গত কয়েক বছর ধরে ড্রাগন ফল বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পর বিদেশি এই ফলটি এখন বাংলাদেশেই উৎপাদিত হচ্ছে। দেশীয় ভাবে উৎপাদন বাড়ার কারণে দামও কমে এসেছে এক সময়ের দামী এই ফলটির। কিন্তু গেলা কদিন ধরে ‘টনিক’ ব্যবহার বিতর্কে সেই বিদেশি ফলটির বিক্রিবাট্টা তলানিতে নেমেছে।
কিন্তু ড্রাগন চাষে কি আসলেই ‘টনিক’ ব্যবহৃত হচ্ছে? আর ব্যবহৃত হলে এসব ড্রাগন ফল খেলে স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভাবনা কতটা রয়েছে?
‘টনিক’ ব্যবহৃত হচ্ছে?
ড্রাগন চাষীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সবাই নয় তবে কিছু কিছু চাষী টনিক কিংবা হরমোন ব্যবহার করে ড্রাগন চাষ করেন।
এতে সাময়িক ভালো ফলন পাওয়া গেলেও গাছ টেকসই হয়না। তাই টনিক ছাড়াও চাষ করেন অনেক চাষী।
এরইমধ্যে এই ড্রাগন ফল চাষে যে টনিক ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলোর নমুনা সংগ্রহ করেছে কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট। এগুলোর রাসায়নিক পরীক্ষা করে দেখা হবে বলেও জানা গেছে। তবে তার আগে নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছেনা।
টনিক কী?
টনিকটা হচ্ছে এক ধরণের হরমোন। এটা গাছে ব্যবহার করলে তার বৃদ্ধি বেশি ও দ্রুত হয়। এই পদ্ধতির ব্যবহার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট উৎসাহিত করে না। এটা সরকারিভাবেও অনুমোদিতও না। তবে বাংলাদেশে অনকে সবজি চাষেও ব্যবহার হচ্ছে এই টনিক।
স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি আছে কি?
স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার বাইরে কৃত্রিমভাবে উৎপাদিত যেকোন পণ্যেরই স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিভিন্ন রাসায়নিক নিরাপদ উপায়ে ব্যবহারের মাত্রা ঠিক করে দেয় এবং তা মেনে চললে সমস্যা হ্ওয়ার কথা নয়। কিন্তু বাংলাদেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা মানা হয় না। সেক্ষেত্রে স্বাস্থঝুঁকি থাকতেই পারে।
তবে ড্রাগন চাষে এই হরমোন মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখার উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট।
তবে ধারণার ওপর ভিত্তি করে বানানো ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় হঠাৎ এই ফলের বাজারে ধস নামা খুবই দু:খজনক বলে মনে করছেন সংস্লিষ্টরা।
সঠিক তথ্য প্রচার না হওয়ায় যেসব চাষি সাধারণ পদ্ধতিতে ড্রাগন ফল উৎপাদন করেছেন, তারাও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
তাই টনিকযুক্ত ড্রাগন নিয়ে ধোঁয়াশা দ্রুত দূর করার আহ্বান ফল ব্যবসায়ীদের। তা না হলে সম্ভাবনাময় এ ফলটি বাজার হারাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিক্রেতাদের অনেকে।