ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উপসচিবকে মিটিং থেকে বের করে দিলেন সচিব

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে কাস্টমস কার্যক্রম আরও এক ঘণ্টা বাড়ানো-সংক্রান্ত চিঠি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সময়মতো না দেয়ায় একই মন্ত্রণালয়ের উপসচিবকে মিটিং থেকে বের করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (২৪ জুলাই) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রাক্কালে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি যেমন-পেঁয়াজ, রসুন, আদা, মসলা ইত্যাদির মূল্য স্থিতিশীল রাখা এবং গবাদি পশু পরিবহন সংক্রান্ত বিষয়ে অংশীজনদের নিয়ে আয়োজিত সভায় মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জিন্নাত রেহানাকে বের করে দেন বাণিজ্য মন্ত্রণায়ের সিনিয়র সচিব মো. মফিজুল ইসলাম।

সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে এক পেঁয়াজ আমদানিকারক বলেন, ‘ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের ৩০০ থেকে ৪০০ ট্রাক বর্ডারের ওপারে দাঁড়িয়ে থাকে। ঢাকার আমদানিকারকদের কাছে পেঁয়াজের বাজারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। নিয়ন্ত্রণ পুরোটাই ভারতের হাতে, আর বর্ডারে যারা কাজ করে তাদের হাতে। প্রতিদিন যদি ১৫০ থেকে ২০০ পেঁয়াজের ট্রাক সোনামসজিদ আর ভোমরা কাস্টমস দিয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হয় তাহলে পেঁয়াজ নিয়ে ঈদের দিন পর্যন্ত একটুও মাথাব্যথা থাকবে না।’

এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য সচিব মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে তো একটা মিটিং করেছিলাম। এরপরও কি বেশি বেশি ট্রাক ঢুকতে পারছে না?’

এমন প্রশ্নে ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘আগে ৫০টি ট্রাক ঢুকতে পারতো এখন ৬০-৭০টি পারে। কিন্তু এখন দেড়শ থেকে ২০০ গাড়ি ঢুকতে পারলে সমস্যা হবে না। তখন পেঁয়াজ থাকবে ২০ থেকে ২২ টাকা।’

এরপর বাণিজ্য সচিব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিবকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমি যে কাস্টমস আরও এক ঘণ্টা বেশি খোলা রাখার জন্য চিঠি দিতে বলেছিলাম। সেটা কি দিয়েছেন?’ তখন উপসচিব আমতা আমতা করতে থাকেন। তারপর মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘কই চিঠিটা দেখান।’ উপসচিব বলেন, ‘সাতক্ষীরার ডিসিকে দিতে বলা হয়েছে স্যার।’ এরপর সচিব বলেন, ‘আমি তো আপনাকে দিতে বলেছি। দিয়েছেন কিনা?’ উত্তরে উপসচিব বলেন, ‘দেয়া হয়নি স্যার।’

এর পরিপ্রেক্ষিতে সচিব বলেন, ‘কেন দেন নাই, কেন দেন নাই… দেন নাই কেন? মিটিং থেকে আপনি উঠে যান। গিয়ে চিঠি দিয়ে আসেন।’ উপসচিব উঠতে না চাইলে আবার সচিব বলেন, ‘মিটিং থেকে ওঠেন। চিঠি দিয়ে আসেন।’ এরপর উপসচিব মিটিং থেকে উঠে চলে যান।

পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই উপসচিবের নাম জিন্নাত রেহানা।

এরপর মিটিং চলা অবস্থায়ই বাণিজ্য সচিব সাতক্ষীরার ডিসির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। ডিসিকে সচিব বলেন, ‘তোমাকে অনুরোধ করেছিলাম যে, পেঁয়াজের ট্রাক যেন বেশি করে ঢুকতে পারে সে জন্য কি করতে পারলা?’

