ঢাকা , বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমলাদের অবসরের ৫ বছর পর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তাব

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকারি আমলাদের অবসরের পর ভোটে অংশ নেওয়ার নিষেধাজ্ঞা তিন বছর থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করার প্রস্তাব করেছেন নির্বাচন কমিশনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সুপারিশে বলা হয়, সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত, অপসারণ, অবসর বা পদতাগের পাঁচ বছর পর ভোটে অংশ নিলে রাজনৈতিক সরকারের অধীনে চাকরিরত আমলাতন্ত্রকে রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ থেকে মুক্ত রাখা যাবে। এ ছাড়াও ইসির মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বেশ কিছু সুপারিশ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে সশস্ত্র বাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় আনা, রিটার্নিং অফিসারকে প্রার্থিতা বাতিল এবং আচরণবিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে হাকিমদের মতো ক্ষমতা দেওয়া, প্রার্থীদের জামানতের টাকা বাড়ানো, কোনো প্রার্থী নিজেকে স্বশিক্ষিত বলে দাবি করলেও সেজন্য সনদ নেওয়ার বিধান চালু এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে তদারকিতে আনতে নির্বাচনী আইন সংস্কারের সুপারিশ। ইসি সূত্র এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) অন্তত ৩৫টি অনুচ্ছেদে সংস্কার আনার প্রস্তাব এসেছে এই মাঠ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে। তাদের এসব প্রস্তাব একীভূত করে গত রোববার নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানমের কাছে উপস্থাপন করা হয়। ইসির আইন সংস্কার সংক্রান্ত এই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম। উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ১৪টি আইন, বিধিমালা ও নির্দেশনা যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে আইন সংশোধন ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন। আর এ বিষয়ে ইসির মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মতামত চাওয়া হলে তারা সুপারিশগুলো কমিশন সচিবালয়ের আইন শাখায় পাঠান। পরে তা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কর্মকর্তারা মোট ৫৮টি বিষয়ে সুপারিশ করেছেন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম সকালের খবরকে বলেন, মাঠ পর্যায়ের মতামতগুলো আমরা নিয়েছি। কারণ যারা এগুলো ফেস করে তারাই কিন্তু বলতে পারবে কোন কোন জায়গায় সংস্কার করা দরকার। মতামতগুলোর যেটা যুক্তিসঙ্গত মনে হবে, নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সহজীকরণ করবে, যুগোপযোগী করবে শুধু সেই বিষয়গুলোকেই আমরা সিলেক্ট করব। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনের সংলাপে বিষয়গুলো তাদের সামনে তুলে ধরা হবে। তারপর আমরা খসড়টা চূড়ান্ত করব। এরপর আইন প্রণয়নের জন্য প্রস্তাব করব। ইসি সূত্র জানায়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এ (আরপিও) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় পুলিশ, আর্মড পুলিশ, র?্যাব, আনসার, বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে বোঝানো হয়েছে। এতে সেনাবাহিনী বা সশস্ত্র বাহিনীর কথা নেই। বর্তমান আইন অনুযায়ী, সশস্ত্র বাহিনী ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’, তারা ক্যাম্পে অবস্থান করবে, রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রয়োজন মনে করলে তাদের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ডাকবেন। তবে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ১৯ আগস্ট এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনী নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা পালন করে। ২০১৩ সালে আরপিও সংশোধনীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞা থেকে সশস্ত্র বাহিনীকে বাদ দেওয়া হয়। আরপিওতে যেসব সংস্কার চায় ইসি কর্মকর্তারা : অনুচ্ছেদ ২-এ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রয়েছে। এর পক্ষে যুক্ত হচ্ছে-আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগ যুক্ত হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ইসির নিরপেক্ষতা দৃশ্যমান হবে। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও ব্যক্তিগত ব্যয়ের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা প্রয়োজন বলেও মত দেওয়া হয়। স্বশিক্ষিতের নতুন সংজ্ঞায়নের প্রস্তাবের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামায় সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা ও সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপির দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু অনেক প্রার্থী স্বশিক্ষিত উল্লেখ করলে কোনো প্রকার সনদের কপি দেন না। বিষয়টি স্পষ্ট করা প্রয়োজন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নির্বাহী ও বিচারিক হাকিম নিয়োজিত থাকেন ভোটের সময়। ইসির সরাসরি নিয়ন্ত্রণের সুবিধার্থে আইন সেলের মাধ্যমে ‘ইলেকট্ররাল ম্যাজিস্ট্রেট’ নাম দিয়ে তাদের নিয়োগ করা যায়। এতে ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তাদেরও প্রশিক্ষণ দিয়ে দায়িত্ব দেওয়া যাবে। অনুচ্ছেদ ৭-এ ইসি কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসার করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, কোনো কর্মকর্তাকে রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করা হবে তা উল্লেখ নেই। সরকারি কর্মকর্তা বা ইসি কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসার নিয়োগের জন্য সংযোজন প্রয়োজন। এক্ষেত্রে প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকার জন্য ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তাকে রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করবেন এবং কোনো ব্যক্তিকে দুই বা ততধিক এলাকার জন্য নিয়োগ দিতে পারবেন। একই সঙ্গে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের বিধান করা যেতে পারে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। সেই সঙ্গে ইউএনওদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা দেওয়া হয়। তবে কয়েকটি এলাকায় জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন অফিসার ও উপজেলা নির্বাচন অফিসারকেও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়ার নজির রয়েছে। সংসদ নির্বাচনে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার থাকলেও সংসদের উপনির্বাচনে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের এ দায়িত্ব দেওয়া হয়। অনুচ্ছেদ-১৩-এ প্রার্থীদের জামানত ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অনুচ্ছেদ-১২-এ সরকারি আমলাদের ভোটে অংশ নেওয়ার নিষেধাজ্ঞা তিন বছর থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করার প্রস্তাব রয়েছে। চাকরি থেকে বরখাস্ত, অপসারণ, অবসর বা পদত্যাগের পাঁচ বছর পর ভোটে অংশ নিতে পারবে। এতে রাজনৈতিক সরকারের অধীনে চাকরিরত আমলাতন্ত্রকে রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ থেকে মুক্ত রাখা যাবে। ঋণখেলাপি-বিলখেলাপিদের অর্থ পরিশোধের শেষ সময় মনোনয়নপত্র জমার সাত দিন আগে না করে দাখিলের দিন পর্যন্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্য নির্বাচনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমার বিধান রাখার পক্ষেও ইসি কর্মকর্তারা। এ ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক তালিকা দেওয়ার বিধান বাতিলের সুপারিশ রয়েছে। এর পক্ষে যুক্তি হচ্ছে-যারা স্বাক্ষর দেয় তাদের অনেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে; ভয়ে সমর্থনসূচক স্বাক্ষরের বিষয়টি অস্বীকার করে। আবার অনেক ভোটার অর্থ লেনদেনে জড়িয়ে পড়ে। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট দেওয়ার কথা রয়েছে। তা না থাকলে মার্কশিট বা প্রশংসাপত্র দেওয়ার বিধান রাখার পক্ষে মত এসেছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

আমলাদের অবসরের ৫ বছর পর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তাব

আপডেট টাইম : ০৫:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকারি আমলাদের অবসরের পর ভোটে অংশ নেওয়ার নিষেধাজ্ঞা তিন বছর থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করার প্রস্তাব করেছেন নির্বাচন কমিশনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সুপারিশে বলা হয়, সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত, অপসারণ, অবসর বা পদতাগের পাঁচ বছর পর ভোটে অংশ নিলে রাজনৈতিক সরকারের অধীনে চাকরিরত আমলাতন্ত্রকে রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ থেকে মুক্ত রাখা যাবে। এ ছাড়াও ইসির মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বেশ কিছু সুপারিশ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে সশস্ত্র বাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় আনা, রিটার্নিং অফিসারকে প্রার্থিতা বাতিল এবং আচরণবিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে হাকিমদের মতো ক্ষমতা দেওয়া, প্রার্থীদের জামানতের টাকা বাড়ানো, কোনো প্রার্থী নিজেকে স্বশিক্ষিত বলে দাবি করলেও সেজন্য সনদ নেওয়ার বিধান চালু এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে তদারকিতে আনতে নির্বাচনী আইন সংস্কারের সুপারিশ। ইসি সূত্র এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) অন্তত ৩৫টি অনুচ্ছেদে সংস্কার আনার প্রস্তাব এসেছে এই মাঠ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে। তাদের এসব প্রস্তাব একীভূত করে গত রোববার নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানমের কাছে উপস্থাপন করা হয়। ইসির আইন সংস্কার সংক্রান্ত এই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম। উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ১৪টি আইন, বিধিমালা ও নির্দেশনা যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে আইন সংশোধন ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন। আর এ বিষয়ে ইসির মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মতামত চাওয়া হলে তারা সুপারিশগুলো কমিশন সচিবালয়ের আইন শাখায় পাঠান। পরে তা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কর্মকর্তারা মোট ৫৮টি বিষয়ে সুপারিশ করেছেন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম সকালের খবরকে বলেন, মাঠ পর্যায়ের মতামতগুলো আমরা নিয়েছি। কারণ যারা এগুলো ফেস করে তারাই কিন্তু বলতে পারবে কোন কোন জায়গায় সংস্কার করা দরকার। মতামতগুলোর যেটা যুক্তিসঙ্গত মনে হবে, নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সহজীকরণ করবে, যুগোপযোগী করবে শুধু সেই বিষয়গুলোকেই আমরা সিলেক্ট করব। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনের সংলাপে বিষয়গুলো তাদের সামনে তুলে ধরা হবে। তারপর আমরা খসড়টা চূড়ান্ত করব। এরপর আইন প্রণয়নের জন্য প্রস্তাব করব। ইসি সূত্র জানায়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এ (আরপিও) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় পুলিশ, আর্মড পুলিশ, র?্যাব, আনসার, বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে বোঝানো হয়েছে। এতে সেনাবাহিনী বা সশস্ত্র বাহিনীর কথা নেই। বর্তমান আইন অনুযায়ী, সশস্ত্র বাহিনী ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’, তারা ক্যাম্পে অবস্থান করবে, রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রয়োজন মনে করলে তাদের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ডাকবেন। তবে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ১৯ আগস্ট এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনী নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা পালন করে। ২০১৩ সালে আরপিও সংশোধনীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞা থেকে সশস্ত্র বাহিনীকে বাদ দেওয়া হয়। আরপিওতে যেসব সংস্কার চায় ইসি কর্মকর্তারা : অনুচ্ছেদ ২-এ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রয়েছে। এর পক্ষে যুক্ত হচ্ছে-আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগ যুক্ত হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ইসির নিরপেক্ষতা দৃশ্যমান হবে। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও ব্যক্তিগত ব্যয়ের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা প্রয়োজন বলেও মত দেওয়া হয়। স্বশিক্ষিতের নতুন সংজ্ঞায়নের প্রস্তাবের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামায় সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা ও সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপির দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু অনেক প্রার্থী স্বশিক্ষিত উল্লেখ করলে কোনো প্রকার সনদের কপি দেন না। বিষয়টি স্পষ্ট করা প্রয়োজন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নির্বাহী ও বিচারিক হাকিম নিয়োজিত থাকেন ভোটের সময়। ইসির সরাসরি নিয়ন্ত্রণের সুবিধার্থে আইন সেলের মাধ্যমে ‘ইলেকট্ররাল ম্যাজিস্ট্রেট’ নাম দিয়ে তাদের নিয়োগ করা যায়। এতে ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তাদেরও প্রশিক্ষণ দিয়ে দায়িত্ব দেওয়া যাবে। অনুচ্ছেদ ৭-এ ইসি কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসার করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, কোনো কর্মকর্তাকে রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করা হবে তা উল্লেখ নেই। সরকারি কর্মকর্তা বা ইসি কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসার নিয়োগের জন্য সংযোজন প্রয়োজন। এক্ষেত্রে প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকার জন্য ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তাকে রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করবেন এবং কোনো ব্যক্তিকে দুই বা ততধিক এলাকার জন্য নিয়োগ দিতে পারবেন। একই সঙ্গে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের বিধান করা যেতে পারে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। সেই সঙ্গে ইউএনওদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা দেওয়া হয়। তবে কয়েকটি এলাকায় জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন অফিসার ও উপজেলা নির্বাচন অফিসারকেও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়ার নজির রয়েছে। সংসদ নির্বাচনে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার থাকলেও সংসদের উপনির্বাচনে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের এ দায়িত্ব দেওয়া হয়। অনুচ্ছেদ-১৩-এ প্রার্থীদের জামানত ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অনুচ্ছেদ-১২-এ সরকারি আমলাদের ভোটে অংশ নেওয়ার নিষেধাজ্ঞা তিন বছর থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করার প্রস্তাব রয়েছে। চাকরি থেকে বরখাস্ত, অপসারণ, অবসর বা পদত্যাগের পাঁচ বছর পর ভোটে অংশ নিতে পারবে। এতে রাজনৈতিক সরকারের অধীনে চাকরিরত আমলাতন্ত্রকে রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ থেকে মুক্ত রাখা যাবে। ঋণখেলাপি-বিলখেলাপিদের অর্থ পরিশোধের শেষ সময় মনোনয়নপত্র জমার সাত দিন আগে না করে দাখিলের দিন পর্যন্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্য নির্বাচনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমার বিধান রাখার পক্ষেও ইসি কর্মকর্তারা। এ ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক তালিকা দেওয়ার বিধান বাতিলের সুপারিশ রয়েছে। এর পক্ষে যুক্তি হচ্ছে-যারা স্বাক্ষর দেয় তাদের অনেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে; ভয়ে সমর্থনসূচক স্বাক্ষরের বিষয়টি অস্বীকার করে। আবার অনেক ভোটার অর্থ লেনদেনে জড়িয়ে পড়ে। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট দেওয়ার কথা রয়েছে। তা না থাকলে মার্কশিট বা প্রশংসাপত্র দেওয়ার বিধান রাখার পক্ষে মত এসেছে।