ঢাকা , বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মানবসম্পদ তৈরির বাজেট

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ‘মাননীয় স্পিকার, বিশ্ব এখন তৃতীয় শিল্প বিপ্লব থেকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে উত্তরণের পথে। বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমাদেরও তৈরি হতে হবে। না হলে সামনে অগ্রসর হওয়া আমাদের জন্য দুরূহ হবে। তাই আমাদের ক্লাসরুমগুলো বিষয় উপযোগী করে তুলতে হবে যেখানে শেখানো হবে ন্যানো টেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি, রেবোটিক্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স, ইন্টারনেট অব থিংস, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, ব্লকচেইন টেকনোলজি ইত্যাদি। এসব বিষয়ে শিক্ষাগ্রহণ এখন সময়ের দাবি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেও এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন।

আমাদের ছাত্রের অভাব নেই। অভাব হচ্ছে প্রশিক্ষিত শিক্ষকের। এসব বিষয়ে শিক্ষা প্রদানের জন্য জাপানের সম্রাট মেইজির মতো আমাদেরও আজকের প্রয়োজন মেটাতে প্রয়োজনে বিদেশ থেকে শিক্ষক নিয়ে আসতে হবে। এসব কার্যক্রম আমরা এই বাজেট কাল থেকেই শুরু করতে চাই। এবং সে জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে আমরা শিক্ষা খাতে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ রাখছি।’ অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতার ২১ পৃষ্ঠা থেকে এই অনুচ্ছেদটি আমরা উদ্ধৃত করলাম। ১৩ জুন ২০১৯ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তাফা কামাল তার বাজেট বক্তৃতায় এই কথাগুলো বলেন। যে দেশ বিশ্বে প্রথম ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে রূপান্তরিত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সেই দেশের অর্থমন্ত্রী এমন কথা বলবেন সেটাই স্বাভাবিক। ধন্যবাদ অর্থমন্ত্রীকে।

২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণার পর ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে সরকার গঠন করার পর প্রথম বাজেট পেশকালে ডিজিটাল বাংলাদেশ আলোচিত হয়ে আসছে- সেই ২০০৯-১০ সাল থেকে। ২০০৮ সালের দিন বদলের সনদ নামীয় নির্বাচনী ইশতেহারপ্রণেতাদের নেতা তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত প্রথম ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়টি দেশের বাজেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। ‘২০০৯-১০ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় মাননীয় অর্থমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ বলতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সহায়তায় একটি আর্থ-সামাজিক রূপান্তরকে বুঝিয়েছেন। একই বছরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ বোঝাতে ৪টি অগ্রাধিকার খাতকে চিহ্নিত করেছেন।’ (অর্থমন্ত্রীর বাজেট বই-ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে অগ্রযাত্র হালচিত্র ২০১৯, পৃষ্ঠা ৯) সাবেক অর্থমন্ত্রী ও বর্তমান অর্থমন্ত্রীর মতোই বাজেট বক্তৃতার সঙ্গে ডিজিটাল বাংলাদেশবিষয়ক একটি হালচিত্র প্রকাশ করে এসেছেন।

প্রথম বছরেই তিনি বাজেটে ১০০ কোটি টাকার থোক বরাদ্দও রেখেছিলেন। এবার নতুন অর্থমন্ত্রী আবারো প্রমাণ করলেন যে, ডিজিটাল বাংলাদেশ নিছক কথার কথা বা একটি রাজনৈতিক স্লোগান নয়- আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর এবং আমরা একই সঙ্গে এটিও অনুভব করছি যে, বিশ্বটা শিল্প বিপ্লবের চতুর্থ স্তর অতিক্রম করছে। বাজেট যেহেতু রাষ্ট্রীয় অগ্রযাত্রার পরিকল্পনার দলিল সেহেতু এই দলিলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও তার দক্ষতার বিষয়টি আলোচিত হওয়াটা আমাদের জন্য পরম গৌরবের। অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতার ২৩ পাতায় উল্লেখ করেছেন যে, ‘মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে ৫ বছর মেয়াদে মাধ্যমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। এর আওতায় ছাত্রছাত্রীদের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত শিক্ষায় অগ্রাধিকার দেয়া হবে।’ ১৪ জুন ২০১৯ বিকেলে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনেও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন।

এটা অবশ্যই অসাধারণ যে, আমাদের রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনার সর্বোচ্চ স্তরে আমাদের ভবনাটা কৃষি ও শিল্প যুগকে অতিক্রম করেছে। আমাদের ২০০৯-পরবর্তী রাষ্ট্রীয় সব কর্মকাণ্ডে তার সর্বোচ্চ প্রতিফলনও ঘটেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বা চতুর্থ/পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের মানবসম্পদ তৈরির জন্যও আমাদের সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল। ২০০০ সাল থেকে দেশে কম্পিউটারভিত্তিক আনন্দ মাল্টিমিডিয়া স্কুল চালু হয়। শিশুশ্রেণি থেকে কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয় সেসব স্কুলে।

তারও আগে মাধ্যমিক স্তরে পাঠ্য করার জন্য ১৯৯২ সালে কম্পিউটারের পাঠক্রম প্রণয়নের চেষ্টা করে ১৯৯৬ সালে সেটি করতে সক্ষম হই এবং আমার লেখা বই দিয়েই ১৯৯৮ সাল থেকে নবম দশম শ্রেণিতে কম্পিউটার শিক্ষা অন্যতম অপশনাল বিষয় হিসেবে পাঠ্য হয়। অন্যদিকে ২০০৯ সাল থেকে সর্ব পর্যায়ের প্রচেষ্টার সুফল হিসেবে ২০১১ সালে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়টি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পাঠ্য হওয়ার পর থেকে ২০১৫ সালের মাঝে একাদশ দ্বাদশ শ্রেণিতেও বাধ্যতামূলকভাবে পাঠ্য করা হয়।

অর্থমন্ত্রী যখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মানবসম্পদের কথা বলেন তখন আমাদের কেবল মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক বা উচ্চশিক্ষার স্তরের কথা ভাবলে হবে না। সারা দুনিয়া সেটিকে শিশু স্তরে নিয়ে গেছে। আমরাও সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমি খুব দৃঢ়তার সঙ্গে মনে করি যে, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মানবসম্পদ তৈরির কাজটা শিশুদের দিয়েই শুরু করতে হবে। নিজের ছেলে বিজয়কে দিয়ে সেটি আমি শুরু করি।

প্রথম জাতীয় শিশু-কিশোর প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা : ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের চেতনা থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তথ্যপ্রযুক্তিতে আরো দক্ষ করে গড়ে তুলতে ২০১৮ সালে প্রথমে জেলা পর্যায়ে জাতীয় শিশু-কিশোর প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়। সারাদেশে ৬৪ জেলায় ১৮০টি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবে জেলা পর্যায়ের প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা সিআরআই, ইয়ং বাংলা এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল যৌথভাবে আয়োজন করে।

দুই দিনব্যাপী জেলা পর্যায়ের এই প্রতিযোগিতায় ৬৪ জেলা থেকে প্রাথমিকভাবে ৫ হাজার ৪০০ জন অংশগ্রহণ করে। সারাদেশে ১৮০টি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবে পাইথন ও স্ক্র্যাচের প্রশিক্ষণ দেয়া হয় গত ১২ মে থেকে ৩০ মে ২০১৮ পর্যন্ত। তার আগে গত ১৬ ও ১৭ এপ্রিল ২০১৮ বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষকদের জন্য দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। সেখানে ৩৬০ জন আইসিটি শিক্ষক এবং শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের কো-অর্ডিনেটররা প্রশিক্ষণে অংশ নেন। এই জাতীয় প্রতিযোগিতায় প্রাপ্ত প্রকল্পগুলোর মধ্যে থেকে সেরা প্রকল্পগুলোকে সমাপনী এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করা হয় এবং বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়।

