সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কে গাছ ফেলে যাত্রীবাহী ২টি বাসসহ কয়েকটি যানবাহনে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে জগন্নাথপুরের সীমান্তবর্তী পাগলা-জগন্নাথপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের কোন্দানালা নামক স্থানে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে ২০-২৫ জনের একটি ডাকাতদল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, রামদা ও ছুরি নিয়ে মহাসড়কে গাছ কেটে একটি লরি গাড়ির গতিরোধ করে। পরে ওই লরিটি সড়কে মধ্যখানে রেখে সুনামগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা দুটি যাত্রীবাহী বাসসহ (আল-মোবারক ও মামুন পরিবহন) চারটি গাড়ির চালক ও যাত্রীদের সর্বস্ব লুটে নেয় ডাকাতদল। এ সময় হামলায় তিন-চারজন যাত্রী রক্তাক্ত হয়েছেন। তবে আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়ার বিষয়টি জানা গেলে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
যাত্রীবাহী বাসে থাকা মনির হোসেনবলেন, ‘আমার বাবা ঢাকায় একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। চিকিৎসার টাকা নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিলাম। ডাকাতরা সব নিয়ে গেছে। প্রায় এক লাখ ১০ হাজার টাকা ছিল।’
আরেক যাত্রী রাসেল মিয়া বলেন, ‘বাসে থাকা যাত্রীদের সবকিছু নিয়ে গেছে। মহিলাদের কাছে স্বর্ণালংকারও ছিল। চালককে মারধর করা হয়েছে। গাড়িতে ভাঙচুরে অনেকে আহত হয়েছেন।’
প্রত্যক্ষদর্শী আলী হোসেন নামের এক প্রাইভেটকার চালক বলেন, ‘সামনে ৪-৫টি গাড়ি দাড়ানো দেখে ডাকাতির বিষয়টি বুঝতে পারি। তাই দ্রুত গাড়ি চালিয়ে কলকলিয়া বাজারে চলে যাই। এ সময় ডাকাতরা আমার গাড়িতে হামলা করে বেশ ভাঙচুর করে। পরে জগন্নাথপুরের কলকলিয়া বাজার থেকে স্থানীয়দের নিয়ে এসে ধাওয়া দিলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।’
জগন্নাথপুরের জুবায়ের আহমদ জানান, ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১০ মিনিট দূরে একটি ব্যাডমিন্টন খেলার অনুষ্ঠানে ছিলাম। খবর পেয়ে আমরা কয়েকজন মোটরসাইকেলযোগে ঘটনাস্থলে আসি। তখন ডাকাতদল হাওরের দিকে পালিয়ে যায়। ওই স্থানে এক সময় প্রায়ই ডাকাতি হতো। কিন্তু ২০০৬ সাল থেকে দীর্ঘ ১৮ বছর দারাখাই এলাকায় ডাকাতি বন্ধ ছিল। বর্তমানে পুলিশ টহল না থাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে।
জগন্নাথপুর থানার ওসি রুহুল আমীন জানান, ঘটনাস্থল আমাদের থানার অর্ন্তভুক্ত নয়। এটি ছাতক থানায় পড়েছে।
এ ব্যাপারে ছাতক উপজেলার জাউয়া বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ কবির আহমদ মুঠোফোনে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। আমরা শুধু একটি গাড়িতে ডাকাতির বিষয়ে জানতে পেরেছি। ডাকাতরা যাত্রীদের কিছু মালামাল নিয়ে গেছে। বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। আমরা কাজ করছি।’