ঢাকা , শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জাকের-শামীমকে যে পুরস্কার দিতে বললেন উইন্ডিজ কিংবদন্তি স্ত্রীর করা যৌতুক মামলায় পুলিশ স্বামী কারাগারে হাইকোর্টে উপদেষ্টা হাসান আরিফের জানাজা অনুষ্ঠিত যারা দুর্দিনে দলের জন্য কাজ করেছে, তাদের মূল্যায়ন করা হবে: টুকু আবাসন ব্যবসায় মন্দা দ্য ইকোনমিস্টকে ড. ইউনূস ‘আমি আমার নিয়মিত কাজে ফিরে যেতে পারলে খুশি হবো’ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং হিন্দুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা নিয়ে ভারতের তথ্য বিভ্রান্তিকর টঙ্গীতে বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাক নদীতে, বিকল্প পথে চলার অনুরোধ অর্থহীন’ এর সাবেক গিটারিস্ট পিকলু মারা গেছেন নোয়াখালী জেলা আমীর ইসহাক খন্দকার ‘ভারতের আশেপাশের দেশগুলোর কোনোটির সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক নেই’

সরকারি বাঙলা কলেজের বধ্যভূমির স্মতি, বিস্মৃতির জাল

বাঙালী কন্ঠ ডেস্কঃ বাঙলা কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক এবং তমদ্দুন মজলিশ-এর সভাপতি আবুল কাশেম। এ উদ্দেশ্যে ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ, ডক্টর ইন্নাস আলীসহ তমদ্দুন মজলিসের কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে একটি প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়।
১৯৬১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি একই স্থানে খান বাহাদুর আব্দুর রহমান খান-এর সভাপতিত্বে দ্বিতীয় সভায় ২৬ জন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। এ সভায় বাঙলা কলেজ প্রতিষ্ঠার লক্ষে ৫১ সদস্যবিশিষ্ট একটি সাংগঠনিক পরিষদ গঠিত হয়। প্রধান পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে ছিলেন রণদাপ্রসাদ সাহা ও গুল মোহাম্মদ আদমজী, ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, প্রিন্সিপাল দেওয়ান মোঃ আজরফ, খান বাহাদুর আবদুর রহমান খান সহ-সভাপতি, প্রাক্তন ডিপিআই আবদুল হাকিম কোষা ধ্যক্ষ, প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ সেক্রেটারি, অধ্যাপক আবুল কাসেম ও অধ্যাপক হাসান জামান জয়েন্ট সেক্রেটারি শাহ মুস্তাফিজুর রহমান ও অধ্যাপক মতিউর রহমান অ্যাসিট্যান্ট সেক্রেটারি। পরিষদের সদস্য ছিলেন আবুল কালাম শামসুদ্দীন, তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, আবদুস সালাম, সুনীল কুমার বসু, সাহিত্যিক মুহাম্মদ বরকত উল্লাহ, অধ্যাপক আবদুল হাই, কবি ফররুখ আহমদ, অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান, ড. মুহাম্মদ এনামুল হক, বেগম শামসুন্নাহার মাহমুদ, ব্যারিস্টর আবদুল হক, অধ্যাপক মোফাখখারুল ইসলাম প্রমুখ ।
১৯৬১ সালের ১৮ জুন বাংলা একাডেমী সভাকক্ষে বাঙলা কলেজ সাংগঠনিক পরিষদের সভায় ঐ বছর জুলাই থেকে বাংলা কলেজের কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। শুরুর দিকে কলেজের প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপাল ও অধ্যাপকগণ বিনা বেতনে বৎসরাধিককাল এবং কেউ কেউ নামমাত্র বেতনে অধ্যাপনা করেন। স্বয়ং প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম ৮ বছর বিনা বেতনে দায়িত্ব পালন করেন, কলেজে সাপ্তাহিক ও ষান্মাসিক পরীক্ষা নেওয়া হতো। কয়েক বছরের মধ্যে ফলাফলের দিক থেকে কলেজটি দেশের প্রথম সারিতে স্থান করে নেয়। ১৯৬৪ সালে বি.এ পরীক্ষায় বাঙলা কলেজের পাশের হার ছিল ৮৭.৫%। ১৯৬৩ সালেই মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এ কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে রসায়ন, পদার্থ বিদ্যা, গণিত ও জীব বিজ্ঞান পড়ানোর অনুমতি দেয়। ১৯৬৫ সালে বাণিজ্য শাখা খোলা হয়। ১৯৬৯ সালে বি.কম ও বি.এসসি শ্রেণি খোলার অনুমতি মেলে।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশজুড়ে যখন বিজয় উৎসব চলছিল তখনও লড়াই চলছিল মিরপুরে। মূলত মিরপুর ছিল পাকবাহিনীর দোসর রাজাকার ও বিহারি সম্প্রদায়ের ঘাঁটি। মিরপুরের বিভিন্ন স্থানে আবিষ্কৃত বধ্যভূমির মধ্যে সরকারি বাঙলা কলেজ অন্যতম। ১৯৭১ সালের বাঙলা কলেজের কর্মচারী আনোয়ারা বেগম (নিচের ছবি),ছিলেন নির্মমতার সাক্ষী, তার তথ্যের ভিত্তিতে অনেক স্থান চিহ্নিত করা হয় । পুরো কলেজ ছিল পাক সেনাদের দখলে। আনোয়ারা বেগমকে দিয়ে পাকবাহিনী রুমের রক্ত পরিষ্কার করাতো।