২০১৯ সালের শিশু-কিশোর প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন শুরু হয়েছে। জুন মাসেই প্রতিযোগিতার কাজ শেষ হয়ে যাবে। আশা করি ২০২০ সালেও প্রতিযোগিতার ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। ২০১৮ সালে আমরা তৃতীয় শ্রেণি থেকে প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলাম। ২০১৯ সালে সেটি প্রথম শ্রেণি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এর প্রধানতম কারণ হলো ২০১৯ সালে আমরা ৫-৮ বছরের শিশুদের জন্য স্ক্র্যাচ জুনিয়র নামক প্রোগ্রামিং ভাষাটি পেয়েছি।

তত্ত্বীয়ভাবে শিশুদের প্রোগ্রামিং করতে পারার বিষয়ে আমাদের আশাবাদ থাকলেও বস্তুত এই প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়েই আমরা প্রমাণ পেলাম যে শিশুরা প্রোগ্রামিংকে ভয় পায় না। এই প্রতিযোগিতার বড় একটি সফলতা হলো যে এতে যারা বিজয়ী হয়েছে তাদের কেউই প্রায় রাজধানীর নয়। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল যেমন লালমনিরহাট থেকে এসে ওরা বড় বড় শহরের স্কুলগুলোকে হারিয়ে দিয়েছে। এমনকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা রাজধানীর নামি-দামি কিন্ডারগার্টেন বা ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোকে পরাস্ত করেছে।

একই সঙ্গে আমরা শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক-অভিভাবিকাদের মাঝে বিপুল আগ্রহ দেখেছি। প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে শিশু-কিশোরদের সৃজনশীলতাকে বিকশিত করার সুযোগ তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। আমরা যদি প্রথম জাতীয় শিশু-কিশোর প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতাকে আরো তৃণমূলে পৌঁছাতে পারি তবে সেটি ডিজিটাল যুগের বা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী আমাদের মানবসম্পদ গড়ে তুলতে সবচেয়ে বেশি সহায়ক হবে।

বাধ্যতামূলক প্রোগ্রামিং শেখা : এরই মাঝে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গত ২৫ অক্টোবর ২০১৮ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে সামনের শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাথমিক স্তরে প্রোগ্রামিংসহ তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়টি পাঠ্য করার জন্য অনুরোধ করে পত্র পাঠানো হয়েছে। ২০১৮ সালে জাতীয় বালিকা প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতাতেও শিশুদের স্ক্র্যাচ দিয়ে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করানো হয়। ২২ অক্টোবর ২০১৮ ডেফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এসব প্রতিযোগিতা আগামীতে অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যায়। বাংলাদেশের মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য এসব প্রতিযোগিতা মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে বলেই আমি মনে করি।

কেমন করে শুরু করবেন : এবার অর্থমন্ত্রী চতুর্থ শিল্প যুগের উপযোগী মানবসম্পদ তৈরির পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দেয়ার ফলে আমাদের দায়িত্ব আরো বেড়েছে। উচ্চশিক্ষায় ডিজিটাল প্রযুক্তিগুলো পাঠ্য করার আগে বস্তুত শিশুশিক্ষায় রূপান্তরটা ঘটাতে হবে। এ জন্য প্রাথমিক স্তরে প্রোগ্রামিং বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এই উদ্যোগে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আমরা যখন শিশুদের জন্য প্রোগ্রামিং শেখা বাধ্যতামূলক করার কথা ভাবছি তখন অভিভাবক-অভিভাবিকা, বাবা-মা, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিজেদের প্রস্তুতি নেয়া দরকার।

