধানের চারা রোপণ করে ভালো ফলন হয়েছে বলে মনে করছেন অনেক কৃষক। জমিতে ৫ একরে প্রায় সাড়ে ১০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে। এতে প্রতি একরে ১৯ হাজার ৬২৫ টাকা লাভ হয়েছে।

ছাগলনাইয়ার মহামায়া ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের কৃষক কবির আহম্মদ এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, গত শনিবার (২৮ নভেম্বর) স্থানীয় বাজারে ১ হাজার ৮০ টাকা মণ ধরে ধান বিক্রি করেছেন। তিনি এ দরে ৫ মেট্রিক টন ধান বিক্রি করেছেন।

কৃষক - উইকিপিডিয়া

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আমন মৌসুমে ফেনী জেলায় ৬৬ হাজার ৫১২ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৮২ ৫৯২ মেট্রিক টন। কয়েক দফা ভারী বর্ষণে উজানের ঢলে ফেনী জেলার নিম্নাঞ্চলের ১২২ হেক্টর জমির আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এতে প্রায় ৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকারও বেশি ফসল বিনষ্ট হয়। তারপরও জেলার সদর উপজেলা, সোনাগাজী, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার উঁচু এলাকাগুলোতে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।

এবার রবি মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবং রবি মৌসুমে ফসলের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে কৃষি পুনর্বাসন ও কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় তিন হাজার ৫শ জন কৃষকের মধ্যে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ উপজেলা পর্যায়ে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এছাড়াও করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্য সংকট মোকাবিলায় উৎপাদন বাড়ানোর জন্য জেলায় ১০ হাজার কৃষকের মধ্যে বোরো হাইব্রিড বীজ ধান বিতরণ করবে কৃষি বিভাগ। অগ্রহায়ণের প্রথম থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা আমন ধান কাটতে শুরু করেছে।

সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রামের কৃষক রবিউল হক জানান, এবার আমাদের জমিতে ধানের ভালো ফলন হয়েছে।

কৃষক না থাকলে সরকার থাকেনা – প্রিয় শাহরাস্তি – PriyoShahrasti.com

তিনি জানান, ৪ একর জমিতে ব্রি-৪৯ জাতের ধান চাষ করে খরচ বাদ দিয়ে অর্ধেকেরও বেশি টাকা তার লাভ হয়েছে।

ফেনী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তোফায়েল আহম্মদ চৌধুরী জানান, ফেনীতে এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে ৫৩ শতাংশ জমির ধান কর্তন করা হয়েছে।

তিনি জানান, বর্তমান সরকার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক কৃষকের হাতে প্রণোদনা তুলে দিয়েছে। এছাড়াও কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় আগামীতে কৃষকরা আরও বেশি করে কৃষি কাজে উৎসাহিত হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

ভালো ফলনে ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখছে ফেনীর কৃষক

আপডেট টাইম : ০৫:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ নভেম্বর ২০২০

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ চলতি আমান ধানের মৌসুমকে টানা কয়েকবারের বৃষ্টিপাত ও প্লাবনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম ছাগলনাইয়াসহ পুরো জেলার অনেক কৃষক। মৌসুম শেষে ঘরে উঠছে সেই ধান, ভালো ফলনে সেই ক্ষতি পুষিয়ে আসছে, বাজারে দামও মিলছে ভালো।

সবমিলিয়ে চলতি মৌসুমে আমানের ফলনে অধিকাংশ কৃষকের মুখেই হাসি। জেলার প্রান্তিক জনপদগুলোতে গিয়ে সেই চিত্রই দেখা যায়।

সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকরা মাঠে ধান কাটা, মাড়াই ও শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। হাট-বাজারগুলোতে ধানের ভালো দাম পাওয়ায় বন্যায় ক্ষয়-ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখার আশা করছেন তারা।

কৃষি অফিসের পরামর্শমতে ৫ একর জমিতে যথাসময়ে ব্রি-৫২ জাতের ধানের চারা রোপণ করে ভালো ফলন হয়েছে বলে মনে করছেন অনেক কৃষক। জমিতে ৫ একরে প্রায় সাড়ে ১০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে। এতে প্রতি একরে ১৯ হাজার ৬২৫ টাকা লাভ হয়েছে।

ছাগলনাইয়ার মহামায়া ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের কৃষক কবির আহম্মদ এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, গত শনিবার (২৮ নভেম্বর) স্থানীয় বাজারে ১ হাজার ৮০ টাকা মণ ধরে ধান বিক্রি করেছেন। তিনি এ দরে ৫ মেট্রিক টন ধান বিক্রি করেছেন।

কৃষক - উইকিপিডিয়া

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আমন মৌসুমে ফেনী জেলায় ৬৬ হাজার ৫১২ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৮২ ৫৯২ মেট্রিক টন। কয়েক দফা ভারী বর্ষণে উজানের ঢলে ফেনী জেলার নিম্নাঞ্চলের ১২২ হেক্টর জমির আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এতে প্রায় ৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকারও বেশি ফসল বিনষ্ট হয়। তারপরও জেলার সদর উপজেলা, সোনাগাজী, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার উঁচু এলাকাগুলোতে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।

এবার রবি মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবং রবি মৌসুমে ফসলের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে কৃষি পুনর্বাসন ও কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় তিন হাজার ৫শ জন কৃষকের মধ্যে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ উপজেলা পর্যায়ে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এছাড়াও করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্য সংকট মোকাবিলায় উৎপাদন বাড়ানোর জন্য জেলায় ১০ হাজার কৃষকের মধ্যে বোরো হাইব্রিড বীজ ধান বিতরণ করবে কৃষি বিভাগ। অগ্রহায়ণের প্রথম থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা আমন ধান কাটতে শুরু করেছে।

সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রামের কৃষক রবিউল হক জানান, এবার আমাদের জমিতে ধানের ভালো ফলন হয়েছে।

কৃষক না থাকলে সরকার থাকেনা – প্রিয় শাহরাস্তি – PriyoShahrasti.com

তিনি জানান, ৪ একর জমিতে ব্রি-৪৯ জাতের ধান চাষ করে খরচ বাদ দিয়ে অর্ধেকেরও বেশি টাকা তার লাভ হয়েছে।

ফেনী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তোফায়েল আহম্মদ চৌধুরী জানান, ফেনীতে এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে ৫৩ শতাংশ জমির ধান কর্তন করা হয়েছে।

তিনি জানান, বর্তমান সরকার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক কৃষকের হাতে প্রণোদনা তুলে দিয়েছে। এছাড়াও কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় আগামীতে কৃষকরা আরও বেশি করে কৃষি কাজে উৎসাহিত হবে।