ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এত পানি, তবুও হাহাকার

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃকলসিভর্তি পানি নিয়ে নৌকায় পাল তোলে শিশু সোহাগ। সঙ্গে সমবয়সী চাচাত ভাই নাজিম। পাশের নিমদীর চরের সালাম মৃধার বাড়ির টিউবওয়েল থেকে পানি তুলে ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় নদী পাড়ি দেয় ওরা। কোনোদিন টিউবওয়েলের পানি সংগ্রহ করতে না পারলে রান্না-বান্না ও ধোয়া-মোছাসহ খাওয়া-দাওয়ার কাজ সারতে হয় নদীর পানিতেই। তাই নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে পানির জন্য পানিতে ভাসে ওরা। পটুয়াখালীর বাউফলের বিচ্ছিন্ন চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চর আলগী এলাকায় ওদের বাড়ি। চর আলগীতে কোনো টিউবওয়েল নেই। নৌকায় প্রায় তিন কিলোমিটার তেঁতুলিয়ার শাখানদী ও খাল পাড়ি দিয়ে পাশের চর নিমদী থেকে টিউবওয়েলের পানি সংগ্রহ করতে হয় এই চরের বাসিন্দাদের। বর্ষায় নদী-খালে স্রোত বেশি থাকায় নিজাম মাতবরের ছেলে সোহাগ আর জসীমউদ্দিনের ছেলে নাজিমের মতো ঝুঁকি নিয়ে খাবার পানির জন্য ছুটতে হয় এ চরের অনেকেই। ছুটতে হয় ডিয়ারা কচুয়া, চর ওয়াডেল, চর মিয়াজান, চর রায়সাহেব, চর নিমদী, চর আলগী, চর শাহজালাল, চর ডিয়ারা, অমরখালী চর, বাতিরখাল, চর মমিনপুর ও চর হাদিসহ ১৪টি চরের মানুষদের। বর্ষায় নদী-খালগুলো পানিতে টইটম্বুর থাকলেও এসব চরে খাবার পানির সঙ্কট থাকে তীব্র। পূর্ণিমা-অমাবস্যার জোয়ার কিংবা সাগরে লঘুচাপ অথবা নিম্নচাপের প্রভাবে চর এলাকা স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে অধিক উচ্চতায় প্লাবিত হলে খাবার পানি সংগ্রহে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হয় চরবাসীরা। রাস্তাঘাট না থাকায় যোগাযোগ কিংবা বর্ষা মৌসুমে খাবার পানি সংগ্রহের মতো জরুরি সব প্রয়োজনে নৌকায় ভাসতে হয় চরবাসীদের। পাড়ি দিতে হয় আবহাওয়ার প্রতিকূলতাকেও উপেক্ষা করেই। ডিয়ারা কচুয়ার শাহজাহানের স্ত্রী শাহিদা বেগম, শাহআলম সরদারের স্ত্রী মমতাজ, জাকির বেপারির স্ত্রী নুরুন্নাহার ও আলমগীর মাঝির স্ত্রী লাকি আক্তারসহ অনেকেই কলসিভর্তি পানি সংগ্রহ করেন স্থানীয় অগভীর পুকুর ও ডোবা থেকে। নোনা পানি ওঠায় প্রায় তিন বছর আগে বন্ধ হয়েছে ওই এলাকার ইসমাইল বেপারির বাড়ির সামনের টিউবওয়েলটি। তাই পাশের একটি ডোবার পানিই নিয়মিত ব্যবহার করতে হয় তাদের। খালের পানি ব্যবহারের কথা জানান ডিয়ারা কচুয়ার কাঠের সাঁকো এলাকার হামেদ সরদারের স্ত্রী মর্জিনা, বজলু নলীর স্ত্রী রাহিমা, বজলু রাড়ীর স্ত্রী বেগমজান, আলামিন নলীর স্ত্রী রাবেয়া ও জামাল বেপারির স্ত্রী ফজিনুরও। এই এলাকার অনেকে বিশুদ্ধ করতে কলসিভর্তি তুলে আনা খালের পানিতে ব্যবহার করেন ফিটকিরি। প্রায় সময়ই খারাপ থাকে চর মিয়াজন স্কুলের টিউবওয়েলটি। ওই এলাকার বাসিন্দা শহরভানু, নুরভানু মোমলা বেগম ও ফজিলা বেগম জানান, হেডের নাটবল্টু-ওয়াশার খারাপ থাকায় পানি তুলতে টিউবওয়েলের হাতল চাপাচাপির মতো যুদ্ধে নামতে হয় নিয়মিত। বাটি বা মগভর্তি পানি ঢেলে সজোরে দ্রুত হাতল চাপাচাপি করে পানি তুলতে হয় টিউবওয়েলের। পানি দিয়ে পানি তুলতে হয় তাদের টিউবওয়েলে। চন্দ্রদ্বীপের চর ওয়াডেলের বাতিরখাল এলাকার ছোবহান চৌকিদার বাড়ির টিউবওয়েল, চর ওয়াডেল প্রাইমারি স্কুল, চর ডিয়ারা