রমজানে জনভোগান্তি দূর করার জন্য সব সময়ই দাবি থাকে। কিন্তু দেখা যায় এই সময়ে নানা ক্ষেত্রে ভোগান্তি আরো বেড়ে যায়। বিশেষ করে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, যানজট তীব্র আকার ধারণ করা, গ্যাস, বিদ্যুত, পানি সংকট দেখা দেয়া, ভেজালের সমারোহ বৃদ্ধি ইত্যাকার নানা সমস্যায় জর্জরিত থাকে মানুষজন। সবকিছু মিলিয়ে এক অরাজক অবস্থা। অথচ সংযমের মাস পবিত্র রমজানে সবক্ষেত্রেই দায়িত্বশীলতা ও নীতি-নৈতিকতার উন্মেষ ঘটার কথা।
যে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়ান তিনি অন্তত রমজানে তা করবেন না, যারা খাদ্যে ভেজাল মেশান তারা তা থেকে বিরত থাকবেন, যানজট দূর করতে আগের থেকেও সক্রিয় হবেন পুলিশ-এভাবে সবক্ষেত্রেই একটি ইতিবাচক পরিবর্তন দেখতে চায় মানুষ। কিন্তু রোজার প্রথম ধাক্কাটা লাগে পণ্যের বাজারে। এবারেও ৪০ টাকার রেগুনের দাম হয়েছে বাজারভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। ৬০ টাকার ছোলা ৯০ থেকে ১০৫ টাকা। বেসনের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে অস্বাভাবিকভাবে। অথচ অন্য দেশে কোনো উৎসব পার্বণে জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে দেওয়া হয় যাতে ভালোভাবে সবাই সেই উৎসবে অংশ নিতে পারে। আমাদের দেশে এর উল্টো চিত্র। এ ব্যাপারে অনেক কথা হলেও কাজের কাজ খুব কমই হয়। এবারো রমজানের শুরুতেই প্রয়োজনীয় অনেক নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এগুলো দেখার যেন কেউ নেই। ভোক্তাদের পকেট কাটা যাবে আর প্রশাসনযন্ত্র তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবে এটা হতে পারে না। এ ব্যাপারে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যাতে ন্যায্যমূল্যে ভোক্তারা পণ্য পায়।
অন্যদিকে প্রথম রোজায়ই যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছে। অফিসগামী ও অফিস ফেরতদের অবর্ণনীয় দুর্ভাগের শিকার হতে হচ্ছে। শুধু ব্যবস্থাগত ত্রুটি এবং অনেক ক্ষেত্রে অবহেলার কারণে যানজট এত তীব্র আকার ধারণ করে। কিন্তু যানজট দূর করতে বাড়তি কোনো তৎপরতা চোখে পড়ছে না। যানবাহনগুলো নিয়ম মেনে না চললেও সেগুলো দেখার কেউ নেই। কিন্তু এ অবস্থা চলতে পারে না। রমজানে অফিস সময় কমিয়ে দেয়া হয় যাতে পরিবারপরিজনের সাথে সবাই মিলে ইফতার করতে পারে। কিন্তু সে সময় যদি রাস্তায়ই নষ্ট হয়ে যায় তাহলে এরচেয়ে দুঃখজনক আর কী থাকতে পারে।
যানজট দূর করা, দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখা, ভেজাল বন্ধ করা, গ্যাস, বিদ্যুত, পানিসরবরাহ ঠিক রেখে জনভোগান্তি দূর করাই হবে এই মুহূর্তের করণীয়। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন- এমনটিই দেখতে চায় মানুষজন।