ঢাকা , শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জাকের-শামীমকে যে পুরস্কার দিতে বললেন উইন্ডিজ কিংবদন্তি স্ত্রীর করা যৌতুক মামলায় পুলিশ স্বামী কারাগারে হাইকোর্টে উপদেষ্টা হাসান আরিফের জানাজা অনুষ্ঠিত যারা দুর্দিনে দলের জন্য কাজ করেছে, তাদের মূল্যায়ন করা হবে: টুকু আবাসন ব্যবসায় মন্দা দ্য ইকোনমিস্টকে ড. ইউনূস ‘আমি আমার নিয়মিত কাজে ফিরে যেতে পারলে খুশি হবো’ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং হিন্দুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা নিয়ে ভারতের তথ্য বিভ্রান্তিকর টঙ্গীতে বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাক নদীতে, বিকল্প পথে চলার অনুরোধ অর্থহীন’ এর সাবেক গিটারিস্ট পিকলু মারা গেছেন নোয়াখালী জেলা আমীর ইসহাক খন্দকার ‘ভারতের আশেপাশের দেশগুলোর কোনোটির সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক নেই’

‘ভ্যাকসিন হিরো’ পুরস্কারে ভূষিত প্রধানমন্ত্রী

বাঙালী কন্ঠঃ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন এন্ড ইমিউনাইজেশ ( জিএভিআই) ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পুরস্কার গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টিকাদান কর্মসূচীতে বাংলাদেশের সফলতা ও প্রধানমন্ত্রীর এক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতৃত্বেও স্বীকৃতি স্বরুপ এবছর তাকে এ পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন করা হয়। সোমবার সন্ধ্যায় জাতিসংঘ সদর দফতরের কন্সফারেন্স রুম-১ এ সংস্থাটির বোর্ড সভাপতি ড. এনগোজি অকেনজো ইবিলা এবং প্রধান নির্বাহী সেথ ফ্রাঙ্কলিন বার্ক্লে প্রধানমন্ত্রীর হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন। এসময় প্রধানমন্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এম এ মোমেন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক উপস্থিত ছিলেন।

পুরস্কার হস্তান্তরের আগে জিএভিআই-এর নির্বাহী কর্মকর্তা ফ্রাকলিন বলেন, জিএভিআই ২০০১ সাল থেকে বাংলাদেশের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। যারফলশ্রুতিতে ২০০৮ সালে বাংলাদেশ পোলিও মুক্ত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধরণের টিকাদানের ক্ষেত্রে অনন্য সাধারণ ভূমিকা পালন করেছেন।

পুরস্কার পাবার পর এক প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী জানান, এই পুরস্কার তিনি বাংলাদেশের জনগনকে উৎসর্গ করেছেন। তিনি আরো বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর টিকাদার কর্মসূচীতে বেশ সাফল্য আসে। তিনি নিজে জনগনকে উৎসাহ দেবার জন্য বাচ্চাদেও টিকা খাইয়েছেন। কিন্তু ২০০১ সালে তা আবার ভাটা পরে। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে এক্ষেত্রে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ হাতে নেয়।

এদিকে সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী যোগদেন জাতিসংঘ সদর দফতরে ইকোসক চেম্বারে আয়োজিত সার্বজনীন সাস্থ্য কর্মসূচী (ইউএচসি) -এর উপর আয়োজিত এক উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায়। এতে তিনি প্যানেলটির কো-চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন , সার্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচি (ইউএইচসি) অর্জনে অভিন্ন লক্ষ্যের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে জাতিসংঘভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে সহযোগিতা গড়ে তোলতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে জাতিসংঘভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা সার্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচি (ইউএইচসি) অর্জনের অভিন্ন লক্ষ্যের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার ভিত্তি।’ শেখ হাসিনা ২০৩০ সালের মধ্যে ইউএইচসি ও এসডিজিস অর্জনে প্রতিটি দেশের জন্য স্বাস্থ্যসেবা অর্থায়ন কৌশল প্রণয়নে কার্যকর বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচকদের মধ্যে ছিলেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিজ মিশেল বাশেলে, ম্যালেরিয়া নির্মূলে আরবিএম অংশীদারিত্ব বিষয়ক বোর্ডের সভাপতি মিজ মাহা তাইসির বারাকাত, অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক মিজ উইনি বায়ানিমা ও কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক জেফেরি সাখস।

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক দেশে ইউনিভার্সেল হেলথ কভারেজের আওতায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ যোগাড় করাটাই প্রধান বাধা এবং এই বাধা দূর করার জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রয়োজন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ইউনিভার্সেল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটসের ক্ষেত্রে প্রত্যেকেরই পর্যাপ্ত মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা ও ভালভাবে জীবন যাপন করার অধিকার রয়েছে। তিনি বলেন, ‘জাতি, ধর্ম, বর্ণ, রাজনৈতিক বিশ্বাস ও আর্থসামাজিক অবস্থা নির্বিশেষ রোগমুক্ত সুস্বাস্থ্য পাওয়া প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সার্বিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি বলতে দু’টি জিনিসকে বুঝায়- প্রথমত, নারী বা পুরুষের সামাজিক পরিচয় নির্বিশেষে প্রত্যেককেই সমান সুযোগ দিতে হবে এবং দ্বিতীয়ত, অভিন্ন সম্পদ ও সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে সকলের সমান অধিকার থাকতে হবে।’

