গেল সপ্তাহে জম্মু ও কাশ্মিরের সেনাঘাঁটিতে রক্তাক্ত হামলার পর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার পাশাপাশি হয়রাণি বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যাপকভাবে। এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করে কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ব্যাপক সংখ্যক সেনা মোতায়েন করেছে ভারত। ভারতের অভিযোগ পাকিস্তান অস্বীকার করলেও তলে তলে পাকিস্তান যে কোনো হামলা মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।
এছাড়া পাকিস্তান তাদের সামরিক বাহিনীকেও সতর্কাবস্থায় রেখেছে। সীমান্তজুড়ে থেমে থেমে গুলির শব্দ আর বিকট শব্দ করে জঙ্গি বিমানের উড়ে যাওয়াসহ গোটা বিষয়টি নিয়ে সীমান্তে বসবাসকারী নাগরিকদের জীবন এখন হুমকির মুখে। সীমান্তের এই যুদ্ধাবস্থা ওখানকার মানুষের জীবনে কী প্রভাব ফেলছে তা নিয়ে বিবিসি কথা বলেছে সীমান্তে বসবাসকারী আবিদা নামে এক তরুণীর সঙ্গে।
স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী আবিদা বলেন, ‘আমি কাশ্মিরের উরির একটি গ্রামে বাস করি। আমাদের গ্রামের নাম বালকোট। এখান থেকে পাকিস্তানের দূরত্ব দুই কিলোমিটার। প্রায়ই আমরা ঘুম থেকে জেগে উঠি সীমান্তে গোলাগুলির শব্দে। এটি খবু ভীতিজনক ব্যাপার। কখন রোদ উঠবে, বৃষ্টি নামবে তা যেমন আমরা বলতে পারি না, ঠিক তেমনি কখন গুলি বর্ষণ শুরু হয় তা আমরা বলতে পারি না।’
আবিদা আরও বলেন, ‘আমরা যখন স্কুলের উদ্দেশে বের হই; তখন বলতে পারি না জীবন নিয়ে ঘরে ফিরতে পারব কি না। আমাদের শিশুরা এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে বড় হচ্ছে। এখানে আমাদের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই।
‘এখানে নিজেদের নিরাপত্তা নিজেদের দিতে হয়। আগামীকাল কি ঘটবে কেউ বলতে পারে না। এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা এমন এক জায়গায় দাঁড়িয়েছে তা এককথায় খুবই কঠিন। ঘর থেকে বের হয়ে বাড়ি ফিরে আসাটাই বিশাল চ্যালেঞ্জ। আমাদের বসতভিটায় আমাদের বাড়িতে প্রবেশের জন্য আমাদেরকে অনুমতি নিতে হয়। তাহলে বুঝুন আমরা কি পরিস্থিতিতে আছি। গত তিন মাস ধরে পরিস্থিতি খুব খারাপ পর্যায়ে চলে গেছে। মাঝে মাঝে মনে এখানে না থাকাটাই সবচেয়ে ভালো।’
আবিদা আরও বলেন, ‘এভাবে চলতে পারে না। যেভাবেই হোক এই পরিস্থিতির সমাধান হওয়া উচিত। এখানকার সাধারণ মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তাদের এই বিষয়ে শান্তি আলোচনা করা উচিত।’