ডিসি বলেন, ‘ইতোমধ্যে এক ঘণ্টা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এর চেয়ে বেশি ট্রাক আসতে দিতে হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি চিঠি দিতে হবে।’

বৈঠক চলা অবস্থায় সচিব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়ার নির্দেশ দেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

উপসচিবকে মিটিং থেকে বের করে দিলেন সচিব

আপডেট টাইম : ০৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০১৯

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে কাস্টমস কার্যক্রম আরও এক ঘণ্টা বাড়ানো-সংক্রান্ত চিঠি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সময়মতো না দেয়ায় একই মন্ত্রণালয়ের উপসচিবকে মিটিং থেকে বের করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (২৪ জুলাই) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রাক্কালে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি যেমন-পেঁয়াজ, রসুন, আদা, মসলা ইত্যাদির মূল্য স্থিতিশীল রাখা এবং গবাদি পশু পরিবহন সংক্রান্ত বিষয়ে অংশীজনদের নিয়ে আয়োজিত সভায় মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জিন্নাত রেহানাকে বের করে দেন বাণিজ্য মন্ত্রণায়ের সিনিয়র সচিব মো. মফিজুল ইসলাম।

সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে এক পেঁয়াজ আমদানিকারক বলেন, ‘ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের ৩০০ থেকে ৪০০ ট্রাক বর্ডারের ওপারে দাঁড়িয়ে থাকে। ঢাকার আমদানিকারকদের কাছে পেঁয়াজের বাজারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। নিয়ন্ত্রণ পুরোটাই ভারতের হাতে, আর বর্ডারে যারা কাজ করে তাদের হাতে। প্রতিদিন যদি ১৫০ থেকে ২০০ পেঁয়াজের ট্রাক সোনামসজিদ আর ভোমরা কাস্টমস দিয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হয় তাহলে পেঁয়াজ নিয়ে ঈদের দিন পর্যন্ত একটুও মাথাব্যথা থাকবে না।’

এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য সচিব মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে তো একটা মিটিং করেছিলাম। এরপরও কি বেশি বেশি ট্রাক ঢুকতে পারছে না?’

এমন প্রশ্নে ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘আগে ৫০টি ট্রাক ঢুকতে পারতো এখন ৬০-৭০টি পারে। কিন্তু এখন দেড়শ থেকে ২০০ গাড়ি ঢুকতে পারলে সমস্যা হবে না। তখন পেঁয়াজ থাকবে ২০ থেকে ২২ টাকা।’

এরপর বাণিজ্য সচিব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিবকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমি যে কাস্টমস আরও এক ঘণ্টা বেশি খোলা রাখার জন্য চিঠি দিতে বলেছিলাম। সেটা কি দিয়েছেন?’ তখন উপসচিব আমতা আমতা করতে থাকেন। তারপর মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘কই চিঠিটা দেখান।’ উপসচিব বলেন, ‘সাতক্ষীরার ডিসিকে দিতে বলা হয়েছে স্যার।’ এরপর সচিব বলেন, ‘আমি তো আপনাকে দিতে বলেছি। দিয়েছেন কিনা?’ উত্তরে উপসচিব বলেন, ‘দেয়া হয়নি স্যার।’

এর পরিপ্রেক্ষিতে সচিব বলেন, ‘কেন দেন নাই, কেন দেন নাই… দেন নাই কেন? মিটিং থেকে আপনি উঠে যান। গিয়ে চিঠি দিয়ে আসেন।’ উপসচিব উঠতে না চাইলে আবার সচিব বলেন, ‘মিটিং থেকে ওঠেন। চিঠি দিয়ে আসেন।’ এরপর উপসচিব মিটিং থেকে উঠে চলে যান।

পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই উপসচিবের নাম জিন্নাত রেহানা।

এরপর মিটিং চলা অবস্থায়ই বাণিজ্য সচিব সাতক্ষীরার ডিসির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। ডিসিকে সচিব বলেন, ‘তোমাকে অনুরোধ করেছিলাম যে, পেঁয়াজের ট্রাক যেন বেশি করে ঢুকতে পারে সে জন্য কি করতে পারলা?’

ডিসি বলেন, ‘ইতোমধ্যে এক ঘণ্টা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এর চেয়ে বেশি ট্রাক আসতে দিতে হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি চিঠি দিতে হবে।’

বৈঠক চলা অবস্থায় সচিব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়ার নির্দেশ দেন।