ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভয়কে জয় করতে হবে

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ১২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। বেশ কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী ছিল এটি। এ সময় বহুতল ভবনের ওপরে থাকা মানুষ বেশ দুলুনি অনুভব করে। রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৩। ভূমিকম্পে তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি, এটা স্বস্তির কথা। তবে কবে যে বড় ধরনের ভূমিকম্প আঘাত আনে, এ আতঙ্ক এখন সবার মধ্যে। ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হওয়ায় বাংলাদেশ রয়েছে মারাত্মক ঝুঁকিতে। সেই ঝুঁকিই আমাদের আতঙ্কের কারণ। ভূমিকম্প বলে-কয়ে আসে না। এ জন্য আমরা কতটা প্রস্তুত, সে ব্যাপারে নতুন করে ভাবতে হবে। নিতে হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। ভূমিকম্পের আঘাত থেকে বাঁচতে এখনই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি থাকতে হবে।

ভূমিকম্প নিয়ে সবার ভয়, এই বুঝি ভেঙে পড়ছে মাথার ওপর। এমন ভয় এখন সবাইকে পেয়ে বসেছে। ভূমিকম্পকে ভয় পেলে চলবে না, ভয়কে জয় করতে হবে। ভূমিকম্প থেকে বাঁচার উপায় বের করতে হবে। ভূমিকম্পে উঁচু বিল্ডিংগুলো আগে ভেঙে পড়বে, এ কথা ঠিক না। বরং ভূমিকম্পে হাইরাইজ বিল্ডিংয়ের চেয়ে ছোট বিল্ডিংগুলোই ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশি। ছয় তলার নিচের বিল্ডিংগুলো বেশি অনিরাপদ। ভূমিকম্পে বিল্ডিং সাধারণত দুমড়েমুচড়ে গায়ে পড়ে না; হেলে পড়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। এ সময় নিজেকে রক্ষা করতে হবে। ভিম কিংবা কলামের পাশে শক্ত কোনো কিছু থাকতে হবে। বিশেষ করে খাট কিংবা শক্ত ডাইনিং টেবিল হলে ভালো হয়। আগে থেকেই আশ্রয়ের জায়গা ঠিক করে নিতে হবে। ঘরে রাখতে হবে শাবল এবং হাতুড়িজাতীয় কিছু দেশীয় যন্ত্র। ভূমিকম্প হলে অনেকেই তড়িঘড়ি ছোটাছুটি করে। তারা জানে না, ভূমিকম্পে যত ক্ষতি হয়, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয় অস্থিরতার কারণে।

ভূমিকম্প খুব অল্প সময়ের মধ্যে শেষ হয়। প্রলয় যা হওয়ার, তা হয় কয়েক সেকেন্ড কিংবা মিনিটের মধ্যে। এ সময়ে আপনি কি নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারবেন? রাস্তায় গিয়ে তো আরো বিপদে পড়তে হবে আপনাকে। বাড়িঘর হেলে গিয়ে ধসে পড়ে সবকিছু তো রাস্তার ওপরই পড়বে। বরং রাস্তায় থাকলে চাপা পড়ে, মাথা কিংবা শরীরের ওপরে কিছু পড়ে আপনি হতাহত হতে পারেন। যারা একতলা কিংবা দোতলায় থাকেন, পাশে খালি মাঠ থাকলে দ্রুত দৌড়ে যেতে পারেন। সেখানে যেতে যদি জঞ্জাল থাকে, তাহলে সৃষ্টিকর্তাকে ভরসা করে শক্ত কোথাও অবস্থান নেওয়াই শ্রেয়।

রাজধানী ঢাকায় যারা বসবাস করেন, যারা উঁচু বিল্ডিয়ে থাকেন, তাদের ভয়টা যেন একটু বেশি। তাদের জ্ঞাতার্থে বলছি, আমাদের দেশে ছয় তলার ওপরে নির্মিত বিল্ডিংগুলো সাধারণত নিয়ম মেনেই হয়। বড় বিল্ডিং তৈরির ক্ষেত্রে অনেকেই ঝুঁকি নিতে চান না। একটু দেখভাল করেই নির্মাণকাজ করে থাকেন। আর এসব বিল্ডিং পাইলিং হয় অনেক নিচ থেকে এবং বেইজ ঢালাই দেওয়া হয় পুরো বিল্ডিংয়ের নিচজুড়ে। তাই শুধু কলামে দাঁড়িয়ে থাকা বিল্ডিংয়ের চেয়ে হাইরাইজ বিল্ডিং কিছুটা হলেও নিরাপদ বলা যায়। ভূমিকম্পকে ভয় পেলে চলবে না, এ ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে সবাইকে।

দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে শক্তিশালী ভূমিকম্প এবং সুনামির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর লক্ষণ হিসেবে প্রায়ই দেশের কোথাও না কোথাও মৃদু ও মাঝারি মাত্রায় ভূমিকম্প হচ্ছে। প্রশ্ন হলো, ভূমিকম্প মোকাবিলায় বাংলাদেশ কি প্রস্তুত? রানা প্লাজা ধসের পরই আমাদের সক্ষমতা কতটুকু, তা আর বুঝতে বাকি থাকে না। ভূমিকম্প পরবর্তী প্রস্তুতি খুবই জরুরি। হাল-আমলে যে ভূমিকম্প হয়েছে, এর উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমার, নেপাল এবং চীন। এ সময় ৭ দশমকি ৪ এবং ৭ দশমকি ৯ মাত্রায়ও ভূমিকম্প হয়। এ ছাড়া এ সময়ে ছোট এবং মাঝারি কয়েক দফা ভূকম্পন অনুভূত হয়। মাত্রা হিসাবে নেপাল, চীন এবং ভারতের প্রায় অর্ধেক মাত্রায় ভূমিকম্প অনুভূত হয় বাংলাদেশে। নেপালের সমমাত্রায় বাংলাদেশে ভূমিকম্প হলে রাজধানী ঢাকার ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ভবন ধসে এবং হেলে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সারা দেশে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত ভয়াবহ হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়।

প্রশ্ন হলো, এক রানা প্লাজার ধসে পর উদ্ধারে দীর্ঘ সময় লেগেছে। আরো উচ্চমাত্রায় ভূমিকম্প হলে উদ্ধার তৎপরতার কী হাল হবে, তা সহজেই আঁচ করা যায়। ইতোমধ্যে অনেক মূল্যবান সময় অপচয় হয়েছে। আর বিলম্ব করা সমীচীন হবে না। ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের প্রকৃত সময় এখনই। ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলার ক্ষেত্রে আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত দুটি—প্রথমত, ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রাকে নিম্নতম পর্যায়ে রাখা; দ্বিতীয়ত, ভূমিকম্প-পরবর্তী বিপর্যয় সামাল দেওয়া। বাংলাদেশ একটি আরো বড় মাত্রার ভূমিকম্পের দ্বারপ্রান্তে—বিশেষজ্ঞদের এমন সতর্কবাণী এবং বিপদাশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না কিছুতেই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কেবল ভূমিকম্পই নয়, দেশের উপকূলীয় এলাকা ঘিরে ভয়াবহ সুনামি সৃষ্টির জন্য সাইজমিক গ্যাপ বিরাজমান রয়েছে। এই গ্যাপ থেকে যেকোনো সময় সুনামিও হতে পারে। তাদের মতে, বঙ্গোপসাগরের উত্তরে আন্দামান থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সাবডাকশন জোন বরাবর ৬০০ কিলোমিটারের একটি সাইজমিক গ্যাপ রয়েছে। আমাদের দেশে শক্তিশালী ভূমিকম্প হওয়ার জন্য যথেষ্ট শক্তি এই সাইজমিক গ্যাপে জমা হয়ে আছে। এই সাইজমিক গ্যাপ আমাদের জন্য অশনি সংকেত। তবে যে যাই বলুক, জন্মের পর থেকেই দেখছি আর শুনে আসছি, শক্তিশালী ভূমিকম্পে বাংলাদেশের বড় অংশ ধ্বংস হয়ে যাবে। ৪৬ বছর পার করে দিলাম, ভূমিকম্পে এ যাবৎ কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এমনকি কারো প্রাণহানিও ঘটেনি। ভূমিকম্পকে ভয় পেলে চলবে না। ভয়কে জয় করতে হবে। ভূমিকম্প থেকে বাঁচার উপায় বের করতে হবে।

