বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আমাদের সমাজে অনেকে রয়েছেন ভোজন বিলাসী। প্রচুর খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু বিপদ হলো অনেক সময় অতিরিক্ত খাওয়া-দাওয়ার ফলে পেট খুব ফেঁপে যায় গ্যাসের কারণে। হুট করে এমন পেটের সমস্যা দেখা দিলে খুব কম সময়ের মধ্যে পেটের গ্যাস কমিয়ে ফাঁপা ভাব দূর করার জন্যে কিছু ফল এবং খাদ্য সাহায্য করবে
একই সঙ্গে এই সকল খাদ্য সাহায্য করবে আপনার ওজন কমাতে এবং পেটের মেদ কমাতেও। চলুন জেনে নিই এই খাবারগুলোর নাম-
পেঁপে পেঁপে যে শুধুমাত্র একটি সুস্বাদু ফল তাই কিন্তু নয়। পেঁপে পেটের গ্যাস হওয়া অথবা ফুলে যাওয়া প্রতিরোধ করে। ক্রিস্টোফার কলম্বাস দারুণ এই ফলের নাম দিয়েছিলেন, ‘সকল ফলের দেবতা’। কারণ এই এক পেঁপের মধ্যে এতো বেশি ভালো এবং উপকারি কিছু উপকরণ রয়েছে যা আপনার পেটের মেদ কমাতেও সাহায্য করবে। পেটের মেদ কমাতে এবং পেটের স্ফীতি ভাব কমাতে পেঁপে’র প্রোটিন-ডাইজেশন এনজাইম কাজ করে থাকে। পাকা পেঁপে’র চেয়ে সবুজ রঙের কাচা পেঁপেতে যে এনজাইমের পরিমাণ থাকে অনেক বেশি।
আনারস খাদ্য দ্রুত এবং ভালোমতো পরিপাক হতে এবং পেটের মেদ কমাতে আনারস খুবই পরিচিত একটি ফল। আনারসের ‘ব্রোমেলাইন’ নামক এনজাইম পাকস্থলীজাত খাদ্যের প্রোটিন কণা ভেঙে দিয়ে গ্যাস কমায়। এছাড়াও আনারস পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে থাকে।
এভোকাডো এভোকাডোকে পেটের সকল সমস্যার সমাধান হিসেবে সুপার ফুড বলা হয়ে থাকে। এভোকাডো তে রয়েছে পরিপাকে সাহায্যকারী এনজাইম ‘লাইপেজ’ যা খাদ্যের চর্বিগুলোকে ভেঙে ফেলে এবং খাদ্য খুব ভালভালে পরিপাকে সাহায্য করে থাকে। এতে রয়েছে অনেক বেশি পরিমানে পটাশিয়াম। স্বাস্থ্যকর এই খাবারটি তাই বিভিন্নভাবে খেতে পারেন আপনি।
আদা আদা খুবই উপকারী একটি কারমিনেটিভ। কারমিনেটিভ সাধারণত কোনো হার্ব এর জন্যে ব্যবহৃত হয়ে থাকে যা খাদ্য পরিপাকে এবং পেটের বায়ু নিঃসরণে সাহায্য করে থাকে। আদা রক্তের বাড়তি মেদ কমাতে সাহায্য করে, যা আপনার পেটের ফুলে যাওয়া ভাব কমাতে সাহায্য করে।
আপেল সাইডার ভিনেগার (এসিভি) যদিও এসিভি’র কটু গন্ধ খুবই বিরক্তিকর, তবুও আপনি যদি জানতে পারেন যে এসিভি আপনার পেটের সমস্যার সমাধানের জন্যে দারুণভাবে কাজ করে থাকে, তবে আপনি নাক বন্ধ করে হলেও প্রতিদিন এসিভি পান করবেন! শুধুমাত্র আপনাকে কিনতে হবে একদম অর্গানিক, আনফিল্টার্ড, আনপ্রোসেসড এসিভি। রিফাইন্ড কোন এসিভি কিন্তু কিন্তু ভালো কাজ করবে না। তবে এসিভি খাওয়ার আগে জেনে নিতে হবে, কীভাবে পান করতে হবে এই পানীয়। এক গ্লাস পানিতে এক টেবিল চামচ এসিভি ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে এরপর সেটা খেতে পারবেন আপনি।
টকদই প্রোবায়োটিকস হল পেটের ভেতরে থাকা উপকারী ব্যাকরেটিয়ার একটা গ্রুপ, যারা খাবার হজম করতে সহযোগিতা করে থাকে। ইউনিভার্সিটি হসপিটাল অফ সাউথাম্পটন এর গবেষণা মতে, নিয়মিত টকদই খেলে আপনার পেটের ফাঁপা ভাব কমে যাবে ৭৮% পর্যন্ত। কারণ টকদইয়ে রয়েছে পেটের জন্য উপকারী এই সকল প্রোবায়োটিকস। তাই পেটের ফাঁপা ভাব কমাতে অথবা ফুলে যাওয়া প্রতিরোধ করতে নিয়মিত টকদই খেতে পারেন আপনি।
ওটস প্রচুর আঁশযুক্ত খাদ্য ওটস পেটের ফাঁপা ভাব দূর করতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে থাকে। এটা খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে থাকে বলে, পেটের ভেতর খুব বেশি গ্যাস তৈরি হতে পারে না। তবে বেশি আঁশযুক্ত খাবার বুঝে খেতে হবে। একদম প্রথম থেকেই অনেক বেশি পরিমাণে খাওয়া শুরু করলে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাই পরিমিত পরিমাণে ধীরে ধীরে আঁশযুক্ত ওটস খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে হবে আপনাকে।
কলা খুব ছিমছাম ধরণের এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম। অতিরিক্ত লবণাক্ত কোন খাবার খাওয়ার ফলে পেট ফুলে গেলে কলার পটাসিয়াম আপনার পেটে গ্যাস কমাতে সাহায্য করে থাকে। কারণ লবণ জীব কোষে পানি প্রবেশ করায়, আর অন্যদিকে পটাশিয়াম এর প্রভাবে সেই পানি জীবকোষ থেকে বের হয়ে আসে। তাই যখন আপনি কলা খেতে চাইবেন তখন একটি ভালো মানের পাকা কলা খাবেন।