সিলেটের বাজারে ফের বেড়েছে পিয়াজের কেজি ৯০ টাকা

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ সিলেটের বাজারে ফের বেড়েছে পিয়াজের দাম। কয়েক দিন আগে পিয়াজের দাম ছিলো ৩০ টাকা। সেই পিয়াজ এক লাফেই উঠে গেছে ৯০ টাকায়। করোনা ভাইরাসের কারণে পিয়াজের বাজারে দাম  বেড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা। এজন্য তারা বাজার সিন্ডিকেটকেও দায়ী করেন। এদিকে- গতকাল সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি চলমান উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবিলায় করোনা ভাইরাসের কারণে আতঙ্কিত হয়ে কোনো পণ্য অতিরিক্ত ক্রয় না করার জন্য ভোক্তা-সাধারণকে অনুরোধ জানিয়েছেন। ক্রেতারা জানিয়েছেন- প্রায় ৩ মাস পর গত সপ্তাহ থেকে সিলেটে পিয়াজের বাজারে দাম নাগালের মধ্যে চলে এসেছিলো। সংকটের সময় পিয়াজের কেজি বিক্রি হয়েছিলো ২০০ টাকা দরে। যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বেড়েছিলো সেভাবে কমেনি। ধীরে ধীরে কমে দাম ৩০ টাকা দরে এসে ঠেকেছিলো। কিন্তু করোনা আতঙ্কে বুধবার থেকে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পিয়াজের দাম। মঙ্গলবার পর্যন্ত সিলেটে পিয়াজ বিক্রি হয়েছিলো ৩০ টাকা দরে। স্থানীয় দোকানেও একই দামে পিয়াজ পাওয়া যেতো। কিন্তু রাত থেকে বদলে যায় পরিস্থিতি। গত বুধবার রাতে নগরীর ব্রম্মময়ী বাজার, লালবাজার সহ কয়েকটি খুচরা বাজারে পিয়াজ বিক্রি হয় ৬০-৭০ টাকা দরে। গতকাল সেই পিয়াজের দাম এক লাফে উঠে যায় ৯০ টাকা। মাসুক আহমদ নামের এক ক্রেতা জানিয়েছেন- পিয়াজের দাম সিন্ডিকেট করে বাড়ানো হচ্ছে। পাইকারি আড়তে দাম ততটা না বাড়লেও খুচরা বাজারে বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে- পিয়াজের বাড়তি দাম নিয়ে বিক্রেতারা মন্তব্য করতে চাননি। শুধু জানান- সংকট থাকায় দাম বেড়েছে। গতকাল কালিঘাট এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী জানিয়েছে- বাজারে পিয়াজের সংকট নেই। সুতরাং দাম বাড়ার প্রশ্নই উঠে না। এদিকে- সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার বাজারে পিয়াজের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ানো হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত দামে পিয়াজ বিক্রি করায় সিলেটের গোলাপগঞ্জের এক ব্যবসায়ীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল দুপুরে উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের মোকাম বাজারে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুনুর রহমান। আর অভিযানে সহযোগিতা করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। মামুনুর রহমান বলেন, স্থানীয় ক্রেতাদের তথ্যের ভিত্তিতে অতিরিক্ত দামে পিয়াজ বিক্রির প্রমাণ পাওয়ায় আমরা সেখানে অভিযান চালাই। এসময় তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তিনি বলেন, স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বজলুর স্টোরের মালিক আব্দুল আহাদ সিলেট থেকে ৪০ টাকা দরে পিয়াজ ক্রয় করে সাধারণ মানুষের কাছে ৮৫ টাকায় বিক্রি করছেন। তিনি দোকানের মূল্যে তালিকায় পিয়াজের দাম ৫৫ টাকা লিখে রেখেছেন। অথচ বিক্রি করছেন ৮৫ টাকায়। এজন্য তাকে জরিমানা করা হয়। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি। এদিকে- চলমান উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবেলায় করোনাভাইরাসের কারণে আতঙ্কিত হয়ে কোনো পণ্য অতিরিক্ত ক্রয় না করার জন্য ভোক্তা-সাধারণকে অনুরোধ জানিয়েছেন সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু তাহের মো. সুয়েব। গতকাল তিনি গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন- সরকার সব পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ অবস্থায় কৃত্রিম সংকট তৈরির প্রবণতা রোধ করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহবান জানান এবং দেশের এই ক্রান্তিকালে নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের মূল্য বৃদ্ধি না করার জন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানান। তাছাড়া করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে গণবহুল স্থান বা গণ পরিবহনে মাস্ক ব্যবহার এবং বড় ধরণের জমায়েত, সভা-সমাবেশ এড়িয়ে চলার অনুরোধ জানান। ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি অব্যাহত রাখার উদ্দেশ্যে সরকারও সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ ও সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের জন্য কাজ করছে। এদিকে- নিত্য পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে গতকাল থেকে সিলেটের জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বাজারে অভিযান শুরু করা হয়েছে। বেশি দামে যারাই পণ্য বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর