ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিরল পরিযায়ী হিমালয়ী গৃধিনী

বিরল দর্শন, পরিযায়ী পাখি। দেশে খুব কম দেখা যায়। বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, তিব্বত, চীন, আফগানিস্তান, কাজাখস্তান, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও সিঙ্গাপুর পর্যন্ত। ঈগলাকৃতির চেহারা। খোলামাঠ প্রান্তরে বিচরণ করে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ মিটার উচ্চতায়ও এদের দেখা মেলে। একাকী, জোড়ায় কিংবা দল বেঁধে খাদ্যের সন্ধানে বের হয়। সব ধরনের মৃতদেহ ও সরীসৃপ এদের খাবার। যার ফলে বিষাক্ত মৃতদেহ খেয়ে ওদের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে। প্রজাতির অন্যদের তুলনায় এরা দীর্ঘজীবী। গড় আয়ু ৫০-৫৫ বছর।
প্রিয় পাঠক, এবার ভিন্ন প্রসঙ্গ। সহকর্মী আনোয়ার হোসেন (আমার গুরু, গিটারের হাতেখড়ি নিই তার কাছে) একজন প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ। মাঝে মধ্যে বাইকে চড়িয়ে প্রকৃতি দর্শনে দূর-দূরান্তে নিয়ে যান আমাকে। তিনিই আমাকে ‘হিমালয়ী গৃধিনী’ লেখার অনুরোধ করেছেন। তার দাবি পাখিটি নাকি কয়েক দশক আগে তিনি দেখেছেনও। ফলে ফিচারটি লিখতে উদ্বুদ্ধ হই।
পাখির বাংলা নাম: ‘হিমালয়ী গৃধিনী’, ইংরেজি নাম: ‘হিমালয়ান ভালচার’ (Himalayan Vulture), বৈজ্ঞানিক নাম: Gyps himalayensis। এরা ‘বৃহত্তম গিদরি,’ নামেও পরিচিত।
দৈর্ঘ্য কম-বেশি ১০০-১১০ সেন্টিমিটার। প্রসারিত ডানার দৈর্ঘ্য ২৬০-২৯০ সেন্টিমিটার। মাথা, গলা ও ঘাড় তুলতুলে ক্রিম সাদা। পিঠ ও লেজ ঢাকনি সাদাটে আভার সঙ্গে হলদে বাদামি। ডানার প্রান্ত পালক এবং লেজ কালো। ওড়ার পালকও কালচে। দেহতল বাদামির ওপর অস্পষ্ট রেখা যুক্ত। শিঙ কালো রঙের ঠোঁটের উপরের অংশ বড়শির মতো বাঁকানো। ঠোঁট থেকে হলুদাভ আভা বের হয়। পা ও পায়ের পাতা ফিকে, নখ কালো। যুবাদের রঙ ভিন্ন।
প্রধান খাবার: মৃতদেহ। সর্বভুক পাখি।
প্রজনন মৌসুম জানুয়ারি থেকে মে। বাসা বাঁধে পুরনো উঁচু গাছের ডালে। বাসা বাঁধতে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে ডালপালা পশুর চুল, গাছের বাকল, হাড় ইত্যাদি। ডিম পাড়ে ১-২টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ৫৪-৫৮ দিন। বাবা-মায়ের সঙ্গে মাস ছয়েক কাটায়।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

বিরল পরিযায়ী হিমালয়ী গৃধিনী

আপডেট টাইম : ০৫:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০১৭

বিরল দর্শন, পরিযায়ী পাখি। দেশে খুব কম দেখা যায়। বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, তিব্বত, চীন, আফগানিস্তান, কাজাখস্তান, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও সিঙ্গাপুর পর্যন্ত। ঈগলাকৃতির চেহারা। খোলামাঠ প্রান্তরে বিচরণ করে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ মিটার উচ্চতায়ও এদের দেখা মেলে। একাকী, জোড়ায় কিংবা দল বেঁধে খাদ্যের সন্ধানে বের হয়। সব ধরনের মৃতদেহ ও সরীসৃপ এদের খাবার। যার ফলে বিষাক্ত মৃতদেহ খেয়ে ওদের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে। প্রজাতির অন্যদের তুলনায় এরা দীর্ঘজীবী। গড় আয়ু ৫০-৫৫ বছর।
প্রিয় পাঠক, এবার ভিন্ন প্রসঙ্গ। সহকর্মী আনোয়ার হোসেন (আমার গুরু, গিটারের হাতেখড়ি নিই তার কাছে) একজন প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ। মাঝে মধ্যে বাইকে চড়িয়ে প্রকৃতি দর্শনে দূর-দূরান্তে নিয়ে যান আমাকে। তিনিই আমাকে ‘হিমালয়ী গৃধিনী’ লেখার অনুরোধ করেছেন। তার দাবি পাখিটি নাকি কয়েক দশক আগে তিনি দেখেছেনও। ফলে ফিচারটি লিখতে উদ্বুদ্ধ হই।
পাখির বাংলা নাম: ‘হিমালয়ী গৃধিনী’, ইংরেজি নাম: ‘হিমালয়ান ভালচার’ (Himalayan Vulture), বৈজ্ঞানিক নাম: Gyps himalayensis। এরা ‘বৃহত্তম গিদরি,’ নামেও পরিচিত।
দৈর্ঘ্য কম-বেশি ১০০-১১০ সেন্টিমিটার। প্রসারিত ডানার দৈর্ঘ্য ২৬০-২৯০ সেন্টিমিটার। মাথা, গলা ও ঘাড় তুলতুলে ক্রিম সাদা। পিঠ ও লেজ ঢাকনি সাদাটে আভার সঙ্গে হলদে বাদামি। ডানার প্রান্ত পালক এবং লেজ কালো। ওড়ার পালকও কালচে। দেহতল বাদামির ওপর অস্পষ্ট রেখা যুক্ত। শিঙ কালো রঙের ঠোঁটের উপরের অংশ বড়শির মতো বাঁকানো। ঠোঁট থেকে হলুদাভ আভা বের হয়। পা ও পায়ের পাতা ফিকে, নখ কালো। যুবাদের রঙ ভিন্ন।
প্রধান খাবার: মৃতদেহ। সর্বভুক পাখি।
প্রজনন মৌসুম জানুয়ারি থেকে মে। বাসা বাঁধে পুরনো উঁচু গাছের ডালে। বাসা বাঁধতে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে ডালপালা পশুর চুল, গাছের বাকল, হাড় ইত্যাদি। ডিম পাড়ে ১-২টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ৫৪-৫৮ দিন। বাবা-মায়ের সঙ্গে মাস ছয়েক কাটায়।