জুলাই-আগস্টের গণহত্যা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির বিরুদ্ধে মানহানি মামলার পর এবার রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানির মামলাটি করেন মোল্যা শওকত হোসেন বাবু। পরে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক মো. আল আমীন মামলাটি গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদীর আইনজীবী এসএম মাসুদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ অক্টোবর ঊর্মি শুধু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদসহ সব শহিদের বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করেছেন; যা তিনি রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধ করেছেন।
আইনজীবী এসএম মাসুদুর রহমান বলেন, বাদীর আবেদন আদালত গ্রহণ করে তা তদন্তের জন্য সিআইডির কাছে পাঠিয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার আবু সাঈদসহ ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির বিরুদ্ধে মানহানি মামলার আবেদন করেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ।
পরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) জাকির হোসেন মামলাটি আমলে নিয়ে তাপসী তাবাসসুম ঊর্মিকে সশরীরে আগামী ২৮ নভেম্বর আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেন।
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদেশ অপেক্ষমাণ রাখেন। এরপর বিকালে মামলাটি আমলে নিয়ে ঊর্মিকে আগামী ২৮ নভেম্বর সশরীরে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন আদালত। বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. খাদেমুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ৫ অক্টোবর তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির ফেসবুকে এক পোস্টে আবু সাঈদকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে লেখেন- ‘কত বড় বোকার স্বর্গে আছি, এইটা শুধু চিন্তা করি। আবু সাইদ! বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী, সন্ত্রাসী একটি ছেলে, যে কিনা বিশৃঙ্খলা করতে গিয়ে নিজের দলের লোকের হাতেই মারা পড়ল; সে নাকি শহিদ! এটাও এখন মানা লাগবে!’
এরপর তুমুল জনরোষের মুখে ৬ অক্টোবর ঊর্মিকে ওএসডি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়। পরে তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।