বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আধুনিক জীবনে অসুখের শেষ নেই। হাজার রকম অসুখে লক্ষ লক্ষ ওষুধ। সারা দিনে মনে করে, নিয়ম মেনে ওষুধ খাওয়ার চক্করের যেন শেষ নেই!
তবে যদি রোগ প্রতিরোধের উপায় আরও বাড়ানো যায়, তা হলে অসুখ বিসুখের হাত থেকে খানিক রেহাই পাওয়া সম্ভব হয়। আমাদের চারপাশেই কিন্তু রয়েছে এমন এক প্রাকৃতিক উপাদান—যা আপনাকে রাখবে সুস্থ।
জীবনের বেশিরভাগ নাছোড় অসুখের সঙ্গে লড়ে যাওয়ার শক্তি জোগাবে। হুইটগ্রাস বা গমের কচি চারার রস এমনই এক বস্তু। কিন্তু জানেন কি, এমন রসের গুণই বা কী, কী কী উপাদান আছে গমের চারার রসে, আর কীভাবেই বা বানাবেন তা? না জানলে দেখে নিন।
কী আছে গমের চারায়?
মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ গৌতম বরাটের মতে, প্রাকৃতিক উপাদান থেকে পাওয়া নানা প্রতিরোধকে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা আমাদের শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী। গম চারার রস মানেই সতেজ ক্লোরোফিল। আর এটি সবুজ গাছ ছাড়া আর কিছুতেই পাওয়া সম্ভব নয়।
নানা খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ এই প্রাকৃতিক ঘাসে আছে ভিটামিন এ, সি, ই, বি কমপ্লেক্স, ১ ও কে। তা ছাড়া প্রোটিন ও ১৭ ধরনের অ্যামাইনো এসিড রয়েছে এই চারায়। প্রতি ২৮ গ্রাম রসে রয়েছে ১ গ্রাম প্রোটিন। ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ, আলসার, কানের জ্বালাপোড়া, ত্বকের পুনর্গঠন ইত্যাদির চিকিৎসায় ক্লোরোফিল বেশ ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
শরীরে কী ভাবে কাজ করে এই গমের রস?
এই রসের ৭০-৭৫ ভাগই হল বিশুদ্ধ ক্লোরোফিল। ক্লোরোফিলে রয়েছে অনেক উপকারী উৎসেচক। এ গুলো কোষের সুপার অক্সাইড র্যাডিকেলগুলোকে ধ্বংস করতে পারে। ফলে বার্ধক্যজনিত ছাপ শরীরে সহজে বাসা বাঁধতে পারে না। ক্লোরোফিল প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাক্টিরিয়ালও। শরীরের ভিতরে ও বাইরে তা অপকারী ব্যাক্টিরিয়া নির্মূল করে।
ক্লোরোফিল তৈরি হয় আলোর মাধ্যমে। আলোর ভিতরের শক্তিও এর মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করতে পারে।গমের চারার ক্লোরোফিল সরাসরি মানব দেহে মিশে যায়। এখনও পর্যন্ত এর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।শরীরে জমে থাকা নানা ওষুধের ক্ষতিকারক অবশিষ্টাংশ ধুয়ে ফেলতে পারে এই চারাগমের ঘাসের জুস হৃদপিণ্ড ও ফুসফুসেরও কার্যক্ষমতা বাড়ায়। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
ডায়াবেটিকদের জন্য তাই অত্যন্ত উপকারী। কিডনিকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এটি।ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ, আলসার, কানের জ্বালাপোড়া, চামড়ার পুনর্গঠন, সাইনুসাইটিস ইত্যাদির চিকিৎসায় ক্লোরোফিল বেশ ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। হাড়ের সমস্যার অবনতি মন্থর করতেও বিশেষ গুরুত্ব পায় এই রস। এতে প্রচুর ম্যাগনেশিয়াম আছে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য তাড়াতে পারে গমের ঘাসের জুস।
কীভাবে তৈরি করবেন
ভরপুর গুণের এই গমের চারার রস বানানো খুব একটা কঠিন নয়। গমের কচি চারা জোগাড় করুন। চারাগুলো দুই ফালি করে নিন। ভাল করে ধুয়ে পুরে জুসারে। বাড়তি কিছুই মেশাবেন না। এ রস ফ্রিজে জমিয়ে রাখতে পারেন। উপকার পেতে প্রতিদিন খালি পেটে খান এই রস।