কচুয়া প্রাইমারি স্কুল, চর ওয়াডেল হাই স্কুল, অমরখালী চর প্রাইমারি স্কুল, চর ওয়াডেল আবাসন প্রকল্পের টিউবওয়েলসহ অকেজো হয়ে পড়ে আছে এসব চরের অর্ধশতাধিক টিউবওয়েল। এর আগে তেঁতুলিয়ার ভাঙনে দক্ষিণ-চর ওয়াডেল থেকে বিলীন হয়েছে একটি। বোরিংয়ের পরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও স্বার্থান্বেষী মহলের নিম্নমানের ফিল্টার এবং অল্প পাইপ ব্যবহার করে সিডর-পরবর্তী টিউবওয়েলগুলো স্থাপিত করায় অকেজো হয়েছে অধিকাংশ। নিরাপদ পানির অভাবে এসব দুর্গম চরে শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের ডায়রিয়া ও আমাশয়ের মতো বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ লেগেই থাকে। অগভীর পুকুর, কুয়া ও জোয়ারের পানিতে অভ্যস্ত চর রায়সাহেব এলাকার ইউপি সদস্য ছালাম শরীফের স্ত্রী রীনা বেগম, বাবুল রাড়ী, বাচ্চু গাজী, বাবুল মৃধা, ফোরকান মুন্সী, জাফর মুন্সী ও ইউনুস বেপারিসহ ২০ থেকে ২৫টি পরিবার। একই অবস্থা অমরখালীর প্রাইমারি স্কুল এলাকার বাসিন্দাদেরও। ওই এলাকার রেনু বেগম, সালমা বেগম ও ফারুক দোকানদার জানান, বর্ষা মৌসুমে খাবার পানির সঙ্কট তীব্র হয় সেখানে। দীর্ঘদিনও কাটছে না চর বানীর খাবার পানির সঙ্কট। এসব চরে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশনের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে ছয় থেকে সাত বছর আগেই। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের আদমশুমারিতে বিচ্ছিন্ন ১০টি চরে ১০ হাজার ৩৬১ জন মানুষের বসবাসের তথ্য পাওয়া গেলেও বর্তমানে চরে লোকসংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সরকারি, এনজিওসহ ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রায় দুইশ’ টিউবওয়েলের মধ্যে স্থায়ীভাবে বন্ধ রয়েছে ১৮টি। তবে স্যানিটেশন নিয়ে কাজ করা স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, ১৮টি বিচ্ছিন্ন চরে লক্ষাধিক মানুষের জন্য টিউবওয়েল আছে মাত্র ৫৫ থেকে ৬০টি। জোয়ারের পানি, কুয়ার পানি, বৃষ্টির পানিই চরবাসীর বেঁচে থাকার উপায়। এছাড়া ছোট-বড় মিলে দুই শতাধিক নদী ও খাল দিনে দিনে ভরাট আর তেঁতুলিয়া ও লোহালিয়া নদীর বিভিন্ন স্থানে জেগে ওঠা চরের কারণেও বিভিন্ন চরে পানির সঙ্কট তীব্র হচ্ছে। তবে খাল কাটা ও সংস্কার, নদী ড্রেজিংয়ের নামে বরাদ্দের সঠিক ব্যবহার না হওয়া, অপরিকল্পিত স্লুইসগেট নির্মাণ ও যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত না হওয়া আর প্রশাসনের উদাসীন দৃষ্টিভঙ্গির কারণেও চরে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট হচ্ছে জানান সচেতন মহল। চন্দ্রদ্বীপ ইউপি সদস্য ছালাম শরীফ জানান, চারদিকে নদীবেষ্টিত নবগঠিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের মানুষের বিশুদ্ধ পানির কষ্ট লাঘবে একজন জনপ্রতিনিধি হয়েও কিছুই করতে পারছেন না। অবহেলিত চরবাসীর জন্য অতিরিক্ত টিউবওয়েল বরাদ্দ থাকা উচিত। চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক মোল্লা জানান, ৫৫ বর্গমাইলের বিচ্ছিন্ন ১০টি চর নিয়ে গঠিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে লোকসংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। এখানে মোট ৩১টি টিউবওয়েলের মধ্যে সাতটি অকেজো। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

