ঢাকা , সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরকালে মানুষের আফসোসের কারণ

মানুষের আসল জীবন আখেরাতের জীবন। দুনিয়া হলো আখেরাতের শস্যক্ষেত্র। পরকালের সঞ্চয় ও পাথেয় রূপে যা কিছু অর্জনের প্রয়োজন এখান থেকেই সংগ্রহ করতে হবে। মৃত্যুর পর অর্জনের কোনো উপায় অবশিষ্ট থাকবে না। বুদ্ধিমান তিনি, যিনি দুনিয়ার জীবন পুরোটাই পাথেয় অর্জনের পেছনে ব্যয় করেন। ভীষণরকম গুনাহগার ব্যক্তিও যদি ঈমানসমৃদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন, তা হলে জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত তিনি একদিন হবেনই। কিন্তু যদি ঈমানহারা অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করতে হয়, তা হলে কোনোকালেই মুক্তির সনদ লাভের সামান্য সম্বলও তিনি নিয়ে যেতে পারবেন না। পরকালের জীবনে আফসোস-বিলাপ ব্যতীত আর কিছুই তার থাকবে না।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘বস্তুত আমি এক আসন্ন শাস্তি সম্পর্কে তোমাদের সতর্ক করে দিলাম, সেদিন প্রত্যেক ব্যক্তি তার স্বহস্তে সামনে পাঠানো কর্মগুলো প্রত্যক্ষ করবে আর কাফের ব্যক্তি বলবে, হায় আফসোস! আমি যদি মাটি হয়ে যেতাম’ (সুরা নাবা : ৪০)। এই আয়াতের তাফসিরে হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, কেয়ামতের দিন সমগ্র ভূপৃষ্ঠ এক সমতল ভূমি হয়ে যাবে। এতে মানুষ, জিন, গৃহপালিত জন্তু ও বন্য জন্তু সবাইকে একত্রিত করা হবে। জন্তুদের মধ্যে কেউ দুনিয়াতে অন্য জন্তুর ওপর জুলুম করে থাকলে তার কাছ থেকে প্রতিশোধ নেওয়া হবে। এমনকি কোনো শিংবিশিষ্ট ছাগল কোনো শিংবিহীন ছাগলকে মেরে থাকলে সেদিন তারও প্রতিশোধ নেওয়া হবে। এই কর্ম সমাপ্ত হলে সব জন্তুকে আদেশ করা হবে, মাটি হয়ে যাও। তখন সব মাটি হয়ে যাবে। এই দৃশ্য দেখে কাফেররা আক্ষেপ করবে, হায়! আমরাও যদি মাটি হয়ে যেতাম! এরূপ হলে আমরা হিসাব-নিকাশ ও জাহান্নামের আজাব থেকে বেঁচে যেতাম! (মাআরিফুল কুরআন : ১৪৩৩)

অন্য একটি আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, ‘সেদিন জাহান্নামকে সামনে আনা হবে, সেদিন মানুষ বুঝতে পারবে কিন্তু সেই সময় বুঝে আসার কী ফায়দা? সে বলবে, হায় আফসোস! আমি যদি আমার এ জীবনের জন্য কিছু অগ্রিম পাঠাতাম! সেদিন আল্লাহর সমান শাস্তিদাতা কেউ হবে না’ (সুরা ফজর : ২৩-২৫)। এই আয়াতের তাফসিরে এসেছে, কাফের ও অবিশ্বাসীরা সেদিন বুঝতে পারবে যে, দুনিয়াতে তার কী করা উচিত ছিল আর সে কী করেছে। কিন্তু তখন এই বুঝে আসা নিষ্ফল হয়ে যাবে। কেননা পরকাল কর্মজগৎ নয়, প্রতিদান জগৎ। অতঃপর কাফেররা এই অভিলাষ ব্যক্ত করবে যে, হায়! আমি যদি দুনিয়াতে কিছু সৎকর্ম করতাম! কিন্তু কুফর ও শিরকের শাস্তি সামনে এসে যাওয়ার পর এ আকাক্সক্ষায় কোনো লাভ নেই। এখন আজাব ও পাকড়াওয়ের সময়। আল্লাহ তায়ালার পাকড়াওয়ের মতো কঠিন পাকড়াও কারও হতে পারে না। (মাআরিফুল কুরআন : ১৪৫৬)

