ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভেজালের রাজত্বে সবাই

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ খাদ্যে ভেজালের দুর্নাম আমাদের অনেক দিনের। রাসায়নিক কেমিক্যাল, রংসহ নানান ক্ষতিকর উপাদান দেওয়া হয় প্রায় সব রকম খাবারেই। একই সঙ্গে পচা-বাসি খাবার খাওয়ানোর রেকর্ডও রয়েছে। মাঝে-মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত হাতেগোনা কিছু প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে জেল-জরিমানা করলেও তা থেমে থাকে না। ধনী থেকে অতিদরিদ্র পর্যন্ত কেউ ভেজাল খাবারের বাইরে নেই। একই ধারায় এবারও পবিত্র রোজা উপলক্ষে ভেজাল খাদ্যপণ্য উৎপাদন করছে দেশের নামিদামি ৫২টি প্রতিষ্ঠান।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত এই তথ্য যেমন ন্যক্কারজনক তেমনি দেশের জনগণের জন্যও বিপজ্জনক। রমজান মাসকে কেন্দ্র করে ভেজাল পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের তথ্য পেয়েছে সরকার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। এরই মধ্যে ৫২টি প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। এ ছাড়াও খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে নিরাপত্তা বাহিনীর একাধিক দল। তবুও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা দেওয়া কতটুকু সম্ভব হচ্ছে তা নিয়ে সঙ্কা থেকে যাচ্ছে। কেননা, অতীতে এমন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হলেও মুনাফালোভী দুর্নীতিগ্রস্তদের এ সংক্রান্ত কাজ থেকে নিবারণ করা যায়নি।

আমাদের দেশে প্রতি বছর ধর্মীয় কিংবা জাতীয় উপলক্ষকে কেন্দ্র করে ভেজাল দেওয়াসহ পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। পৃথিবীর অনেক রাষ্ট্রেই এ নিয়ে কঠোর আইন-কানুন রয়েছে। অনেক রাষ্ট্র ধর্মীয় কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পণ্যের দাম কমায়। শুধু আমাদের দেশেই দেখা যায় এর ব্যতিক্রম। খাদ্যদ্রব্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যেও অনিয়ম-দুর্নীতি যেন একটি ‘রীতি’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষমতাধর ব্যবসায়ী শ্রেণি জোগসাজশ করে দেশ এবং মানুষের ক্ষতি করে চলেছে। শুধু মুনাফার লোভেই কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী সাধারণের ভালোমন্দের চিন্তা থেকে দূরে থাকছে যাদের অন্য কোনো সৎ চিন্তা নেই।

আমরা বলতে চাই, সাধারণের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে খাদ্যে কিংবা অন্য কোথাও ভেজাল, দুর্নীতি-অনিয়ম করা চলবে না। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ী এসবের সঙ্গে জড়িত থাকে তবে তাদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। এমন একটি শক্তিশালী আইন পাস করতে হবে যেন এ জাতীয় প্রবণতা চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়। একটি বুদ্ধিবৃত্তিক জাতি গড়ে তুলতে হলে খাবারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে ভেজাল রোধের বিকল্প নেই। তাই সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়সহ প্রশাসন এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে, এমনটাই প্রত্যাশা।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভেজালের রাজত্বে সবাই

আপডেট টাইম : ০৫:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ মে ২০১৯

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ খাদ্যে ভেজালের দুর্নাম আমাদের অনেক দিনের। রাসায়নিক কেমিক্যাল, রংসহ নানান ক্ষতিকর উপাদান দেওয়া হয় প্রায় সব রকম খাবারেই। একই সঙ্গে পচা-বাসি খাবার খাওয়ানোর রেকর্ডও রয়েছে। মাঝে-মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত হাতেগোনা কিছু প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে জেল-জরিমানা করলেও তা থেমে থাকে না। ধনী থেকে অতিদরিদ্র পর্যন্ত কেউ ভেজাল খাবারের বাইরে নেই। একই ধারায় এবারও পবিত্র রোজা উপলক্ষে ভেজাল খাদ্যপণ্য উৎপাদন করছে দেশের নামিদামি ৫২টি প্রতিষ্ঠান।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত এই তথ্য যেমন ন্যক্কারজনক তেমনি দেশের জনগণের জন্যও বিপজ্জনক। রমজান মাসকে কেন্দ্র করে ভেজাল পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের তথ্য পেয়েছে সরকার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। এরই মধ্যে ৫২টি প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। এ ছাড়াও খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে নিরাপত্তা বাহিনীর একাধিক দল। তবুও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা দেওয়া কতটুকু সম্ভব হচ্ছে তা নিয়ে সঙ্কা থেকে যাচ্ছে। কেননা, অতীতে এমন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হলেও মুনাফালোভী দুর্নীতিগ্রস্তদের এ সংক্রান্ত কাজ থেকে নিবারণ করা যায়নি।

আমাদের দেশে প্রতি বছর ধর্মীয় কিংবা জাতীয় উপলক্ষকে কেন্দ্র করে ভেজাল দেওয়াসহ পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। পৃথিবীর অনেক রাষ্ট্রেই এ নিয়ে কঠোর আইন-কানুন রয়েছে। অনেক রাষ্ট্র ধর্মীয় কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পণ্যের দাম কমায়। শুধু আমাদের দেশেই দেখা যায় এর ব্যতিক্রম। খাদ্যদ্রব্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যেও অনিয়ম-দুর্নীতি যেন একটি ‘রীতি’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষমতাধর ব্যবসায়ী শ্রেণি জোগসাজশ করে দেশ এবং মানুষের ক্ষতি করে চলেছে। শুধু মুনাফার লোভেই কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী সাধারণের ভালোমন্দের চিন্তা থেকে দূরে থাকছে যাদের অন্য কোনো সৎ চিন্তা নেই।

আমরা বলতে চাই, সাধারণের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে খাদ্যে কিংবা অন্য কোথাও ভেজাল, দুর্নীতি-অনিয়ম করা চলবে না। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ী এসবের সঙ্গে জড়িত থাকে তবে তাদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। এমন একটি শক্তিশালী আইন পাস করতে হবে যেন এ জাতীয় প্রবণতা চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়। একটি বুদ্ধিবৃত্তিক জাতি গড়ে তুলতে হলে খাবারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে ভেজাল রোধের বিকল্প নেই। তাই সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়সহ প্রশাসন এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে, এমনটাই প্রত্যাশা।