বর্তমান বিন্যাস অনুযায়ী, কলেজের অভ্যন্তরে বড় গেট ও শহীদ মিনারের মাঝামাঝি প্রাচীর সংলগ্ন স্থানে ১৯৭১-এ পুকুর ছিল এবং হানাদার বাহিনী তার পাশে মুক্তি কামী মানুষ-কে লাইন ধরে দাড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করত। মূল প্রশাসনিক ভবনের অনেক কক্ষই ছিল নির্যাতন কক্ষ। হোস্টেলের পাশের নিচু জমিতে আটকদের লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করা হতো। অধ্যক্ষের বাসভবন সংলগ্ন বাগানে আম গাছের মোটা শিকড়ের গোঁড়ায় মাথা চেপে ধরে জবাই করা হতো, ফলে হত্যার পর এক পাশে গড়িয়ে পড়তো মাথাগুলো, অন্যপাশে পড়ে থাকত দেহ গুলো। মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় জুড়েই বাঙলা কলেজ ও আশেপাশে নৃশংস হত্যাকান্ড চলেছে, হয়েছে নারী নির্যাতন। কলেজের বর্তমান বিশালায়তন মাঠটি তখন ছিল ঝোপ-জঙ্গলে ভর্তি। বিজয়ের মূহুর্তে তখন এই মাঠসহ পুরো এলাকা ও কলেজ জুড়ে পড়ে ছিল অজস্র জবাই করা দেহ, নরকংকাল, পঁচা গলা লাশ। বিভীষিকাময় গণহত্যার চিহ্ন ফুটে ছিল সর্বত্র।১৯৭২ এর জানুয়ারিতে দৈনিক পূর্বদেশ ও দৈনিক বাংলা পত্রিকায় এ ব্যাপারে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বাঙলা কলেজ বধ্যভূমির আরও তথ্য রয়েছে ডাঃ এম.এ. হাসানের “যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা ও বিচারের অন্বেষণ”, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত “মুক্তিযুদ্ধ কোষ”, সুকুমার বিশ্বাস-এর “একাত্তরের বধ্যভূমি ও গণকবর”, মিরাজ মিজু-র “মির পুরের ১০টি বধ্যভূমি” নামক গ্রন্থে । মিরপুর এলাকার প্রথম চেয়ারম্যান ফকির শফিরউদ্দিন, মিরপুর মুক্ত করার অপারেশনে অংশ নেওয়া সেনাসদস্য ও গেরিলারাসহ বাংলাদেশের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিই এই নৃশংসতা অব লোকন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী-র কাছেও এই সংক্রান্ত আরো তথ্য রয়েছে ।