বাংলাদেশের একটি গৌরবের বিষয় আমাদের সন্তান বিজয় জব্বার স্ক্র্যাচ শেখার জন্য সহায়তা করতে প্রোগ্রামিং উইথ স্ক্র্যাচ নামে একটি বই লিখেছেন, বইটি তাম্রলিপি নামক একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান প্রকাশও করেছে। বইটির প্রথম প্রকাশিত সংস্করণটি ইংরেজিতে। তবে এর বাংলা সংস্করণও প্রস্তুত হয়েছে। সহসাই বইটির বাংলা সংস্করণও প্রকাশিত হবে। অন্যদিকে স্ক্র্যাচ শেখার জন্য প্রায় সব উপকরণ রয়েছে এমআইটির সাইটে। https://scratch.mit.edu/ ঠিকানায় গিয়ে নিজে যেভাবে যেখান থেকে শুরু করতে চান তাই করতে পারেন। সাইটটিতে শিশুদের জন্য যেমন শিক্ষা উপকরণ আছে তেমনি আছে বাবা-মা ও শিক্ষকদের জন্য যাবতীয় নির্দেশনা।

চার কোটির বেশি প্রকল্প দেখার সুযোগের বাইরে ভিডিও সহায়তাও পাওয়া যেতে পারে। বস্তুত এমআইটির ওয়েবসাইটটি খুবই সমৃদ্ধ একটি ওয়েবসাইট। সাইটটিতে গেলে অনুভব করবেন যে, শিশুদের প্রোগ্রামার হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিশ্বজুড়ে নানা আয়োজনের কেন্দ্র হচ্ছে এই সাইটটি। বিশ্বের কোটি কোটি শিশুর আগামী দিনের ঠিকানা এই সাইট। বিশ্বজুড়ে স্ক্র্যাচ দিবসও পালিত হয়। আমাদের জন্য সুখবর যে প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা, অর্থমন্ত্রী এবং সরকারের অন্য নীতিনির্ধারকরাও অনুভব করেন যে শিশুদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী দক্ষতা দিয়ে গড়ে তুলতে হবে। দিন শেষে আমরা অনুভব করলাম যে আমাদের যাত্রাটা সঠিক পথেই রয়েছে।

মোস্তাফা জব্বার : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ও কলাম লেখক।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মানবসম্পদ তৈরির বাজেট

আপডেট টাইম : ১২:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ জুন ২০১৯

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ‘মাননীয় স্পিকার, বিশ্ব এখন তৃতীয় শিল্প বিপ্লব থেকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে উত্তরণের পথে। বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমাদেরও তৈরি হতে হবে। না হলে সামনে অগ্রসর হওয়া আমাদের জন্য দুরূহ হবে। তাই আমাদের ক্লাসরুমগুলো বিষয় উপযোগী করে তুলতে হবে যেখানে শেখানো হবে ন্যানো টেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি, রেবোটিক্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স, ইন্টারনেট অব থিংস, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, ব্লকচেইন টেকনোলজি ইত্যাদি। এসব বিষয়ে শিক্ষাগ্রহণ এখন সময়ের দাবি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেও এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন।

আমাদের ছাত্রের অভাব নেই। অভাব হচ্ছে প্রশিক্ষিত শিক্ষকের। এসব বিষয়ে শিক্ষা প্রদানের জন্য জাপানের সম্রাট মেইজির মতো আমাদেরও আজকের প্রয়োজন মেটাতে প্রয়োজনে বিদেশ থেকে শিক্ষক নিয়ে আসতে হবে। এসব কার্যক্রম আমরা এই বাজেট কাল থেকেই শুরু করতে চাই। এবং সে জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে আমরা শিক্ষা খাতে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ রাখছি।’ অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতার ২১ পৃষ্ঠা থেকে এই অনুচ্ছেদটি আমরা উদ্ধৃত করলাম। ১৩ জুন ২০১৯ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তাফা কামাল তার বাজেট বক্তৃতায় এই কথাগুলো বলেন। যে দেশ বিশ্বে প্রথম ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে রূপান্তরিত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সেই দেশের অর্থমন্ত্রী এমন কথা বলবেন সেটাই স্বাভাবিক। ধন্যবাদ অর্থমন্ত্রীকে।

