ঢাকা , শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শখের বসে ফিঞ্চ পাখি পালন করে স্বাবলম্বী

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ  খাঁচায় রং-বেরঙের আর বিচিত্র আচরণের পাখি মানুষের বিনোদনের খোরাক জোগায়। পাশাপাশি পাখি পালনই অনেকের আয়ের উৎস। এখন নানা রকম প্রজাতির পাখির উৎপাদন করেছে এদেশের ব্রিডাররা। দ্রুত এই সেক্টরে উন্নতি হয়েছে। খাঁচার জনপ্রিয় পাখি হলো- বাজরিগার, লাভ বার্ড, ফিঞ্চ, ককাটেইল, ডোভ, গ্রে-গ্রিন সিনামন টারকুইজিন, রেড হেড অপলাইন টারকুইজিন, ইলেক্টাস, ম্যাকাউ, মুলাক্কান কাঁকাতুয়া, কাইফ প্যারট, প্রিন্সেস অব ওয়েলস, চ্যাটারি লরি, লুটিনো রিন নেক প্যারট, আলবিনো রিন, রেডকালার লরি, সান কৌনর, রেড লরি, ভায়োলেট লেক লরি ইত্যাদি।

এমন অনেক নতুন প্রজাতির ফিঞ্চ পাখি উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছেন ফিঞ্চ সোসাইটি অব বাংলাদেশের হেড অব অ্যাডমিন মানিকগঞ্জের আবদুল হান্নান দিনার (ইউবি দিনার)।
তিনি জানান, বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশ ফিঞ্চ পাখি উৎপাদনের জন্য খুবই স্থান। শুধু দরকার সরকারি সহায়তা, এক্সেসরিজের দাম কমানো, পাখির খাবারের দাম নিয়ন্ত্রণ করা। কাঁটাবনসহ বিভাগীয় শহরে পাখির বাজার গড়ে উঠেছে। কোথাও কোথাও পাখির হাট বসে। পাড়া-মহল্লায় পাখির দোকান চোখে পড়ে। লক্ষাধিক মানুষ পাখি পালনের সঙ্গে জড়িত। এরা বিভিন্ন বয়সের। ছাত্রছাত্রীরা আছেন। অবসরপ্রাপ্তরাও বাদ যান না। গৃহবধূরা ঘর সামলান। আবার পাখিও পালন করেন। এছাড়া অনলাইনেও চলছে বেচাকেনা। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উন্নত মিউটেশনের পাখি বিদেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব বলে জানিয়েছেন ফিঞ্চ সোসাইটি অব বাংলাদেশের হেড অব অ্যাডমিন মানিকগঞ্জের আবদুল হান্নান দিনার (ইউবি দিনার)।