১২ নভেম্বর ২০০৭-এ কয়েকশ শিক্ষার্থী মিছিল করে অধ্যক্ষ সুরাইয়া সুলতানার দপ্তরে গিয়ে পদক্ষপে গ্রহণের জন্য চিঠি জমা দেয়। তবে করেঅধ্যক্ষ সুরাইয়া সুলতানা মুক্তিযুদ্ধকে “ফালতু একটি চাপ্টার” বলে অভিহিতন ফলে ছাত্রছাত্রীদের সাথে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় এবং একপর্যায়ে শিক্ষার্থীবৃন্দ চিঠিটি টেবিলে রেখে – “রাজাকারের ফাঁসি চাই, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই, বাঙলা কলেজ বধ্যভূমিতে স্মৃতি স্তম্ভ চাই” – ইত্যাদি শ্লোগান দিয়ে মিছিল করে বের হয়ে এসে পুরো কলেজ প্রকম্পিত করে তোলে। তখন হতেই শুরূ হল আন্দোলন।শিক্ষার্থীরা একাধিকবার র‌্যালি, মানববন্ধন, প্রতীকী অনশন, ২ মিনিট নিরবতা পালন, সমাবেশ, মিছিল, পথসভা, কালো কাপড়ের উপর ফুল অর্পণ ইত্যাদি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করেছে।আন্দোলন শুধু তৃণমূলেই নয়, ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বজনমতকে সম্পৃক্ত করার জন্য প্রয়াস নেয়া হয়েছে। ২০০৭ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত স্মৃতিফলক নির্মাণের আন্দোলনে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা হাসানুল হক ইনু, বর্তমানে তথ্যমন্ত্রীর, আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন সাংবাদিক আবেদ খান, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সাবেক সেনাবাহিনী প্রধান লে.জে. (অব.) হারুন-উর-রশীদ বীরপ্রতীক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, জল্লাদ খানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠের তত্ত্বাবধায়ক এ. কে. এম. নাসির উদ্দীন, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহ মানের স্ত্রী মিলি রহমানসহ অন্যান্যদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ অনেকেই।

অধ্যক্ষ সুরাইয়া সুলতানা এল.পি.আর.-এ গেলে ভাইস প্রিন্সিপাল প্রফেসর আনিস ফাতেমা কলেজের দায়িত্ব নেন। ঠিক এই সময়ে ছাত্রছাত্রীদের অনুরোধে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বধ্য ভূমির উপরে ডকুমেন্টারী নির্মাণের জন্য কলেজে শুটিং ইউনিট পাঠান কিন্তু ভাইস প্রিন্সিপাল আনিস ফাতেমা অনুমতি না দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের অনুমতি নিয়ে আসতে বলেন যদিও তার কিছু দিন পূর্বেই “বিয়ার তাবিজ” নামে একটি নাটকের শুটিং হয়েছে সচিব মহোদয়ের অনুমতি ছাড়াই। ২০ ০৮ সালে ৩১ জানুয়ারি ‘মিরপুর মুক্ত দিবসে’ ছাত্রছাত্রীরা কলেজের ভেতর অনুষ্ঠান করতে চাইলে প্রিন্সিপাল ড. হামিদা বানু অনুমতি দেননি। ফলে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে অনুষ্ঠানটি হয় কলেজের সামনে ফুটপাতে। সেদিন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারকে কলেজে সংবর্ধনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। অবশ্য শিক্ষকদের একাংশ ও ছাত্রছাত্রীরা সেই প্রচেষ্টা বানচাল করে।

টানা ১৯ বছর বাঙলা কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন সুফিয়া খাতুন। যেই আন্দোলনের সময়ে কথা বললেন তখন তাকে বদলি করা হয়েছিল তাকে। তিনি প্রয়াত লেখক হুমায়ূন আহমেদের বোন। কলেজের অনেক শিক্ষক চাকরি চ্যুতি ও শাস্তিমূলক বদলির ভয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের দাবির সঙ্গে প্রকাশ্যে সম্পৃক্ত হননি। বাঙলা কলেজ বধ্যভূমির উপর রিপোর্ট করতে যেয়ে চ্যানেল আই-এর রিপো র্টার রহমান মুস্তাফিজ বিড়ম্বনার স্বীকার হন, একই ঘটনার সম্মুখীন হন দৈনিক সম কালের সাংবাদিক খায়রুল হোসেন রাজু। দৈনিক সংবাদে দীপংকর গৌতম বাঙলা কলেজ বধ্যভূমির উপর কলাম লেখেন, এজন্য পত্রিকা অফিসে কে বা কারা ফোনে হুমকি দেয়। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে সেই সময়ের কলেজের অধ্যক্ষ ড. দিলারা হাফিজ একটি টেরাকোটার ফলকে বাঙলা কলেজ বধ্যভূমির সংক্ষিপ্ত তথ্য প্রশাসন ভবনের দেয়ালে স্থাপন করেন, যা ধুলাতে ঢাকা পড়ে গেছে । পরে অধ্যক্ষ প্রফেসর এসএম মকফুর হোসেন, বলেন ,বাঙলা কলেজ পুরোটাই পাকবাহিনীর নির্মমতার সাক্ষী। প্রতিটি কক্ষ ব্যবহৃত হয়েছে টর্চার সেল হিসেবে। সেখান থেকে একটি কক্ষে নির্মাণ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি গ্যালারি ।

বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর ২০০৯ সালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ‘বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ’ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করে নকশা প্রণয়ন করে, কিন্তু হয়নি কোনস্মৃতিস্তম্ভ। সংবাদপত্র সুত্রে জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের  ‘বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ’ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে সারা দেশের ২০৪টি বধ্যভূমির নাম অন্তর্ভুক্ত করা হলেও সেখানে নেই বাঙলা কলেজের নাম।ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির মতে, কলেজ প্রশাসন ও মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের গাফি লতিই এর জন্য দায়ী, প্রশাসনে জামায়াতের লোক ঢুকে যাওয়ার কারণেও এমনটা ঘটেছে বলে দাবি তাদের।২০০৯ সালে মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ’ প্রকল্পে বাঙলা কলেজকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু বছর পার হলেও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়নি। এই প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে দেশের ২০৪টি বধ্যভূমির নাম অন্তর্ভুক্ত করা হলেও সেখানে নেই বাঙলা কলেজের নাম। এমনকি মন্ত্রণালয়ের আদেশে গণপূর্ত অধিদপ্তর কলেজটির জন্য যে নকশা তৈরি করেছিল, সেটিও পাওয়া যাচ্ছে না।এব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক তাঁর মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের ডেকে এনে বিষয়টি জানতে চান। তিনি বলেন, বিষয় টি তদন্ত করা হবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাঙলা কলেজের বধ্য ভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে । মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা না হলেও কলেজ কর্তৃ পক্ষের অবহেলায় চিহ্নিত স্থানগুলোও অরক্ষিত।

এ ব্যাপারে কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ ড.ফেরদৌসী খান বলেন, ইতিমধ্যে আমরা কলেজের বধ্যভূমি চিহ্নিতকরন ও ইতিহাস সংরক্ষণ এবং স্মৃতিফলক নির্মানের কাজ হাতে নিয়েছি। আমি এরই মধ্যে দুটো কমিটি করে দিয়েছি তার সব কিছু পর্যালোচনা করে আমাকে জানাবে এবং আমরা বধ্যভূমি নিয়ে কাজ করতেছি আশাকরি কিছুদিনের মধ্যে ফল পাওয়া যাবে।আমারা এ ব্যাপারে অনেক ইতিবাচক, কলেজর ইতিহাস সংরক্ষণে বদ্ধ পরিকর

