ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজনীতিতে উত্তেজনা সব পক্ষের আচরণ সংযত থাকুক

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা, শঙ্কা-উৎকণ্ঠা সাধারণ মানুষের মনে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় হবে আজ। উত্তেজনা-উৎকণ্ঠার এটাই মূল কারণ। ক্ষমতাসীন দল আজ কোনো কর্মসূচি রাখেনি, তবে সরকারিভাবে পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) আজ রাজধানীতে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। একই রকম নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)। ঘোষিত কর্মসূচি না থাকলেও আওয়ামী লীগ তার নেতাকর্মীদের রাজপথে সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলেছে। বিএনপিও কর্মসূচি ঘোষণা করেনি, তবে খালেদার আদালতে যাওয়ার পথের দুই পাশে শান্তিপূর্ণ অবস্থানের প্রস্তুতি নিয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি বলেছে, নাশকতা এড়াতে রাজধানীর গুলিস্তান, মহাখালী, ফুলবাড়িয়া ও সায়েদাবাদ বাসটার্মিনালে ১৫ হাজার মালিক-শ্রমিক অবস্থান নেবে।

সার্বিক বিবেচনায় সম্ভাব্য পরিস্থিতি নাজুক বলেই মনে করছেন রাজনীতির বিশ্লেষকরা। তাঁরা মনে করেন, আজকের রায়কে কেন্দ্র করে জনমনে শঙ্কা তৈরি হওয়াই স্বাভাবিক। আওয়ামী লীগ বা বিএনপি কেউ কর্মসূচি না দিলেও বাস্তবে দুই দলই বেশ সরব। এক দল নেতাকর্মীদের রাজপথে সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলেছে, আরেক দল পথের ধারে সমবেত হওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নিতে বলেছে। মোটকথা দুই পক্ষই রাজপথে থাকবে। ফলে কোনো মুহূর্তে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি যে সৃষ্টি হবে না সে ভরসা করা কঠিন। পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে কোনো পক্ষ যে অস্থিরতা-অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করবে না, সে কথা কে বলবে? ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, রায়কে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগরীতে অরাজকতা সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালাতে পারে, এমন তথ্য তাঁদের কাছে রয়েছে। তাই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাস্তায় মিছিল বা সমাবেশ করা যাবে না।

এ সবই শঙ্কার বাতাবরণ সৃষ্টি করে। ব্যবসায়ী মহলও উদ্বিগ্ন। কারণ অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক ক্ষতি হবে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে জাতীয় অর্থনীতিতে। তাঁরা আশা করেন, অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়—এমন রাজনীতি কোনো পক্ষই করবে না। রাজনীতি ও আদালতকে এক করে ফেলা উচিত হবে না। রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া জানানোর অনেক মাধ্যম রয়েছে। নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত। আইনকে নিজের গতিতে চলতে দিতে হবে। কল-কারখানা যেন বিপর্যস্ত না হয়, শ্রমজীবী মানুষ যেন বিপাকে না পড়ে—এ কামনা অন্য সব মহলেরও। বাদ-প্রতিবাদ হোক, কিন্তু যথাবিধি হোক। বড় দুই দলের কারোরই পরিস্থিতি ঘোলা করা উচিত নয়। মালিকরা যেন গণপরিবহন চলাচলে পরোক্ষভাবে হলেও নিয়ন্ত্রণ আরোপ না করেন। দূরপাল্লার বাস-লঞ্চযাত্রীদের নিয়ে যেন ঢাকায় ঢুকতে পারে। নিরাপত্তা বিধানের নামে পুলিশের পক্ষ থেকে বাড়াবাড়ি না হলেই ভালো।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

রাজনীতিতে উত্তেজনা সব পক্ষের আচরণ সংযত থাকুক

আপডেট টাইম : ০৪:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা, শঙ্কা-উৎকণ্ঠা সাধারণ মানুষের মনে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় হবে আজ। উত্তেজনা-উৎকণ্ঠার এটাই মূল কারণ। ক্ষমতাসীন দল আজ কোনো কর্মসূচি রাখেনি, তবে সরকারিভাবে পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) আজ রাজধানীতে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। একই রকম নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)। ঘোষিত কর্মসূচি না থাকলেও আওয়ামী লীগ তার নেতাকর্মীদের রাজপথে সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলেছে। বিএনপিও কর্মসূচি ঘোষণা করেনি, তবে খালেদার আদালতে যাওয়ার পথের দুই পাশে শান্তিপূর্ণ অবস্থানের প্রস্তুতি নিয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি বলেছে, নাশকতা এড়াতে রাজধানীর গুলিস্তান, মহাখালী, ফুলবাড়িয়া ও সায়েদাবাদ বাসটার্মিনালে ১৫ হাজার মালিক-শ্রমিক অবস্থান নেবে।

সার্বিক বিবেচনায় সম্ভাব্য পরিস্থিতি নাজুক বলেই মনে করছেন রাজনীতির বিশ্লেষকরা। তাঁরা মনে করেন, আজকের রায়কে কেন্দ্র করে জনমনে শঙ্কা তৈরি হওয়াই স্বাভাবিক। আওয়ামী লীগ বা বিএনপি কেউ কর্মসূচি না দিলেও বাস্তবে দুই দলই বেশ সরব। এক দল নেতাকর্মীদের রাজপথে সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলেছে, আরেক দল পথের ধারে সমবেত হওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নিতে বলেছে। মোটকথা দুই পক্ষই রাজপথে থাকবে। ফলে কোনো মুহূর্তে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি যে সৃষ্টি হবে না সে ভরসা করা কঠিন। পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে কোনো পক্ষ যে অস্থিরতা-অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করবে না, সে কথা কে বলবে? ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, রায়কে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগরীতে অরাজকতা সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালাতে পারে, এমন তথ্য তাঁদের কাছে রয়েছে। তাই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাস্তায় মিছিল বা সমাবেশ করা যাবে না।

এ সবই শঙ্কার বাতাবরণ সৃষ্টি করে। ব্যবসায়ী মহলও উদ্বিগ্ন। কারণ অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক ক্ষতি হবে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে জাতীয় অর্থনীতিতে। তাঁরা আশা করেন, অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়—এমন রাজনীতি কোনো পক্ষই করবে না। রাজনীতি ও আদালতকে এক করে ফেলা উচিত হবে না। রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া জানানোর অনেক মাধ্যম রয়েছে। নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত। আইনকে নিজের গতিতে চলতে দিতে হবে। কল-কারখানা যেন বিপর্যস্ত না হয়, শ্রমজীবী মানুষ যেন বিপাকে না পড়ে—এ কামনা অন্য সব মহলেরও। বাদ-প্রতিবাদ হোক, কিন্তু যথাবিধি হোক। বড় দুই দলের কারোরই পরিস্থিতি ঘোলা করা উচিত নয়। মালিকরা যেন গণপরিবহন চলাচলে পরোক্ষভাবে হলেও নিয়ন্ত্রণ আরোপ না করেন। দূরপাল্লার বাস-লঞ্চযাত্রীদের নিয়ে যেন ঢাকায় ঢুকতে পারে। নিরাপত্তা বিধানের নামে পুলিশের পক্ষ থেকে বাড়াবাড়ি না হলেই ভালো।