এত পানি, তবুও হাহাকার

আপডেট টাইম : ০৬:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ জুলাই ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃকলসিভর্তি পানি নিয়ে নৌকায় পাল তোলে শিশু সোহাগ। সঙ্গে সমবয়সী চাচাত ভাই নাজিম। পাশের নিমদীর চরের সালাম মৃধার বাড়ির টিউবওয়েল থেকে পানি তুলে ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় নদী পাড়ি দেয় ওরা। কোনোদিন টিউবওয়েলের পানি সংগ্রহ করতে না পারলে রান্না-বান্না ও ধোয়া-মোছাসহ খাওয়া-দাওয়ার কাজ সারতে হয় নদীর পানিতেই। তাই নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে পানির জন্য পানিতে ভাসে ওরা। পটুয়াখালীর বাউফলের বিচ্ছিন্ন চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চর আলগী এলাকায় ওদের বাড়ি। চর আলগীতে কোনো টিউবওয়েল নেই। নৌকায় প্রায় তিন কিলোমিটার তেঁতুলিয়ার শাখানদী ও খাল পাড়ি দিয়ে পাশের চর নিমদী থেকে টিউবওয়েলের পানি সংগ্রহ করতে হয় এই চরের বাসিন্দাদের। বর্ষায় নদী-খালে স্রোত বেশি থাকায় নিজাম মাতবরের ছেলে সোহাগ আর জসীমউদ্দিনের ছেলে নাজিমের মতো ঝুঁকি নিয়ে খাবার পানির জন্য ছুটতে হয় এ চরের অনেকেই। ছুটতে হয় ডিয়ারা কচুয়া, চর ওয়াডেল, চর মিয়াজান, চর রায়সাহেব, চর নিমদী, চর আলগী, চর শাহজালাল, চর ডিয়ারা, অমরখালী চর, বাতিরখাল, চর মমিনপুর ও চর হাদিসহ ১৪টি চরের মানুষদের। বর্ষায় নদী-খালগুলো পানিতে টইটম্বুর থাকলেও এসব চরে খাবার পানির সঙ্কট থাকে তীব্র। পূর্ণিমা-অমাবস্যার জোয়ার কিংবা সাগরে লঘুচাপ অথবা নিম্নচাপের প্রভাবে চর এলাকা স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে অধিক উচ্চতায় প্লাবিত হলে খাবার পানি সংগ্রহে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হয় চরবাসীরা। রাস্তাঘাট না থাকায় যোগাযোগ কিংবা বর্ষা মৌসুমে খাবার পানি সংগ্রহের মতো জরুরি সব প্রয়োজনে নৌকায় ভাসতে হয় চরবাসীদের। পাড়ি দিতে হয় আবহাওয়ার প্রতিকূলতাকেও উপেক্ষা করেই। ডিয়ারা কচুয়ার শাহজাহানের স্ত্রী শাহিদা বেগম, শাহআলম সরদারের স্ত্রী মমতাজ, জাকির বেপারির স্ত্রী নুরুন্নাহার ও আলমগীর মাঝির স্ত্রী লাকি আক্তারসহ অনেকেই কলসিভর্তি পানি সংগ্রহ করেন স্থানীয় অগভীর পুকুর ও ডোবা থেকে। নোনা পানি ওঠায় প্রায় তিন বছর আগে বন্ধ হয়েছে ওই এলাকার ইসমাইল বেপারির বাড়ির সামনের টিউবওয়েলটি। তাই পাশের একটি ডোবার পানিই নিয়মিত ব্যবহার করতে হয় তাদের। খালের পানি ব্যবহারের কথা জানান ডিয়ারা কচুয়ার কাঠের সাঁকো এলাকার হামেদ সরদারের স্ত্রী মর্জিনা, বজলু নলীর স্ত্রী রাহিমা, বজলু রাড়ীর স্ত্রী বেগমজান, আলামিন নলীর স্ত্রী রাবেয়া ও জামাল বেপারির স্ত্রী ফজিনুরও। এই এলাকার অনেকে বিশুদ্ধ করতে কলসিভর্তি তুলে আনা খালের পানিতে ব্যবহার করেন ফিটকিরি। প্রায় সময়ই খারাপ থাকে চর মিয়াজন স্কুলের টিউবওয়েলটি। ওই এলাকার বাসিন্দা শহরভানু, নুরভানু মোমলা বেগম ও ফজিলা বেগম জানান, হেডের নাটবল্টু-ওয়াশার খারাপ থাকায় পানি তুলতে টিউবওয়েলের হাতল চাপাচাপির মতো যুদ্ধে নামতে হয় নিয়মিত। বাটি বা মগভর্তি পানি ঢেলে সজোরে দ্রুত হাতল চাপাচাপি করে পানি তুলতে হয় টিউবওয়েলের। পানি দিয়ে পানি তুলতে হয় তাদের টিউবওয়েলে। চন্দ্রদ্বীপের চর ওয়াডেলের বাতিরখাল এলাকার ছোবহান চৌকিদার বাড়ির টিউবওয়েল, চর ওয়াডেল প্রাইমারি স্কুল, চর