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

জাকের-শামীমকে যে পুরস্কার দিতে বললেন উইন্ডিজ কিংবদন্তি

সরকারি বাঙলা কলেজের বধ্যভূমির স্মতি, বিস্মৃতির জাল

আপডেট টাইম : ০৩:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০১৯

বাঙালী কন্ঠ ডেস্কঃ বাঙলা কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক এবং তমদ্দুন মজলিশ-এর সভাপতি আবুল কাশেম। এ উদ্দেশ্যে ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ, ডক্টর ইন্নাস আলীসহ তমদ্দুন মজলিসের কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে একটি প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়।
১৯৬১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি একই স্থানে খান বাহাদুর আব্দুর রহমান খান-এর সভাপতিত্বে দ্বিতীয় সভায় ২৬ জন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। এ সভায় বাঙলা কলেজ প্রতিষ্ঠার লক্ষে ৫১ সদস্যবিশিষ্ট একটি সাংগঠনিক পরিষদ গঠিত হয়। প্রধান পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে ছিলেন রণদাপ্রসাদ সাহা ও গুল মোহাম্মদ আদমজী, ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, প্রিন্সিপাল দেওয়ান মোঃ আজরফ, খান বাহাদুর আবদুর রহমান খান সহ-সভাপতি, প্রাক্তন ডিপিআই আবদুল হাকিম কোষা ধ্যক্ষ, প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ সেক্রেটারি, অধ্যাপক আবুল কাসেম ও অধ্যাপক হাসান জামান জয়েন্ট সেক্রেটারি শাহ মুস্তাফিজুর রহমান ও অধ্যাপক মতিউর রহমান অ্যাসিট্যান্ট সেক্রেটারি। পরিষদের সদস্য ছিলেন আবুল কালাম শামসুদ্দীন, তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, আবদুস সালাম, সুনীল কুমার বসু, সাহিত্যিক মুহাম্মদ বরকত উল্লাহ, অধ্যাপক আবদুল হাই, কবি ফররুখ আহমদ, অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান, ড. মুহাম্মদ এনামুল হক, বেগম শামসুন্নাহার মাহমুদ, ব্যারিস্টর আবদুল হক, অধ্যাপক মোফাখখারুল ইসলাম প্রমুখ ।
১৯৬১ সালের ১৮ জুন বাংলা একাডেমী সভাকক্ষে বাঙলা কলেজ সাংগঠনিক পরিষদের সভায় ঐ বছর জুলাই থেকে বাংলা কলেজের কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। শুরুর দিকে কলেজের প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপাল ও অধ্যাপকগণ বিনা বেতনে বৎসরাধিককাল এবং কেউ কেউ নামমাত্র বেতনে অধ্যাপনা করেন। স্বয়ং প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম ৮ বছর বিনা বেতনে দায়িত্ব পালন করেন, কলেজে সাপ্তাহিক ও ষান্মাসিক পরীক্ষা নেওয়া হতো। কয়েক বছরের মধ্যে ফলাফলের দিক থেকে কলেজটি দেশের প্রথম সারিতে স্থান করে নেয়। ১৯৬৪ সালে বি.এ পরীক্ষায় বাঙলা কলেজের পাশের হার ছিল ৮৭.৫%। ১৯৬৩ সালেই মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এ কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে রসায়ন, পদার্থ বিদ্যা, গণিত ও জীব বিজ্ঞান পড়ানোর অনুমতি দেয়। ১৯৬৫ সালে বাণিজ্য শাখা খোলা হয়। ১৯৬৯ সালে বি.কম ও বি.এসসি শ্রেণি খোলার অনুমতি মেলে।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশজুড়ে যখন বিজয় উৎসব চলছিল তখনও লড়াই চলছিল মিরপুরে। মূলত মিরপুর ছিল পাকবাহিনীর দোসর রাজাকার ও বিহারি সম্প্রদায়ের ঘাঁটি। মিরপুরের বিভিন্ন স্থানে আবিষ্কৃত বধ্যভূমির মধ্যে সরকারি বাঙলা কলেজ অন্যতম। ১৯৭১ সালের বাঙলা কলেজের কর্মচারী আনোয়ারা বেগম (নিচের ছবি),ছিলেন নির্মমতার সাক্ষী, তার তথ্যের ভিত্তিতে অনেক স্থান চিহ্নিত করা হয় । পুরো কলেজ ছিল পাক সেনাদের দখলে। আনোয়ারা বেগমকে দিয়ে পাকবাহিনী রুমের রক্ত পরিষ্কার করাতো।

বর্তমান বিন্যাস অনুযায়ী, কলেজের অভ্যন্তরে বড় গেট ও শহীদ মিনারের মাঝামাঝি প্রাচীর সংলগ্ন স্থানে ১৯৭১-এ পুকুর ছিল এবং হানাদার বাহিনী তার পাশে মুক্তি কামী মানুষ-কে লাইন ধরে দাড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করত। মূল প্রশাসনিক ভবনের অনেক কক্ষই ছিল নির্যাতন কক্ষ। হোস্টেলের পাশের নিচু জমিতে আটকদের লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করা হতো। অধ্যক্ষের বাসভবন সংলগ্ন বাগানে আম গাছের মোটা শিকড়ের গোঁড়ায় মাথা চেপে ধরে জবাই করা হতো, ফলে হত্যার পর এক পাশে গড়িয়ে পড়তো মাথাগুলো, অন্যপাশে পড়ে থাকত দেহ গুলো। মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় জুড়েই বাঙলা কলেজ ও আশেপাশে নৃশংস হত্যাকান্ড চলেছে, হয়েছে নারী নির্যাতন। কলেজের বর্তমান বিশালায়তন মাঠটি তখন ছিল ঝোপ-জঙ্গলে ভর্তি। বিজয়ের মূহুর্তে তখন এই মাঠসহ পুরো এলাকা ও কলেজ জুড়ে পড়ে ছিল অজস্র জবাই করা দেহ, নরকংকাল, পঁচা গলা লাশ। বিভীষিকাময় গণহত্যার চিহ্ন ফুটে ছিল সর্বত্র।১৯৭২ এর জানুয়ারিতে দৈনিক পূর্বদেশ ও দৈনিক বাংলা পত্রিকায় এ ব্যাপারে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বাঙলা কলেজ বধ্যভূমির আরও তথ্য রয়েছে ডাঃ এম.এ. হাসানের “যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা ও বিচারের অন্বেষণ”, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত “মুক্তিযুদ্ধ কোষ”, সুকুমার বিশ্বাস-এর “একাত্তরের বধ্যভূমি ও গণকবর”, মিরাজ মিজু-র “মির পুরের ১০টি বধ্যভূমি” নামক গ্রন্থে । মিরপুর এলাকার প্রথম চেয়ারম্যান ফকির শফিরউদ্দিন, মিরপুর মুক্ত করার অপারেশনে অংশ নেওয়া সেনাসদস্য ও গেরিলারাসহ বাংলাদেশের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিই এই নৃশংসতা অব লোকন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী-র কাছেও এই সংক্রান্ত আরো তথ্য রয়েছে ।

