গত শনিবার কালিয়ানে ভোট দিয়ে ধানগড়া গিয়েছিলাম। ধানগড়া আমার বড় প্রিয় জায়গা। হৃদয়জুড়ে সব সময় বিরাজ করে ধানগড়া। আমরা কালিয়ানের ভোটার। স্বামী-স্ত্রী, ছেলেমেয়ে আমরা চার ভোটার। এর আগেও ছেলের সঙ্গে তিনজনে ভোট দিয়েছি। মেয়েটা প্রথম ভোটার হয়েও ভোট দিতে পারল না। কারণ ব্যারিস্টারি পড়তে লন্ডনে গেছে। এবার দলীয় প্রতীকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি সর্বনাশের শিকার হলো ভোট পদ্ধতি, তারপর দলগতভাবে আওয়ামী লীগ। ভোট পদ্ধতি যেভাবে ধ্বংস করা হলো তা দু-চার যুগে কারও পক্ষে ভালো করা সম্ভব হবে না। এটা বাংলাদেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য এক অশনিসংকেত। এখান থেকে ফিরে আসা অসম্ভব বলব না, কিন্তু বড় কঠিন। সমাজে মানুষের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা, ন্যায়নীতি, মানবিক গুণ প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন শুধু ক্ষমতা আর ক্ষমতা। কোনো ক্ষমতাই যে চিরস্থায়ী নয়, ক্ষমতার উজান-ভাটি থাকে তা কেউ বুঝতে চায় না। প্রতিদিন চোখের সামনে সামাজিক অবক্ষয়ের দৃশ্য দেখছি, কিন্তু প্রতিকারের পথ খুঁজে পাই না। সারা জীবন রাজনীতি করছি। ভোট দেওয়া একটা নাগরিক কর্তব্য। সেজন্য ছেলে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী ভোট দিতে গিয়েছিলাম। ছোট মেয়ে কুশিমণির আবার বার্ষিক পরীক্ষা। তাই তার থাকার উপায় ছিল না। কিন্তু প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট চলার মতো ছিল না। বেগম সাহেবার ভোট দিয়েই চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা যেতে পারেনি। তাই ওদের সঙ্গে নিয়েই ধানগড়া নাজির হোসেন নাদু ভাইয়ের বাড়ি খেতে গিয়েছিলাম।
ধানগড়া আমার হৃদয়ের পুরোটা জুড়ে সব সময় বিরাজ করে। কারণ, স্বাধীনতাযুদ্ধে ধানগড়া আমার বাবা-মা, ভাই-বোনকে আশ্রয় দিয়েছিল। আজকাল সেসব দুঃসময়ের কথা অনেকের হয়তো মনে পড়ে না। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদারদের হত্যা, লুটতরাজ, নারী ধর্ষণ বিভীষিকার রূপ নিয়েছিল। অনেক ক্ষেত্রে সন্তান পিতাকে চিনত না, পিতা সন্তানকে না, ভাই ভাইয়ের পরিচয় অস্বীকার করত। শুনেছিলাম রক্ত পানির চেয়ে ভারী। পানি কাটলে ভাগ হয় না। রক্ত কী করে আপন ভোলে। কিন্তু তাও তখন দেখেছি। আমরা ছিলাম স্বাধীনতার জন্য উন্মাদ। আইয়ুববিরোধী, ইয়াহিয়াবিরোধী আন্দোলনে আমাদের পরিবার ধ্বংসপ্রায়। কখনো বাবা জেলে, কখনো বড় ভাই। অনেক জমিজমা বিষয়সম্পদ থাকার পরও ভালোভাবে সংসার চলত না। একসময় গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে আগরতলা ষড়যন্ত্র খান খান করে দিয়ে বাঙালিরা তাদের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুকে কারাগার ভেঙে বের করে আনে। বাবা, বড় ভাই, আমি একে একে জেল থেকে বেরিয়ে আসি। পরিবারে একটা স্বস্তি ফিরে আসে। ’৬৯-৭০ মোটামুটি স্বস্তিতে কাটে। ’৭০-এর নির্বাচনে লতিফ সিদ্দিকী কালিহাতী থেকে প্রাদেশিক সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু ’৭১-এ শুরু হয় মারাত্মক অস্থিতিশীল রাজনৈতিক উত্তেজনা। ১ মার্চ হানাদার নেতা ইয়াহিয়া পার্লামেন্ট অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করলে বাংলাদেশ জ্বলে ওঠে। ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো মানুষের মাঝে বঙ্গবন্ধু উদাত্ত আহ্বান জানান, ‘যার যা আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাক। রক্ত যখন দিয়েছি আরও দেব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশা আল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ নিরস্ত্র আন্দোলন অল্প সময়ে সশস্ত্র রূপ নিতে থাকে। আমরা কাঠের ভাঙা রাইফেল নিয়ে লেফট-রাইট, বাম-ডান করে হাত-পা সোজা করতে থাকি। ২৫ মার্চ হানাদার বাহিনী অতর্কিত নিরীহ ঘুমন্ত বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। অনেকে আর ঘুম থেকে জাগেনি। যারা জেগেছিল তারাও ছিল দিশাহারা। কেউ কেউ বিভ্রান্ত, কেউ আবার সর্বস্ব হারিয়ে জীবন পণ করে স্বাধীনতার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে। হানাদাররা জ্বালাতে জ্বালাতে পোড়াতে পোড়াতে মারতে মারতে ঢাকা থেকে সীমান্তের দিকে এগোতে থাকে। মার্চের মধ্যেই কত মানুষ যে নিহত হয় বলা মুশকিল। টাঙ্গাইলে ঢুকেই তারা আমাদের বাড়ি পুড়িয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়। বাবা-মা, ভাই-বোন গ্রামের বাড়ি ছাতিহাটিতে চলে গিয়েছিলেন বেশ কিছুদিন আগেই। পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে টাঙ্গাইল পতনের আগ পর্যন্ত তারা সমাদরেই ছিল। কিন্তু ৩ এপ্রিল টাঙ্গাইলের পতন হলে আস্তে আস্তে গজব নেমে আসতে থাকে। কালিহাতী থানা থেকে আমাদের গ্রামের বাড়ি ৬-৭ কিলোমিটার। ভালো রাস্তা না থাকলেও আমাদের আর আবু সাঈদ চৌধুরীর বাড়ি পাশাপাশি হওয়ায় তখনো চলনসই কাঁচা রাস্তা ছিল। যেখান দিয়ে অনায়াসে হানাদারদের আমাদের গ্রামে পৌঁছতে অসুবিধা ছিল না। আমার বাবা-মাও ছাতিহাটি থাকা নিরাপদ বোধ করছিলেন না। কিন্তু তেমন একদিন আমার ছোট চাচা ধৈর্যহারা হয়ে পড়েন। তিনি বাবা-মাকে চাপ দিতে থাকেন গ্রাম ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যেতে। গ্রামের বাড়িতে আমাদের কোনো ঘর ছিল না, এখনো নেই। ’৬০-৬২ সালে এক প্রলয়ঙ্করী ঝড়ে আমাদের ঘর ভেঙে দিয়েছিল। আর নতুন করে গড়া হয়নি। তাই গ্রামে গেলে আমরা চাচাদের ঘরে থাকতাম। কারণ, ছোট চাচা টাঙ্গাইলে আমাদের বাড়ি থেকে লেখাপড়া করতেন। একান্নবর্তী পরিবার। তাই কোনটা কার ঘর এটা বিবেচনায় ছিল না। কিন্তু চরম দুঃসময়ে সেটাই বিশেষ করে বিবেচনায় আসে। লতিফ সিদ্দিকী, কাদের সিদ্দিকীর বাবা-মা গ্রামে আছে এমন খবরে হানাদাররা ওই গ্রামে এসে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিতে পারে— এই ভয়ে চাচা অধৈর্য হয়ে এক সকালে বাবা-মার জিনিসপত্র পোঁটলা-পুঁটলি বাইরে ফেলে দিয়ে উন্মাদের মতো চিৎকার করতে থাকেন, ‘এখনই আপনারা গ্রাম ছাড়ুন। আমরা রাজনীতি-ফাজনীতি করি না। আপনার পোলা লতিফ সিদ্দিকী এমপি, কাদের সিদ্দিকী গেরিলা যে কোনো সময় হানাদাররা গ্রামে এসে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিতে পারে। আপনাদের জন্য আমরা মরতে পারব না। গ্রাম ছাড়ুন।’
