ঢাকা , বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গারা ফিরে যাচ্ছে

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ অবশেষে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিচ্ছে মিয়ানমার। ফিরিয়ে নিলেও একটা কিন্তু থেকে যাচ্ছে। মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনী ও উগ্র মগদের হত্যার শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সদস্যদের ফেরত নেওয়ার সময় তাদের অস্থায়ী শিবিরে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশটির সরকার ৩০ হাজার রোহিঙ্গার জন্য একটি অস্থায়ী শিবির নির্মাণ করছে।

খবরটি এমন সময় প্রকাশিত হলো যখন বাংলাদেশ ও মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বৈঠকে বসেছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের জন্য এই অস্থায়ী শিবির উত্তর রাখাইনের হা পো খাউং এলাকায় গড়ে তোলা হচ্ছে। যেখানে ১২৪ একর জমির ওপর হচ্ছে ৬২৫টি ভবন। যে ভবনগুলোকে অস্থায়ী ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করবে মিয়ানমার সরকার।

জাতিসংঘসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশ মিয়ানমারের এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করলেও এতদিন মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার স্বীকারোক্তি পাওয়া যায়নি। তবে সম্প্রতি মিয়ানমার সেনাবাহিনী সীমিত আকারে হলেও তাদের এই বর্বরোচিত হামলা ও হত্যাযজ্ঞের কথা স্বীকার করেছে। পাশাপাশি মিয়ানমার সরকারের কেন্দ্রীয় মানবিক সহযোগিতা, পুনর্বাসন ও উন্নয়ন বিভাগের প্রধান সমন্বয়কারী অং টুন থেট জানিয়েছেন, হা পো খাউং শিবিরটি হবে একটি ট্রানজিট পয়েন্ট। রোহিঙ্গাদের নিজ স্থানে প্রত্যাবাসন করার আগে এখানে রাখা হবে।

তিনি আরও জানান, মিয়ানমারে যারা ফিরতে চাইবে তাদের সবাইকেই গ্রহণ করা হবে। তবে সবাইকে একটি বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে নাগরিকত্ব পেতে হবে। সবাইকেই প্রমাণ করতে হবে যে, তারা মিয়ানমারের নাগরিক। তবে রয়টার্স জানিয়েছে, নাগরিকত্বের প্রমাণ দিয়ে কতজন রোহিঙ্গা দেশে ফিরতে পারবেন তা পরিষ্কার নয়। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ সোজাসাপ্টা বলেছে, রোহিঙ্গা মুসলিমরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন; যদি তারা মিয়ানমারে বসবাসের প্রমাণাদি দাখিল করতে পারেন।

এদিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, যৌথভাবে রোহিঙ্গাদের শনাক্ত করার বিষয়টি নিয়ে কীভাবে কাজ করা হবে তা এখনো নির্ধারিত না হওয়ায় প্রথম ধাপের প্রত্যাবাসন কবে হবে তা নিশ্চিত নয়। পাশাপাশি জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারীরা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। আমরাও মনে করি, সময় ক্ষেপণের মধ্য দিয়ে সংশয় আরো ঘনীভূত হবে। সমস্যার কোনো সমাধান হবে না। সুতরাং বাংলাদেশকে চলমান সমাধান প্রক্রিয়ার পাশাপাশি নতুন করে নতুন পথের সন্ধানেও এগিয়ে যেতে হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

রোহিঙ্গারা ফিরে যাচ্ছে

আপডেট টাইম : ১০:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ অবশেষে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিচ্ছে মিয়ানমার। ফিরিয়ে নিলেও একটা কিন্তু থেকে যাচ্ছে। মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনী ও উগ্র মগদের হত্যার শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সদস্যদের ফেরত নেওয়ার সময় তাদের অস্থায়ী শিবিরে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশটির সরকার ৩০ হাজার রোহিঙ্গার জন্য একটি অস্থায়ী শিবির নির্মাণ করছে।

খবরটি এমন সময় প্রকাশিত হলো যখন বাংলাদেশ ও মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বৈঠকে বসেছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের জন্য এই অস্থায়ী শিবির উত্তর রাখাইনের হা পো খাউং এলাকায় গড়ে তোলা হচ্ছে। যেখানে ১২৪ একর জমির ওপর হচ্ছে ৬২৫টি ভবন। যে ভবনগুলোকে অস্থায়ী ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করবে মিয়ানমার সরকার।

জাতিসংঘসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশ মিয়ানমারের এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করলেও এতদিন মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার স্বীকারোক্তি পাওয়া যায়নি। তবে সম্প্রতি মিয়ানমার সেনাবাহিনী সীমিত আকারে হলেও তাদের এই বর্বরোচিত হামলা ও হত্যাযজ্ঞের কথা স্বীকার করেছে। পাশাপাশি মিয়ানমার সরকারের কেন্দ্রীয় মানবিক সহযোগিতা, পুনর্বাসন ও উন্নয়ন বিভাগের প্রধান সমন্বয়কারী অং টুন থেট জানিয়েছেন, হা পো খাউং শিবিরটি হবে একটি ট্রানজিট পয়েন্ট। রোহিঙ্গাদের নিজ স্থানে প্রত্যাবাসন করার আগে এখানে রাখা হবে।

তিনি আরও জানান, মিয়ানমারে যারা ফিরতে চাইবে তাদের সবাইকেই গ্রহণ করা হবে। তবে সবাইকে একটি বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে নাগরিকত্ব পেতে হবে। সবাইকেই প্রমাণ করতে হবে যে, তারা মিয়ানমারের নাগরিক। তবে রয়টার্স জানিয়েছে, নাগরিকত্বের প্রমাণ দিয়ে কতজন রোহিঙ্গা দেশে ফিরতে পারবেন তা পরিষ্কার নয়। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ সোজাসাপ্টা বলেছে, রোহিঙ্গা মুসলিমরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন; যদি তারা মিয়ানমারে বসবাসের প্রমাণাদি দাখিল করতে পারেন।

এদিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, যৌথভাবে রোহিঙ্গাদের শনাক্ত করার বিষয়টি নিয়ে কীভাবে কাজ করা হবে তা এখনো নির্ধারিত না হওয়ায় প্রথম ধাপের প্রত্যাবাসন কবে হবে তা নিশ্চিত নয়। পাশাপাশি জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারীরা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। আমরাও মনে করি, সময় ক্ষেপণের মধ্য দিয়ে সংশয় আরো ঘনীভূত হবে। সমস্যার কোনো সমাধান হবে না। সুতরাং বাংলাদেশকে চলমান সমাধান প্রক্রিয়ার পাশাপাশি নতুন করে নতুন পথের সন্ধানেও এগিয়ে যেতে হবে।