ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বর্ষায় লাউয়ে চমক

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বর্ষায় শীতকালীন সবজি লাউ (কদু) চাষ করে চমক দেখিয়েছেন শেরপুরের নকলা উপজেলার অনেক কৃষক। ব্রহ্মপুত্র নদসহ বিভিন্ন নদী, খাল, বিলের তীরবর্তী এলাকায় শীতকালীন এ সবজি ফলিয়ে অধিক লাভবান হচ্ছেন তারা। তাদের উৎপাদিত লাউ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী জেলা ও বিভাগীয় শহরে পাইকারিভাবে বিক্রি হচ্ছে। অনেক পাইকার নিজে এসে সরাসরি ক্ষেত থেকে লাউ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলার উত্তর চরবসন্তির আজিজুল, মহাজ্জল, সিরাজুল, চাঁন মিয়া ও সুহেলের মতো অনেক চাষির ভাগ্য খুলে গেছে লাউ চাষে। তাদের সফলতায় অন্য এলাকার কৃষকরাও লাউ চাষে ব্যাপক আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
উত্তর চরবসন্তি গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম গত বছর ৫ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে শীতলাউ চাষ করে লাভবান হয়েছিলেন। এ বছর বর্ষা মৌসুমে তিনি ৩৫ শতাংশ জমিতে লাউ চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। ২ বছর আগে বর্ষাকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে শীতের সবজি লাউ বিক্রি করতে দেখে সিরাজ ওই জাতের লাউ চাষে আগ্রহী হন। তার আগ্রহের সফলতার অংশ হিসেবে তিনি বাণিজ্যিকভাবে লাউ চাষ শুরু করেন। বাড়ির আঙ্গিনায় নার্সারিতে বীজ বপন করে চারা উৎপাদন করেছেন। ১৫ থেকে ১৬ দিনের চারা অন্যত্র তৈরি করা ৩৫ শতাংশ জমিতে মাচা পদ্ধতিতে চাষ করেছেন। বৈরী আবহাওয়া থাকা সত্ত্বেও দেড় মাসের মাথায় প্রতিটি গাছ ফুলেফলে ভরে ওঠে। তার পরবর্তী দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিটি লাউ দৈর্ঘ্যে দেড় থেকে আড়াই ফুট এবং ওজন ৩ কেজি থেকে ৫ কেজি হয়। অসময়ের এ সবজিতে ভালো দাম পাচ্ছেন সিরাজসহ অন্য কৃষকরা। লাউ চাষি মহাজ্জল জানান, প্রতিটি লাউ পাইকারি ২৫ থেকে ৪০ টাকা এবং খুচরা প্রতিটি ৪০ থেকে ৬০ টাকা করে বিক্রি করছেন তারা। স্থানীয় বাজারে নিজেরা বসে খুচরা বিক্রি করলেও  অধিকাংশ লাউ পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয়। পাইকাররা নিজে লাউ তুলে নিয়ে যান, কৃষকদের শুধু টাকা দিয়ে যান। ফলে চাষিদের কোনো জামেলা পোহাতে হয় না। অন্য এক চাষি সিরাজুল ইসলাম জানান, তার ৩০ শতাংশ জমির লাউ ক্ষেতে সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। দেড় মাস ধরে লাউ বিক্রি করছেন, তাতে এ পর্যন্ত ৪৮ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আরও দুই থেকে আড়াই মাসে অন্তত ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন। সে হিসাবে ৩০ শতাংশ জমিতে ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে শীতলাউ ফলিয়ে ৪ থেকে ৫ মাসে লাখোপতি হওয়া সম্ভব।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

বর্ষায় লাউয়ে চমক

আপডেট টাইম : ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অগাস্ট ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বর্ষায় শীতকালীন সবজি লাউ (কদু) চাষ করে চমক দেখিয়েছেন শেরপুরের নকলা উপজেলার অনেক কৃষক। ব্রহ্মপুত্র নদসহ বিভিন্ন নদী, খাল, বিলের তীরবর্তী এলাকায় শীতকালীন এ সবজি ফলিয়ে অধিক লাভবান হচ্ছেন তারা। তাদের উৎপাদিত লাউ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী জেলা ও বিভাগীয় শহরে পাইকারিভাবে বিক্রি হচ্ছে। অনেক পাইকার নিজে এসে সরাসরি ক্ষেত থেকে লাউ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলার উত্তর চরবসন্তির আজিজুল, মহাজ্জল, সিরাজুল, চাঁন মিয়া ও সুহেলের মতো অনেক চাষির ভাগ্য খুলে গেছে লাউ চাষে। তাদের সফলতায় অন্য এলাকার কৃষকরাও লাউ চাষে ব্যাপক আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
উত্তর চরবসন্তি গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম গত বছর ৫ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে শীতলাউ চাষ করে লাভবান হয়েছিলেন। এ বছর বর্ষা মৌসুমে তিনি ৩৫ শতাংশ জমিতে লাউ চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। ২ বছর আগে বর্ষাকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে শীতের সবজি লাউ বিক্রি করতে দেখে সিরাজ ওই জাতের লাউ চাষে আগ্রহী হন। তার আগ্রহের সফলতার অংশ হিসেবে তিনি বাণিজ্যিকভাবে লাউ চাষ শুরু করেন। বাড়ির আঙ্গিনায় নার্সারিতে বীজ বপন করে চারা উৎপাদন করেছেন। ১৫ থেকে ১৬ দিনের চারা অন্যত্র তৈরি করা ৩৫ শতাংশ জমিতে মাচা পদ্ধতিতে চাষ করেছেন। বৈরী আবহাওয়া থাকা সত্ত্বেও দেড় মাসের মাথায় প্রতিটি গাছ ফুলেফলে ভরে ওঠে। তার পরবর্তী দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিটি লাউ দৈর্ঘ্যে দেড় থেকে আড়াই ফুট এবং ওজন ৩ কেজি থেকে ৫ কেজি হয়। অসময়ের এ সবজিতে ভালো দাম পাচ্ছেন সিরাজসহ অন্য কৃষকরা। লাউ চাষি মহাজ্জল জানান, প্রতিটি লাউ পাইকারি ২৫ থেকে ৪০ টাকা এবং খুচরা প্রতিটি ৪০ থেকে ৬০ টাকা করে বিক্রি করছেন তারা। স্থানীয় বাজারে নিজেরা বসে খুচরা বিক্রি করলেও  অধিকাংশ লাউ পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয়। পাইকাররা নিজে লাউ তুলে নিয়ে যান, কৃষকদের শুধু টাকা দিয়ে যান। ফলে চাষিদের কোনো জামেলা পোহাতে হয় না। অন্য এক চাষি সিরাজুল ইসলাম জানান, তার ৩০ শতাংশ জমির লাউ ক্ষেতে সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। দেড় মাস ধরে লাউ বিক্রি করছেন, তাতে এ পর্যন্ত ৪৮ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আরও দুই থেকে আড়াই মাসে অন্তত ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন। সে হিসাবে ৩০ শতাংশ জমিতে ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে শীতলাউ ফলিয়ে ৪ থেকে ৫ মাসে লাখোপতি হওয়া সম্ভব।