রহিমা, শুশু, আজাদ, মুরাদ সে সময় ভেউ ভেউ করে কাঁদছিল। ঠিক সেই সময় আমার খোঁজে এসেছিল ধানগড়ার নাজির, হামিদ, সিরাজ; তাদের সঙ্গে নাজির হোসেন নাদু ভাইর ছেলে শাজাহান। শাজাহান ১৩-১৪ বছরের বাচ্চা। তারা পোঁটলা-পুঁটলি মাথায় তুলে বাবা-মাকে বলেছিল, ‘চাচা মিয়া, চাচি বিবি চিন্তা কইরেন না। আমরা গরিব মানুষ। আমাগো তেমন বাড়িঘর নাই। তাই পোড়ার চিন্তাও নাই। আমাগো বাড়ি চলেন। আমরা আপনাগো বুকে আগলে রাখব।’ নাজির, হামিদ, সিরাজরা সেই অসহায় অবস্থায় বাবা-মাকে, তার ছেলেমেয়েসহ ধানগড়ায় নিয়ে পরম যত্নে আশ্রয় দিয়েছিলেন। তাই তো ধানগড়া আমার কাছে অত প্রিয়।
এপ্রিলের ১৫-১৬ তারিখ আমি হতাশ, বিভ্রান্ত, দিশাহারা, হীনবল ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম এদিক-ওদিক। সঙ্গে দুই ফারুক। রতনপুরের কালা ফারুক, সিলেটের সাদা ফারুক। কাঁধে বন্দুক। বন্দুকের ফিতার ঘষায় পাতলা কাপড়ের জামা ছিঁড়ে ফেড়ে একাকার। খাওয়া নেই, নাওয়া নেই, উদ্ভ্রান্তের মতো চেহারা। বন্দুক আছে কিন্তু গুলি নেই। আতঙ্ক সব সময় ছায়ার মতো আছে। এ রকম একদিন দুপুরে ঘাটাইলের উপলদিয়ায় ফজলুর বাড়িতে খেতে বসেছিলাম। ফজলুর মা খাবার দিচ্ছিলেন। মুখে ভাত দিয়েছিলাম কি দিইনি এতকাল পর নিশ্চিত করে বলতে পারব না। ফজলুর ছোট ভাই রঞ্জু হঠাৎ বলেছিল, ‘বজ ভাইর ছোট ভাই বেলালকে কাঁদতে কাঁদতে ধলাপাড়ার দিক থেকে কস্তূরীপাড়ার পথে যেতে দেখলাম।’ ছেলেবেলায় ভাই-বোনেরা ছিল আমার কলিজা। তার মধ্যে বেলাল, মুরাদ আরও বেশি। কেন বেলাল এদিক-ওদিক যাবে? কেনই বা ১২-১৩ বছরের ছোট ভাইটি রাস্তা দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ফিরবে অতশত ভাবতে পারিনি। ছোট ভাইয়ের কান্নার কথা শুনে বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠেছিল। সঙ্গে সঙ্গে আমার গ্রামের বাড়ি ছাতিহাটি যাওয়ার জন্য হাতের ভাত ঝাড়া দিয়ে উঠে পড়েছিলাম। জানি না ওভাবে বাড়া ভাত ফেলে রেখে প্রিয়জনের টানে ছুটে যাওয়ায় কোনো গুনার কাজ হয়েছিল কিনা। যে কারণে আমার ওপর দিয়ে কত কষ্ট, কত যন্ত্রণা ঘূর্ণির মতো বয়ে গেছে, এখনো বয়ে যাচ্ছে। যদিও এটা ঠিক, ওরপর কামানের গোলার সামনে পড়লেও আমি অথবা আমার যোদ্ধারা ভাতের থালা ফেলে এদিক-ওদিক নড়িনি। উপলদিয়া ফজলুর বাড়ি ছিল আমার জন্য পরম নিরাপদ আশ্রয়স্থল। হানাদাররা যখন আমাকে জীবিত অথবা মৃত ধরিয়ে দিতে লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল, তখনো সে বাড়িতে নিরাপদে কাটিয়েছি। অমন পরম আশ্রয় পেয়েছিলাম বলেই মুক্তিযুদ্ধে সফল হয়েছি। সেটা ছিল দুপুরের খাওয়ার সময়। আমি তখনই ছাতিহাটির দিকে রওনা হতে চেয়েছিলাম। প্রথম প্রথম সবাই আপত্তি করছিল। কিন্তু আমার ব্যাকুলতা দেখে পরে আর কেউ বাধা দেয়নি। ভালোভাবে সাবধানে যেতে বলেছিল। উপলদিয়া থেকে সরাসরি ছাতিহাটি যাওয়ার পথ ছিল না। ঘাটে ঘাটে হানাদার, পথে পথে শত্রু। যে কোনো সময় ধরা পড়ে জীবননাশের সম্ভাবনা। তাই উপলদিয়া থেকে কদমতলী, আঠারদানা ভোজদত্ত হয়ে রাতের আঁধারে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার চিন্তা ছিল। তাই প্রথমে