ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্মার্টফোনে ছোট-বড় হবে জুতা, বাঁধা যাবে ফিতা

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড নাইকি সেল্ফ-লেইসিং বা ফিতা বাঁধা ট্রেইনার জুতা বাজারে আনতে যাচ্ছে। যা গ্রাহকদের পায়ের আকৃতি অনুযায়ী সহজেই ফিট হয়ে যাবে এবং এই জুতাটি স্মার্টফোনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বৃহস্পতিবার বিবিসি বাংলার অনলাইন সংস্করণে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

স্মার্টফোন নিয়ন্ত্রিত এই জুতাকে বলা যেতে পারে ফিউচারিস্টিক ফুটওয়্যারের সর্বশেষ সংস্করণ। তবে এই জুতাটির ধারণা পাওয়া গিয়েছিল ১৯৮৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ব্যাক টু দ্য ফিউচার পার্ট টু’ চলচ্চিত্রে। পরে নাইকি বিস্তর গবেষণার পর ২০১৬ সালে সেই জুতাটির একটি বাস্তব রূপ দিতে সক্ষম হয়।

জুতাটি ফেব্রুয়ারিতে বাজারে ছাড়ার কথা রয়েছে। এই জুতার প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো ব্যবহারকারীরা চাইলেই এই জুতার ফিটিংসে নিজের মতো পরিবর্তন আনতে পারবেন। জুতার মাপ ইচ্ছামত কাস্টমাইজড করতে পারবেন। আর এই পুরো কাজটাই করা যাবে স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে। সেখানে এই উপযুক্ত মাপগুলো সংরক্ষণ রাখা যায়। জুতার ফিতাকে অ্যাক্টিভেট করার জন্য জুতাটির মধ্যে আলাদা করে কোনো বাটন বা বোতামের প্রয়োজন হয় না।

জুতাটির সর্বশেষ এই সংস্করণের নাম দেয়া হয়েছে ‘নাইকি অ্যাডাপ্ট’ এবং এর দাম ধরা হয়েছে ৩৫০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩০ হাজার। লাইভ স্ট্রিমিং অ্যাপ ‘টুইচ’-এ এই জুতাটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়। জুতাটি মূলত খেলোয়াড়দের কথা ভেবে তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ করে বাস্কেটবল খেলায় এর প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি। ব্যবহারকারীরা সেখানে তাদের বিভিন্ন মুহূর্তে পায়ের বিভিন্ন মাপ সেট করে রাখতে পারবেন।

এ বিষয়ে নাইকির ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর এরিক অ্যাভার জানান, নাইকি অ্যাডাপ্টের পরীক্ষামূলক ব্যবহারে আমরা আন্তর্জাতিকভাবে বাস্কেটবল খেলাটিকে প্রথমে বেছে নিয়েছি। কেননা এই খেলার অ্যাথলেটদের এ ধরনের জুতার প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি। বাস্কেটবল খেলার সময় খেলোয়াড়দের পায়ের মোশন দ্রুত পরিবর্তিত হয়। কখনো তাদের পায়ে রক্তের প্রবাহ বাড়াতে জুতাটি শিথিল থাকা প্রয়োজন আবার কখনও বা আঁটসাঁট হওয়া প্রয়োজন।

Naiki

জুতার ফিটিংস আপনা আপনি পরিবর্তন করতে নাইকি এই বিশেষায়িত জুতাটি বাজারে আনছে। যা এ্যাথলিটদের খেলার অভিজ্ঞতাকে উন্নত করতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন অ্যাভার।

জুতাটি যেভাবে কাজ করে

যখন ব্যবহারকারী তার পা জুতায় ঢোকাবেন তখনই জুতায় থাকা কাস্টম মোটর এবং গিয়ার তার পায়ের স্নায়ুচাপ বুঝে প্রয়োজন অনুযায়ী ফিটিংস অ্যাডজাস্ট করে নেবে। অ্যাপ্লিকেশনে তথ্যগুলো সংরক্ষিত থাকায় অ্যাথলেটরা চাইলে সেটা নাইকির সঙ্গে শেয়ারও করতে পারবেন।

‘ওয়েরেবল’ নামে একটি প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইটের সম্পাদক মাইকেল সাওহ বলেন, ‘স্পষ্টতই এটি ব্যাক-টু-ফিউচারের সেল্ফ লেইসিং জুতার কথা আমাদের মনে করিয়ে দেয়। সেই সিনেমার প্রপস এখন বাস্তব হয়ে হয়ে পড়েছে।’

জানা গেছে, গত বছর যখন নাইকি এই জুতাটি নিয়ে আলোচনা করছিল তখন তাদের নিয়ে নানা কথাবার্তা হয়। তবে তাদের আশা, অনেক নাইকি স্নিকারপ্রেমী তাদের সংগ্রহে এই জুতাটি রাখতে চাইবে। নাইকি বলছে, তারা এই প্রযুক্তি তাদের এই রেঞ্জের অন্য জুতাগুলোতে যোগ করবে। এতে তারা যেমন মানুষের নজর কাড়তে পারবে তেমনি জুতাগুলো সবার কাজেও আসবে।

তবে জুতার মধ্যে নতুন এই প্রযুক্তি ভোক্তাদের তথ্য কীভাবে ব্যবহার করবে সে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অনেকেই। তবে অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইসগুলোর তুলনায় নাইকি যেসব তথ্য ধারণ করে সেগুলো নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। কারণ এটি শুধু ব্যবহারকারীর পায়ের ফিটিংসের বিষয়টিকেই গুরুত্ব দেয়। হার্টরেট বা স্বাস্থ্যের সার্বিক পরিস্থিতি নয়।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