২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণার পর ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে সরকার গঠন করার পর প্রথম বাজেট পেশকালে ডিজিটাল বাংলাদেশ আলোচিত হয়ে আসছে- সেই ২০০৯-১০ সাল থেকে। ২০০৮ সালের দিন বদলের সনদ নামীয় নির্বাচনী ইশতেহারপ্রণেতাদের নেতা তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত প্রথম ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়টি দেশের বাজেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। ‘২০০৯-১০ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় মাননীয় অর্থমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ বলতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সহায়তায় একটি আর্থ-সামাজিক রূপান্তরকে বুঝিয়েছেন। একই বছরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ বোঝাতে ৪টি অগ্রাধিকার খাতকে চিহ্নিত করেছেন।’ (অর্থমন্ত্রীর বাজেট বই-ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে অগ্রযাত্র হালচিত্র ২০১৯, পৃষ্ঠা ৯) সাবেক অর্থমন্ত্রী ও বর্তমান অর্থমন্ত্রীর মতোই বাজেট বক্তৃতার সঙ্গে ডিজিটাল বাংলাদেশবিষয়ক একটি হালচিত্র প্রকাশ করে এসেছেন।

প্রথম বছরেই তিনি বাজেটে ১০০ কোটি টাকার থোক বরাদ্দও রেখেছিলেন। এবার নতুন অর্থমন্ত্রী আবারো প্রমাণ করলেন যে, ডিজিটাল বাংলাদেশ নিছক কথার কথা বা একটি রাজনৈতিক স্লোগান নয়- আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর এবং আমরা একই সঙ্গে এটিও অনুভব করছি যে, বিশ্বটা শিল্প বিপ্লবের চতুর্থ স্তর অতিক্রম করছে। বাজেট যেহেতু রাষ্ট্রীয় অগ্রযাত্রার পরিকল্পনার দলিল সেহেতু এই দলিলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও তার দক্ষতার বিষয়টি আলোচিত হওয়াটা আমাদের জন্য পরম গৌরবের। অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতার ২৩ পাতায় উল্লেখ করেছেন যে, ‘মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে ৫ বছর মেয়াদে মাধ্যমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। এর আওতায় ছাত্রছাত্রীদের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত শিক্ষায় অগ্রাধিকার দেয়া হবে।’ ১৪ জুন ২০১৯ বিকেলে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনেও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন।

এটা অবশ্যই অসাধারণ যে, আমাদের রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনার সর্বোচ্চ স্তরে আমাদের ভবনাটা কৃষি ও শিল্প যুগকে অতিক্রম করেছে। আমাদের ২০০৯-পরবর্তী রাষ্ট্রীয় সব কর্মকাণ্ডে তার সর্বোচ্চ প্রতিফলনও ঘটেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বা চতুর্থ/পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের মানবসম্পদ তৈরির জন্যও আমাদের সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল। ২০০০ সাল থেকে দেশে কম্পিউটারভিত্তিক আনন্দ মাল্টিমিডিয়া স্কুল চালু হয়। শিশুশ্রেণি থেকে কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয় সেসব স্কুলে।

তারও আগে মাধ্যমিক স্তরে পাঠ্য করার জন্য ১৯৯২ সালে কম্পিউটারের পাঠক্রম প্রণয়নের চেষ্টা করে ১৯৯৬ সালে সেটি করতে সক্ষম হই এবং আমার লেখা বই দিয়েই ১৯৯৮ সাল থেকে নবম দশম শ্রেণিতে কম্পিউটার শিক্ষা অন্যতম অপশনাল বিষয় হিসেবে পাঠ্য হয়। অন্যদিকে ২০০৯ সাল থেকে সর্ব পর্যায়ের প্রচেষ্টার সুফল হিসেবে ২০১১ সালে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়টি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পাঠ্য হওয়ার পর থেকে ২০১৫ সালের মাঝে একাদশ দ্বাদশ শ্রেণিতেও বাধ্যতামূলকভাবে পাঠ্য করা হয়।