১২ নভেম্বর ২০০৭-এ কয়েকশ শিক্ষার্থী মিছিল করে অধ্যক্ষ সুরাইয়া সুলতানার দপ্তরে গিয়ে পদক্ষপে গ্রহণের জন্য চিঠি জমা দেয়। তবে করেঅধ্যক্ষ সুরাইয়া সুলতানা মুক্তিযুদ্ধকে “ফালতু একটি চাপ্টার” বলে অভিহিতন ফলে ছাত্রছাত্রীদের সাথে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় এবং একপর্যায়ে শিক্ষার্থীবৃন্দ চিঠিটি টেবিলে রেখে – “রাজাকারের ফাঁসি চাই, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই, বাঙলা কলেজ বধ্যভূমিতে স্মৃতি স্তম্ভ চাই” – ইত্যাদি শ্লোগান দিয়ে মিছিল করে বের হয়ে এসে পুরো কলেজ প্রকম্পিত করে তোলে। তখন হতেই শুরূ হল আন্দোলন।শিক্ষার্থীরা একাধিকবার র‌্যালি, মানববন্ধন, প্রতীকী অনশন, ২ মিনিট নিরবতা পালন, সমাবেশ, মিছিল, পথসভা, কালো কাপড়ের উপর ফুল অর্পণ ইত্যাদি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করেছে।আন্দোলন শুধু তৃণমূলেই নয়, ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বজনমতকে সম্পৃক্ত করার জন্য প্রয়াস নেয়া হয়েছে। ২০০৭ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত স্মৃতিফলক নির্মাণের আন্দোলনে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা হাসানুল হক ইনু, বর্তমানে তথ্যমন্ত্রীর, আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন সাংবাদিক আবেদ খান, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সাবেক সেনাবাহিনী প্রধান লে.জে. (অব.) হারুন-উর-রশীদ বীরপ্রতীক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, জল্লাদ খানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠের তত্ত্বাবধায়ক এ. কে. এম. নাসির উদ্দীন, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহ মানের স্ত্রী মিলি রহমানসহ অন্যান্যদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ অনেকেই।

অধ্যক্ষ সুরাইয়া সুলতানা এল.পি.আর.-এ গেলে ভাইস প্রিন্সিপাল প্রফেসর আনিস ফাতেমা কলেজের দায়িত্ব নেন। ঠিক এই সময়ে ছাত্রছাত্রীদের অনুরোধে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বধ্য ভূমির উপরে ডকুমেন্টারী নির্মাণের জন্য কলেজে শুটিং ইউনিট পাঠান কিন্তু ভাইস প্রিন্সিপাল আনিস ফাতেমা অনুমতি না দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের অনুমতি নিয়ে আসতে বলেন যদিও তার কিছু দিন পূর্বেই “বিয়ার তাবিজ” নামে একটি নাটকের শুটিং হয়েছে সচিব মহোদয়ের অনুমতি ছাড়াই। ২০ ০৮ সালে ৩১ জানুয়ারি ‘মিরপুর মুক্ত দিবসে’ ছাত্রছাত্রীরা কলেজের ভেতর অনুষ্ঠান করতে চাইলে প্রিন্সিপাল ড. হামিদা বানু অনুমতি দেননি। ফলে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে অনুষ্ঠানটি হয় কলেজের সামনে ফুটপাতে। সেদিন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারকে কলেজে সংবর্ধনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। অবশ্য শিক্ষকদের একাংশ ও ছাত্রছাত্রীরা সেই প্রচেষ্টা বানচাল করে।