লেখক : সাংবাদিক, গবেষক ও কলামিস্ট

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ভয়কে জয় করতে হবে

আপডেট টাইম : ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ১২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। বেশ কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী ছিল এটি। এ সময় বহুতল ভবনের ওপরে থাকা মানুষ বেশ দুলুনি অনুভব করে। রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৩। ভূমিকম্পে তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি, এটা স্বস্তির কথা। তবে কবে যে বড় ধরনের ভূমিকম্প আঘাত আনে, এ আতঙ্ক এখন সবার মধ্যে। ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হওয়ায় বাংলাদেশ রয়েছে মারাত্মক ঝুঁকিতে। সেই ঝুঁকিই আমাদের আতঙ্কের কারণ। ভূমিকম্প বলে-কয়ে আসে না। এ জন্য আমরা কতটা প্রস্তুত, সে ব্যাপারে নতুন করে ভাবতে হবে। নিতে হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। ভূমিকম্পের আঘাত থেকে বাঁচতে এখনই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি থাকতে হবে।

ভূমিকম্প নিয়ে সবার ভয়, এই বুঝি ভেঙে পড়ছে মাথার ওপর। এমন ভয় এখন সবাইকে পেয়ে বসেছে। ভূমিকম্পকে ভয় পেলে চলবে না, ভয়কে জয় করতে হবে। ভূমিকম্প থেকে বাঁচার উপায় বের করতে হবে। ভূমিকম্পে উঁচু বিল্ডিংগুলো আগে ভেঙে পড়বে, এ কথা ঠিক না। বরং ভূমিকম্পে হাইরাইজ বিল্ডিংয়ের চেয়ে ছোট বিল্ডিংগুলোই ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশি। ছয় তলার নিচের বিল্ডিংগুলো বেশি অনিরাপদ। ভূমিকম্পে বিল্ডিং সাধারণত দুমড়েমুচড়ে গায়ে পড়ে না; হেলে পড়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। এ সময় নিজেকে রক্ষা করতে হবে। ভিম কিংবা কলামের পাশে শক্ত কোনো কিছু থাকতে হবে। বিশেষ করে খাট কিংবা শক্ত ডাইনিং টেবিল হলে ভালো হয়। আগে থেকেই আশ্রয়ের জায়গা ঠিক করে নিতে হবে। ঘরে রাখতে হবে শাবল এবং হাতুড়িজাতীয় কিছু দেশীয় যন্ত্র। ভূমিকম্প হলে অনেকেই তড়িঘড়ি ছোটাছুটি করে। তারা জানে না, ভূমিকম্পে যত ক্ষতি হয়, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয় অস্থিরতার কারণে।

ভূমিকম্প খুব অল্প সময়ের মধ্যে শেষ হয়। প্রলয় যা হওয়ার, তা হয় কয়েক সেকেন্ড কিংবা মিনিটের মধ্যে। এ সময়ে আপনি কি নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারবেন? রাস্তায় গিয়ে তো আরো বিপদে পড়তে হবে আপনাকে। বাড়িঘর হেলে গিয়ে ধসে পড়ে সবকিছু তো রাস্তার ওপরই পড়বে। বরং রাস্তায় থাকলে চাপা পড়ে, মাথা কিংবা শরীরের ওপরে কিছু পড়ে আপনি হতাহত হতে পারেন। যারা একতলা কিংবা দোতলায় থাকেন, পাশে খালি মাঠ থাকলে দ্রুত দৌড়ে যেতে পারেন। সেখানে যেতে যদি জঞ্জাল থাকে, তাহলে সৃষ্টিকর্তাকে ভরসা করে শক্ত কোথাও অবস্থান নেওয়াই শ্রেয়।

রাজধানী ঢাকায় যারা বসবাস করেন, যারা উঁচু বিল্ডিয়ে থাকেন, তাদের ভয়টা যেন একটু বেশি। তাদের জ্ঞাতার্থে বলছি, আমাদের দেশে ছয় তলার ওপরে নির্মিত বিল্ডিংগুলো সাধারণত নিয়ম মেনেই হয়। বড় বিল্ডিং তৈরির ক্ষেত্রে অনেকেই ঝুঁকি নিতে চান না। একটু দেখভাল করেই নির্মাণকাজ করে থাকেন। আর এসব বিল্ডিং পাইলিং হয় অনেক নিচ থেকে এবং বেইজ ঢালাই দেওয়া হয় পুরো বিল্ডিংয়ের নিচজুড়ে। তাই শুধু কলামে দাঁড়িয়ে থাকা বিল্ডিংয়ের চেয়ে হাইরাইজ বিল্ডিং কিছুটা হলেও নিরাপদ বলা যায়। ভূমিকম্পকে ভয় পেলে চলবে না, এ ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে সবাইকে।

দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে শক্তিশালী ভূমিকম্প এবং সুনামির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর লক্ষণ হিসেবে প্রায়ই দেশের কোথাও না কোথাও মৃদু ও মাঝারি মাত্রায় ভূমিকম্প হচ্ছে। প্রশ্ন হলো, ভূমিকম্প মোকাবিলায় বাংলাদেশ কি প্রস্তুত? রানা প্লাজা ধসের পরই আমাদের সক্ষমতা কতটুকু, তা আর বুঝতে বাকি থাকে না। ভূমিকম্প পরবর্তী প্রস্তুতি খুবই জরুরি। হাল-আমলে যে ভূমিকম্প হয়েছে, এর উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমার, নেপাল এবং চীন। এ সময় ৭ দশমকি ৪ এবং ৭ দশমকি ৯ মাত্রায়ও ভূমিকম্প হয়। এ ছাড়া এ সময়ে ছোট এবং মাঝারি কয়েক দফা ভূকম্পন অনুভূত হয়। মাত্রা হিসাবে নেপাল, চীন এবং ভারতের প্রায় অর্ধেক মাত্রায় ভূমিকম্প অনুভূত হয় বাংলাদেশে। নেপালের সমমাত্রায় বাংলাদেশে ভূমিকম্প হলে রাজধানী ঢাকার ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ভবন ধসে এবং হেলে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সারা দেশে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত ভয়াবহ হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়।

প্রশ্ন হলো, এক রানা প্লাজার ধসে পর উদ্ধারে দীর্ঘ সময় লেগেছে। আরো উচ্চমাত্রায় ভূমিকম্প হলে উদ্ধার তৎপরতার কী হাল হবে, তা সহজেই আঁচ করা যায়। ইতোমধ্যে অনেক মূল্যবান সময় অপচয় হয়েছে। আর বিলম্ব করা সমীচীন হবে না। ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের প্রকৃত সময় এখনই। ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলার ক্ষেত্রে আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত দুটি—প্রথমত, ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রাকে নিম্নতম পর্যায়ে রাখা; দ্বিতীয়ত, ভূমিকম্প-পরবর্তী বিপর্যয় সামাল দেওয়া। বাংলাদেশ একটি আরো বড় মাত্রার ভূমিকম্পের দ্বারপ্রান্তে—বিশেষজ্ঞদের এমন সতর্কবাণী এবং বিপদাশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না কিছুতেই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কেবল ভূমিকম্পই নয়, দেশের উপকূলীয় এলাকা ঘিরে ভয়াবহ সুনামি সৃষ্টির জন্য সাইজমিক গ্যাপ বিরাজমান রয়েছে। এই গ্যাপ থেকে যেকোনো সময় সুনামিও হতে পারে। তাদের মতে, বঙ্গোপসাগরের উত্তরে আন্দামান থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সাবডাকশন জোন বরাবর ৬০০ কিলোমিটারের একটি সাইজমিক গ্যাপ রয়েছে। আমাদের দেশে শক্তিশালী ভূমিকম্প হওয়ার জন্য যথেষ্ট শক্তি এই সাইজমিক গ্যাপে জমা হয়ে আছে। এই সাইজমিক গ্যাপ আমাদের জন্য অশনি সংকেত। তবে যে যাই বলুক, জন্মের পর থেকেই দেখছি আর শুনে আসছি, শক্তিশালী ভূমিকম্পে বাংলাদেশের বড় অংশ ধ্বংস হয়ে যাবে। ৪৬ বছর পার করে দিলাম, ভূমিকম্পে এ যাবৎ কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এমনকি কারো প্রাণহানিও ঘটেনি। ভূমিকম্পকে ভয় পেলে চলবে না। ভয়কে জয় করতে হবে। ভূমিকম্প থেকে বাঁচার উপায় বের করতে হবে।

লেখক : সাংবাদিক, গবেষক ও কলামিস্ট