আল্লাহ তায়ালা অন্যত্র বলেন, ‘সেদিন জালেম মানুষরা নিজের হাত কামড়াবে আর বলবে, হায় আফসোস! আমি যদি রাসুলের সঙ্গে একই পথ অবলম্বন করতাম! হায় আমার দুর্ভোগ! আমি যদি অমুক ব্যক্তিকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম! আমার কাছে তো উপদেশ এসেছিল, কিন্তু সে (ওই বন্ধু) আমাকে তা থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিল’ (সুরা ফুরকান : ২৭-২৯)। আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার বিশেষ প্রেক্ষাপট হলো, উতবা ইবনে আবি মুয়িত নবী করিম (সা.)-কে পরিত্যাগ করে বিখ্যাত কাফের নেতা উবাই ইবনে খালফকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছিল এবং নবীজি (সা.)-কে অপমান করেছিল। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে নাজিল হলেও আয়াতটির ভাষা ও বিধান ব্যাপক। যে দুই বন্ধু পাপ কাজে সম্মিলিত হয় এবং শরিয়তবিরোধী কার্যাবলিতে একে অপরের সাহায্য করে, তাদের সবারই বিধান এই যে, কেয়ামতের দিন তারা এই বন্ধুত্বের কারণে শাস্তি ভোগ করবে, কান্নাকাটি করবে। হাদিস শরিফে কোনো অমুসলিমকে সঙ্গী না করার এবং ধনসম্পদ যেন অমুসলিম ও গুনাহগার বন্ধু না খেয়ে পরহেজগার ব্যক্তিই খায় সে ব্যাপারে নির্দেশ আছে। নবী করিম (সা.) এক প্রশ্নের উত্তরে যাকে দেখে আল্লাহর কথা স্মরণ হয়, যার কথাবার্তায় জ্ঞান বাড়ে এবং যার কাজ দেখে পরকালের স্মৃতি তাজা হয়, এমন ব্যক্তিকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করতে আদেশ করেছেন। (মাআরিফুল কুরআন : ৯৫৯)

পরকালে আফসোসকারীদের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আপনি যদি দেখেন, যখন তাদের দোজখের ওপর দাঁড় করানো হবে! তারা বলবে, কতই না ভালো হতো, যদি আমরা পুনরায় প্রেরিত হতাম! তা হলে আমরা স্বীয় পালনকর্তার নিদর্শনগুলোতে মিথ্যারোপ করতাম না এবং আমরা বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতাম’ (সুরা আনআম : ২৭)। এই আয়াতে অবিশ্বাসী, অপরাধীদের অবস্থা বর্ণনা করে বলা হয়েছে, পরকালে যখন তাদের দোজখের কিনারায় দাঁড় করানো হবে এবং তারা কল্পনাতীত ভয়াবহ শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে, তখন তারা আফসোস প্রকাশ করে বলবে আমাদের পুনরায় দুনিয়াতে প্রেরণ করা হলে আমরা পালনকর্তা প্রেরিত নিদর্শনাবলি ও নির্দেশনাবলিকে মিথ্যারোপ করতাম না, বরং এগুলো বিশ্বাস করে ঈমানদারদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতাম। পরবর্তী আয়াতে তাদের আফসোসের রহস্য উন্মোচন করে বলা হয়েছে, এরা চিরকালই মিথ্যায় অভ্যস্ত। আসল ব্যাপার হলো, পয়গম্বরের মাধ্যমে যেসব বাস্তব সত্য তাদের সামনে তুলে ধরা হয়েছিল এবং তারা তা জানা ও চেনা সত্ত্বেও শুধু হঠকারিতা বা লোভ-লালসার বশবর্তী হয়ে এসব সত্যকে পর্দায় আবৃত রাখার চেষ্টা করত। (মাআরিফুল কুরআন : ৩৭৪)

উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রমাণিত হলো, ঈমানবিহীন জিন্দেগির পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ। ফলে ঈমানের শক্তি ও মাত্রা কীভাবে আমাদের জীবনে পূর্ণতা পায়, সে বিষয়ে যত্নবান হওয়া অত্যাবশ্যক। সাহাবায়ে কেরাম ও তাদের পরবর্তী সোনালি প্রজন্ম যেমনভাবে ঈমান হেফাজত ও রক্ষার জন্য সদা সচেষ্ট থেকেছেন, আমাদেরও তেমন সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে এমন কোনো কাজ, কথা কখনোই আমাদের থেকে যেন প্রকাশ না পায় সে ব্যাপারে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। ঈমানের ভেতর কোনো প্রকার ত্রুটি ও দুর্বলতা সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ দেওয়া যাবে না।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