অর্থমন্ত্রী যখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মানবসম্পদের কথা বলেন তখন আমাদের কেবল মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক বা উচ্চশিক্ষার স্তরের কথা ভাবলে হবে না। সারা দুনিয়া সেটিকে শিশু স্তরে নিয়ে গেছে। আমরাও সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমি খুব দৃঢ়তার সঙ্গে মনে করি যে, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মানবসম্পদ তৈরির কাজটা শিশুদের দিয়েই শুরু করতে হবে। নিজের ছেলে বিজয়কে দিয়ে সেটি আমি শুরু করি।

প্রথম জাতীয় শিশু-কিশোর প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা : ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের চেতনা থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তথ্যপ্রযুক্তিতে আরো দক্ষ করে গড়ে তুলতে ২০১৮ সালে প্রথমে জেলা পর্যায়ে জাতীয় শিশু-কিশোর প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়। সারাদেশে ৬৪ জেলায় ১৮০টি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবে জেলা পর্যায়ের প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা সিআরআই, ইয়ং বাংলা এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল যৌথভাবে আয়োজন করে।

দুই দিনব্যাপী জেলা পর্যায়ের এই প্রতিযোগিতায় ৬৪ জেলা থেকে প্রাথমিকভাবে ৫ হাজার ৪০০ জন অংশগ্রহণ করে। সারাদেশে ১৮০টি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবে পাইথন ও স্ক্র্যাচের প্রশিক্ষণ দেয়া হয় গত ১২ মে থেকে ৩০ মে ২০১৮ পর্যন্ত। তার আগে গত ১৬ ও ১৭ এপ্রিল ২০১৮ বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষকদের জন্য দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। সেখানে ৩৬০ জন আইসিটি শিক্ষক এবং শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের কো-অর্ডিনেটররা প্রশিক্ষণে অংশ নেন। এই জাতীয় প্রতিযোগিতায় প্রাপ্ত প্রকল্পগুলোর মধ্যে থেকে সেরা প্রকল্পগুলোকে সমাপনী এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করা হয় এবং বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়।

২০১৯ সালের শিশু-কিশোর প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন শুরু হয়েছে। জুন মাসেই প্রতিযোগিতার কাজ শেষ হয়ে যাবে। আশা করি ২০২০ সালেও প্রতিযোগিতার ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। ২০১৮ সালে আমরা তৃতীয় শ্রেণি থেকে প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলাম। ২০১৯ সালে সেটি প্রথম শ্রেণি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এর প্রধানতম কারণ হলো ২০১৯ সালে আমরা ৫-৮ বছরের শিশুদের জন্য স্ক্র্যাচ জুনিয়র নামক প্রোগ্রামিং ভাষাটি পেয়েছি।

তত্ত্বীয়ভাবে শিশুদের প্রোগ্রামিং করতে পারার বিষয়ে আমাদের আশাবাদ থাকলেও বস্তুত এই প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়েই আমরা প্রমাণ পেলাম যে শিশুরা প্রোগ্রামিংকে ভয় পায় না। এই প্রতিযোগিতার বড় একটি সফলতা হলো যে এতে যারা বিজয়ী হয়েছে তাদের কেউই প্রায় রাজধানীর নয়। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল যেমন লালমনিরহাট থেকে এসে ওরা বড় বড় শহরের স্কুলগুলোকে হারিয়ে দিয়েছে। এমনকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা রাজধানীর নামি-দামি কিন্ডারগার্টেন বা ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোকে পরাস্ত করেছে।

একই সঙ্গে আমরা শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক-অভিভাবিকাদের মাঝে বিপুল আগ্রহ দেখেছি। প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে শিশু-কিশোরদের সৃজনশীলতাকে বিকশিত করার সুযোগ তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। আমরা যদি প্রথম জাতীয় শিশু-কিশোর প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতাকে আরো তৃণমূলে পৌঁছাতে পারি তবে সেটি ডিজিটাল যুগের বা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী আমাদের মানবসম্পদ গড়ে তুলতে সবচেয়ে বেশি সহায়ক হবে।