আবদুল হান্নান দিনার (ইউবি দিনার) আরো জানান, বাবা আবদুর রউফ কবুতর পালন করতেন। তা থেকেই ছোটবেলা থেকেই তারও শখ হয় তিনি নতুন এক প্রকার পাখি পালন করবেন। সেই সখ থেকে দিনার মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ থেকে মাস্টার্স শেষ করে ২০১২ সাল থেকে সখের বসে পাখি পালন শুরু করেন। বর্তমানে তার কাছে প্রায় শতাধিক প্রকারের ফিঞ্চ পাখি রয়েছে। মাসে প্রায় ১ থেকে দেড় লাখ টাকার পাখি দেশের পাখি দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেন। মাসে তার খরচ হয় ৩০ থেকে চল্লিশ হাজার টাকা। এতে তার আয় হচ্ছে মাসে প্রায় লক্ষাধিক টাকা। একেকটি ফিঞ্চ পাখির দাম ৪ থেকে ৪০ হাজার টাকা দাম। প্রকৃতিতে ৩-৪ বছর বাঁচলেও খাঁচায় এরা বাঁচে ৭-১০ বছর। চড়–ইয়ের মতো দেখতে ছোট প্রজাতির এ পাখিটি নানা রং এর হয়। তার মতে, বাসার এক কোণে, সিঁড়িঘরে, বাড়ির ছাদে অথবা বারান্দায় ছোট্ট পরিসরে অনায়াসেই এটি পালন করা যায়। উন্নত মিউটেশনের পাখি পালনের মাধ্যমে ভালো দামও পাওয়ার কথা জানালেন তিনি। পাখির খাবারসহ নানা চাহিদার তাগিদে রাজধানীর কাপ্তান বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে পাখির মার্কেট। অনলাইনের পাশাপাশি এসব মার্কেটেও চলে বেচাকেনা। পড়াশোনা বা চাকরির পাশাপাশি পাখি পালনের মাধ্যমে যে কেউ স্বনির্ভর হতে চাইলে তাকে তথ্যগত সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে ফিঞ্চ সোসাইটি অব বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, পাখির প্রতি ভালোবাসা খারাপ নেশা থেকে দূরে রাখতে পারে তরুণ প্রজন্মকে। তাই একটি পাখি কিনে দিন আপনার সন্তানকে। হয়তো সেখান থেকেই শুরু হবে তার ভবিষ্যৎ আয়ের পথচলা। সঙ্গে পাবে মানবিক শিক্ষাও।

এদিকে, রফতানি বাণিজ্যে বৈচিত্র্য আনতে খাঁচার পাখির প্রসারে সরকারি পদক্ষেপ কাম্য। বিশেষ করে ডিএনএ ল্যাব স্থাপন, এক্সেসরিজের দাম কমানো, খাবারের বাজারে সিন্ডিকেট বাণিজ্য বন্ধ করা এবং রফতানি প্রক্রিয়া সহজতর করলে পাখি অন্যতম প্রধান রফতানি পণ্যে পরিণত হবে বলে পাখি পালনের সঙ্গে জড়িতরা মনে করেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

শখের বসে ফিঞ্চ পাখি পালন করে স্বাবলম্বী

আপডেট টাইম : ০৯:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুলাই ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ  খাঁচায় রং-বেরঙের আর বিচিত্র আচরণের পাখি মানুষের বিনোদনের খোরাক জোগায়। পাশাপাশি পাখি পালনই অনেকের আয়ের উৎস। এখন নানা রকম প্রজাতির পাখির উৎপাদন করেছে এদেশের ব্রিডাররা। দ্রুত এই সেক্টরে উন্নতি হয়েছে। খাঁচার জনপ্রিয় পাখি হলো- বাজরিগার, লাভ বার্ড, ফিঞ্চ, ককাটেইল, ডোভ, গ্রে-গ্রিন সিনামন টারকুইজিন, রেড হেড অপলাইন টারকুইজিন, ইলেক্টাস, ম্যাকাউ, মুলাক্কান কাঁকাতুয়া, কাইফ প্যারট, প্রিন্সেস অব ওয়েলস, চ্যাটারি লরি, লুটিনো রিন নেক প্যারট, আলবিনো রিন, রেডকালার লরি, সান কৌনর, রেড লরি, ভায়োলেট লেক লরি ইত্যাদি।