পরকালে মানুষের আফসোসের কারণ

আপডেট টাইম : ৩ ঘন্টা আগে

মানুষের আসল জীবন আখেরাতের জীবন। দুনিয়া হলো আখেরাতের শস্যক্ষেত্র। পরকালের সঞ্চয় ও পাথেয় রূপে যা কিছু অর্জনের প্রয়োজন এখান থেকেই সংগ্রহ করতে হবে। মৃত্যুর পর অর্জনের কোনো উপায় অবশিষ্ট থাকবে না। বুদ্ধিমান তিনি, যিনি দুনিয়ার জীবন পুরোটাই পাথেয় অর্জনের পেছনে ব্যয় করেন। ভীষণরকম গুনাহগার ব্যক্তিও যদি ঈমানসমৃদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন, তা হলে জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত তিনি একদিন হবেনই। কিন্তু যদি ঈমানহারা অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করতে হয়, তা হলে কোনোকালেই মুক্তির সনদ লাভের সামান্য সম্বলও তিনি নিয়ে যেতে পারবেন না। পরকালের জীবনে আফসোস-বিলাপ ব্যতীত আর কিছুই তার থাকবে না।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘বস্তুত আমি এক আসন্ন শাস্তি সম্পর্কে তোমাদের সতর্ক করে দিলাম, সেদিন প্রত্যেক ব্যক্তি তার স্বহস্তে সামনে পাঠানো কর্মগুলো প্রত্যক্ষ করবে আর কাফের ব্যক্তি বলবে, হায় আফসোস! আমি যদি মাটি হয়ে যেতাম’ (সুরা নাবা : ৪০)। এই আয়াতের তাফসিরে হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, কেয়ামতের দিন সমগ্র ভূপৃষ্ঠ এক সমতল ভূমি হয়ে যাবে। এতে মানুষ, জিন, গৃহপালিত জন্তু ও বন্য জন্তু সবাইকে একত্রিত করা হবে। জন্তুদের মধ্যে কেউ দুনিয়াতে অন্য জন্তুর ওপর জুলুম করে থাকলে তার কাছ থেকে প্রতিশোধ নেওয়া হবে। এমনকি কোনো শিংবিশিষ্ট ছাগল কোনো শিংবিহীন ছাগলকে মেরে থাকলে সেদিন তারও প্রতিশোধ নেওয়া হবে। এই কর্ম সমাপ্ত হলে সব জন্তুকে আদেশ করা হবে, মাটি হয়ে যাও। তখন সব মাটি হয়ে যাবে। এই দৃশ্য দেখে কাফেররা আক্ষেপ করবে, হায়! আমরাও যদি মাটি হয়ে যেতাম! এরূপ হলে আমরা হিসাব-নিকাশ ও জাহান্নামের আজাব থেকে বেঁচে যেতাম! (মাআরিফুল কুরআন : ১৪৩৩)

অন্য একটি আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, ‘সেদিন জাহান্নামকে সামনে আনা হবে, সেদিন মানুষ বুঝতে পারবে কিন্তু সেই সময় বুঝে আসার কী ফায়দা? সে বলবে, হায় আফসোস! আমি যদি আমার এ জীবনের জন্য কিছু অগ্রিম পাঠাতাম! সেদিন আল্লাহর সমান শাস্তিদাতা কেউ হবে না’ (সুরা ফজর : ২৩-২৫)। এই আয়াতের তাফসিরে এসেছে, কাফের ও অবিশ্বাসীরা সেদিন বুঝতে পারবে যে, দুনিয়াতে তার কী করা উচিত ছিল আর সে কী করেছে। কিন্তু তখন এই বুঝে আসা নিষ্ফল হয়ে যাবে। কেননা পরকাল কর্মজগৎ নয়, প্রতিদান জগৎ। অতঃপর কাফেররা এই অভিলাষ ব্যক্ত করবে যে, হায়! আমি যদি দুনিয়াতে কিছু সৎকর্ম করতাম! কিন্তু কুফর ও শিরকের শাস্তি সামনে এসে যাওয়ার পর এ আকাক্সক্ষায় কোনো লাভ নেই। এখন আজাব ও পাকড়াওয়ের সময়। আল্লাহ তায়ালার পাকড়াওয়ের মতো কঠিন পাকড়াও কারও হতে পারে না। (মাআরিফুল কুরআন : ১৪৫৬)