বাধ্যতামূলক প্রোগ্রামিং শেখা : এরই মাঝে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গত ২৫ অক্টোবর ২০১৮ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে সামনের শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাথমিক স্তরে প্রোগ্রামিংসহ তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়টি পাঠ্য করার জন্য অনুরোধ করে পত্র পাঠানো হয়েছে। ২০১৮ সালে জাতীয় বালিকা প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতাতেও শিশুদের স্ক্র্যাচ দিয়ে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করানো হয়। ২২ অক্টোবর ২০১৮ ডেফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এসব প্রতিযোগিতা আগামীতে অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যায়। বাংলাদেশের মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য এসব প্রতিযোগিতা মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে বলেই আমি মনে করি।

কেমন করে শুরু করবেন : এবার অর্থমন্ত্রী চতুর্থ শিল্প যুগের উপযোগী মানবসম্পদ তৈরির পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দেয়ার ফলে আমাদের দায়িত্ব আরো বেড়েছে। উচ্চশিক্ষায় ডিজিটাল প্রযুক্তিগুলো পাঠ্য করার আগে বস্তুত শিশুশিক্ষায় রূপান্তরটা ঘটাতে হবে। এ জন্য প্রাথমিক স্তরে প্রোগ্রামিং বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এই উদ্যোগে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আমরা যখন শিশুদের জন্য প্রোগ্রামিং শেখা বাধ্যতামূলক করার কথা ভাবছি তখন অভিভাবক-অভিভাবিকা, বাবা-মা, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিজেদের প্রস্তুতি নেয়া দরকার।

বাংলাদেশের একটি গৌরবের বিষয় আমাদের সন্তান বিজয় জব্বার স্ক্র্যাচ শেখার জন্য সহায়তা করতে প্রোগ্রামিং উইথ স্ক্র্যাচ নামে একটি বই লিখেছেন, বইটি তাম্রলিপি নামক একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান প্রকাশও করেছে। বইটির প্রথম প্রকাশিত সংস্করণটি ইংরেজিতে। তবে এর বাংলা সংস্করণও প্রস্তুত হয়েছে। সহসাই বইটির বাংলা সংস্করণও প্রকাশিত হবে। অন্যদিকে স্ক্র্যাচ শেখার জন্য প্রায় সব উপকরণ রয়েছে এমআইটির সাইটে। https://scratch.mit.edu/ ঠিকানায় গিয়ে নিজে যেভাবে যেখান থেকে শুরু করতে চান তাই করতে পারেন। সাইটটিতে শিশুদের জন্য যেমন শিক্ষা উপকরণ আছে তেমনি আছে বাবা-মা ও শিক্ষকদের জন্য যাবতীয় নির্দেশনা।

চার কোটির বেশি প্রকল্প দেখার সুযোগের বাইরে ভিডিও সহায়তাও পাওয়া যেতে পারে। বস্তুত এমআইটির ওয়েবসাইটটি খুবই সমৃদ্ধ একটি ওয়েবসাইট। সাইটটিতে গেলে অনুভব করবেন যে, শিশুদের প্রোগ্রামার হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিশ্বজুড়ে নানা আয়োজনের কেন্দ্র হচ্ছে এই সাইটটি। বিশ্বের কোটি কোটি শিশুর আগামী দিনের ঠিকানা এই সাইট। বিশ্বজুড়ে স্ক্র্যাচ দিবসও পালিত হয়। আমাদের জন্য সুখবর যে প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা, অর্থমন্ত্রী এবং সরকারের অন্য নীতিনির্ধারকরাও অনুভব করেন যে শিশুদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী দক্ষতা দিয়ে গড়ে তুলতে হবে। দিন শেষে আমরা অনুভব করলাম যে আমাদের যাত্রাটা সঠিক পথেই রয়েছে।

মোস্তাফা জব্বার : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ও কলাম লেখক।