ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরিযায়ী পাখি গেছো তুলিকা

শীতের পরিযায়ী। বৈশ্বিক বিস্তৃতি ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চল ছাড়াও পশ্চিম ও মধ্য এশিয়া এবং আফ্রিকা পর্যন্ত। চড়ুই আকৃতির পাখি, দেখতেও তদ্রুপ। প্রজাতির অন্যদের মতো এরা সারাক্ষণ ভূমিতে বিচরণ করে না, গাছ-গাছালিতে বেশি সময় কাটায়। খাবারের সন্ধানে মাটিতে নেমে পোকামাকড় খুঁজে বেড়ায়। বাসা বাঁধে সরাসরি মাটিতেই। গানের গলা চমৎকার। গাছের উঁচুতে বসে গান গায়। খানিকটা চঞ্চল প্রকৃতির। বেশিরভাগ একাকী বিচরণ করে।

প্রিয় পাঠক, ‘গেছো তুলিকা’ সম্পর্কে যৎসামান্য ধারণা দিলাম, এবার ভিন্ন প্রসঙ্গ, সোলাইমান খোকা ভাইয়ের কথা বলছি। যিনি একাধারে বেতার-টেলিভিশনের প্রবীণ অভিনেতা, (ইত্যাদির নিয়মিত অভিনয় শিল্পী) নাট্যকার এবং বাংলাদেশ বেতারের অতিথি প্রযোজক। তার আরেকটি পরিচয় হচ্ছে তিনি প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ। প্রকৃতিকে খুব ভালোবাসেন। লোভনীয় দৃশ্য দেখলে সঙ্গে সঙ্গে ক্যামেরা বন্দি করেন। সেসব ছবি থেকে খানিকটা অনুপ্রেরণা পাই। কিন্তু দুঃখের বিষয় খোকা ভাইয়ের ক্যামেরাটি ঈদের দিন গায়েব হয়ে যাওয়ায় সংরক্ষিত দুষ্প্রাপ্য ছবি দেখা থেকে বঞ্চিত হলাম। যেখানে ছিল কিছু পাখ-পাখালির ছবিও। তিনি ক্যামেরার চেয়ে ছবিগুলো উদ্ধারের ব্যাপারেই বেশি তৎপর লক্ষ করলাম। তার পুরনো ছবিগুলোর মধ্যে গেছো তুলিকার একটি ছবি দেখে আমি মুগ্ধ হলাম এবং বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করলাম।

পাখিটার বাংলা নাম: ‘গেছো তুলিকা’, ইংরেজি নাম: ‘ট্রি পিপিট’ (Tree Pipit), বৈজ্ঞানিক নাম: Anthus trivialis।
প্রজাতির দৈর্ঘ্য ১৪-১৬ সেন্টিমিটার। প্রসারিত ডানা ২৫-২৭ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষের চেহারা অভিন্ন। মাথা, ঘাড়, পিঠ ও লেজ বাদামি। ডানার গোড়ায় হলদেটে সাদা দাগের সঙ্গে কালচে বাদামি দাগ লক্ষ করা যায়। গলা হলদেটে সাদা। বুকে সাদার ওপর কালো ডোরা। পেট সাদা। ঠোঁট কালচে। পা ফ্যাকাসে।

প্রধান খাবার: পোকামাকড়, ঘাসবীজ ইত্যাদি। প্রজনন সময় মে-আগস্ট। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের রয়েছে। বাসা বাঁধে নিজ বাসভূমে। বাসা বানায় মাটিতে, সরু-নরম লতা বিছিয়ে। ডিমের সংখ্যা ৪-৮টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১২-১৩ দিন।
লেখক: আলম শাইন, কথাসাহিত্যিক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ। alamshine@gmail.com

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

পরিযায়ী পাখি গেছো তুলিকা

আপডেট টাইম : ০১:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুলাই ২০১৭

শীতের পরিযায়ী। বৈশ্বিক বিস্তৃতি ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চল ছাড়াও পশ্চিম ও মধ্য এশিয়া এবং আফ্রিকা পর্যন্ত। চড়ুই আকৃতির পাখি, দেখতেও তদ্রুপ। প্রজাতির অন্যদের মতো এরা সারাক্ষণ ভূমিতে বিচরণ করে না, গাছ-গাছালিতে বেশি সময় কাটায়। খাবারের সন্ধানে মাটিতে নেমে পোকামাকড় খুঁজে বেড়ায়। বাসা বাঁধে সরাসরি মাটিতেই। গানের গলা চমৎকার। গাছের উঁচুতে বসে গান গায়। খানিকটা চঞ্চল প্রকৃতির। বেশিরভাগ একাকী বিচরণ করে।

প্রিয় পাঠক, ‘গেছো তুলিকা’ সম্পর্কে যৎসামান্য ধারণা দিলাম, এবার ভিন্ন প্রসঙ্গ, সোলাইমান খোকা ভাইয়ের কথা বলছি। যিনি একাধারে বেতার-টেলিভিশনের প্রবীণ অভিনেতা, (ইত্যাদির নিয়মিত অভিনয় শিল্পী) নাট্যকার এবং বাংলাদেশ বেতারের অতিথি প্রযোজক। তার আরেকটি পরিচয় হচ্ছে তিনি প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ। প্রকৃতিকে খুব ভালোবাসেন। লোভনীয় দৃশ্য দেখলে সঙ্গে সঙ্গে ক্যামেরা বন্দি করেন। সেসব ছবি থেকে খানিকটা অনুপ্রেরণা পাই। কিন্তু দুঃখের বিষয় খোকা ভাইয়ের ক্যামেরাটি ঈদের দিন গায়েব হয়ে যাওয়ায় সংরক্ষিত দুষ্প্রাপ্য ছবি দেখা থেকে বঞ্চিত হলাম। যেখানে ছিল কিছু পাখ-পাখালির ছবিও। তিনি ক্যামেরার চেয়ে ছবিগুলো উদ্ধারের ব্যাপারেই বেশি তৎপর লক্ষ করলাম। তার পুরনো ছবিগুলোর মধ্যে গেছো তুলিকার একটি ছবি দেখে আমি মুগ্ধ হলাম এবং বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করলাম।

পাখিটার বাংলা নাম: ‘গেছো তুলিকা’, ইংরেজি নাম: ‘ট্রি পিপিট’ (Tree Pipit), বৈজ্ঞানিক নাম: Anthus trivialis।
প্রজাতির দৈর্ঘ্য ১৪-১৬ সেন্টিমিটার। প্রসারিত ডানা ২৫-২৭ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষের চেহারা অভিন্ন। মাথা, ঘাড়, পিঠ ও লেজ বাদামি। ডানার গোড়ায় হলদেটে সাদা দাগের সঙ্গে কালচে বাদামি দাগ লক্ষ করা যায়। গলা হলদেটে সাদা। বুকে সাদার ওপর কালো ডোরা। পেট সাদা। ঠোঁট কালচে। পা ফ্যাকাসে।

প্রধান খাবার: পোকামাকড়, ঘাসবীজ ইত্যাদি। প্রজনন সময় মে-আগস্ট। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের রয়েছে। বাসা বাঁধে নিজ বাসভূমে। বাসা বানায় মাটিতে, সরু-নরম লতা বিছিয়ে। ডিমের সংখ্যা ৪-৮টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১২-১৩ দিন।
লেখক: আলম শাইন, কথাসাহিত্যিক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ। alamshine@gmail.com