আল্লাহ তায়ালা অন্যত্র বলেন, ‘সেদিন জালেম মানুষরা নিজের হাত কামড়াবে আর বলবে, হায় আফসোস! আমি যদি রাসুলের সঙ্গে একই পথ অবলম্বন করতাম! হায় আমার দুর্ভোগ! আমি যদি অমুক ব্যক্তিকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম! আমার কাছে তো উপদেশ এসেছিল, কিন্তু সে (ওই বন্ধু) আমাকে তা থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিল’ (সুরা ফুরকান : ২৭-২৯)। আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার বিশেষ প্রেক্ষাপট হলো, উতবা ইবনে আবি মুয়িত নবী করিম (সা.)-কে পরিত্যাগ করে বিখ্যাত কাফের নেতা উবাই ইবনে খালফকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছিল এবং নবীজি (সা.)-কে অপমান করেছিল। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে নাজিল হলেও আয়াতটির ভাষা ও বিধান ব্যাপক। যে দুই বন্ধু পাপ কাজে সম্মিলিত হয় এবং শরিয়তবিরোধী কার্যাবলিতে একে অপরের সাহায্য করে, তাদের সবারই বিধান এই যে, কেয়ামতের দিন তারা এই বন্ধুত্বের কারণে শাস্তি ভোগ করবে, কান্নাকাটি করবে। হাদিস শরিফে কোনো অমুসলিমকে সঙ্গী না করার এবং ধনসম্পদ যেন অমুসলিম ও গুনাহগার বন্ধু না খেয়ে পরহেজগার ব্যক্তিই খায় সে ব্যাপারে নির্দেশ আছে। নবী করিম (সা.) এক প্রশ্নের উত্তরে যাকে দেখে আল্লাহর কথা স্মরণ হয়, যার কথাবার্তায় জ্ঞান বাড়ে এবং যার কাজ দেখে পরকালের স্মৃতি তাজা হয়, এমন ব্যক্তিকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করতে আদেশ করেছেন। (মাআরিফুল কুরআন : ৯৫৯)

পরকালে আফসোসকারীদের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আপনি যদি দেখেন, যখন তাদের দোজখের ওপর দাঁড় করানো হবে! তারা বলবে, কতই না ভালো হতো, যদি আমরা পুনরায় প্রেরিত হতাম! তা হলে আমরা স্বীয় পালনকর্তার নিদর্শনগুলোতে মিথ্যারোপ করতাম না এবং আমরা বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতাম’ (সুরা আনআম : ২৭)। এই আয়াতে অবিশ্বাসী, অপরাধীদের অবস্থা বর্ণনা করে বলা হয়েছে, পরকালে যখন তাদের দোজখের কিনারায় দাঁড় করানো হবে এবং তারা কল্পনাতীত ভয়াবহ শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে, তখন তারা আফসোস প্রকাশ করে বলবে আমাদের পুনরায় দুনিয়াতে প্রেরণ করা হলে আমরা পালনকর্তা প্রেরিত নিদর্শনাবলি ও নির্দেশনাবলিকে মিথ্যারোপ করতাম না, বরং এগুলো বিশ্বাস করে ঈমানদারদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতাম। পরবর্তী আয়াতে তাদের আফসোসের রহস্য উন্মোচন করে বলা হয়েছে, এরা চিরকালই মিথ্যায় অভ্যস্ত। আসল ব্যাপার হলো, পয়গম্বরের মাধ্যমে যেসব বাস্তব সত্য তাদের সামনে তুলে ধরা হয়েছিল এবং তারা তা জানা ও চেনা সত্ত্বেও শুধু হঠকারিতা বা লোভ-লালসার বশবর্তী হয়ে এসব সত্যকে পর্দায় আবৃত রাখার চেষ্টা করত। (মাআরিফুল কুরআন : ৩৭৪)

উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রমাণিত হলো, ঈমানবিহীন জিন্দেগির পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ। ফলে ঈমানের শক্তি ও মাত্রা কীভাবে আমাদের জীবনে পূর্ণতা পায়, সে বিষয়ে যত্নবান হওয়া অত্যাবশ্যক। সাহাবায়ে কেরাম ও তাদের পরবর্তী সোনালি প্রজন্ম যেমনভাবে ঈমান হেফাজত ও রক্ষার জন্য সদা সচেষ্ট থেকেছেন, আমাদেরও তেমন সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে এমন কোনো কাজ, কথা কখনোই আমাদের থেকে যেন প্রকাশ না পায় সে ব্যাপারে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। ঈমানের ভেতর কোনো প্রকার ত্রুটি ও দুর্বলতা সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ দেওয়া যাবে না।