বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বান্দরবানের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দেশের চার জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এ বন্যায় সুনামগঞ্জ, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও জামালপুর- এই চার জেলায় বর্তমানে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলই এ বন্যার কারণ।
তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি ও মাছের খামার। সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে কোথাও কোথাও, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি প্রবেশ করায় বন্ধ রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাদান কার্যক্রম।
চার জেলার বন্যা পরিস্থিতি এমন অবস্থায় রয়েছে যে, পানি উন্নয়ন বোর্ড এক বিজ্ঞপ্তিতে সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের স্বার্থে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হজজনিত ছুটি বাদে সব ধরনের ছুটি বাতিল করেছে।
চার জেলার বন্যা পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ আকার ধারণ না করলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে দেশের আরও অনেক অঞ্চলে এবার বন্যা দেখা দেবে। অতঃপর বন্যাকালীন ও বন্যা-পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য এখন থেকেই বড় ধরনের প্রস্তুতি নেয়া দরকার।
ইতিমধ্যে চার জেলায় উঠতি আউশ-ইরি ফসল, রোপা আমনের বীজতলা ও সবজি ক্ষেতের অনেকটাই পানির নিচে চলে গেছে। গো-খাদ্য সংকটে পড়েছেন কৃষক সমাজ। গবাদি পশুর জীবন রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এ অবস্থায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্ব বেড়ে গেছে অনেক। তাদের উচিত দুর্গতদের জন্য আশু সহায়তা হিসেবে ত্রাণসামগ্রীর ব্যবস্থা করা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কেও নড়েচড়ে বসতে হবে। আবার বন্যাকালীন দুর্ভোগের চেয়ে বন্যা-পরবর্তী দুর্ভোগের পরিমাণ কম নয়। ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠে গ্রামীণ দরিদ্র শ্রেণীকে কোমর সোজা করে দাঁড়াতে হলে তাদের জন্য দরকার পরিকল্পিত পুনর্বাসন।
বন্যা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বটে, এর ওপর মানুষের হাত নেই। তবে পূর্ব-প্রস্তুতি থাকলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এড়ানো সম্ভব হয়। আমরা আশা করব, সরকার সম্ভাব্য বন্যার ক্ষয়ক্ষতির কবল থেকে গ্রামীণ জনগণকে রক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বন্যা-পরবর্তী সময়ে রাস্তাঘাটের পুনর্নির্মাণসহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বসতবাড়ি পুনর্নির্মাণেও সরকার প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান দেবে বলে আমাদের বিশ্বাস। প্রয়োজনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কৃষিঋণেরও ব্যবস্থা করতে হবে।