ডিয়ারা কচুয়া প্রাইমারি স্কুল, চর ওয়াডেল হাই স্কুল, অমরখালী চর প্রাইমারি স্কুল, চর ওয়াডেল আবাসন প্রকল্পের টিউবওয়েলসহ অকেজো হয়ে পড়ে আছে এসব চরের অর্ধশতাধিক টিউবওয়েল। এর আগে তেঁতুলিয়ার ভাঙনে দক্ষিণ-চর ওয়াডেল থেকে বিলীন হয়েছে একটি। বোরিংয়ের পরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও স্বার্থান্বেষী মহলের নিম্নমানের ফিল্টার এবং অল্প পাইপ ব্যবহার করে সিডর-পরবর্তী টিউবওয়েলগুলো স্থাপিত করায় অকেজো হয়েছে অধিকাংশ। নিরাপদ পানির অভাবে এসব দুর্গম চরে শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের ডায়রিয়া ও আমাশয়ের মতো বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ লেগেই থাকে। অগভীর পুকুর, কুয়া ও জোয়ারের পানিতে অভ্যস্ত চর রায়সাহেব এলাকার ইউপি সদস্য ছালাম শরীফের স্ত্রী রীনা বেগম, বাবুল রাড়ী, বাচ্চু গাজী, বাবুল মৃধা, ফোরকান মুন্সী, জাফর মুন্সী ও ইউনুস বেপারিসহ ২০ থেকে ২৫টি পরিবার। একই অবস্থা অমরখালীর প্রাইমারি স্কুল এলাকার বাসিন্দাদেরও। ওই এলাকার রেনু বেগম, সালমা বেগম ও ফারুক দোকানদার জানান, বর্ষা মৌসুমে খাবার পানির সঙ্কট তীব্র হয় সেখানে। দীর্ঘদিনও কাটছে না চর বানীর খাবার পানির সঙ্কট। এসব চরে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশনের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে ছয় থেকে সাত বছর আগেই। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের আদমশুমারিতে বিচ্ছিন্ন ১০টি চরে ১০ হাজার ৩৬১ জন মানুষের বসবাসের তথ্য পাওয়া গেলেও বর্তমানে চরে লোকসংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সরকারি, এনজিওসহ ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রায় দুইশ’ টিউবওয়েলের মধ্যে স্থায়ীভাবে বন্ধ রয়েছে ১৮টি। তবে স্যানিটেশন নিয়ে কাজ করা স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, ১৮টি বিচ্ছিন্ন চরে লক্ষাধিক মানুষের জন্য টিউবওয়েল আছে মাত্র ৫৫ থেকে ৬০টি। জোয়ারের পানি, কুয়ার পানি, বৃষ্টির পানিই চরবাসীর বেঁচে থাকার উপায়। এছাড়া ছোট-বড় মিলে দুই শতাধিক নদী ও খাল দিনে দিনে ভরাট আর তেঁতুলিয়া ও লোহালিয়া নদীর বিভিন্ন স্থানে জেগে ওঠা চরের কারণেও বিভিন্ন চরে পানির সঙ্কট তীব্র হচ্ছে। তবে খাল কাটা ও সংস্কার, নদী ড্রেজিংয়ের নামে বরাদ্দের সঠিক ব্যবহার না হওয়া, অপরিকল্পিত স্লুইসগেট নির্মাণ ও যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত না হওয়া আর প্রশাসনের উদাসীন দৃষ্টিভঙ্গির কারণেও চরে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট হচ্ছে জানান সচেতন মহল। চন্দ্রদ্বীপ ইউপি সদস্য ছালাম শরীফ জানান, চারদিকে নদীবেষ্টিত নবগঠিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের মানুষের বিশুদ্ধ পানির কষ্ট লাঘবে একজন জনপ্রতিনিধি হয়েও কিছুই করতে পারছেন না। অবহেলিত চরবাসীর জন্য অতিরিক্ত টিউবওয়েল বরাদ্দ থাকা উচিত। চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক মোল্লা জানান, ৫৫ বর্গমাইলের বিচ্ছিন্ন ১০টি চর নিয়ে গঠিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে লোকসংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। এখানে মোট ৩১টি টিউবওয়েলের মধ্যে সাতটি অকেজো। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত।