বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ পুণ্যভূমি সিলেট থেকে নিজ দলের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় আলিয়া মাদরাসা মাঠের জনাকীর্ণ সভায় তিনি তাঁর সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেছেন। টানা দ্বিতীয়বারের মতো দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার চলতি মেয়াদের পঞ্চম বর্ষে পা রেখেছে। নির্বাচনের বছর বলেই প্রধানমন্ত্রীর এই জনসভার দিকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের দৃষ্টি ছিল। যেকোনো রাজনৈতিক দলের সমাবেশে প্রতিপক্ষ দলের সমালোচনা ও তাদের নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরা হয়। সিলেটের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের আমলে গৃহীত উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন। সিলেটের জনসভা থেকে তিনি ১৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ১৮টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন।
বর্তমান সরকারের আমলে অনেক বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে দেশীয় অর্থায়নে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু। বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদে গত ৯ বছরে দেশের বিদ্যুৎ খাতে অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে। এখন দেশে ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। সাক্ষরতার হার ৭২ শতাংশের ওপরে। অনেক স্কুল-কলেজ জাতীয়করণ হয়েছে। উচ্চশিক্ষার সুবিধা প্রত্যন্ত এলাকায় নিয়ে যেতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। মাঠে উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ। এখন দেশের কৃষক মাত্র ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খুলতে পারে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে। নতুন নতুন শিল্প-প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে কর্মসংস্থানের সুযোগ। বাংলাদেশ উন্নয়নের একটি মডেল হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছে। অর্থনীতিতে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। উন্নত দেশের স্বীকৃতির স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ।
উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হলে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কোনো বিকল্প নেই। পর্যবেক্ষক মহলের আশঙ্কা, নির্বাচনের বছরে নতুন করে অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। বিশেষ করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও পরে যে সহিংসতা দেশের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে, তা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। আজ দেশের যে ধারাবাহিক উন্নয়ন হচ্ছে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাই তার অন্যতম কারণ। স্থিতিশীল পরিবেশ আছে বলেই দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ আসছে। উদ্যোক্তা মহল উৎসাহিত বলেই ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন নতুন দিগন্তও উন্মোচিত হচ্ছে। কিন্তু এই পরিবেশ যদি স্থায়ী না হয়, তাহলে আবার পিছিয়ে যেতে হবে। দেশের সব রাজনৈতিক দলকেই এ বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। নির্বাচনী বছরে জঙ্গি উত্থানের আশঙ্কাও একেবারে অমূলক নয়। জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পেলেই অভিযান চালিয়েছে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু তাদের নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। নির্বাচনের বছরে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আশা আমাদের। সেই সঙ্গে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায়ও কাজ করতে হবে।