গিয়েছিলাম ভোজদত্ত ফুফুর বাড়ি। নুরজাহান আর শাহালমের মা আলবোলা ফুফু আমাদের সবচেয়ে গরিব আত্মীয়। কিন্তু আদর-যত্ন করতেন সব থেকে বেশি। সেদিনও তা করেছিলেন। সন্ধ্যার অনেক পরে গ্রামের বাড়ি এসে চিনতে পারছিলাম না। চারদিকে মাথাসমান বেড়া। বাড়ির ভিতরে ঢোকার কোনো রাস্তা নেই। অনেক হাঁকডাকের পর চাচা বেরিয়ে জানালেন আমার মা-বাবা সেখানে নেই। কোথায় আছে? ধানগড়া। হাত-পা চলছিল না, শুধু শরীরটাকে টেনে নিয়ে যাওয়া। অনেক কষ্টে গভীর রাতে ধানগড়া গিয়েছিলাম। বাড়ির বাইরে রাস্তাতেই শাজাহানকে পেয়েছিলাম। প্রকৃত মায়েরা বোধহয় সব সময় সন্তানের খবর জানেন। আমার মাও আমার জন্য হয়তো প্রতিদিন খাবার রেখে দিতেন। সেদিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গিয়ে দেখলাম মা আমার জন্য খাবার রেখে দিয়েছেন। হায়রে! জগৎ-সংসারে মা ছাড়া অমন আপন আর কে আছে যে নিজে না খেয়েও সন্তানের পেট ভরায়? ১৫-২০ দিন পর মা-বাবা, ভাই-বোনের সঙ্গে দেখা। সে যে কী অনাবিল আনন্দ কাউকে বলে বোঝানো যাবে না। ভীষণ ক্লান্ত-শ্রান্ত, আশাহত, দুর্বল ছিলাম। তাই একগাদা ভাই-বোনের মাঝে ঘুমিয়ে ছিলাম। কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম কিছুই জানি না। অনেক সময় মৃত্যু আর ঘুমের মাঝে বোধহয় পার্থক্য করা যায় না। সেদিন মনে হয় আমার ক্ষেত্রেও হয়েছিল তেমন। কেউ ঘুম ভাঙায়নি। বেলা উঠে গিয়েছিল। ২৫ বছর বয়স, তবু নিয়মিত নামাজি ছিলাম না। আল্লাহ-রসুলকে মানতাম। একটু-আধটু কোরআন পড়তাম। মুক্তিযুদ্ধের পুরো ৯ মাস প্রতিদিন সকালে গোসল করে নিতাম যাতে মারা গেলে, নিহত হলে আমার ফরজ গোসলের প্রয়োজন না হয়। কিন্তু তবু নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের অভ্যাস ছিল না, পড়তামও না। কেউ আমাকে ডাকেনি। মনে হয় সকাল ৭টা সাড়ে ৭টা হবে। ঘুম ভেঙে দেখি চারদিকে আলোর রোশনায় চকচক করছে। হাত-মুখ ধুয়ে বসতেই ছোট ভাই-বোনেরা ঘিরে ফেলল। আশপাশের লোকজনও চিড়িয়াখানার অদ্ভুত কোনো কিছু দেখার মতো ভিড় জমাল। মা এটাওটা করছিলেন। দু-এক বার কাছে এসে বসলেন, এটাওটা বললেন, সান্ত্বনা ও সাহস দিলেন। বাবা ছিলেন খুবই অসুস্থ। একসময় তার কাছে গিয়ে বসতেই মাথা পিঠে হাত বুলিয়ে বললেন, ‘বজ! সত্যিই কি লতিফ পাকিস্তানিদের হাতে ধরা পড়েছে?’ জিজ্ঞাসা করলাম, কীভাবে শুনলেন? তিনি বললেন, ‘না, লোকজন বলছে শেরপুরের কাছে লতিফ কোনো ভারতীয় হেলিকপ্টারে যাওয়ার পথে পাকিস্তানিরা আরেক হেলিকপ্টার নিয়ে তাকে ধরে নিয়ে গেছে।’ হায়! কী বলি! গুজবের সে যে কত রং! এক হেলিকপ্টার থেকে আকাশপথে আরেক হেলিকপ্টারের যাত্রী জোর করে ধরে নেওয়া যায়? এও সম্ভব! এমন গুজবও মানুষ বিশ্বাস করে! শেরপুরের অমন অদ্ভুত ঘটনার কথা আমার জানা ছিল না। তাই সহজ বিচারবুদ্ধি থেকে বলেছিলাম, সব মিথ্যা। আকাশপথে এক হেলিকপ্টার থেকে আরেক হেলিকপ্টারে যাওয়া যায় না। আপনি কোনো চিন্তা করবেন না। কয়েক দিনের মধ্যেই লতিফ ভাইর সঠিক খবর আপনাকে এনে দেব। তাতে বাবা কতটা স্বস্তি পেয়েছিলেন জানি না। কিন্তু আল্লাহর অশেষ মেহেরবানি, পরদিনই লতিফ ভাইর খবর পেয়েছিলাম কালিহাতী যুদ্ধে। -বাংলাদেশ প্রতিদিন