এমন অনেক নতুন প্রজাতির ফিঞ্চ পাখি উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছেন ফিঞ্চ সোসাইটি অব বাংলাদেশের হেড অব অ্যাডমিন মানিকগঞ্জের আবদুল হান্নান দিনার (ইউবি দিনার)।
তিনি জানান, বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশ ফিঞ্চ পাখি উৎপাদনের জন্য খুবই স্থান। শুধু দরকার সরকারি সহায়তা, এক্সেসরিজের দাম কমানো, পাখির খাবারের দাম নিয়ন্ত্রণ করা। কাঁটাবনসহ বিভাগীয় শহরে পাখির বাজার গড়ে উঠেছে। কোথাও কোথাও পাখির হাট বসে। পাড়া-মহল্লায় পাখির দোকান চোখে পড়ে। লক্ষাধিক মানুষ পাখি পালনের সঙ্গে জড়িত। এরা বিভিন্ন বয়সের। ছাত্রছাত্রীরা আছেন। অবসরপ্রাপ্তরাও বাদ যান না। গৃহবধূরা ঘর সামলান। আবার পাখিও পালন করেন। এছাড়া অনলাইনেও চলছে বেচাকেনা। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উন্নত মিউটেশনের পাখি বিদেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব বলে জানিয়েছেন ফিঞ্চ সোসাইটি অব বাংলাদেশের হেড অব অ্যাডমিন মানিকগঞ্জের আবদুল হান্নান দিনার (ইউবি দিনার)।

আবদুল হান্নান দিনার (ইউবি দিনার) আরো জানান, বাবা আবদুর রউফ কবুতর পালন করতেন। তা থেকেই ছোটবেলা থেকেই তারও শখ হয় তিনি নতুন এক প্রকার পাখি পালন করবেন। সেই সখ থেকে দিনার মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ থেকে মাস্টার্স শেষ করে ২০১২ সাল থেকে সখের বসে পাখি পালন শুরু করেন। বর্তমানে তার কাছে প্রায় শতাধিক প্রকারের ফিঞ্চ পাখি রয়েছে। মাসে প্রায় ১ থেকে দেড় লাখ টাকার পাখি দেশের পাখি দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেন। মাসে তার খরচ হয় ৩০ থেকে চল্লিশ হাজার টাকা। এতে তার আয় হচ্ছে মাসে প্রায় লক্ষাধিক টাকা। একেকটি ফিঞ্চ পাখির দাম ৪ থেকে ৪০ হাজার টাকা দাম। প্রকৃতিতে ৩-৪ বছর বাঁচলেও খাঁচায় এরা বাঁচে ৭-১০ বছর। চড়–ইয়ের মতো দেখতে ছোট প্রজাতির এ পাখিটি নানা রং এর হয়। তার মতে, বাসার এক কোণে, সিঁড়িঘরে, বাড়ির ছাদে অথবা বারান্দায় ছোট্ট পরিসরে অনায়াসেই এটি পালন করা যায়। উন্নত মিউটেশনের পাখি পালনের মাধ্যমে ভালো দামও পাওয়ার কথা জানালেন তিনি। পাখির খাবারসহ নানা চাহিদার তাগিদে রাজধানীর কাপ্তান বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে পাখির মার্কেট। অনলাইনের পাশাপাশি এসব মার্কেটেও চলে বেচাকেনা। পড়াশোনা বা চাকরির পাশাপাশি পাখি পালনের মাধ্যমে যে কেউ স্বনির্ভর হতে চাইলে তাকে তথ্যগত সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে ফিঞ্চ সোসাইটি অব বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, পাখির প্রতি ভালোবাসা খারাপ নেশা থেকে দূরে রাখতে পারে তরুণ প্রজন্মকে। তাই একটি পাখি কিনে দিন আপনার সন্তানকে। হয়তো সেখান থেকেই শুরু হবে তার ভবিষ্যৎ আয়ের পথচলা। সঙ্গে পাবে মানবিক শিক্ষাও।

এদিকে, রফতানি বাণিজ্যে বৈচিত্র্য আনতে খাঁচার পাখির প্রসারে সরকারি পদক্ষেপ কাম্য। বিশেষ করে ডিএনএ ল্যাব স্থাপন, এক্সেসরিজের দাম কমানো, খাবারের বাজারে সিন্ডিকেট বাণিজ্য বন্ধ করা এবং রফতানি প্রক্রিয়া সহজতর করলে পাখি অন্যতম প্রধান রফতানি পণ্যে পরিণত হবে বলে পাখি পালনের সঙ্গে জড়িতরা মনে করেন।