ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মহাদেবপুরে জাহিদুল হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

নওগাঁর মহাদেবপুরে ক্লুলেস খুনের রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে মহাদেবপুর থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মামুনুর রশিদ (৩৬), মো. রুবেল হোসেন (২৫), এবং মোহাম্মদ রাজু হাসান (৩২)। তারা সকলেই পত্নীতলা থানার ঘোষনগর ইউনিয়নের কোতালী গ্রামের বাসিন্দা।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার বলেন, ‘মহাদেবপুর থানাধীন রাইগা ইউনিয়নের অন্তর্গত কালনায় মৌজায় জনৈক আরমান সরদারের জমির পাশে কালভার্টের নিচে হত্যাকারীরা পত্নীতলা থানার কোতালী গ্রামের মৃত অছিমুদ্দিন ছেলেকে জাহিদুল ইসলামকে জবাই করে হত্যার পর ফেলে রেখে যান। মৃতদেহটি একটি নীল পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় ছিল।

এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ভিকটিমের স্ত্রী মোছা. নাসিমা খাতুন (৩৭) বাদি হয়ে গত ১৬ ডিসেম্বর মহাদেবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলা রুজুর পর থেকেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডে কোনো ধরনের ক্লু না থাকায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছিল না। পরে মহাদেবপুর সার্কেল এ্যাডিশনাল এসপি জয়ব্রত পালের নেতৃত্বে নওগাঁ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল সোমবার রাতভর অভিযান চালিয়ে উক্ত টিম এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। পূর্ব শত্রুতা এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মোট পাঁচ জন জড়িত ছিল বলে জানা যায়।

হত্যাকাণ্ডের মোড় ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য মরদেহটি পত্নীতলা থেকে একটি অটো চার্জার ভ্যানে করে মহাদেবপুরে এনে গুমের চেষ্টা করা হয়েছিল। এছাড়া আলামত ধ্বংসের উদ্দেশ্যে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি মহাদেবপুর থানাধীন চেরাগপুর ইউনিয়নের ধনজইল গ্রামের মাঠে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

ঘটনার পর আসামিরা ভিকটিমের মরদেহ উদ্ধারসহ দাফন কাফন কাজে সক্রিয়ভাবে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করেছে, যাতে তাদেরকে কেউ সন্দেহ না করে।

উল্লেখ্য, মৃতদেহটি পত্নীতলা থেকে মহাদেবপুরে স্থানান্তরের কাজে ব্যবহৃত অটো চার্জারভ্যানটিও উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

প্রসঙ্গত, সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন, মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসমত আলীসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

মহাদেবপুরে জাহিদুল হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

আপডেট টাইম : ১২:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

নওগাঁর মহাদেবপুরে ক্লুলেস খুনের রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে মহাদেবপুর থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মামুনুর রশিদ (৩৬), মো. রুবেল হোসেন (২৫), এবং মোহাম্মদ রাজু হাসান (৩২)। তারা সকলেই পত্নীতলা থানার ঘোষনগর ইউনিয়নের কোতালী গ্রামের বাসিন্দা।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার বলেন, ‘মহাদেবপুর থানাধীন রাইগা ইউনিয়নের অন্তর্গত কালনায় মৌজায় জনৈক আরমান সরদারের জমির পাশে কালভার্টের নিচে হত্যাকারীরা পত্নীতলা থানার কোতালী গ্রামের মৃত অছিমুদ্দিন ছেলেকে জাহিদুল ইসলামকে জবাই করে হত্যার পর ফেলে রেখে যান। মৃতদেহটি একটি নীল পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় ছিল।

এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ভিকটিমের স্ত্রী মোছা. নাসিমা খাতুন (৩৭) বাদি হয়ে গত ১৬ ডিসেম্বর মহাদেবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলা রুজুর পর থেকেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডে কোনো ধরনের ক্লু না থাকায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছিল না। পরে মহাদেবপুর সার্কেল এ্যাডিশনাল এসপি জয়ব্রত পালের নেতৃত্বে নওগাঁ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল সোমবার রাতভর অভিযান চালিয়ে উক্ত টিম এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। পূর্ব শত্রুতা এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মোট পাঁচ জন জড়িত ছিল বলে জানা যায়।

হত্যাকাণ্ডের মোড় ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য মরদেহটি পত্নীতলা থেকে একটি অটো চার্জার ভ্যানে করে মহাদেবপুরে এনে গুমের চেষ্টা করা হয়েছিল। এছাড়া আলামত ধ্বংসের উদ্দেশ্যে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি মহাদেবপুর থানাধীন চেরাগপুর ইউনিয়নের ধনজইল গ্রামের মাঠে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

ঘটনার পর আসামিরা ভিকটিমের মরদেহ উদ্ধারসহ দাফন কাফন কাজে সক্রিয়ভাবে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করেছে, যাতে তাদেরকে কেউ সন্দেহ না করে।

উল্লেখ্য, মৃতদেহটি পত্নীতলা থেকে মহাদেবপুরে স্থানান্তরের কাজে ব্যবহৃত অটো চার্জারভ্যানটিও উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

প্রসঙ্গত, সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন, মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসমত আলীসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।