টানা ১৯ বছর বাঙলা কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন সুফিয়া খাতুন। যেই আন্দোলনের সময়ে কথা বললেন তখন তাকে বদলি করা হয়েছিল তাকে। তিনি প্রয়াত লেখক হুমায়ূন আহমেদের বোন। কলেজের অনেক শিক্ষক চাকরি চ্যুতি ও শাস্তিমূলক বদলির ভয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের দাবির সঙ্গে প্রকাশ্যে সম্পৃক্ত হননি। বাঙলা কলেজ বধ্যভূমির উপর রিপোর্ট করতে যেয়ে চ্যানেল আই-এর রিপো র্টার রহমান মুস্তাফিজ বিড়ম্বনার স্বীকার হন, একই ঘটনার সম্মুখীন হন দৈনিক সম কালের সাংবাদিক খায়রুল হোসেন রাজু। দৈনিক সংবাদে দীপংকর গৌতম বাঙলা কলেজ বধ্যভূমির উপর কলাম লেখেন, এজন্য পত্রিকা অফিসে কে বা কারা ফোনে হুমকি দেয়। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে সেই সময়ের কলেজের অধ্যক্ষ ড. দিলারা হাফিজ একটি টেরাকোটার ফলকে বাঙলা কলেজ বধ্যভূমির সংক্ষিপ্ত তথ্য প্রশাসন ভবনের দেয়ালে স্থাপন করেন, যা ধুলাতে ঢাকা পড়ে গেছে । পরে অধ্যক্ষ প্রফেসর এসএম মকফুর হোসেন, বলেন ,বাঙলা কলেজ পুরোটাই পাকবাহিনীর নির্মমতার সাক্ষী। প্রতিটি কক্ষ ব্যবহৃত হয়েছে টর্চার সেল হিসেবে। সেখান থেকে একটি কক্ষে নির্মাণ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি গ্যালারি ।

বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর ২০০৯ সালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ‘বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ’ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করে নকশা প্রণয়ন করে, কিন্তু হয়নি কোনস্মৃতিস্তম্ভ। সংবাদপত্র সুত্রে জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের  ‘বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ’ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে সারা দেশের ২০৪টি বধ্যভূমির নাম অন্তর্ভুক্ত করা হলেও সেখানে নেই বাঙলা কলেজের নাম।ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির মতে, কলেজ প্রশাসন ও মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের গাফি লতিই এর জন্য দায়ী, প্রশাসনে জামায়াতের লোক ঢুকে যাওয়ার কারণেও এমনটা ঘটেছে বলে দাবি তাদের।২০০৯ সালে মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ’ প্রকল্পে বাঙলা কলেজকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু বছর পার হলেও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়নি। এই প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে দেশের ২০৪টি বধ্যভূমির নাম অন্তর্ভুক্ত করা হলেও সেখানে নেই বাঙলা কলেজের নাম। এমনকি মন্ত্রণালয়ের আদেশে গণপূর্ত অধিদপ্তর কলেজটির জন্য যে নকশা তৈরি করেছিল, সেটিও পাওয়া যাচ্ছে না।এব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক তাঁর মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের ডেকে এনে বিষয়টি জানতে চান। তিনি বলেন, বিষয় টি তদন্ত করা হবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাঙলা কলেজের বধ্য ভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে । মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা না হলেও কলেজ কর্তৃ পক্ষের অবহেলায় চিহ্নিত স্থানগুলোও অরক্ষিত।

এ ব্যাপারে কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ ড.ফেরদৌসী খান বলেন, ইতিমধ্যে আমরা কলেজের বধ্যভূমি চিহ্নিতকরন ও ইতিহাস সংরক্ষণ এবং স্মৃতিফলক নির্মানের কাজ হাতে নিয়েছি। আমি এরই মধ্যে দুটো কমিটি করে দিয়েছি তার সব কিছু পর্যালোচনা করে আমাকে জানাবে এবং আমরা বধ্যভূমি নিয়ে কাজ করতেছি আশাকরি কিছুদিনের মধ্যে ফল পাওয়া যাবে।আমারা এ ব্যাপারে অনেক ইতিবাচক, কলেজর ইতিহাস সংরক্ষণে বদ্ধ পরিকর