বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ আজ ‘বিশ্ব আবহাওয়া দিবস’। জেনেভায় অবস্থিত বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে— ‘সমুদ্র, আমাদের জলবায়ু ও আবহাওয়া’। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ দিবসটি পালন করছে।
সমুদ্র উপকূলীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বৈরী আবহাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নিয়মিতই। দিবসটি উপলক্ষ্যে আজ আবহাওয়া অধিদপ্তর বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিশ্ব আবহাওয়া দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল প্রধান অতিথি থাকবেন। এ অধিদপ্তরের সদর দপ্তরসহ গুরুত্ব অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন শাখা অফিসসমূহ দিবসটি সীমিত আকারে পালনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
এ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে আবহাওয়া সংক্রান্ত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও প্রামাণ্য চিত্র স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেলা ৩টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা পরিষদ কর্তৃক একটি টেকনিক্যাল সেশনের আয়োজন করা হবে। এছাড়া ঢাকা, কক্সবাজার, খেপুপাড়া, রংপুর ও মৌলভীবাজারের অপারেশনাল ইউনিট ও রাডার স্টেশনসমূহ জনসাধারণের প্রদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।
একসময় মানুষের ধারণা ছিল- আবহাওয়া অধিদপ্তর যদি বলে বৃষ্টি হবে, সেদিন রোদ ওঠে। এ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করতেন অনেকে। তবে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তিগত অনেক পরিবর্তন এসেছে। সাধারণ মানুষও এখন পূর্বাভাসে বিশ্বাস রাখছেন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এখন তাদের প্রতিদিনের পূর্বাভাস অনেকটাই নির্ভুল হয়। শুধু তাই নয়, প্রযুক্তির কল্যাণে আগাম ১০ দিনের পূর্বাভাস দেওয়ার সক্ষমতাও রয়েছে তাদের। কিন্তু দুর্যোগ মোকাবিলায় মানুষকে সতর্ক করতে সারা পৃথিবীতে সংকেত ব্যবস্থার আধুনিকায়ন হলেও, দুর্যোগপ্রবণ বাংলাদেশে এখনও ব্রিটিশ আমলের সেই বন্দরভিত্তিক সংকেত ব্যবস্থাই চালু রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সনাতনী সতর্ক সংকেত মূলত নদী ও বন্দরকেন্দ্রিক। ঝড়ের কবল থেকে শুধু নৌকা কিংবা জাহাজকে নিরাপদে রাখতে এ ধরনের সংকেত ব্যবস্থা গড়ে ওঠে উপনিবেশিক আমলে। কিন্তু নদী থেকে দূরের এলাকার মানুষের জন্য আলাদা করে সংকেত ব্যবস্থা নেই।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আতিকুল হক বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের জন্য এখন যে ১০টি সতর্ক সংকেত ব্যবস্থা আছে, তা সহজভাবেই মানুষের কাছে উপস্থাপন করা যাচ্ছে। এই সংকেতগুলো দিয়ে কী বোঝানো হচ্ছে, মানুষের কাছে তা স্পষ্ট।
তিনি আরও বলেন, পুরোনো সংকেত ব্যবস্থা জনগণকে গভীরভাবে বোঝানোর চেষ্টা চলছে। এজন্য আর্লি ওয়ার্নিং নামে তিনটি প্রকল্প চলমান আছে।
তবে আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, পূর্বাভাস প্রচারে যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। ঘূর্ণিঝড় ও আকস্মিক বন্যা দেখা দেওয়ার আগেই সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। ফলে ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় মৃতের হার কমে গেছে।