সম্পদের সুষম বন্টনের ওপর জোর দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সার্বিক উন্নয়ন না হলে তা অস্থিতিশীলতা ও সামাজিক ঐক্যে বড় ধরনের ভাঙ্গন সৃষ্টি করতে পারে। তিনি আরো বলেন, ‘সম্পদের যথাযথ সুষম বন্টন না করে শুধুমাত্র প্রবৃদ্ধি বাড়লেই কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জিত হবে না। সকলের জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা একটি সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠার অন্যতম প্রধান শর্ত।’

শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি নাগরিকের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠির অর্ধেক এখনো প্রয়োজনীয় স্বাস্ব্য সেবা পাচ্ছে না। অতিরিক্ত স্বাস্থ্য ব্যয়ের কারণে প্রতি বছরে প্রায় একশত মিলিয়ন লোক অতি দারিদ্র্য হচ্ছে। প্রায় আটশত মিলিয়ন লোক তাদের পারিবারিক বাজেটের কমপক্ষে দশ শতাংশ ব্যয় করেন স্বাস্থ্য সেবায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র লোকেরা বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবার সুবিধা পায় না। ফলে, তাদের জীবন নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবার মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবায় সমতা নিশ্চিত করতে হবে। অতিরিক্ত স্বাস্থ্য ব্যয়ের কারণে আমরা কাউকে দরিদ্রতার মুখে ঠেলে দিতে পারি না। স্বাস্থ্য সেবা পেতে গিয়ে কাউকে যাতে দরিদ্র্য হতে না হয়, এ জন্য আমাদেরকে উপায় খুঁজে বের করতে হবে ।

প্রধানমন্ত্রী এসময় সাস্থ্য সেবায় তাঁর সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো প্যানেল আলোচনায় তুলে ধরেন। আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন অটিজম এবং নিউরোডেভলোপমেন্টাল ডিজঅর্ডার বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপার্সন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোদাচ্ছের আলী প্রমূখ। এছাড়াও সোমবার প্রধানমন্ত্রী ক্লাইমেট এ্যাকসন সামিটে বক্তব্য রাখেন।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে গ্লোবাল এ্যাকশন ফর এডাপ্টেশন শীর্ষক একটি সাইড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়াও একই দিন বাংলাদেশের আয়োজনে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এতে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদসহ রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করছেন এমন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষনেতারা বৈঠকে বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে। একইদিন প্রধানমন্ত্রী মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বশীর্ষক এক সাইড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

জাকের-শামীমকে যে পুরস্কার দিতে বললেন উইন্ডিজ কিংবদন্তি

‘ভ্যাকসিন হিরো’ পুরস্কারে ভূষিত প্রধানমন্ত্রী

আপডেট টাইম : ০৫:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বাঙালী কন্ঠঃ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন এন্ড ইমিউনাইজেশ ( জিএভিআই) ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পুরস্কার গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টিকাদান কর্মসূচীতে বাংলাদেশের সফলতা ও প্রধানমন্ত্রীর এক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতৃত্বেও স্বীকৃতি স্বরুপ এবছর তাকে এ পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন করা হয়। সোমবার সন্ধ্যায় জাতিসংঘ সদর দফতরের কন্সফারেন্স রুম-১ এ সংস্থাটির বোর্ড সভাপতি ড. এনগোজি অকেনজো ইবিলা এবং প্রধান নির্বাহী সেথ ফ্রাঙ্কলিন বার্ক্লে প্রধানমন্ত্রীর হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন। এসময় প্রধানমন্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এম এ মোমেন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক উপস্থিত ছিলেন।

পুরস্কার হস্তান্তরের আগে জিএভিআই-এর নির্বাহী কর্মকর্তা ফ্রাকলিন বলেন, জিএভিআই ২০০১ সাল থেকে বাংলাদেশের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। যারফলশ্রুতিতে ২০০৮ সালে বাংলাদেশ পোলিও মুক্ত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধরণের টিকাদানের ক্ষেত্রে অনন্য সাধারণ ভূমিকা পালন করেছেন।

পুরস্কার পাবার পর এক প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী জানান, এই পুরস্কার তিনি বাংলাদেশের জনগনকে উৎসর্গ করেছেন। তিনি আরো বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর টিকাদার কর্মসূচীতে বেশ সাফল্য আসে। তিনি নিজে জনগনকে উৎসাহ দেবার জন্য বাচ্চাদেও টিকা খাইয়েছেন। কিন্তু ২০০১ সালে তা আবার ভাটা পরে। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে এক্ষেত্রে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ হাতে নেয়।