স্মার্টফোনে ছোট-বড় হবে জুতা, বাঁধা যাবে ফিতা

আপডেট টাইম : ১০:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জানুয়ারী ২০১৯

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড নাইকি সেল্ফ-লেইসিং বা ফিতা বাঁধা ট্রেইনার জুতা বাজারে আনতে যাচ্ছে। যা গ্রাহকদের পায়ের আকৃতি অনুযায়ী সহজেই ফিট হয়ে যাবে এবং এই জুতাটি স্মার্টফোনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বৃহস্পতিবার বিবিসি বাংলার অনলাইন সংস্করণে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

স্মার্টফোন নিয়ন্ত্রিত এই জুতাকে বলা যেতে পারে ফিউচারিস্টিক ফুটওয়্যারের সর্বশেষ সংস্করণ। তবে এই জুতাটির ধারণা পাওয়া গিয়েছিল ১৯৮৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ব্যাক টু দ্য ফিউচার পার্ট টু’ চলচ্চিত্রে। পরে নাইকি বিস্তর গবেষণার পর ২০১৬ সালে সেই জুতাটির একটি বাস্তব রূপ দিতে সক্ষম হয়।

জুতাটি ফেব্রুয়ারিতে বাজারে ছাড়ার কথা রয়েছে। এই জুতার প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো ব্যবহারকারীরা চাইলেই এই জুতার ফিটিংসে নিজের মতো পরিবর্তন আনতে পারবেন। জুতার মাপ ইচ্ছামত কাস্টমাইজড করতে পারবেন। আর এই পুরো কাজটাই করা যাবে স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে। সেখানে এই উপযুক্ত মাপগুলো সংরক্ষণ রাখা যায়। জুতার ফিতাকে অ্যাক্টিভেট করার জন্য জুতাটির মধ্যে আলাদা করে কোনো বাটন বা বোতামের প্রয়োজন হয় না।

জুতাটির সর্বশেষ এই সংস্করণের নাম দেয়া হয়েছে ‘নাইকি অ্যাডাপ্ট’ এবং এর দাম ধরা হয়েছে ৩৫০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩০ হাজার। লাইভ স্ট্রিমিং অ্যাপ ‘টুইচ’-এ এই জুতাটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়। জুতাটি মূলত খেলোয়াড়দের কথা ভেবে তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ করে বাস্কেটবল খেলায় এর প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি। ব্যবহারকারীরা সেখানে তাদের বিভিন্ন মুহূর্তে পায়ের বিভিন্ন মাপ সেট করে রাখতে পারবেন।

এ বিষয়ে নাইকির ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর এরিক অ্যাভার জানান, নাইকি অ্যাডাপ্টের পরীক্ষামূলক ব্যবহারে আমরা আন্তর্জাতিকভাবে বাস্কেটবল খেলাটিকে প্রথমে বেছে নিয়েছি। কেননা এই খেলার অ্যাথলেটদের এ ধরনের জুতার প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি। বাস্কেটবল খেলার সময় খেলোয়াড়দের পায়ের মোশন দ্রুত পরিবর্তিত হয়। কখনো তাদের পায়ে রক্তের প্রবাহ বাড়াতে জুতাটি শিথিল থাকা প্রয়োজন আবার কখনও বা আঁটসাঁট হওয়া প্রয়োজন।

Naiki

জুতার ফিটিংস আপনা আপনি পরিবর্তন করতে নাইকি এই বিশেষায়িত জুতাটি বাজারে আনছে। যা এ্যাথলিটদের খেলার অভিজ্ঞতাকে উন্নত করতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন অ্যাভার।

জুতাটি যেভাবে কাজ করে

যখন ব্যবহারকারী তার পা জুতায় ঢোকাবেন তখনই জুতায় থাকা কাস্টম মোটর এবং গিয়ার তার পায়ের স্নায়ুচাপ বুঝে প্রয়োজন অনুযায়ী ফিটিংস অ্যাডজাস্ট করে নেবে। অ্যাপ্লিকেশনে তথ্যগুলো সংরক্ষিত থাকায় অ্যাথলেটরা চাইলে সেটা নাইকির সঙ্গে শেয়ারও করতে পারবেন।

‘ওয়েরেবল’ নামে একটি প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইটের সম্পাদক মাইকেল সাওহ বলেন, ‘স্পষ্টতই এটি ব্যাক-টু-ফিউচারের সেল্ফ লেইসিং জুতার কথা আমাদের মনে করিয়ে দেয়। সেই সিনেমার প্রপস এখন বাস্তব হয়ে হয়ে পড়েছে।’

জানা গেছে, গত বছর যখন নাইকি এই জুতাটি নিয়ে আলোচনা করছিল তখন তাদের নিয়ে নানা কথাবার্তা হয়। তবে তাদের আশা, অনেক নাইকি স্নিকারপ্রেমী তাদের সংগ্রহে এই জুতাটি রাখতে চাইবে। নাইকি বলছে, তারা এই প্রযুক্তি তাদের এই রেঞ্জের অন্য জুতাগুলোতে যোগ করবে। এতে তারা যেমন মানুষের নজর কাড়তে পারবে তেমনি জুতাগুলো সবার কাজেও আসবে।

তবে জুতার মধ্যে নতুন এই প্রযুক্তি ভোক্তাদের তথ্য কীভাবে ব্যবহার করবে সে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অনেকেই। তবে অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইসগুলোর তুলনায় নাইকি যেসব তথ্য ধারণ করে সেগুলো নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। কারণ এটি শুধু ব্যবহারকারীর পায়ের ফিটিংসের বিষয়টিকেই গুরুত্ব দেয়। হার্টরেট বা স্বাস্থ্যের সার্বিক পরিস্থিতি নয়।