বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বিরক্তিকর একটি মহাজাগতিক ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে আগামী ২১ আগস্ট সোমবার। এতটাই বিরক্তিকর সে ঘটনা যে একে ‘এক্লিপস অব দ্য সেঞ্চুরি’ বলা হচ্ছে! মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন এমনটিই জানিয়েছে।
এমন নামকরণের কারণ, ১৯৭৯ সালের পর এটিই হবে প্রথম পূর্ণ সূর্যগ্রহণ যেটি যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূ-খণ্ড থেকে অবলোকন করা যাবে। ফলে, দেশটির কোটি কোটি মানুষ এখন প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল থেকে পশ্চিম উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত হবে পূর্ণ সূর্যগ্রহণটি। পাশাপাশি পশ্চিম ইউরোপ, আফ্রিকার কয়েকটি এলাকা এবং এশিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকেও আংশিক সূর্যগ্রহণের দেখা মিলবে। এবার আপনার জন্য একটি দুঃসংবাদ। যদি আপনি বাংলাদেশে থেকে থাকেন তবে এই মহাজাগতিক দৃশ্যটি আপনি দেখতে পারবেন না। তবে প্রযুক্তির কল্যাণে সূর্যগ্রহণের ধারণকৃত দৃশ্য আপনার স্মার্ট ফোনের ডিসপ্লে পর্যন্ত যে পৌঁছে যাবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাছাড়া, মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার টেলিভিশন চ্যানেল ও ওয়েবসাইটে থাকছে লাইভ ভিডিও স্ট্রিমিং। আপনি চাইলেই দৃশ্যটি উপভোগ করতে পারবেন। তাই অতটা মন খারাপ না করলেও চলছে আপনার, বরং একচোট হেসেই নিন। অবশ্য, আপনার-আমার চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের উৎসাহ-উদ্দীপনার মাত্রাটা একটু বেশি হবে, আর সেটাই স্বাভাবিক নয় কি? সূর্যগ্রহণের খবরে সেখানকার ১৪টি রাজ্যের বাসিন্দাদের মধ্যে শুরু হয়েছে সাজ সাজ রব। চলছে জাকজমক ‘এক্লিপস পার্টি’-র আয়োজন!
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ওয়েবসাইটে সূর্যগ্রহণ উপলক্ষে নানা ইভেন্টের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, ১১টি বিশেষ বিমান থেকে ধারণ করা হবে এই সূর্যগ্রহণের দৃশ্য ! আর আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকা নভোচারীরাও বসে থাকবেন না নিশ্চয়। তারাও পাঠাবেন সে সময়ের প্রকৃতির রহস্যময় সব ছবি।
এ গ্রহণের স্থায়িত্বকাল হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৪৭ মিনিট থেকে রাত ৩টা ৪ মিনিট পর্যন্ত। পূর্ণ সুর্যগ্রহণ দেখা যাবে যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি, মিডওয়ে হ্যাটল দ্বীপ, হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ ও ব্রাজিল থেকে। তবে বাংলাদেশ থেকে সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে না। এর আগে ২০০৯ সালের ২২ আগস্ট বাংলাদেশের পঞ্চগড় থেকে পূর্ণ গ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা যায়।
একাধিক আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যমে এবারের পূর্ণ গ্রাস সূর্যগ্রহণের গতি পথের বিবরণ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী ২১ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি স্টেটের ন্যাশনাল ফরেস্ট এলাতার দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্ত থেকে স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৩৪ মিনিটে পূর্ণ গ্রাস সূর্যগ্রহণ প্রত্যক্ষ করা যাবে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের মিডওয়ে হ্যাটল দ্বীপের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে ভোর ৫টা ২২ মিনিটে, হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে ভোর ৫টা ৩৪ মিনিটে এবং ব্রাজিলের ব্রাগনাকা শহরের উত্তর-পূর্ব প্রান্ত থেকে দেখা যাবে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে।
কী ঘটবে সে সময়? চাঁদ ক্রমান্বয়ে পৃথিবী ও সূর্যের মাঝামাঝি অবস্থান নিবে। যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলীয় রাজ্য অরিগনের ভূমি থেকে গ্রহণের শুরুটা দেখা যাবে স্থানীয় সময় সকাল সোয়া ১০টার দিকে। আর, এর শেষটা দেখা যাবে দেশটির পূর্ব উপকূলীয় রাজ্য সাউথ ক্যারোলিনায়। মাঝে গ্রহণের এই চক্র অতিক্রম করবে ১২টি রাজ্য। তিন মিনিটের মতো সময়জুড়ে সূর্যকে ঢেকে রাখবে চাঁদ। ফলে, দিনদুপুরেও পূর্ণ সূর্যগ্রহণের এলাকায় দেখা দেবে সন্ধ্যার আবহ। দেখা মিলতে পারে বৃহস্পতি, শুক্রসহ বিভিন্ন গ্রহের। আর রাতের তারারাও যদি সেই ক্ষণে মিটমিট করে উঠে ক্ষতি কী!