এদিকে সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী যোগদেন জাতিসংঘ সদর দফতরে ইকোসক চেম্বারে আয়োজিত সার্বজনীন সাস্থ্য কর্মসূচী (ইউএচসি) -এর উপর আয়োজিত এক উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায়। এতে তিনি প্যানেলটির কো-চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন , সার্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচি (ইউএইচসি) অর্জনে অভিন্ন লক্ষ্যের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে জাতিসংঘভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে সহযোগিতা গড়ে তোলতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে জাতিসংঘভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা সার্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচি (ইউএইচসি) অর্জনের অভিন্ন লক্ষ্যের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার ভিত্তি।’ শেখ হাসিনা ২০৩০ সালের মধ্যে ইউএইচসি ও এসডিজিস অর্জনে প্রতিটি দেশের জন্য স্বাস্থ্যসেবা অর্থায়ন কৌশল প্রণয়নে কার্যকর বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচকদের মধ্যে ছিলেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিজ মিশেল বাশেলে, ম্যালেরিয়া নির্মূলে আরবিএম অংশীদারিত্ব বিষয়ক বোর্ডের সভাপতি মিজ মাহা তাইসির বারাকাত, অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক মিজ উইনি বায়ানিমা ও কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক জেফেরি সাখস।

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক দেশে ইউনিভার্সেল হেলথ কভারেজের আওতায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ যোগাড় করাটাই প্রধান বাধা এবং এই বাধা দূর করার জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রয়োজন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ইউনিভার্সেল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটসের ক্ষেত্রে প্রত্যেকেরই পর্যাপ্ত মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা ও ভালভাবে জীবন যাপন করার অধিকার রয়েছে। তিনি বলেন, ‘জাতি, ধর্ম, বর্ণ, রাজনৈতিক বিশ্বাস ও আর্থসামাজিক অবস্থা নির্বিশেষ রোগমুক্ত সুস্বাস্থ্য পাওয়া প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সার্বিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি বলতে দু’টি জিনিসকে বুঝায়- প্রথমত, নারী বা পুরুষের সামাজিক পরিচয় নির্বিশেষে প্রত্যেককেই সমান সুযোগ দিতে হবে এবং দ্বিতীয়ত, অভিন্ন সম্পদ ও সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে সকলের সমান অধিকার থাকতে হবে।’

সম্পদের সুষম বন্টনের ওপর জোর দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সার্বিক উন্নয়ন না হলে তা অস্থিতিশীলতা ও সামাজিক ঐক্যে বড় ধরনের ভাঙ্গন সৃষ্টি করতে পারে। তিনি আরো বলেন, ‘সম্পদের যথাযথ সুষম বন্টন না করে শুধুমাত্র প্রবৃদ্ধি বাড়লেই কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জিত হবে না। সকলের জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা একটি সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠার অন্যতম প্রধান শর্ত।’

শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি নাগরিকের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠির অর্ধেক এখনো প্রয়োজনীয় স্বাস্ব্য সেবা পাচ্ছে না। অতিরিক্ত স্বাস্থ্য ব্যয়ের কারণে প্রতি বছরে প্রায় একশত মিলিয়ন লোক অতি দারিদ্র্য হচ্ছে। প্রায় আটশত মিলিয়ন লোক তাদের পারিবারিক বাজেটের কমপক্ষে দশ শতাংশ ব্যয় করেন স্বাস্থ্য সেবায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র লোকেরা বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবার সুবিধা পায় না। ফলে, তাদের জীবন নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবার মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবায় সমতা নিশ্চিত করতে হবে। অতিরিক্ত স্বাস্থ্য ব্যয়ের কারণে আমরা কাউকে দরিদ্রতার মুখে ঠেলে দিতে পারি না। স্বাস্থ্য সেবা পেতে গিয়ে কাউকে যাতে দরিদ্র্য হতে না হয়, এ জন্য আমাদেরকে উপায় খুঁজে বের করতে হবে ।

প্রধানমন্ত্রী এসময় সাস্থ্য সেবায় তাঁর সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো প্যানেল আলোচনায় তুলে ধরেন। আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন অটিজম এবং নিউরোডেভলোপমেন্টাল ডিজঅর্ডার বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপার্সন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোদাচ্ছের আলী প্রমূখ। এছাড়াও সোমবার প্রধানমন্ত্রী ক্লাইমেট এ্যাকসন সামিটে বক্তব্য রাখেন।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে গ্লোবাল এ্যাকশন ফর এডাপ্টেশন শীর্ষক একটি সাইড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়াও একই দিন বাংলাদেশের আয়োজনে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এতে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদসহ রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করছেন এমন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষনেতারা বৈঠকে বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে। একইদিন প্রধানমন্ত্রী মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বশীর্ষক এক সাইড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন।